বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 14
দরজায় নক দেওয়ায় মা এসে খুলে দেয়,,,খুলে দেখে তিথি একটার হাত নিজের ঘাড়ের পিছনে রেখে ছেলেটিকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটির শার্ট পুরো ভিজা মুখের অবস্থা খুব খারাপ লাল লাল চাপ পড়ে গেছে পুরো মুখে,,,
মাঃ এই ছেলে কে আবার??
তিথিঃ উফফ মামনি বাহিরে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করবে নাকি ভিতরে ও আসতে দিবে,,
মাঃ হ্যাঁ হ্যাঁ আয়,,
মা ও তিথির সাথে ধরে আবিরকে বসায়,,আবিরের অবস্থা অনেক খারাপ চোখ পুরো লাল হয়ে আছে,,,তিথি তার মায়ের কাছে গিয়ে বলে
তিথিঃ মামনি উনি আমার বস অই যে আবির রহমান বলেছিলাম না সে,,
মাঃ ওহ আচ্ছা অই ছেলে কত সাহায্য করেছে তোকে খুব ইচ্ছে ছিলো দেখার
তিথি তার মায়ের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে
মাঃ কি?
তিথিঃ কিছু না,,, আসলে উনার নাকি ঝালে এলার্জি আছে আর ঝাল খেয়েই এমন অবস্থা,,,
মাঃ ঝালে এলার্জি জেনে ও কেন ঝাল খেলো,,দেখ তো পুরো চেহারা কেমন হয়ে গেছে বেচারা
আবির কিছু বলতে পারছে না কিন্তু মা মেয়ের কান্ড দেখে খুব রাগ লাগছে তার কেন সে এসেছে এখানে,,,
মাঃ তিথি ওকে তোর রুমে নিয়ে যায় আর তোর বাবার একটা পাঞ্জাবি দে শার্ট তো পুরো ভিজিয়ে ফেলছে,,, আর আমি ওর জন্য কিছু খাবার বানিয়ে আনি আর এলার্জির ওষুধ
তিথিঃ আন্দাযে কিসের ওষুধ আনবে মামনি,,পরে মানুষের ছেলেকে সোজা উপরে তুলে দিবে তুমি
মাঃ চুপ একদম ফাজিল মেয়ে,,,কাউকে ফোন করে জিজ্ঞেস কর আমি ওর জন্য কিছু নিয়ে আসি,,,,
তিথি আবিরের বাসায় ফোন করে জেনে নেয় যে এই সময় কি করতে হয়,,,
এই দিকে আবির তিথির রুমে শুয়ে আছে,,,তিথির রুম টা বাচ্চাদের থেকে ও খারাপ আবিরের নজরে,,চারপাশে পুতুল খেলনা অনেক আর বিছানার উপরে তো তারাবাতি,,
তিথি তার বাবার একটা সাদা পাঞ্জাবি এনে আবিরকে দেয়,
তিথিঃ স্যার এইটা নেন আর চেঞ্চ করে নেন,,আপনার ওষুধ এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে আমার বাবা গিয়েছে ওষুধ আনতে
আবিরঃ এর কোনো দরকার নাই আমি ঠিক আছি,,,
তিথিঃ দেখতেছি আপনি কত ঠিক আচ্ছা আপনি চেঞ্চ করে নেন
তিথি রুম থেকে চলে যায় আবির চেঞ্চ করে তিথির বাবার পাঞ্জাবি টা পড়ে কেমন যেন লাগছে আবিরকে তবুও আবির চুপ করে আছে,,,তিথির মা খাবার নিয়ে আসে,,
মাঃ কিছু খেয়ে নাও বাবা তারপর ওষুধ খেতে হবে
আবিরঃ আন্টি এইসব এর দরকার নাই প্লিজ আমি ঠিক আছি,,আর অনেক টাইম হয়ে গেছে আমার যাওয়া উচিত প্লিজ
মাঃ একটু সুস্থ হলে চলে যাইও এখন কিছু খেয়ে নাও,,,
আবির হালকা খেয়ে নেয় এই সময়ে তো ওষুধ ও নিয়ে আসে তিথির বাবা,,,ওষুধ খেয়েই যেন কিছুটা আরাম লাগে আবিরের একটু রেস্ট নেয়
এই দিকে তিথি ড্রইংরুমে বসে বসে টিভি দেখছে আর ভাবছে
তিথিঃ আজ বেশি করে ফেলছি,,,ঝাল টা না দিলে হয়তো এমন হতো না,,,এইভাবে ঝাল দেওয়ায় আজ এমন হলো উফফফ তিথি তুই একটা গাঁধা আসলেই,,,
মা এসে দেখে তিথি কি যেন ভাবছে,,
মাঃ কিরে কি ভাবছিস?
তিথিঃ কই কিছু না তো,,,
মাঃ আচ্ছা আবির কি ঘুমিয়ে গেছে নাকি জেগে আছে দেখে আয় যদি কিছু লাগে তার,,,
তিথি গিয়ে দেখে আবির ঘুমিয়ে পড়ে,,আবিরের মুখের লাল চাপ গুলো এখনও আছে কিন্তু আগে থেকে অনেক কম তিথি আর কিছু না বলে সামিরের রুমে চলে যায় আর অইখানে ঘুমিয়ে পড়ে,,
সকালে আবিরের ঘুম ভাঙ্গে ঘুম থেকে উঠে দেখে সে তিথির রুমে অবাক হয়ে যায় অনেক টা বেলা হয়ে গেছে আর কেউ তাকে ডাকে নাই,,,আবির উঠে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে যায় তিথির মা নাস্তা টেবিলে দিয়ে বলে
মাঃ সে কি উঠে গেলে যে এতো তাড়াতাড়ি
আবিরঃ আন্টি ডাকেন নাই কেন?অনেক দেরি হয়ে গেছে
মাঃ তুমি অসুস্থ ছিলে তাই,,আচ্ছা নাস্তা করে নাও আসো
আবির চারপাশে তাকিয়ে দেখে তিথি নাই,,
আবিরঃ আন্টি তিথি কোথায়?
মাঃ ও তো অনেক আগে অফিসে চলে গেছে,,,
আবির নাস্তা করে নেয় কিছু ক্ষন তিথির মায়ের সাথে কথা বলে চলে যায় নিজের বাড়ি,,,
আবির আর তিথির মধ্যে সব ঠিকঠাক চলে আবির আর তিথিকে তেমন অত্যাচার করে না আর তিথি ও না,,আবির তিথির মধ্যে একটা ভাব হয়,,,আবিরের কাছে তিথিকে কেন জানি আসতে আসতে অনেক ভালো লাগে আর তিথির মনে কোথাও না কোথাও আবিরের জন্য জায়গা হয়ে যায়,,,দুইজন দুইজনের প্রতি ভালো লাগা টা বুজে উঠতে পারছে না,,
অনেক দিন পর,,
আরিশার জন্য একটা ভালো বিয়ের প্রস্তাব আসে রুমে গিয়ে কান্না করতে থাকে,,আবির আরিশার কাছে এসে বলে
আবিরঃ যদি এই ছেলেকে পছন্দ না হয় সোজা বলে দিলে হয় এইভাবে বাচ্চাদের মত কান্না করার মানে হয় না,,
আরিশাঃ ভাই আমি একজন কে অনেক ভালোবাসি,,
আবিরঃ তা বুজতে পেরেছি কিন্তু কে শুনি,,,
আরিশাঃ আমান,,ভাই আমি আমানকে ছোট থেকে পছন্দ করি প্লিজ ভাই কিছু করো প্লিজ
আমানের নাম টা শুনে আবিরের মনে কেমন যেন লাগলো,,,কিন্তু আরিশার চোখের পানি গুলো যেন তাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে,,,চোখের পানি মুছে বলে উঠে
আবিরঃ আমি বাবা মায়ের সাথে কথা বলবো,,চিন্তা করিস না তোর বিয়ে আমানের সাথে হবে,,
আরিশাঃলাভ ইউ ভাই লাভ ইউ সো মাচ,,,
আরিশা অনেক হেপ্পি এই শুনে যে আমানের সাথে তার বিয়ে হবে ফাইনালি, আবির তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে সবাই রাজি কারণ আমান অনেক ভালো ছেলে তাকে সবাই পছন্দ করে,,,,আমানের ফ্যামিলি তে বিয়ের প্রস্তাব নেওয়া হয় আরিশার জন্য আমানের ফ্যামিলি ও রাজি হয়ে যায়,,দুই ফ্যামিলি অনেক হেপ্পি এক হবে এই খুশিতে,,,
আমান কথাটা শুনে যেন থমকে যায়,,আরিশার সাথে দেখা করে একটা পার্কে,,,আরিশা তো খুশিতে আত্নহারা এই ভেবে যে আমান তার সাথে একা দেখা করছে
আমানঃ আরিশা আমার কিছু কথা আছে যা জানার খুব দরকার তোমার,,,
আরিশাঃ আমান আমি জানি তুমি ও আমাকে পছন্দ করো,,,
আমানঃ হ্যাঁ করি কিন্তু নিজের ছোট বোনের মত,,,কখনো অই নজরে তোমায় দেখি নাই যেমন তুমি ভাবছো,,,আবিরের বোন মানে আমার বোন এইটাই আমার কাছে সত্যি,,,
কথাটা শুনে যেন আরিশা থমকে যায় তবুও সাভাবিক ভাবে বলে
আরিশাঃ এখন তো জানলে যে আমি তোমাকে পছন্দ করি,,আমি তো কখনো তোমায় অই নজরে দেখি নাই ছোট থেকে ভালোবেসে এসেছি,,,আমার মনে প্রাণে শুধু তুমি আমান,,,আমাদের বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে
আমানঃ কিন্তু আমি অন্য কাউকে কথা দিয়েছি আরিশা যে আমার বউ সে হবে
আরিশার মনে যেন অই সময় ভয় ঠুকে যায় কথাটা শুনেই,,,আমানের হাত ধরে বলে
আরিশাঃ আমি ছোট থেকে তোমার বউ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি,,,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আমান অনেক বেশি,,,
আমানঃ কিন্তু আমি তোমায় কখনো ভালোবাসি নাই নিজের ছোট বোনের নজরে দেখেছি,,,সব সময় তোমাকে নিজের বোন ভেবেছি,,আরিশা আমি অন্য কাউকে কথা দিয়েছি আমি অন্য কাউকে অনেক ভালোবাসি,,,তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না প্লিজ বুজার চেস্টা করো,,তুমি বাচ্চা আবেগ কাজ করছে প্লিজ আবেগ গুলো সামলাও
আরিশা অইখান থেকে উঠে দৌড়ে চলে যায়,,,কান্নায় যেন সে কিছু দেখছেই না,,,সব কিছু যেন অন্ধকার হয়ে আসছে,,,আমান অনেক চেস্টা করে আরিশাকে বুজানোর কিন্তু আরিশা কিছু বুজতে চায় না,,,,
আরিশা বাড়িতে এসেই নিজের রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দেয়,,সব জিনিস ভাঙ্গচুর করতে থাকে সবাই অনেক চেস্টা করে খুলার কিন্তু কেউ পারছে না,,,
আয়নায় ফুলেরদানি মেরে ভেঙ্গে ফেলে এক টুকরো আয়না ভাঙ্গা নিয়ে নিজের হাতে আঘাত করতে থাকে আর চিৎকার করে বলতে থাকে
আরিশাঃ আই লাভ ইউ আমান,,,আই রেলি লাভ ইউ আমান
এইদিকে আবির ও বাড়িতে আসে দৌড়ে যায় আরিশার রুমের সামনে
মাঃ আবির দেখ না আরু যখন থেকে আমানের সাথে দেখা করে এসেছে তখন থেকে নিজের রুমে ঢুকেই সব জিনিস ভাঙ্গচুর করছে আর কান্না করছে কিছু কর মেয়েটা রুমে কি করছে কে জানে প্লিজ কিছু কর আমার মেয়েটা কে জানি কি হয়েছে
আবিরঃ আরু দরজা খুল,,, দেখ আমি এসে গেছি সব ঠিক করে দিবো আমি প্লিজ বোন আমার দরজা খুল,,
আরিশার হাতের রক্তে মেঝেতে ভরে যায়,,আরিশা কান্না করছে আর শুধু বলেই যাচ্ছে
আরিশাঃ আই লাভ ইউ আমান
আবির আর বাড়ির কাজের লোক মিলে আরিশার রুমের দরজা ভাঙ্গে অনেক চেস্টার পর দরজা ভাঙ্গতে পারে,,দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে যেন থমকে যায় সবাই নিচে আরিশা পড়ে আছে রক্তাক্ত অবস্থায়,,,,পুরো রুমের জিনিস ভাঙ্গা এলো মেলো,,,আবির আরিশাকে তাড়াতাড়ি কোলে নিয়ে দৌড়াতে থাকে মেডিকেল যাওয়ার জন্য,,,
গাড়িতে বসিয়ে ড্রাইভ করছে পাগলের মত,, নিজের বোনের অবস্থা এমন দেখে কোন ভাই যে নিজেকে শান্ত রাখতে পারবে না,,,ছোট থেকেই আরিশা আবিরের অনেক কাছের,,নিজের বোনকে কখনও সামান্য আঘাত পর্যন্ত লাগতে দেয় নাই কিন্তু আজ এমন অবস্থা দেখে যেন তাত কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে
আবিরঃ কিছু হবে না তোর সব ঠিক হবে সব,,,
আরিশাঃ ভাই আমি আমান কে ভালোবাসি অনেক বেশি,,
আবিরঃ আমি জানি প্লিজ একটু সহ্য কর বোন সব ঠিক হয়ে যাবে আমরা এখনই মেডিকেল এসে যাবো এখনই,,,
আরিশাঃ আমান আমাকে ভালোবাসে না ভাই,,,সে অন্য কাউকে ভালোবাসে আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমার আমান চাই ভাই আমার আমান চাই,
আরিশা আরো জোরে কান্না করতে থাকে,,,কান্না করতে করতে বেঁহুশ হয়ে যায়,,,আবির আরিশার কথা গুলো শুনে অনেক রেগে যায় আমানের উপর কিন্তু এই সময় তার রাগের চেয়ে বড় আরিশার জীবনে বাঁচানো,,,
কিছু ক্ষন পর মেডিকেল আসে,,,আই সি ইউ তে নিয়ে যাওয়া হয় আরিশাকে,,,আরিশার চিকিৎসা করা হচ্ছে,,আবিরের মা বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এমন অবস্থা হবে কেউ ভাবতে ও পারে নাই,,,
অনেক ক্ষন পর ডাক্তার ভের হয়,,
আবিরঃ ডাক্তার আমার বোন???
ডাক্তারঃ দেখুন অনেক রক্ত গিয়েছে আগে থেকে ঠিক আছে কিন্তু উনাকে টেনশন দিবেন না,,,উনার অবস্থা ওতোটা ভালো না একটু সময় লাগবে কিন্তু যদি উনাকে টেনশন দেওয়া হয় তাহলে হয়তো বুজতে পারছেন,
মাঃ আমার মেয়েটার এমন কি হলো যে এইভাবে সে (কান্না করে)
আবির গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়,,তার কেন জানি অশান্তি ছাড়া আর কিছু ভালো লাগছে না,,,,নিজের মায়ের চোখের পানি বোনকে এমন অবস্থাতে দেখে,,,তিথির বাড়ির সামনে এসে তিথিকে ফোন করে
তিথিঃ স্যার আপনি এই সময়ে,,
আবিরঃ একটু নিচে আসবে?
তিথি তাড়াতাড়ি নিচে এসে দেখে আবিরের চেহারা কেমন যেন হয়ে আছে,,
তিথিঃ স্যার আপনি ঠিক আছেন?আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন,,,
আবির তিথিকে জড়িয়ে ধরে আর কান্না করে দেয়,,আবির কারো সামনে কান্না করতে পারছে না কিন্তু কেন জানি তার খুব ইচ্ছে করে তিথিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে,,,কান্নায় যেন ভেঙ্গে পড়ে সে আর তিথি আবিরের এমন অবস্থা দেখে হতবাক
তিথিঃ স্যার প্লিজ বলুন কি হয়েছে এইভাবে প্লিজ কান্না করবেন না প্লিজ স্যার
আবিরঃ আমার বোন তিথি
তিথিঃ কি হয়েছে আরিশার?ঠিক আছে তো সে?
আবির কিছু না বলেই তিথিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে,,,আবিরের এমন অবস্থা দেখে যেন তিথির একদম ভালো লাগছে না,,,
চলবে,,,,,,,,,