ডেড বডি

ডেড বডি ! Part- 04

শুনেন তাহলে আউট অফ রুমের শাস্তি,
যখন আমার ক্লাশের কোন একটা মেয়ে পড়া না পারে ঠিক তখনই আউট অফ রুম দেই আমি।
শুধু ঈশিতাকে পড়াশুনার বাহিরে দিয়েছি,
আসলে আমার উদ্দ্যেশ্য ছিলো সবাই যেন আমার সাবজেক্টে ভালো রেজাল্ট করে।
আমি এখন পযর্ন্ত ৫ জনকে এই শাস্তি দিয়েছি। এমনকি রিয়াকেও দিয়েছি আউট অফ রুম, যদিও তার শাস্তিটা ছিলো অনেক কম। ১ম জনকে যখন প্রথমবার আউট অফ রুম দেই তখন তাকে আমার থুথু মাটিতে ফেলে খাইয়েছি।
দ্বিতীয় জনকেও একই শাস্তি দিয়েছি।
এরপর তৃতীয়জনকে যখন দিবো তখন ভাবলাম একই শাস্তি দিলে হবে না, একে অন্য শাস্তি দিতে হবে।
তাই তৃতীয় জনকে তার নিজের স্তনে নিজেকেই একটি কামড় দিতে বলি,কিন্তু মেয়েটি দেয় নি। তখন আমি নিজেই দিয়েছে এমনকি রক্তও বের করেছি। এরপরের জনকে নগ্ন করে একটি ছবি তুলে রেখেছি, আর বলেছি রেজাল্ট খারাপ হলে এইটা সবাইকে দেখাবো।
আর রিয়াকে কোন শাস্তি দেইনি, কিন্তু তবুও মেয়েটাকে যে কে খুন করলো বুঝলাম না। তবে ঈশিতার শাস্তিটা ছিলো ভয়ানক।
-আপনি শিক্ষক নামের কলঙ্ক৷
-ঈশিতার সাথে কি করেছেন?
এই কথা শেষ হতেই স্যারটি পাশের একটি পুলিশের হাত থেকে বন্দুক টা নিয়ে পুলিশটির মাথায় ধরলো, এবং পুলিশটির মাথায় গুলি ঠেকিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো।
ঠিক তখনি আমিও গুলি করি স্যারকে।
এরপর সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করাই। হাসপাতালে স্যারকে ভর্তি করানো শেষ হতেই রহিম সাহেব ফোন করে আমাকে,ফোনটা ধরে বলি,
-হ্যা রহিম বলো।
-স্যার আরো একটি লাশ পাওয়া গেছে।
রহিমের কথা শুনে মাথাটা ঘুরে গেল,ফোনটা কেটে পাশে একটি চেয়ারে বসে ভাবতে থাকতে থাকি। এত খুন কে করছে,আর কেনই মারছে?
এত কম সময়ে এতজনের লাশ, পুরা শহর মেনে নিতে পারছেনা,সবাই আমাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করছে।
এখনো কেনো খুনি কে ধরতে পারছি না,
আমি কখনই কোনো কেসে হেরে যাই নি। কিন্তু এই কেসে কি হেরে যাবো?
এগুলা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ একজন ডাক্তার এসে বললো রমেন্দ্র স্যার বেঁচে নেই,আমরা সরি।
ডাক্তারের মুখে এই কথা শুনে আবার টেনশনে পরে গেলাম,
ভেবেছিলাম এই স্যার খুনের সাথে জড়িত আছে এর থেকেই সব শোনা যাবে, কিন্তু হলো না।
হাসপাতাল থেকে চলে যাই রহিমের ঠিকানায় যেখানে আরো একটি লাশ পাওয়া গেছে, গিয়ে দেখি এই লাশটি একটি পুরুষের লাশ। তখন মনে হলো তাহলে কি এই খুনের রহস্য আলাদা!
যাই হোক লাশটিকে আবার ডাক্তার অজয় এর কাছেই পাঠাই ফরেনন্সিক রিপোর্টের জন্য । ডাক্তার অজয় বললো এই লাশটির শরীরেও NND চিহ্নটি আছে,এবং এই ছেলেটির পুরুষাঙ্গ নেই, কেটে ফেলেছে, তবে কোন প্রকার সুচ পাওয়া যায় নি।
ডাক্তার এর কথা শুনে টেনশন বেড়ে গেলো।

যাই হোক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি মিটিং ডেকেছে আজকে,সেখানে আমাকেও থাকতে হবে কারন এই কেসের দ্বায়িত্ব আমার ঘাড়ে। তাই ডাক্তার অজয় এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সোজা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হই।
রাস্তায় প্রচুর জ্যামে আটকে আছি হঠাৎ বাহিরে তাকিয়ে দেখি একজন লোক একটা রিক্সাওয়ালাকে মারছে, আমি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে শুনি রিক্সা চালক ভাড়া বেশি চাওয়ায় লোকটি তাকে মারছে। সেখানে রিক্সাওয়ালাকে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে চলে যাই মিটিংয়ে।
মিটিংয়ে গিয়ে শুনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেনেছেন, আমার গুলিতে সরকারী স্কুলের শিক্ষক নিহত। এই কথা শোনার পর তিনি আমার উপর রেগে সেই মিটিং ক্যান্সেল করে আমাকে ১৫ দিনের জন্য সাসপেন্ড করেন ৷ মিটিং শুরু হতে না হতেই এমন শাস্তি, সেখান থেকে প্রচুর মন খারাপ করে বাসায় চলে আসলাম।
একটু খাওয়াদাওয়া করে বিকেলে বসে আছি আর ভাবছি ভালোই হয়েছে অনেকদিন রেস্ট নেওয়া হয় না, এই ১৫ দিন অন্তত রেস্ট নেওয়া যাবে।
শুয়ে আছি, এমন সময় সন্ধ্যার পর রহিম সাহেব কল দিলেন,ভাবলাম নিশ্চয় স্বান্তনা দেওয়ার জন্য কল দিয়েছে তাই ধরি নি ফোনটা।
আবার কল দিলেন এবার ধরতেই তিনি বললেন,
-স্যার আবার একটি একটা লাশ পাওয়া গেছে। আপনি দেখে যান?
-না। আমি তো দায়িত্বে নেই।
-সমস্যা কি স্যার ১৫ দিন পর তো আবার দ্বায়িত্ব পাবেনই।
-আচ্ছা বলে ফোনটা কেটে দেই।
সকালেও একটি লাশ আবার সন্ধ্যায়ও আরেকটা?
এভাবে মানুষ খুন করছে আর আমরা শুধু দেখছি,কিছু একটা করতে হবে।
লাশটিকে দেখার জন্য গেলাম। লাশটিকে দেখে তো আমি অবাক,ওনাকে তো আমি চিনি।
আজকে মিটিং যাওয়ার আগে তো ওনাকে দেখেছিলাম,ইনিই তো সেই রিক্সাওয়ালাকে চড় মেরেছিলো।
দেখে তো অনেক প্রভাবশালী মনে হলো।যাই হোক এই লাশটিকেও ডাঃঅজয় এর কাছে পাঠালাম। আগের লাশ গুলোর মতই এই লাশের উরুতেও NND লেখা এটা জানালেন ডাক্তার অজয়।
আমি ডাক্তার অজয় এর চেম্বারে না গিয়ে বাসায় এলাম,আর ভাবতে থাকলাম কেসটা আমার হাতে না থাকুক তাতে কিহ, এই রহস্য আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে।
মাত্র কয়েকটা দিনে এতগুলো লাশ কেউ মেনে নিতে পারছে না।
পুরা শহরের মানুষ আমাদের প্রতি ঘৃনার মনোভাব দেখাচ্ছে।
সত্যিই তো আমরা এখনো খুনিকে আটক করতে পারিনি।
আমার বাসায় অনেক পুরাতন পেপার ছিলো,আমি সেগুলো দেখতে বসলাম, যে এর আগে এমন কোন খুন পাওয়া যায় কি না।
দেখলাম অনেক খুনের খবর আছে কিন্তু এইরকম কোন খবর পাচ্ছি না।
হঠাৎ একটি পেপারে দেখলাম একদিনেই ৬ খুন।
হেডলাইন দেখে পুরা রিপোর্ট পড়লাম, এবং ওই খুনের রহস্য সম্পর্কেও জেনে নিলাম।
সেখানে একজন ব্যক্তি পুলিশকে প্রথম ইনফর্ম করেন এই খুনের জন্য। সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
পরর্বতীতে জানা যায় সেই লোকটিই খুন করেছিলো। এই টা দেখার পর কেমন জানি রহিম সাহেবের প্রতি একটু সন্দেহ আসলো। কারন প্রায় সবগুলা খুনের লাশের খবর উনিই আগে দিয়েছেন আমাকে।
এমনকি সেদিন ওনাকে একটি কাজে পাঠালাম, কিন্তু উনি ফোন দিয়ে বলেছিলেন একটি লাশ পাওয়া গেছে।
আমাদের সবার আগে রহিম সাহেব সংবাদ পায় কিভাবে?
ইভেন আজকেও দুইটা লাশের খবর রহিম সাহেবই দিয়েছেন।
এই খুন গুলোর মধ্যে কি রহিম সাহেবের কোনো সহযোগিতা আছে।?
রহিম সাহেবের প্রতি নজর রাখতে হবে।
সে কি এই খুনের সাথে যুক্ত আছে কি না খুঁজতে হবে।
থানা থেকে নিষিদ্ধ আছি জেনেও লুকিয়ে লুকিয়ে রহিম সাহেবকে নজরে রাখার জন্য কয়েকজন লোক রেখে দেই । কয়েকদিন পরে একদিন রহিম সাহেবকে রাত ২ টার দিকে তার নিজ বাড়ি থেকে বাহির হতে দেখে একজন আমাকে কল দিয়ে জানায়।
আমিও তাড়াতাড়ি করে চুপি চুপি রহিম সাহেবের পিছনে পিছনে যাই ।গিয়ে দেখি…
.
চলবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *