I AM YOUR VILLAIN LOVER

I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 14

আমি ডিভোর্স চাই, আমাকে তুই ডিভোর্স দে মেঘ। আমি মুক্তি চাই তোর মতো একটা অমানুষের থেকে মুক্তি দে আমায় তুই। ডিভোর্স দে আমায়।

বর্ষার কথা শুনে মুহুর্তেই রাগ উঠে যায় মেঘের। মেঘ বর্ষার গাল চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে

— তোর সাহস হয় কি করে আমার থেকে ডিভোর্স চাওয়ার? তুই অন্য যা কিছু চাইতে পারিস কিন্তু ডিভোর্সের কথা ভুল করেও মুখে আনবি না।

মেঘের কথা শুনে মেঘের গালে সজোরে একটা থাপ্পড় মারলো বর্ষা। রাগে বর্ষার শরীর থরথর করে কাঁপছে। থাপ্পড় মেরে বর্ষা আবারো মেঘের শার্টের কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো

— তোর কোনো অধিকার নেই আমার ওপর জোর খাটানোর। তুই যদি আমায় ডিভোর্স না দিস তো আমি তোকে ডিভোর্স দিবো মেঘ। তোর মুখ দেখতেও ঘৃনা করছে আমার। তোর এই আবেগি কথাগুলো কাঁটা হয়ে ফুটছে আমার গায়ে। তোর সাথে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি মুক্তি চাই তোর থেকে।

কথাগুলো বলেই মেঘের কলার ছেরে দিয়ে ছাদ থেকে নিচে নামতে নিলো বর্ষা। সাথে সাথে মেঘ বর্ষার হাত ধরে বর্ষাকে কোলে তুলে নিলো। বর্ষা মেঘের এমন কান্ডে অবাক হয়ে মেঘকে এক নাগাড়ে কিল ঘুষি মারতে লাগলো। কিন্তু তাতে মেঘের কিছু যায় আসে না। মেঘ বর্ষাকে কোলে নিয়ে বর্ষার রুমে( এতদিন বর্ষা মেঘের সাথে না থেকে আলাদা রুমে থাকতো মেঘের ইচ্ছায়, সেই রুমে) গিয়ে নামিয়ে দিলো। তারপর বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে বললো

— আমি তোকে এতদিন সন্দেহ করে কষ্ট দিয়ে জোর করে আমার কাছে রেখেছিলাম। আর এখন থেকে তোকে ভালবেসে আমার সাথে রাখার জন্যে তোকে জোর করে আমার কাছে রাখবো। আমার থেকে দুরে যেতে দিবো না আমি তোকে। তুই আমার কাছেই থাকবি সেটা তোর ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়।

কথাগুলো বলেই সেখান থেকে চলে গেলো মেঘ। বর্ষা দরজায় বারি দিতে দিতে অনেক ডাকলো মেঘকে দরজা খুলে দিতে কিন্তু মেঘ শুনেও বর্ষার কথা শুনলো না।
,
,
,
রাতের খাবার একটি প্লেটে রেডি করে নিয়ে বর্ষার রুমে ঢুকলো মেঘ। রুমে ঢুকে দেখলো বর্ষা কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে। মেঘ খাবারের প্লেটটা টেবিলে রেখে বর্ষাকে কোলে তুলে নিলো। তারপর বিছানায় বসিয়ে শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরলো ঘুমন্ত বর্ষাকে। মেঘ এতটা শক্ত করেই বর্ষাকে ধরেছে যে মনে হচ্ছে যেনো বর্ষার হাড়গুলো সব ভেঙে যাবে। বর্ষার ঘুম ভাঙতেই বর্ষা মেঘকে নিজের থেকে দুরে সরাতে ব্যাস্ত হয়ে পরলো। কিন্তু মেঘকে ও এক চুলও নাড়াতে পারলো না। বর্ষার ছটফটানো বুঝতে পেড়ে বর্ষাকে ছেরে দিলো মেঘ। তারপর বর্ষার দিকে তাকিয়ে অভিমানি গলায় বললো

— তুমি এমন কেন বউ, একটু খানি জরিয়েও ধরতে দিবানা, আমার দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ টাকে? এত হিংসে কেনো তোমার?

মেঘের এমন কথা শুনে ব্যাক্কল হয়ে গেলো বর্ষা। মেঘ এমন ভাব করছে যেনো ওদের মাঝে কখনো কোনো ঝামেলাই হয়নি। বরং ওরা দুজন খুব সুখি দম্পতী। বর্ষার রাগ যেনো আর কন্ট্রল হচ্ছে না। বর্ষা রাগি গলায় বলে উঠলো

— এসবের মানে কি?

— কোন সবের বউ? আমি তো এখনো তোমার সাথে কিছুই করিনি?

— তুই ভাবিস না মেঘ তোর এমন ফালতু কথায় আমি গলে গিয়ে তোকে ক্ষমা করে দিবো। আমি তোকে জীবনেও ক্ষমা করবো না। আর না তোকে স্বামী বলে ভালবাসবো। আমি তোকে ঘৃনা করি ঘৃনা করি ঘৃনা করি।

বর্ষার কথা শুনে মেঘ এমন ভাব করলো যেনো ও কিছুই শোনেনি। মেঘ বললো

— ঐ সরিষা এখন বকবক বন্ধ করে খাবার নিয়ে এসেছি খাবারটা খেয়ে নে। দিন দিন না খেয়ে খেয়ে তো একে বারে শাঁকচুন্নি পেত্নী হয়ে যাচ্ছিস। পরে লোকে বলবে মেঘ চৌধিরী একটা শাঁকচুন্নি পেত্নীকে বিয়ে করে এনেছে। ভাবা যায় কি সাংঘাতিক হবে ব্যাপারটা?

মেঘের কথা শুনে রাগ যেনো মাথায় উঠে গেলো বর্ষার। বর্ষা চিৎকার করে বললো

— তুই কি আমার কথা শুনতে পাসনা। আমি মুক্তি চাই তোর থেকে মুক্তি দে আমায়। যতক্ষণ না তুই আমায় ডিভোর্স দিবি ততক্ষণ আমি কিচ্ছু খাবোনা।একফোঁটা পানিও তুলবো না মুখে।

বর্ষার কথা শুনে প্রচুর রাগ হলো মেঘের। কিন্তু রাগটাকে কন্ট্রলে রেখে মেঘ ডেভিল হেসে বললো

— জানিস তো সরিষা, এই মেঘ না সোজা কথায় কাজ না হলে খুব সুন্দর করে বাকা ভাবে কাজ আদায় করতে জানে। তুই হয়তো কলেজের কথাগুলো ভুলে গেছিস। সে যাই হোক, যেহুতু তুই আমার ভালো কথায় খাবিনা। তাহলে তো আমাকে এবার বাকা হতেই হয় কি বলিস?

— কি করবি তুই কি করবি, মারবি আমায়, মার না মার একদম মেরে ফেল আমায়, এভাবে বেচে থাকার চাইতে মরে যাওয়া অনেক ভালো।

— তোর মাথা সারাজীবন গোবরঠাশাই রয়ে গেলো রে সরিষা। তোকে মারার চাইতে তোকে কথা শোনানোর ভালো ঔষধ আছে আমার কাছে। ওয়েট তোকে দেখাচ্ছি দাড়া।

কথাটা বলেই বর্ষার কাছ থেকে উঠে টেবিলের ওপর থেকে একটা কাঁচের বয়ামে তেলাপোকা ভর্তি নিয়ে এলো মেঘ। তারপর বাকা হেসে বর্ষার সামনে বয়ামটা ধরে বললো

— এই দেখ তোর প্রিয় বান্ধবী তেলাপোকাদের আমি কি যত্ন করে নিয়ে এসেছি তোর জন্যে। ভাবছি ওদের তোর কোলে ছেরে দিবো সারারাত বসে বসে ওদের সাথে গল্প করিস কেমন?

মেঘের কথা শুনে আর মেঘের হাতের বয়ামের তেলাপোকা গুলো দেখে ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো বর্ষা। কারন বর্ষা তেলাপোকাকে মারাত্মক রকমের ভয় পায়। তারপর বর্ষা কাপা কাপা গলায় বললো

— তু তু তুই এমন ক ক করতে পা পারিস না মেঘ। ওগুলোকে দুরে সরা বলছি আমার থেকে। নইলে আমি কিন্তু কেঁদে দিবো।

বর্ষার অবস্থা দেখে বড্ড হাসি পাচ্ছে মেঘের। কিন্তু নিজের হাসিটাকে চেপে রেখে গম্ভির গলায় বললো

— এগুলোকে সরাতে পারি যদি তুই ভালো মেয়ের মতো খাবারগুলো খেয়ে নিস। কি খাবি তো, নাকি তোর বান্ধবিদের তোর কোলে ঢেলে দিবো?

— আমি খাবো আমি খাবো তুই ওগুলোকে দুরে সরা প্লিজ। নইলে আমি কিন্তু সত্যিই কেঁদে দিবো।

— এই তো গুড গার্ল, আমি এগুলোকে দুরে সরাচ্ছি তুই খাবারগুলো খেয়ে নে। তবে আগে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। মুখটার কি অবস্থা করেছিস এ কয়েকদিনে।

মেঘের কথা শুনে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বর্ষা ওয়াশরুমে চলে গেলো। তারপর ওয়াশরুমের দরজা লাগিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে বলতে লাগলো

— তুই যত কিছুই করিসনা কেনো মেঘ, আমি তোকে কোনো দিনও ক্ষমা করবো না। তুই আমার সাথে যেটা করেছিস তাতে তুই শুধু নিজের স্বামী হওয়ার অধিকার নয় আমার সন্তানের বাবা হওয়ার অধিকারও হারিয়েছিস।

এদিকে বর্ষা ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে যাওয়ার পর মেঘ দুফোটা চোখের জল ফেলে মনে মনে বলতে লাগলো

— আমি জানি বর্ষা তোর কাছে সহজ হবে না আমায় নতুন করে মেনে নেওয়া, আমায় ভালবাসা। কিন্তু আমিও হার মানার পাত্র নই। আমি তোকে আমার সেই আগের দুষ্টু মিষ্টি বর্ষার রুপে ফিরিয়ে আনবোই। আমাকে আর একটা সুজোগ দিতে বাদ্ধ করবো তোকে আমি। আর এটা করতে আমার যা করতে হয় আমি করবো। তুই আমায় যত কষ্টই দিসনা কেনো যত অবহেলাই করিস না কেনো আমি তোকে ছাড়বো না বর্ষা। তোকে সারাজীবন আমার বুকেই থাকতে হবে এই মেঘের বুকের বর্ষা হয়ে। এখন থেকে তোকে আমি ভালবাসা মিশ্রীতো অত্যাচার করবো। আর আমি জানি তুই ধিরে ধিরে আমার সেই আগের বর্ষা হবিই হবি। এটা তোর আর আমাদের সন্তানের কাছে আমার প্রমিজ বর্ষা।মনে মনে
,
,
,
একটু পর ফ্রেশ হয়ে বর্ষা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে খাবারগুলো খেয়ে নিলো। কারন বর্ষা চায়না ওর সন্তানের ওর কারনে কোনো ক্ষতি হোক। তাই রাগ অভিমান দুরে রেখে ওকে সুস্থ থাকতে হবে ওর সন্তানের জন্যে। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতে হবে ওকে।

বর্ষার খাওয়া শেষ হলে বর্ষাকে রেখে খারারের প্লেটগুলো নিয়ে চলে যেতে যেতে মেঘ বললো

— ঐ সরিষা এবার সুন্দর করে সেজেগুজে আমার রুমে গিয়ে আমার জন্যে অপেক্ষা কর। আমি খাবার খেয়ে আসছি দুজন এক সাথে ঘুমোবো।

কথাটা বলেই বর্ষাকে চোখ মারলো মেঘ। বর্ষার রাগে যেনো শরীর জ্বলে যাচ্ছে কিন্তু মুখে কিছু বলছে না। কারন মেঘের হাতে এখনো সেই তেলাপোকার বয়ামটা আছে। মেঘ দরজা দিয়ে বেরিয়ে চলে যেতেই। বর্ষা দ্রুতো গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। তারপর ভেঙচি দিয়ে বললো

— ইশশ কুম্ভভুতটার শখ কতো একসাথে ঘুমাবে হুহহ। আমি রাতেই এখান থেকে পালিয়ে যাবো। আর কখনো ফিরবো না তোর কাছে। ততক্ষণ একটু ঘুমিয়ে নেই শরীরটা বেশ ক্লান্ত লাগছে।

কথাটা বলেই বিছানায় গিয়ে শুয়ে ঘু্মিয়ে পরলো বর্ষা।
,
,
,
মাঝ রাতে হঠাৎ বর্ষার ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ বন্ধ করে থেকেই বর্ষা ভাবলো এখন পালাবে। কথাটা ভেবেই যখনি বর্ষা চোখ খুলে একটু নড়বার চেষ্টা করলো তখনি বর্ষা বুঝতে পারলো ওকে কেউ আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। বর্ষা চোখ খুলে ভালো করে তাকিয়ে দেখলো ও মেঘের বুকে শুয়ে আছে আর মেঘ ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে,,,
,
,
,
গল্পটা একদিন পর পর পোস্ট করবো প্লিজ কেউ রাগ করবেন না। কারন আমি এই গল্পটার সাথে একটা ইসলামীক শিক্ষানীয় গল্পও লিখছি বই বের করার জন্যে। আর ঐ গল্পটা আমার তারাতারি কম্প্লিট করে জমা দিতে হবে প্রকাশনি থেকে চাইছে। এছাড়া আমার ফোনটাও ইদানীং একটু বেশি ডিস্টার্ব দেয়। তাই গল্পটা একদিন পর পর দিবো। প্লিজ কেউ রাগ করবেন না।ধন্যবাদ

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *