সেলিব্রেটি স্বামী 2 !! Season- 02 !! Part- 03
আমার পেটের উপরে উঠে দাড়ালেন উনি।আমি চিৎকার করে উঠলাম।উনাকে বললাম আমার ভুল হয়েছে।প্লিজ জেতে দিন আমায়।আসেপাশে চোখ যেতে খেয়াল করলাম সকলে দাঁত বের করে হাসছেন।আমি উনার পা ধরে বসলাম।আস্তে করে বললাম, খুব কস্ট হচ্ছে আমার প্লিজ নামুন।উনি দু’পায়ের ভার একসাথে ছেড়ে দিলেন আমার উপর।লাফিয়ে নেমে দাড়িয়ে সয়তানি হাসি হেসে বললেন কেউ এক গ্লাস ফুটন্ত গরম পানি এনে দাও আমায়।এর হাতটাই আজ আমি গরম পানিতে চুবিয়ে ছাড়বো।এতো বড় সাহস দুই টাকার মেয়ে হয়ে আমাকে চড় মেরেছে।একে আমি নাকে খর দেওয়াবো, আমার জুতা মাথায় দিয়ে হাটাবো।তারপরও আমার শান্তি হবে কিনা জানি না।
উনার বলা কথাগুলো শুনে ভয়ে ও ব্যাথায় কুকড়ে রইলাম আমি।আমার শরীরে আর কোনো শক্তি পেলাম না।আমি নড়তেও পারলাম না আর।মুহূর্তে আমার চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো।আমি উনার মুখের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আস্তে করে বললাম,
-ভুল করলেন আপনি।আপনি যখন জানতে পারবেন আমি কে তখন চাইলেও নিজের ভুল সুধরাতে পারবেন না।
উনি নিচু হয়ে বসলেন আমার সামনে।অট্টহাসি দিয়ে উঠে বললেন,
-তাই নাকি? কে তুই যার জন্য আমি আমার ভুল সুধরাতে যাবো?
আমি আস্তে করে উনার হাতে নিজের হাত রাখলাম।উনি ছিটকে আমার থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে উঠে দাড়ালেন।আমাকে একটা লাথি মেরে ঠেলে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিলেন।আমি গড়িয়ে কিছুটা দূরে আসতেই আমার চোখদুটো এবার বন্ধ হয়ে গেলো।যখন চোখ খুললাম দেখতে পেলাম আমি হসপিটালে।বাইরে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ।মিডিয়া নিউজ বানাতে ব্যস্ত।আর আমি স্তব্ধ।
🍁
কিছু সময় পর আমি আস্তে করে উঠে বসতে চেস্টা করলাম।বালিশে পিঠ এলিয়ে দিয়ে আরাম করে বসতেই ধরফরিয়ে কেবিনের মধ্যে কয়েকজন ঢুকে পড়লো।দু’জন মহিলা পুলিশ, দু’জন রিপোর্টার আর একজন ডাক্তার।প্রথমে ডাক্তার এগিয়ে এসে আমাকে চেকাব করে বললেন,
-এখন কেমন লাগছে তোমার?
আমি মাথা কাত করে হ্যাঁ বোধক সম্মতি জানালাম।আস্তে করে বললাম,
-আলহামদুলিল্লাহ।ভালো লাগছে।
ডাক্তার উঠে দাড়ালে মহিলা পুলিশ দুজন এগিয়ে আসলেন।আমাকে বললেন,
-আপনি কমপ্লেন করলে এক্ষুণি গিয়ে আমরা এরেস্ট করবো সুপারস্টার আহান খানকে।পাবলিকলি একটা মেয়েকে এইভাবে অত্যাচার করার কোনো রাইট তার নেই।
আমি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে বললাম,
-আপনারা এসব জানলেন কিভাবে?
পিছনের থেকে রিপোর্টার মেয়ে দু’জন বলে উঠলেন,
-শুধু আমরা না সারা দুনিয়া যেনে গেছে।এমন কান্ড ভাইরাল হবার পর সুপারস্টার আহান খানের সব ফেন এখন থুথু ছুড়ছে তার মুখে। এমনকি সেখানে উপস্থিত প্রতিটা মানুষের উপর রেগে আছে পাবলিক।একবার তার ফেন পেজে যেয়ে দেখবেন কমেন্টে গালির জোয়ার।
আমি কিছু বললাম না চুপ হয়ে রইলাম।পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
-আপনি কি কমপ্লেন করবেন তার নামে?
আমি নিশ্চুপ হয়ে রইলাম। পুলিশ আবারও বললেন আমায়,
-দেখুন একটা মেয়ের সম্মানের ব্যাপার এটা।আপনি যদি কোনো পদক্ষেপ না নেন তাহলে সে কাল অন্য কারও সাথে আবার এমনটা করতে দু’বার ভাববে না।একজন সুপারস্টার হয়ে সে যেই কাজটা করেছে সেটা অন্তত জঘন্য।আমার তো মনে হয় তার অভিনয়ের ক্যারিয়ার এবার শেষ হতে চলেছে।পাবলিক আপনার সাথে আছে আপনি শুধু একবার রাজি হয়ে যান।সাথে তাদেরকেও শাস্তি দেওয়া হবে যারা তখন রাস্তায় দাড়িয়ে থেকে তামাশা দেখে হেসেছে।
আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই উত্তরের অপেক্ষা করছে।আর আমি নিশ্চুপ হয়ে ভাবতে লাগলাম কি বলবো তাদের!
🍁
-সুপারস্টার আহান খান আমি।ওই দুই’টাকার মেয়েটার জন্য আজ আমাকে অপমানিত হতে হচ্ছে।আমার এতো ফেন, এতো ফলোয়ার।যারা আমাকে এতো ভালোবাসে তারা আমাকেই গালি দিচ্ছে?
কথাটা বলে আছড়ে হাতের ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিলেন দূরে।ফোন ড্রপ খেয়ে দেয়ালে লেগে বাঢ়ি খেয়ে দুই তিন খন্ড হয়ে পড়ে রইলো।উনার এসিস্টেন্ট নাইরা এগিয়ে এসে বললেন,
-শান্ত হোন স্যার।
নাইরার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালেন উনি। নাইরা ভয়ে পেয়ে কেঁপে উঠলেই উনি নাইরার গালটা চেপে ধরলেন।নাইরার মুখটা ছেড়ে দিয়ে মাথাটা এবার দেয়ালের সাথে চেপে ধরে শক্ত গলায় বললেন,
-ভিডিও টা কে করেছিলো?
নাইরা ব্যাথায় কাতরিয়ে বললেন,
-আমি জানি না স্যার।
নাইরাকে উনি ছেড়ে দিলেন।দরজার দিকে ইশারা করে ধাক্কা দিয়ে আঙুল উঁচিয়ে বললেন,
-জাস্ট দু’ঘন্টা।তার মধ্যে আমি তাকে সামনে দেখতে চাই ই চাই। যেভাবেই হোক খুঁজে বের করো কে এই ভিডিও ভাইরাল করেছে।নইলে সবকিছু তছনছ করে ফেলবো আমি।
কথাটা বলে সজোড়ে ডেসিন টেবিলের গ্লাসে উনার হাতটা দিয়ে ঘুষি মারলেন।কাঁচ ভেঙে টুকরো গুলো নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরলো।আর উনার হাত বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ফ্লোরে গড়িয়ে পরতে লাগলো।অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো নিজের হাতের দিকে উনি।
চলবে,,,,