বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 04

এই দিকে আবির ফ্রেশ হয়ে তাওয়ালটা বিছানায় রেখে বারান্দায় যায় আকাশের দিকে অনেক ক্ষন তাকিয়ে থাকে,,যখনই তিথির কথা গুলো আর ওই সময় টা মনে পড়ে তখন প্রচুর রেগে যায়,,,দাঁতে দাঁত চেপে বলে
আবিরঃ তোমাকে আমি ছাড়বো না মিস বকবক 😠
এই দিকে তিথি মিনমিন করে আবিরকে গালি দিচ্ছে
তিথিঃ উফগ আজকে ওই বজ্জাত এনাকন্ডা আমার পুরো মাথা টা খারাপ করে দিলো ইচ্ছে তো করছে রস মালাই এর সাথে চুবাই খাই হু
মামানি খাবার নিয়ে রুমে এসে দেখে তিথি ওয়াশরুমে গান গাইছে😂মামানি রেগে গিয়ে দরজায় টুকা দিয়ে বলে
মামানিঃ তুই কি জীবনে মানুষ হবি না তিথি,,,বাথরুমে কি কি বকবক করছিস একা একা হুম,,তাড়াতাড়ি বের হো মাইয়া
তিথিঃ আসছি

মামানি খাবার রেখে পুরো রুম গুছাতে থাকে,,,
তিথি বের হয়ে তাওয়াল টা রেখে দিয়ে মামানির আচঁল দিয়ে মুখ মুছে বলে
তিথিঃ ওহ জানেমান প্রচুর ক্ষেধে পেয়েছে তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও,,,
মামানিঃ বাথরুমে কার চৌদ্দগুষ্টি উদার করছিস হুম
তিথিঃ কিছু না বাদ দাও,, এখন খেতে দাও প্লিজ খুব ক্ষেধে পেয়েছে মনে হচ্ছে ইঁদুর ফুটবল খেলছে পেটে
মামানিঃ আচ্ছা বস,,
মামানি নিজের হাতে খাইয়ে দেয়,,,তিথি ও প্রতি দিন রাতে মামানির হাতে না খেলে সে খায় না,,,খুব ভালোবাসে তার মামানি আর মামাকে,,,ঝগড়াটি প্রচুর কিন্তু তার মন টা পুরো বাচ্চা,,,,
দেখতে খুবই সুন্দর,,,তার হাসি তো সব চেয়ে বেশি সুন্দর,,,,, চুল গুলো অনেক লম্বা,,, তিথি বেশি লম্বা না ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি,,,, বেশি ফর্সা না,,কিন্ত অনেক মায়াবী দেখতে,,,,,
মামানিঃ আজকে রিতুর সাথে যে ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ছে ওর সাথে না দেখা করার কথা ছিলো? (ভাত মেখে তিথির সামনে ধরে)
তিথিঃ হুম ছিলো তো (মুখে নিয়ে খাবার)
মামানিঃ তো কি হলো?
তিথিঃ দেখা হয় নাই ওই ছেলের সাথে,, তার আগে সে রকম ঝগড়া লাগছে
মামানিঃ কার সাথে
তিথিঃ মামানি একটা বজ্জাত এনাকন্ডার সাথে আমার
মামানিঃ কিইই তুই আজকে ও আবার ঝগড়া করলি উফফ
তিথিঃ আমার দোষ ছিলো না একটু ও,,
তিথি খুলে বললো, মামানি ঠিক বুজতে পারছে আসলে কে দোষ করছে,,,কিছু না বলে শুধু বলে
মামানিঃ বড় হচ্ছিস একটু বুজে শুনে কাজ করিস এখন,,,,,
তিথিঃ মানে কি?
মামানিঃ কিছু না চুপচাপ শুয়ে পড়,,,আর শুন কালকে রাইশা আসবে ওকে,তাড়াতাড়ি ভার্সিটি থেকে এসে যাইস
তিথিঃ কালকে তো প্রথম দিন ভার্সিটির
মামানিঃ হুম তাই তো বললাম তাড়াতাড়ি আসিস,
তিথিঃ ওকে ম্যাডাম
মামানি মুচকি হেসে চলে যায় তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে
তিথি হুম বলে বারান্দায় গিয়ে বসে থাকে,,,হাতে একটা ডাইরি নিয়ে যেখানে সে তার সব চেয়ে প্রিয় মুহূর্ত গুলো লেখে৷,,,, আজকে কেন জানি আবির এর সাথে ঝগড়া টা লেখতে ইচ্ছে করছে তার ব্যস আর কি লেখে ফেলছে,,,,,খোলা চুল গুলো বাতাসে উড়ছে,,,আকাশের চাঁদ টা ও যে আজ তিথির উপর রশনি ছড়াছে,,
কিছু ক্ষন চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ জানিস চাঁদ মামা তোর পাশে যে তারা★ অই টা আমার আম্মু,,,আর আম্মু জানো তোমাকে খুব মিস করি,,,আম্মু কেন ছেড়ে গেলে আমায়,,,জানো আম্মু মামা মামানি আমাকে খুব ভালোবাসে,কিন্তু তোমাকে প্রতি রাতে খুব মিস করি আম্মু😢আই মিস ইউ আম্মু,,
চোখের কোণায় কিছু টা পানি এসে জমে যায়,,,,,কিন্তু কখনো পড়তে দেয় না,,,,তিথি মনে করে চোখের পানি মানুষকে দুর্বল করে তাই সে কখনো চোখের পানি পড়তে দেয় না,,,মেয়েটা অন্য রকম সবার থেকে,,,কখনো নিজের কষ্ট কাউকে বুজতে দেয় না,,হাসি খুশি ঝগড়া এই সব এ মেতে থাকে সব সময়,,, কখনো দুর্বল হতে দেয় না নিজেকে,,,,
কিছু ক্ষন তারার সাথে কথা বলে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে,,,,পুতুল নিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস তার,,,তিথি আবার ঘুম পাগলী প্রচুর,,,, শুয়ার সাথে সাথে ঘুমের রাজ্যে,,,,,
এই দিকে,,,,,,
আবির এর একটা জিনিস শখ রাতে গিটার বাজানো,, অনেক সুন্দর গিটার বাজায় আর তার গলার সুর তো অসাধারণ,,,,
গিটার টা নিয়ে বাজানো শুরু করে চোখ বন্ধ করে,,,কিন্তু চোখ বন্ধ করে তিথির সে প্রথমে নিচে পড়ে থাকা চেহারা টা সামনে আসে,,,,বিরক্তি ভাব নিয়ে যখন তিথি নিজে নিজে বকবক করে ওই চেহারা টা,,,,সত্যি মেয়েটা যে অনেক কিউট,,মায়াবী, ,কিন্তু আবার মনে পড়ে যায় তিথি তার কলার ধরে ঝগড়া করেছে আবার মাথায় সুপ ঢেলে দিচ্ছে,,
আবির তিথির চেহারা টা দেখার সাথে সাথে চোখ খুলে ফেলে,,বিরক্তি ভাব নিয়ে গিটার টা পাশে রেখে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে,,,, সেম অবস্থা চোখ বন্ধ করলে তিথির চেহারা টা ভাসছে,,,,আবির প্রচুর রেগে গিয়ে নিজে নিজে বলে
আবিরঃ যত ক্ষন না আমি ওই মেয়েকে শাস্তি দিচ্ছি আমার ঘুম আসবে না বুজছি,,,
অনেক চেস্টা করে কিন্তু কিছুই তে আবিরের ঘুম আসে না,,,,
সকালে,,,,
তিথি ফজরের আজান এর সাথে উঠে,,, উঠে অযু করে নামাজ পড়ে বারান্দায় যায়,,সকাল সকাল প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো অসাধারণ যা তিথি কখনো মিস করে না,,,,,তার খুব ভালো লাগে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে,,,, তার হাতের চা ছাড়া তো মামা একদিন ও চলতে পারে না,,,,
তিথি ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি কিচেনে যায়,,,চা টা বানিয়ে মামার রুমে গিয়ে দেখে মামা পেপার পড়ছে,,পাশে চায়ের কাফ টা রেখে মামার কোলে মাথা রেখে পেপার এ চোখ দেয়,,মামানি মুচকি মুচকি হাসে তিথির কান্ডে কারণ তিথি প্রতি দিন এমন করে,,,
মামাঃ আজকে আমার মায়ের তো প্রথম ক্লাস তাই না,,প্রথম দিন ভার্সিটির,,,
তিথিঃ হুম মামু,,,জানো মামু কেমন যেন লাগছে আজকে,,,আচ্ছা চা টা খেয়ে নাও ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে,, দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি আসি
মামাঃ আচ্ছা নাস্তা করে নিস তারপর যাবি
তিথি হ্যাঁ বলে চলে যায়,,

তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হয়ে যায়,,
রিতু রাস্তায় অপেক্ষা করছে এক সাথে একটা রিকশা ডেকে যেতে লাগে,,রিতু মুখ গোমড়া করে বলে
রিতুঃ কালকে তোর জন্য আমি অই ছেলের সাথে দেখা করতে পারি নাই
তিথিঃ আমি কি করলাম আজিব,,আমার দোষ ছিলো নাকি ওই বজ্জাত এনাকন্ডার হুম
রিতুঃ না তোর দোষ কখনও থাকবে,,,
তিথিঃ অই মানে কি হুম
রিতুঃ কিছু না,,এখন নাম এসে গেছি
রিতু আর তিথির আজকে প্রথম দিন ভার্সিটিতে,,ভার্সিটিতে ঢুকে যেন দুইজন এ অবাক,,, ভার্সিটি টা অনেক বড় ও সুন্দর,, দেখতে অসাধারণ লাগছে,,,,তিথি আর রিতু তো পুরো অবাক,,,,
রিতুঃ ওয়াও তিথি কি সুন্দর রে ভার্সিটিটা
তিথিঃ হ্যাঁ রে
দুইজনে কথা বলতে বলতে ভিতরে যায়,,কিন্তু ভার্সিটির কিছু বড় ভাই ও আপুরা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে নতুন কাউকে ভার্সিটিতে আসতে দেখলে তাদের ক্লাস নেয়,,,সেম আজকে ও রিতু ও তিথিকে দেখে ডাকে
আকাশঃ এই মেয়ে এই দিকে আসো
তিথি আর রিতু চারপাশে তাকিয়ে দেখে আশেপাশে কেউ নাই,,
তিথিঃ আমাদের ডাকছেন??
তিথির আওয়াজ পেয়ে ঘুরে তাকায় আবির😂
আবির ওই ভার্সিটির সিনিয়র স্টুডেন্ট,,,আর এই গ্রুপের লিডার 😀আবির এর কথায় সবাই উঠে বসে,,,,আবির যা বলে তাই হয় তার উপর কেউ কথা ও বলে না ভয়ে,,,,আবির চোখ থেকে সানগ্লাস সরিয়ে নিজে নিজে বলে
আবিরঃ মিস বকবক এখানে???
নিয়া আবিরের কাঁধে হাত রেখে বলে
নিয়াঃ বেবী তুমি চিনো ওকে??
নিয়া ভার্সিটির দেখতে সুন্দর,,, ছোট ছোট ড্রেস পড়ে সব সময়,,, আর আবিরের উপর তো সে ক্রাশ,,নিজেকে আবিরের জিএফ মনে করে যদিও আবির কিছু বলে না আবার পাত্তা ও দেয় না,,,,,
আবিরঃ একটা বেয়াদব অসম্ভব মেয়ে,,,,
তিথি আকাশের সামনে এসে বলে
তিথিঃ জ্বি বলুন,,,,,,
আকাশঃ নতুন নাকি??
রিতুঃ জ্বি

তিথিঃ কেন বিরানি দিবেন নাকি নতুন হওয়ায়
আকাশঃকিইইই?ওই মেয়ে আগে কেন কথা বলো হুম(তিথিকে উদ্দেশ্য করে)
তিথিঃ কেন কথা বলা কি নিষেধ?
আবির চোখে সানগ্লাস টা পড়ে নিয়ে উঠে এসে তিথির সামনে দাঁড়ায় আর মেঘের হাত থেকে পানির বোতল কেড়ে নিয়ে সব পানি তিথির মুখে ছুড়ে মেরে বলে
আবিরঃ ওয়েলকাম টু হেল মিস বকবক (ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে 😈)
রিতু আবিরকে দেখে কিছু টা ঘাবড়ে যায়,,,তিথির নুখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে,,,,ওড়না দিয়ে মুখে মুছে সামনে তাকিয়ে দেখে আবির চোখে কালো সানগ্লাস পড়ে মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,, তিথির রাগ টা এখন প্রচুর বেরে যায় আবিরকে দেখে
তিথিঃ বজ্জাত এনাকন্ডা তোর সাহস হয় কি করে আমার মুখে পানি মারার😠
চলবে,,,,,,