I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 06
ক্লাসে ঢোকার পর যেনো দেহে প্রান ফিরে পেলো বর্ষা। মেঘের সামনে আর একটু থাকলে হয়তো প্রানটা বেরিয়েই যেতো। মুখে যতই বাহাদুরি করুক না কেনো বর্ষা তো একটা মেয়ে। আর একটা মেয়ে হয়ে ঐ রকম একটা ছেলের সাথে পাঙ্গা নেওয়া সত্যিই বড় কঠিন কাজ।
ক্লাসে ঢুকে নিজের বুকে ফুক দিয়ে বর্ষা বললো
— যাক বাবা এবারের মতো ঐ রাক্ষস কুম্ভভুত টাকে ফাকি দিয়ে পালাতে পেরেছি। পরের কথা না হয় পরে ভাবা যাবে।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই একটি ব্রেঞ্চে গিয়ে বসলো বর্ষা। বর্ষার পাশ থেকে একটি মেয়ে বর্ষার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললো
— হাই আমি তমা আর তুমি?
তমার কথা শুনে তমার দিকে ঘুরে তাকালো বর্ষা। গোলগাল উজ্জল শ্যামলা মিষ্টি দেখতে একটি মেয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। বর্ষাও মিষ্টি হেসে নিজের হাতটা বারিয়ে দিয়ে তমাকে বললো
— হ্যালো, আমি বর্ষা এই কলেজে নতুন।
— তোমার মতো আমিও নতুন। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ , তোমার জন্যে আজকে বেচে গেছি সিনিয়ার দের থেকে।
— আমার জন্যে বেচে গেছো মানে? আমি আবার তোমায় কি ভাবে বাঁচালাম?
— তুমি যদি তখন ঐ সিনিয়ার দের কাছে না যেতে ওদের সাথে ঝগড়া না করতে তাহলে আমাকে ওদের সামনে নাচতে হতো। অনেক বিরক্ত করছিলো ওরা। তুমি আসায় আমাদের ছেরে তোমায় ধরে। তবে যে ভাইয়াটা তোমার সাথে ঝগড়া করছিলো ওই ভাইয়াটা আমাদের কিছু বলেনি উনি মনে হলো ভালই। বাট তোমার সাথে ওমন কেনো করলো বুঝলাম না।
তমার কথা শুনে বর্ষা মুখ বাকিয়ে বললো
— ঐ খাটাশ কুম্ভভুতকে তুমি ভালো বলছো তমা? ঐ টা একটা রামবজ্জাত। ব্যাটার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই আমায় জ্বালিয়ে মারছে। আপদটার জন্যে কলেজে এসেও শান্তি নেই এখানেও হাজির।
বর্ষার কথা শুনে হা হা করে হেসে দিলো তমা। তারপর হাসি থামিয়ে বললো
— তুমি তো খুব সুন্দর করে কথা বলো আর খুব দুষ্টুও মনে হচ্ছে। আমরা কি বেস্টু হতে পারি? আমার কিন্তু এখানে পরিচিত কেউ নেই।
— হুমমম হতেই পারি বাট আমার একটা শর্ত আছে।
— কি শর্ত?
— এখন খেকে আর কোনো তুমি বা আপনি নয়। জাস্ট তুই করে কথা বলতে হবে।
— ওকে ডান,এবার বল বাসায় কে কে আছে তোর?
— আমি আমার একমাত্র আম্মু আর একমাত্র আব্বু। আর আমি তাদের একমাত্র কিউটের ডিব্বা মাইয়া।
বর্ষার কথা শুনে আবারও হা হা করে হেসে দিলো তমা। তারপর বললো
— তুই সত্যিই অনেক মজার মানুষ। তোর সাথে কথা বলে আমার হেব্বি লাগছে।
— খেয়ে দেখেছিস বুঝি?
বর্ষার এমন কথা শুনে আবারও হেসে দিলো তমা। তখনি ক্লাসে স্যার ঢুকলো।
,
,
,
কলেজ শেষ হলে যে যার মতো বাসায় যাওয়ার জন্যে বেরিয়ে পরলো। তমা আর বর্ষাও একসাথেই বের হলো বাসায় যাওয়ার জন্যে। একটু খানি এগিয়ে যেতেই বর্ষার মনে পরলো ও ভুল করে নিজের ফেভারিট কলমটা(যেটা ওর আব্বু ওকে উপহারের সাথে বার্থডে তে গিফ্ট করেছিলো) সেটা ক্লাসে ফেলে আসছে। তাই বর্ষা তমাকে উদ্যেশ্য করে বললো
— এই রে আমার ফেভারিট পেনটা ভুল করে ক্লাসে ফেলে আসছি।তমা তুই হাটতে থাক আমি এখনি পেনটা নিয়ে আসছি।
বর্ষার কথা শুনে তমা আর কিছু না বলে হাটতে শুরু করে। আর বর্ষা চলে গেলো ক্লাসে। ক্লাস থেকে পেনটা নিয়ে আবার বাইরে আসতেই বর্ষার সামনে বাধা হয়ে দাড়ায় মেঘ। তারপর ভ্রু নাচিয়ে ডেভিল হেসে বলে
— আব তেরা ক্যা হোগারে সরিষা? তখন তো ধোকা দিয়ে পালিয়েছিলি কিন্তু এখন?
মেঘের কথা শুনে ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে বর্ষা বললো
— দে দে দেখুন আমাকে বাড়ি যেতে দিন। নইলে আমি কিন্তু চাচ্চুকে ফোন করে বলে দিবো আপনি আমায় বিরক্ত করছেন।
— তাইইই আচ্ছা ফোন কর এই নে ফোন, না না তোর ফোন থেকেই ফোন কর।আমি এখানেই আছি নে ফোন কর জলদিইই,,
মেঘ কথাগুলো বলছে আর ধিরে ধিরে এগিয়ে যাচ্ছে বর্ষার দিকে। আর বর্ষা ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে আর বার বার শুকনো ঢোক গিলছে। এমন সময় বর্ষার মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেলো। বর্ষা মেঘের পিছনের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললো
— প্রিন্সিপাল স্যার এই দেখুন এই ছেলেটা আমার সাথে অসভ্যতা করছে।
বর্ষার কথা শুনে মেঘ পিছনে তাকাতেই বর্ষা নিজের শরীরের সব শক্তি দিয়ে সজোরে মেঘের পায়ের ওপর একটা লাথি মেরে মেঘকে ধাক্কা দিয়ে দৌড় দিলো।বর্ষায় পায়ে হিল জুতো থাকায় মেঘের পায়ে অনেক ব্যাথা পেলো সাথে পায়ের যেখানে লাথি মেরেছে সেখানে একটু ছিলেও গেলো। মেঘ নিজের পায়ে হাত দিয়ে আহ শব্দ করে বসে পরলো নিচে। আর বর্ষা পিছন দিকে ঘুরে ভেঙচি কেটে বললো
— ব্যাটা হনুমান রাক্ষস আফ্রিকান বান্দর উগন্ডার তেলাপোকা, নাইজেরিয়ার ভালুক কুম্ভভুত। এর পর থেকে বর্ষার পিছনে লাগতে এলে হাজার বার ভেবে নিস। তোকে তো আমি ভর্তা বানিয়ে বাজারে বেচবো খাটাশ কোথাকার।
কথাগুলো বলেই দৌড়ে চলে গেলো বর্ষা। আর বর্ষার কথা শুনে রাগে আগুন হয়ে মেঘ দাতে দাত চেপে বললো
— তোর সাহস হয় কি করে আমার সাথে এই মেঘ চৌধুরীর সাথে এমন আচরন করার। আমি তোকে ছারবো না সরিষা। আমার পায়ে লাথি মারার ফল হারে হারে পাবি তুই। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি,,,
,
,
,
দরজায় করা নারার শব্দ হওয়ায় অতিত থেকে বাস্তবে ফিরলো বর্ষা। কিন্তু মেঘ ওকে এমন করে ধরে ঘুমিয়ে আছে যে দরজা খুলে দেওয়ার জন্যে দরজার কাছে যাওয়া সম্ভব নয় ওর। এদিকে দরজায় কেউ অনবরত ঠকঠক করেই যাচ্ছে। শেষে বাদ্ধ হয়ে ভয়ে ভয়ে মেঘের মাথাটা নিজের কোল থেকে নামানোর চেষ্টা করলো বর্ষা। আর ওমনি মেঘের ঘুম ভেঙে গেলো। মেঘের ঘুম ভাঙতেই অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো বর্ষার দিকে, তারপর কিছু বলবে আর তখনি বাইরে থেকে মেঘদের বাসার কাজের মহিলা বলে উঠলো
— ছোট স্যার ও ছোট স্যার, বড় স্যার আপনারে ডাকে। বড় স্যার তো চলে যাচ্ছে,
কাজের মহিলার কথা শুনে মেঘের খেয়াল হলো আজকে আহসান চৌধুরী দেশের বাইরে যাওয়ার কথাটা। মনে হতেই লাফিয়ে খাট থেকে নেমে ওয়াশরুমে গিয়ে ১ মিনিটের মাঝেই চোখে মুখে পানি দিয়ে আসলো মেঘ। তারপর বর্ষাকে উদ্যেশ্য করে বললো
— আমার সাথে বাইরে চল। কিন্তু আব্বু যেনো কিছু না জানে এই রুমের ভিতরের কথা।
কথাটা বলেই দরজা খুলে বাইরে চলে গেলো মেঘ। বর্ষা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেরে মেঘের পিছু পিছু হাটা দিলো,,,
(আজকে গল্প লেখার মুড ছিলো না। বাট অনেকে ম্যাসেজ করে আর কমেন্ট করে গল্পটা চাচ্ছে তাই এতটুকু দিলাম। কেউ আবার ছোট বলে রাগ করো না।)
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,