মিঃ নিরামিষ !! Part- 02
পুরো রুমকে বস্তি বানাই দিলো তুলি,,
দুপুরে খেয়ে আবার গিয়ে সেই রুমে লাফালাফি করলো তুলি,রুমটা বেশ লেগেছে, বারান্দাতে দাঁড়িয়ে একটা পাহাড় দেখা যায়,,,এটা জোস
তুলি এক লাফ দিতেই পা পিছলে গেলো নিচে পড়ে, বারান্দায় একটা আয়না ছিল মাঝারি সাইজের,ওটা ভেঙে চুরমার
ছোটবেলা থেকেই তুলি বাবাকে অনেক ভয় পায়,,কোথাও ব্যাথা পেলো সেটা লুকিয়ে রাখে,বাবা জানলে বকবে সেটা মনে করে,
পা কাটা গেছে, পা থেকে রক্ত বের হচ্ছে,তাড়াতাড়ি উঠে মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো
তুলি-কার আয়না কে জানে,যাক গা,আমি পালাই,নইলে আমাকে বকবে
তুলি কষ্ট করে হেঁটে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো
মা-কই ছিলি তুই
তুলি-ঐ তো হাঁটতে গেছিলাম
নিবিড়ের মা-নিবিড় যে এখনও কেন আসতেছে না,,ওরে বলসিলাম আজ তাড়াতাড়ি আসতে
তুলির বাবা-সমস্যা নেই,,আমরা তো এখন ওরে কদিন পরেই দেখবো,
তুলি পায়ের ব্যাথায় রোবট হয়ে আছে
বাবা-তাহলে আজ আমরা আসি,,
নিবিড়ের বাবা-আচ্ছা,,দিন ঠিক করবো কবে?
বাবা-এখন engagement হয়ে থাকুক,,তুলির পরীক্ষার পর নাহয় বিয়েটা হবে
মা-আচ্ছা,,
সবাই চলে গেলো,,
নিবিড়ের আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো
নিজের রুমে এসে শক খেলো নিবিড়,
তুলি যে রুমের ১২টা বাজিয়েছে সেটা ছিল নিবিড়ের রুম,
নিবিড়-আমার রুমের এই অবস্থা কেন?মা মা
মা-কিরে কি হইসে
নিবিড়-দেখো
মা-ইস কি অবস্থা আজকে তুলিরা সবাই এসেছিল,হয়ত কেউ এমন করসে,নাহলে আমরা কেউ তো তোর রুমে আসি না
নিবিড় টি শার্ট নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো,বের হয়ে নিজের রুম গুছিয়ে নিলো,ল্যাপটপ টা হাতে নিয়ে বারান্দার জন্য পা বারাতেই দেখলো বারান্দায় রাখা আয়নাটা ভেঙে আছে,আর নিচে রক্ত আর রক্ত
নিবিড়-এটা কার কাজ,উফ😡আমার রুমের এই হাল কে করেছে,,যেই করেছে তার পা বা হাত পুরা জখম হইসে,অনেক রক্ত ঝরছে
বুয়া,বুয়া আমার বারান্দাটা পরিষ্কার করে দাও
নিবিড় গিয়ে খাটে বসলো
বুয়া-আল্লাহ গো এত রক্ত😱আপামনি তো তাইলে শ্যাষ
নিবিড়-কে?
বুয়া-আরে তুলি আপামনি,যার লগে আপনার বিয়া ওইবো,তুলির কথা শুনে নিবিড়ের কাশ উঠে গেলো,যেভাবে সেদিন শাড়ী খুলে ফেলসিলো,একটা dangerous মেয়ে,ওর রক্ত এগুলা?
বুয়া-হ মনে তো হইতেসে,কারন উনি আপনার রুমে ছিল সারাদিন
নিবিড়-এবার বুঝলাম আমার রুমের ১২টা কে বাজিয়েছে,,
তুলি রুমে এসে ভালো করে পা টিপে টাপে দেখলো কাঁচ ঢুকেছে,বাবা যদি জানে বিয়ের আগে এমন করসি তাইলে বকবে অনেক
মা-কিরে তুলি চা বানাতে আয়,বিকাল হয়ে গেসে চা বানাবি না
তুলি-আসতেছি
তুলি অনেক কষ্টে হেঁটে গেলো রান্নাঘরে,
ভাবী-এই তোর পায়ে কি হইসে?
তুলি-কিছু না তো
ভাবী জোর করে ধরে দেখলো কাটা গেসে রক্ত বের হচ্ছে
তুলি-ভাবী প্লিস কাউরে বলিও না
ভাবী সবাইরে বললো শপিংয়ে যাবে,,এটা বলে তুলিকে নিয়ে হসপিটালে গেলো,,সেখানে ওর পায়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে নিলো
তুলি-কেন করলা ব্যান্ডেজ, বাবা দেখলে?
ভাবী-আমি সামলে নিব,এটা না করলে ইনফেকশান হয়ে যেতো,তুমি তো জীবনেও বলবা না যে তুমি ব্যাথা পাইসো
বাসায় আসার পর তুলি সেলোয়ার টেনে পা ঢেকে ফেললো,সোজা রুমে চলে গেলো,,
পরেরদিন মা বললো আমাকে নাকি ঐ নিরামিষের সাথে restaurant এ দেখা করতে হবে,উফ
সকাল ১০টাই যেতে বলসে,, একদম জিন্স আর টপস পরে গেসি দেখা করতে আজকে ব্যাটাকে তাড়িয়ে ছাড়ব
যেতে যেতে ১০:০১বেজে গেসে,ওমা নিরামিষ আগে থেকেই বসে আছে,আজকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়েছে,একটা হাসি দিলো,রহস্যময় হাসি,আমি দাঁত বের করে হেসে ভ্যাটকায় দিলাম,ল্যাঙরাই ল্যাঙরাই গিয়ে বসলাম
নিবিড়-তোমার পায়ে কি হইসে?
তুলি-(দেখসো কি অসভ্য,আমাকে তুমি বলে,এখনও চিনে না,তুমি বলা শুরু করসে)
নিবিড়-ওভাবে তাকানোর কিছু নেই,আমার student দের আমি তুমি বলেই সম্বোধন করি
তুলি-আমি তো আপনার student না
নিবিড়-কদিন পর হবেন,বিয়ের পর তো আপনাকে আমার ভার্সিটিতে ভর্তি করাবো,
তুলি-(আগে বিয়ে হোক তারপর,হবে কিনা দেখিস)
নিবিড়-বললে না পায়ে কি হইসে
তুলি-(তোর আয়নায় পড়ে কাটা গেসে)ইয়ে আসলে সিড়ি থেকে পড়ে গেছিলাম
নিবিড়-ওহ,তো ব্যান্ডেজ লাল হয়ে আছে,সিড়ি থেকে পড়লে তো শুনসি মচকে যায়, রক্ত বের হয় তা জানতাম না
তুলি-(কি বিপদ রে বাবা)না আসলে আমি সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে আবার পড়সি,তাই ডাবল স্কয়ারে রক্ত বের হচ্ছে,
নিবিড় অনেক কষ্টে হাসি থামালো
তুলি-আর কিছু?আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই
নিবিড়-হুম বলো
তুলি-শুনুন,আমার এখন বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নাই,আমার ex আছে,আমি ওরে লাভ করি,,এখনও,,আপনি প্লিস না করে দেন বিয়েতে,বলেন যে আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি
নিবিড়-কিন্তু আমার কাছে তো তোমাকে ভালো লাগে
তুলি-আজব,দেখেন না আমি জিন্স পরি??টপস পরি,শয়তানি করি
নিবিড়-and I love it
তুলি-শুন,তোরে সোজা কথা কইসি তোর কানে যায় নাই??ব্যাকাই বলি তাহলে,তুই গিয়ে তোর মারে কইবি আমার মেয়ে পছন্দ হয়নি
নিবিড়-ওকে বলবো তুলি বলেছে এটা তোমাকে বলতাম
তুলি -stupid!!! আমার এই বিয়েতে মত নাই বলে দিচ্ছি
নিবিড়-আমার আছে,,কি খাবা বলো,অর্ডার দিব
তুলি-তোর মাথা, তোর গাল
নিবিড়-বিয়ের পর তো মাথা খাবাই
তুলি-(আজকে শালারে ফকির বানাবো)
ওয়েটারকে ডেকে ২৫টা dish অর্ডার করলো তিশা
নিবিড় নরমাল আছে
তুলি নিবিড়ের দিকে তাকাচ্ছে আর খেয়ে যাচ্ছে,,নিবিড় কফি খাচ্ছে শুধু
তুলি -বিয়ের পর আরও বেশি খাব আমি হুহ
নিবিড়-ওকে,এমনিতেই তোমার যে শরীর বেশি খেলেই ভালো,আমার আবার গুলুমুলু পছন্দ
তুলি-তো আমি তো গুলুমুলু না,বিয়ে cancel করেন
নিবিড়-পরে তো হবা,
তুলি-আপনার বয়স কত?
নিবিড়-২৭
তুলি-আল্লাহ গো,এত বুড়া আপনি
নিবিড়-তোমার তো ১৯
তুলি-তো?৮বছরের বড় আপনি,এত বুড়া ছেলেরে আমি বিয়ে করবো না,এটা বলে last বার্গারটা মুখে দিতেই তুলির মাথা গুলিয়ে আসলো,বমি আসতেছে,,উঠে অনেক কষ্টে বাথরুমে চলে গেলো তুলি,
নিবিড়-কি?আর খাবা,অর্ডার দিই?
তুলি-😒আমি এই বিয়ে cancel করেই ছাড়ব
তুলি চলে গেলো restaurant থেকে,
নিবিড় দেখলো তুলি কষ্ট করে হাঁটতেছে,পারতেছে না
নিবিড়-ওয়েট ওয়েট
তুলি-কি
নিবিড়-তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিব চলো
তুলি-অচেনা কারোর সাথে আমি গাড়ীতে উঠি না
নিবিড় চশমা ঠিক করতে করতে তুলির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো
তুলি-এটা কোন ধরনের অসভ্যতামি,ছাড়ুন,নইতো চিৎকার করবো
নিবিড় তুলি টেনে গাড়ীতে বসিয়ে দিলো,জানালায় দাঁড়িয়ে বললো আমার মা বলেছে ঘরের লক্ষীকে বাসায় সেফলি দিয়ে আসবি
তুলি আর কথা বললো না,রাগে ফেটে যাচ্ছে তুলির মাথা
তুলিকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে নিবিড় বাসায় ফিরলো,,
মা-কিরে মেয়ে কেমন লাগলো?
নিবিড়-সুন্দর, বিয়ে করলে এরেই করবো
মা-😍😍
তুলি বাসায় এসে হনহনিয়ে বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
তুলি-বাবা শুনো,আমি এই বিয়ে,, , ,,,
বাবা-নিবিড়ের family ফোন দিসে,নিবিড় রাজি,,এবার engagement এর ডেট ঠিক করতে হবে,
তুলি মুখ গোমড়া করে চলে আসলো রুমে
চলবে♥