ভালোবাসার ছোট গল্প

দুষ্টু বউ পর্ব– ২ (শেষ)

জন্য আজকে মোবাইল বন্ধ করে রাখি।
বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আর মোবাইল খুলবো না।
বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল টা বন্ধই রাখবো।
পরের দিন আমার রুমের টেবিলের ওপর দেখি
কিছু চকলেট আর গোলাপ ফুল সাথে একটা
চিরকুট।
চিরকুট টা হাতে নিয়ে দেখি তাতে লেখা।
প্রানের চেয়ে অধিক প্রিয় বাবু নীল, তুমি মোবাইল
বন্ধ করে রেখেছো তাই তোমার সাথে কোন
যোগাযোগ করতে পারছি না বলে তোমাকে এই টএ
লেখা।
তুমি কি ভাবছো তুমি মোবাইল বন্ধ করে রাখলেই
আমি তোমার পিছু ছেড়ে দিবো।
যদি এমন টাই ভাবো তাহলে সেটা তোমার ভুল
ধারনা বাবু। তোমার ঘরের বউ হয়ে আমিই আসবো।
অন্য কোন মেয়েকে তোমার ঘরের বউ হতে দিবো
না। দেখো তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি তাই
ভালো ভাবে বলছি আমাকে ভালোবাসো, আমাকে
বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও।
বাবা মা কে এখন বলে দাও তুমি তিশা নামের একটা
মেয়ে কে ভালোবাসো। নয়তো কিন্তু অনেক খারাপ
হবে, তোমার বিয়ে হতে দিবো না আমি।
প্রয়োজন হলে বিয়ের দিনই তোমার বিয়ে ভেঙ্গে
দিবো। বিয়ে ভাঙ্গতে যতকিছু করতে হয় আমি
করবো। আর বেশি কিছু লেখে সময় নষ্ট করলাম
না তোমার।
শেষ কথা তুমি বাবা মা কে বলে বিয়েটা ভেঙ্গে দাও।
নয়তো আমাকে কিছু করতে হবে
ইতি তোমার বাবুনী নীলাশা।
পএটা পড়ে মাথা গরম হয়ে যায়, বাসার সবাই কে
জিজ্ঞেস করি আমার রুমে ফুল আর চকলেট রেখে
গেছে কে কিন্তু কেউ কিছুই জানে না।
নীলাশা এতোদিন কল করে বিরক্ত করতো, কিন্তু
আজ হুমকি দিলো বিয়ে ভাঙ্গার। এখন অনেক
টেনশন হচ্ছে আমার।
সত্যি সত্যি যদি সে বিয়েটা হতে না দেয়।
সবাইকে যদি বলে তার সাথে আমার সম্পর্ক আছে।
তাহলে তো আমার বারোটা বাজাবে। বাবা মা
আত্বীয় স্বজন সবাইকে আমাকে অনেক ভালে জানে,
এলাকার সবাই বলে নীল ছেলেটা অনেক ভালো।
এই মেয়ের কারনে হয়তো সবাই খারাপ মনে করবে
আমায়। তার কারনে হয়তো মান সম্মান সব
যাবে আমার।
অবশেষে ঠিকঠাক মতোই তিশার সাথে বিয়েটা হয়ে
যায় আমার। বিয়ের দিন কোন সমস্যা হয়নাই।
বিয়ের দিন নীলাশা এসে কোন সমস্যা করে নাই।
কিন্তু বিয়ের দিনটাই আমার জীবনে সবচেয়ে ভয়ানক
দিন ছিলো। সারাদিন ভয়ের মধ্যে ছিলাম,
যখনি কোনো মেয়েকে আমার দিকে আসতে
দেখতাম। তখনই আমার হার্টবিট দিগুন বেড়ে
যেতো, মনে হতো এই নীলাশা এখনি হয়তো
কিছু করে বসবে।
তবে এমন কিছুই হয়নি সুন্দর ভাবে বিয়েটা হয়ে
যায়।
বাসর রাতে রুমে ঢোকার সাথে সাথে তিশা এসে
পা ধরে সালাম করলো। তারপর সে বিছানায়
গিয়ে বসলো।
সে ঘোমাটা দেওয়া তার চেহারা আমি দেখতে
পাচ্ছিলাম না।
হঠাৎ সে বলে উঠলো, তোমাকে বলেছিলাম না
বাবু, আমি তোমার ঘরের বউ হবো।
অন্য কোন মেয়েকে তোমার বউ হতো দিবো না
আমি চমকে উঠলাম কথাটা শুনে, এই কে তাহলে নীলাশা,
আমার বিয়ে কি নীলাশার সাথে হয়েছে।
তিশা কোথায় তাহলে, মনে হাজার প্রশ্ন নিয়ে
আমি তার কাছে গিয়ে ভয়ে ভয়ে তার ঘোমটা
সরালাম দেখি এতো তিশা।
সে হাসতে লাগলো আর আমি বোকা হয়ে তার
দিকে ছেড়ে থাকলাম।
কিছু সময় পর সে হাসি থামিয়ে বললো,
কিছু বুঝতে পারো নাই। আমি মাথা নেড়ে না বলি,
তখন সে বলে, তুমি না অনেক বোকা,
আমিই এতোদিন তোমার সাথে কথা বলেছিলাম,
তোমার সাথে দুষ্টমি করছিলাম, আমার নাম নীলাশা
বলে।
কথাটা শুনার পর আমি কি বলবো তখন কোন
ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না, শুধু জিজ্ঞেস করলাম।
– কেনো এমন করলে আমার সাথে (আমি)
– আমি পরিহ্মা করে দেখলাম কোন মেয়ে আমার
স্বামী কে প্রেমের ফাদে ফেলতে পারবে কি না? (তিশা)
– তো পরিহ্মা করে কি বুঝলে।
– এখন বুঝলাম আমার স্বামীকে কোন মেয়ে
প্রেমের ফাদে ফেলতে পারবে না
আমার স্বামী শুধু আমাকে ভালোবাসবে।
– একটা কথা জিজ্ঞাস করবো।
– হ্যাঁ করো
– আচ্ছা আমিতো তোমাকে আমার সম্পর্কে কিছুই
বলি নাই, আমার ফোন নাম্বার ও দেই নাই।
কিন্তু তুমি কি করে আমার ফোন নাম্বার পেলে,
কি করে আমার সম্পর্কে সব কিছু জানলে।
– তোমার সম্পর্কে সব কিছুই তোমার বোনদের
কাছ থেকে জেনে নিলাম, তোমার নাম্বারটাও বার বার
তাদের কাছ থেকে যোগার করে নিতাম, আর
আমি তাদের কে বলে দিয়েছিলাম তোমাকে না
বলার জন্য।
– ও আচ্ছা ননদ ভাবী মিলে আমাকে বোকা
বানাচ্ছিলে এতোদিন।
– হা হা হা, হ্যাঁ একটু করে বোকা বানালাম আচ্ছা
আমি একটা কথা বলবো।
– হ্যাঁ বলো।
– তুমি বলছিলে আমাকে সামনে পেলে ১০০
টা থাপ্পড় মারবে, এখন তো তোমার সামনে
আছি, ইচ্ছে হলে থাপ্পড় মারতে পারো অন্যায়
যে করেছি শাস্তিতো পেতে হবে।
এই বলে সে তার গাল আমার সামনে করে রাখে।
আমি তার গালে থাপ্পড় দেওয়ার জায়গায় আলতো
একটা চুমু এঁকে দিয়ে বললাম।
এখন থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করে না, ইচ্ছা করে
১০০ বার বলতে ভালোবাসি ভালোবাসি
ভালোবাসি। 💘অসমাপ্ত💘
গল্প—-”ঘৃণা ও প্রেম” পর্ব–১ থেকে পর্ব–১২&শেষ