ঘৃণার মেরিন Season 2 !! Part- 03
বেরিয়ে দেখলো যে বাসার বাইরে ভীর জমে গেছে। আর ১টা গাড়ির ওপর দারিয়ে আছে। যেটা ধীরে ধীরে ওদের বাড়ির সামনে আছে মেরিন মাইক্রোফোন নিয়ে বলছে:
নীড় নীড় নীড়… where you… i love you….
মাইক্রোফোন টা বড় সরো ১টা স্পিকারে সাথে join করা। স্পিকারটাতে মেরিনের কথা বাজছে। যা শুনে কানে তালা লাগার উপক্রম…
.
নীড় : 😱।
নিহাল : এই মেয়ে এখানে এভাবে নীড়ের নাম নিচ্ছে কেন?
নীলিমা মনে মনে: মেরিন….
মেরিন নীড়কে দেখ খুশি হলো। নীড় রেগে মেরিনের দিকে গেলো। মেরিন লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন : ৩দিনধরে office না আসার মানে কি?
নীড় : অসহ্য….. তুমি কি পাগল?
মেরিন : হামম। আপনার জন্য….. because i love you….
নিহাল-নীলিমা: 😱।
নীড় : & i hate you…. আমার চোখের সামনে থেকে দুর হও তো।
মেরিন : সেটা আপনাকে বলতে হবেনা। এমনিতেও চলে যাবো। আপনাকে দেখা হয়ে গেছে । আমার কাজ শেষ। আসছি। আর হ্যা আজকে থেকে না হলেও কালকে থেকে office এ চলে আসবেন। bye…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নিহাল : oh my goodness…. এটা আমার মাথাতেই আসেনি। আসলে মেরিনের উদ্দেশ্য তুমি?
নীড় কোনোকিছু না বলে ready হয়ে office এ গেলো। এদিকে সকালে মেরিন যে কান্ড ঘটিয়েছে সে কান্ডের জন্য প্রেস মিডিয়ায় ঝড় উঠে গেছে।
২দিনপর….
নীড় ফোনে কথা বলছে। আর মেরিন কফি খেতে নীড়কে দেখছে। ঠিক তখনই কোথায় থেকে নীরা দৌড়ের এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নীরা : missed you জান…
নীড় : জান…
নীড় ফোন রেখে নীরাকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : i also missed you… but তুমি আসবে আমাকে বলোনি কেন?
নীরা : বললে surprise দিতাম কিভাবে?
নীড় : হামম তাও ঠিক। you know what?
নীরা : what?
নীড় : i love you…..
নীরা : i love you 2…
বলেই নীরা নীড়ের বুকে মুখ লুকালো। তখন নীড়ের চোখ মেরিনের দিকে পরলো। চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে আর হাত দিয়ে রক্ত।
নীড় মনে মনে : আমি তো এই ডাকাতের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আল্লাহই জানে এখন কি করবে?
নীড়কে অবাক করে মেরিন ওখান থেকে চলে গেলো। গিয়ে গাড়িতে বসলো ।
জন : ম্যাম… আপনার হাত দিয়ে তো অনেক রক্ত পরছে। দেখি ব্যান্ডেজ করে দেই…
মেরিন রেগে জনের দিকে তাকালো।
জন : ম্যাম… সেপটিক হয়ে যাবে…
মেরিন : ….
জন : ম্যাম আপনি যদি বলেন ওই নীরাকে এখনই… ২মিনিটও লাগবেনা নীড় স্যারের কাছে থেকে ওকে সরাতে।
মেরিন : আপাদত নীড়ের ওপর মেরিনের কোন অধিকার নেই। তাই নীড়ের বুকে ও এখনো safe আছে….
বলেই মেরিন চলে গেলো।
খান বাড়িতে…
মেরিন বাসায় ঢুকছে। তখন কবিরের সাথে মেরিনের চোখাচোখি হলো। যতোযাইই হোক সন্তানের আঘাতে তো বাবাদের হৃদয় ঠিকই পুরে। তাই কবিরেরও বুকটা মোচর দিলো। কিন্তু মেরিনকে ignore করে চলে গেলো। এতে মেরিনের কিছুই যায় আসেনা… মেরিন রক্তাত্ব হাত নিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠছে। তখন ওর ফুপ্পি সেতু
বলল: কিরে অনামুখী কাকে খুন করে এলি?
মেরিন : আপনার অকর্মা বরটাকে….
বলেই মেরিন সোজা দাদুভাইয়ের রুমে গিয়ে দাদুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। দাদুভাইও first aid box নিয়ে ready ছিলো। কারন জন আগেই ফোন করে সব বলেছে।
দাদুভাই: দেখি দিদিভাই… হাতটা দেখি….
দাদুভাই পরম যত্নে মেরিনের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
মেরিন : আমি নীড়কে বিয়ে করবো।
দাদুভাই : হামম করবে। কবে করবে তারিখ ঠিক করেছো?
তখনই ২জন শুনতে
পেলো : নানু…
২জন সামনে তাকালো । দেখলো নীরা দারিয়ে আছে।
নীরা: নানু নানু নানু….
মেরিন : ওখানেই দারাও… আর এক পাও যেন আগে না বারে …
নীরা : তোকে বলে আগে বারবো…
নীরা তাও আগে আসতে নিলে দাদুভাই থামিয়ে দিলো।
দাদুভাই: যা বলার ওখান থেকেই বলো।
নীরা : নানু আমি এতোদিন পরে এসেছি তাও তুমি..
দাদুভাই : তুমি কোনো জাতীয় সম্মাননা পাওয়ার মতো কাজ করে আসোনি। নিজের দোষ ঢেকে এসেছো।
নীরা : তোমার এই নাতনি বুঝি পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ করে?
দাদুভাই : তোমার মতো ছলনা করে না। now out…
নীরা : মাম্মি … মাম্মি…
মাকে ডাকতে ডাকতে আর ন্যাকা কান্না কাদতে কাদতে নীরা বেরিয়ে গেলো।
.
রাতে…
নীড় : মেরিন ওভাবে চলে গেলো কেন? কিছুই বললনা। নীড়… তুই কি চাস যে মেরিন react করুক…?
.
পরদিন….
নীড় office এ গেলো। দেখলো মেরিনের গাড়ি নেই।
নীড় : আজকে এখনো আসেনি… কখনো তো late করেনা….
তখনই মেরিনের গাড়ি এসে হাজির। মেরিন আজকে নেভি ব্লু লেডিস কোট পরেছে। ডান হাতে ব্যান্ডেজ। মেরিনকে দেখে কেন যেন নীড়ের মনে হলো যে মেরিনের শরীরটা ভালোনা। তবুও নীড় মেরিনকে ignore করে চলে গেলো। গিয়ে নিজের চেয়ারে বসলো।
৫মিনিটপর… মেরিন কেবিনে ঢুকলো। ঢুকে চুপচাপ নিজের চেয়ারে বসলো। নীড় আরো অবাক হলো।
নীড় মনে মনে : কেন যেন এর নীরবতা ঝড়ের পূর্বাভাসের মতো লাগছে।
.
মেরিন ল্যাপটপ খুলে কাজ করতে বসলো।
মেরিন: বিয়ে করবেন আমাকে?
কথাটা শুনে অবাক হয়ে তাকালো মেরিনের দিকে । যাকে ভালোইবাসেনা তাকে বিয়ে?
মেরিন ল্যাপটপে কাজ করতে করতে
বলল : কি হলো বলুন….
নীড় : আমি নীরাকে ভালোবাসি…. আর ওকেই বিয়ে করবো। বুঝেছো?
মেরিন : ভালোমতো জিজ্ঞেস করছি তাই ভালোমতো বলুন যে বিয়ে করবেন কি না?
নীড় : না….
মেরিন : হামম। ভালোমতো বললাম ভালো লাগলো না। এরপর কি হবে বা হতে পারে সেটা আমি নিজেও জানিনা ।
নীড় : যা মন চায় করো।…
.
২জন ২জনের কাজ করছে। হঠাৎ মেরিনের হাতের সাথে নীড়ের হাত ছোয়া লাগলো। মেরিন সাথে সাথে হাতটা সরিয়ে নিলো। কিন্তু নীড় বুঝতে পারলো যে পারলো মেরিনের শরীর অনেক গরম। মানে ভীষন জ্বর। এখন নীড় বুঝতে পারলো মেরিন কেন এসেই আজকে ওকে জরিয়ে ধরেনি। তখনই নীরা রুমে ঢুকলো।
নীরা : জান… একি তুই?
মেরিন জবাব দিলোনা।
নীরা : কি রে তুই এখানে কেন?
বলতে বলতে নীরা আগে বারতে লাগলো। মেরিন গানটা বের করে নীরার পা বরাবর ফাকা গুলি করলো ১টা। এরপর হাত দিয়েই ইশারা করলো চলে যেতে।
নীরা : তোর কি মনে হয় যে আমি ভয়ে চলে যাবো?
নীড় : জান চলো… আমরা অন্য কোথাও যাই।
নীড় নীরাকে নিয়ে office থেকে বেরিয়ে গেলো।
নীরা : আরে তুমি কি ওকে ভয় পাও নাকি? ওই বেয়াদবটার ভয়ে …
নীড় : তুমি ওকে চেনো?
নীরা : চিনবো না কেন ? ও তো মেরিন। মেরিন বন্যা খান। মামার মেয়ে।
নীড় : what? ও তোমার মামাতো বোন?
নীরা : হ্যা। ও এখানে কেন ? তাও তোমার কেবিনে? তোমার পাশে। তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : শান্ত হও জান… আমি তোমাকে সব বলছি….
নীড় নীরাকে সব বলল।
নীরা : what? এতোকিছু তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : তুমি কষ্ট পাবে বলে…
নীরা : তুমি জানোনা ও কতো dangerous … এখনি চলো।
নীড় : কোথায়?
নীরা : marriage registry office …
নীড় : what? কি বলছো কি?
নীরা : তা না হলে তুমি জানোনা ও যখন বলেছে যে তোমাকে বিয়ে করবে তখন করবেই।
নীড় : কিন্তু এখন কিভাবে সম্ভব।
নীরা : এখন না হলে কখনোই না… তুমি uncle-aunty কে ডেকে আসতে বলো। আর আমি মাম্মি-পাপা আর মামাকে আসতে বলি।
নীড় : কিন্তু এখনই কিভাবে সম্ভব?
নীরা : তারমানে তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাওনা?
নীড় : আরে কি বলো কি?
নীরা : তাহলে চলো?
নীড় : ok চলো।
ওরা marriage registry office এ রওনা হলো।
মাঝপথে….
নীড় বাধ্য হয়ে গাড়িতে break মারলো। কারন মেরিন পথ আটকে দারিয়ে আছে। নীড়-নীরা গাড়ি থেকে নামলো।
নীরা : তুই? সামনে থেকে সর…
মেরিন : মেরিন নিজের অনুযায়ী চলে। অন্যকারো না । তোমার মতো কোনো কীটপতঙ্গ তো আমার পায়ের ধুলা।
নীরা : 😤।
মেরিন গানটা আঙ্গুলে ঘোরাতে ঘোরাতে নীড়ের সামনে এলো।
গানটা নীড়ের গালে আলতো করে ধরে
বলল : জীবনে শেষবারের মতো আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। বিয়ে করবেন আমাকে?
নীড় : না….
মেরিন : ভেবে বলছেন?
নীড় : হামম।
জবাবে মেরিন ১টা রহস্যময়ী হাসি দিলো। নীরার ভয় লাগলো মেরিনের হাসিটা দেখে ভয় লাগলো।
মেরিন : জীবনে আর ভালোভাবে ভালোবাসা পাওয়া হলোনা। আর না মনের আশা পূরন হলো। এটাই হয়তো “মেরিন বন্যা খানের” সাথে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের শেষ দেখা।
“শেষ দেখা” কথাটা শুনেই নীড়ের বুক কেপে উঠলো।
তবে নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোটে হালকা ১টা কিস করে চলে গেলো। নীড় অবাক চোখে মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীরা : তারাতারি চলো…
নীড় : এখন বিয়ে না করলেই না… মনে তো হয়না যে ও আর ফিরবে…
নীরা : ও ফিরবে কি ফিরবে জানিনা… কিন্তু নানু আর ওর চামচা জন কি না কি বাগরা দেয় তার ঠিক নেই।
নীড় : কিন্তু…
নীরা : ও তো তুমিও ওর রূপের জ্বালে আটকে গেলে…
নীড় : কি যা তা বলছো?
নীরা : তাহলে চলো। registry marriage টা করে নেই। বিয়েটা ১বার হয়ে গেলে আর কেউ কিছুই করতে পারবেনা। পরে না হয় ধুমধাম করে program হবে। চলোনা…
নীড় : হামম।
মনে মনে : মেয়েটা না কিছু করে ফেলে….
নীড়-নীরার বিয়েটা সম্পুর্ন হলো।
.
registry office থেকে বেরিয়েই নীরার ১টা ফোন এলো। ১টা বড় মডেলিং এর। নীরা তো খুশিতে আত্মহারা। লাফাতে লাফাতে চলে গেলো।
আর নীড় ডুবে গেলো ভাবনার জগতে।
নীড় মনে মনে : সত্যিই কি তবে এটা শেষ দেখা ছিলো? ও কি নিজেকে কিছু করে ফেলবে? যা মন চায় করুক। আমার কি….
.
২মাসপর….
কালকে নীড়ের গায়ে হলুদ।
নীড় চাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ১৫-২০দিনের মতো মেরিনের সংস্পর্শে ছিলো। তবুও কেন যেন রোজ ভীষন ভাবে ওকে মনে পরে। ওর কথা , ওর কাজ। মেরিন নীড়কে ২দিন না দেখলে কেমন করতো সেই মেরিন….
নীড় : আমার জন্য কি তবে মেরিন কিছু উল্টা পাল্টা করলো? যদি সত্যি এমনটা হয় তবে এই পাপ আমি কোথায় রাখবো? কিচ্ছু জানিনা…
পরদিন…
সন্ধ্যায়…
আজকে নীড়-নীরার গায়ে হলুদ…
নীড় নিজেই ready হচ্ছে। হলুদ রঙের পাঞ্জাবি আর কালো রঙের ধুতি পরেছে নীড়। সিল্কি চুলগুলোতে আজকে জেল দেয়নি। আজও নীড় না চাইতেও মেরিনকে ভাবছে। হঠাৎ ই কারেন্ট চলে গেলো। তখন কেউ ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : আহ নী…
পরক্ষনেই নীড়ের বোধ হলো যে এটা নীরার ছোয়ানা। মেরিনের। নীড় ঝড়ের বেগে পিছে ঘুরলো। লাইট নেই। চাদও অনেকটা মেঘে ঢাকা। তবুও নীড় মেরিনকে স্পষ্ট দেখলো। দেখলো মেরিন হলুদ রঙের ১টা শাড়ি পরে আছে। যার মধ্যে কালো পাথর বসানো। খুবই সাধারন কিন্তু দারুন ১টা শাড়ি। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে মেরিনকে। না চাইতেও মেরিনকে দেখে নীড় টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।
নীড় : ত…
মেরিন নীড়কে কথা বলতে না দিয়ে ওর ঠোটে মাঝে আঙ্গুল রাখলো।
এরপর নীড়কে বসিয়ে ওর কোলে চরে বসলো। এরপর নীড়ের ২ গালে হলুদ লাগিয়ে দিলো। এরপর নীড়ের গালের সাথে নিজের গাল ঘষে নিজেও হলুদ রাঙা হলো। এরপর নীড়ের ঠোটে ১টা হালকা কিস করে চলে গেলো। আর লাইট জ্বলে উঠলো। নীড় সাথে সাথে মেরিনকে খুজতে বের হলো। কিন্তু কোথাও পেলোনা।
নীড় : তুমি স্বপ্ন নাকি সত্যি …..
.
( আমি যতোগুলো গল্পের সিজন ২ পরেছি সেই সব গুলোতেই কম বেশি সিজন ১ এর সাথে মিলে। আর গল্পের নাম যখন ঘৃণার মেরিন তখন এটাতো এমনটা হবেই। )
চলবে…