তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 04
মায়াঃ উরেম্মা কি মিথ্যা বলতে পারে এই লোকটা।
কথাটা বলেই মায়া ধপ করে বিছানায় বসে পরে ফেলফেলিয়ে কাঁদতে শুরু করে দেয়।
কেঁদে কেঁদে বলে, আমি আর এবাড়িতে থাকবো না।এতো বড় বদনাম নেওয়া যায় না।
মাহিরঃ আবার নাকামো শুরু করেছে এই মেয়ে।
মায়াঃ হ হ আমি তো শুধু নেকামোই করি।আর এই যে আপনি এতোগুলো মিথ্যা বানিয়ে বললেন সেটাই ঠিক!
মাহিরঃ আমি মিথ্যা বলেছি?
মায়াঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ, মিথ্যা বলেছেন। একটা মিথ্যুক আপনি।
।
।
মায়া ঘুরে সোহাগের দিকে তাকায়,
মায়াঃ বিশ্বাস করো আংকেল উনি আমার কোমড়ে এত্ত জোড়ে একটা চিমটি কেটেছে যে আমি সহ্য করতে না পেরে দাড়িয়ে পরেছিলাম।
মাহিরঃ ও তাই? একটু আগে তুমি নিজেই স্বীকার করেছো তোমার সুস্থ কোমড় অবাস হয়ে গেছে!
মায়াঃ হ্যাঁ বলেছি তো।কারণ আমার এই কোমড়ে ব্যাথা না, ব্যাথা তো আমি ডান কোমড়ে পেয়েছিলাম।আর আপনি তো আমাকে বাম কোমড়ে চিমটি কেটেছেন! তাই আমি অমনটা বলেছি।
মাহির নিজের কপাল চাপড়াচ্ছে।আর মনে মনে ভাবছে,
মাহিরঃ যতোটা সরল মনে হয় ততোটা সরল এই মেয়ে না।তাই একে আর কিচ্ছু বলবো না।এমনিতেই বাড়ির সকলে রেগে আছে।আগে সবার রাগ ভাঙাতে হবে।
।
।
এদিকে সোহাগের রাগও চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।উঠে গিয়ে আলমারি থেকে মাহিরের সব কাপড়চোপড় সুটকেসে ভরছে। মাহির তাই দেখে নিজের ভাবনার অন্ত ঘটিয়ে সোহাগের কাছে গিয়ে দাড়ায়। সোহাগকে বলে,
মাহিরঃ একি মামা,,তুমি এসব কি করছো?
সোহাগঃ যা করছি ঠিকই করছি।
সুটকেসটা মাহিরের হাতে ধরিয়ে দিয়ে আবার বলে, এই মুহূর্তে তুই আমার বাড়ি থেকে চলে যা। ভেবেছিলাম তোর সাথে মায়ার বিয়ে দিলে তোরা দুজন খুব সুখি হবি! কিন্তু নাহ! তুই তো ওর জীবনটায় নস্ট করে দিলি।বাসররাতে নিজের বউকে কেউ বাইরে ঘুমাতে বলে? তার উপর বউয়ের সামনে অন্য মেয়ের সাথে ফোনালাপ! এখন আবার চারিত্রিক অপবাদ দেওয়া হচ্ছে? এই তোর শিক্ষা? তোকে কি আমরা কিছুই শিখাতে পারি নি?
মাহিরঃ মামা তুমি বিশ্বাস করো আমি ওর সাথে খারাপ কোনো ব্যবহারই করি নি।
রুসার দিকে তাকায়, এই ছুটকি তুইতো জানিস আমি কি এমন কিছু করতে পারি বল?
রুসা এগিয়ে এসে সোহাগের সামনে দাঁড়ায়। তারপর বলে,
রুসাঃ প্লিজ মামা ভাইয়াকে এভাবে বের করে দিও না।আমার মনে হয় না ভাইয়া কোনো মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারে।
মায়াঃ তাহলে কি আমি মিথ্যা বলছি?
রুসাঃ প্লিজ ভাবি,, তুমি কি চাও ভাইয়া বাড়ি ছেড়ে চলে যাক?
মায়াঃ আমি কি সেটা বলেছি?
মিরাঃ তাহলে এখন আর কোনো কথা বলো না।বিয়ে করেছো।স্বামীকে ধরে রাখতে শেখও।শাসনে শাসনে রাখও।অন্য মেয়ে যেন ধারে কাছে ঘেঁষতে না পারে সেই ব্যবস্থা করো।তুমি কি এতো দূর্বল যে তোমাকে বাইরে ঘুমাতে বললেই এই কলকলে শীতের মধ্যে তুমি বাইরে ঘুমাবে?
কথাগুলো বলে মিরা সোহাগের কাছে যায়।সোহাগকে বলে,
এইভাবে ছেলেটাকে বের করে দিও না।ওদের একটু সময় দেও। আমি জানি তুমি মায়ার কাছে ঋণি।একদিন ও তোমাকে বাঁচিয়ে ছিলো।তাই বলে ভাগনের কথা ভাববে না? এমন ঝগড়াঝাঁটি তো আমরাও কতো করেছি।
সোহাগ মিরার মুখের দিকে তাকায়।
মিরাঃ প্লিজ!
সোহাগ আর কিছু বলে না।চুপচাপ মাহিরের রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। সোহাগ যাওয়ার পরে এক এক করে সবাই রুম থেকে চলে যায়।এখন আছে শুধু মাহির আর মায়া।
সবাই যাওয়ার পরেই মায়া বিছানা থেকে উঠে দরজার কাছে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে কেউ আছে কিনা।তারপর রুমের আসেপাশে কাউকে না পেয়ে লাফাতে লাফাতে মাহিরের সামনে এসে ড্যাং ড্যাং করে নাচতে থাকে।মাহির দেখছে আর জ্বলছে কিন্তু কিচ্ছু বলছে না।মাহিরকে আরও বেশী করে রাগাতে মায়া মাহিরকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে নাচছে।এমন সময় স্নিগ্ধার ফোন আসে। মাহির মায়ার দিকে একটু বাঁকা চোখে তাকিয়ে রুমের বাইরে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে।
এটা দেখে মায়া নিজেকে নিজে বলে,
নিশ্চয় গালফ্রেন্ড ফোন দিয়েছে।দিকতো আমার কি তাতে? আমার তো অনুভব আছে। ইসস! কত্ত মিস করছি অনুভব তোমাকে! প্লিজ আজ রাতে চলে এসো।
,
,
,
চলবে,,,,