গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি —পর্ব-১১
তুই তো সবটা ভাল করে জানিসনা সৌরভ যাদেরকে
বাবা মা বলছে। তারা তো সৌরভের মা বাবা না, এমনকি
রক্তের সম্পর্কের কেও নয়। আর তাহমি সৌরভের
কেও নয়, যদি আমার কথা তুই বিশ্বাষ না করিস তাহলে
তুই তাহমিকে জিজ্ঞেসা করিস। তাহলে তোর সব
প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি। (তাসলি)
আমি:- শোন তাসলি আমার কোন প্রশ্ন নেই।
তবে তুই রাজুর সাতে এমন অবিনয় করলি কেন?
তাসলি:- আমি কখন অবিনয় করছি? আর তুই তো জানিস
রাজু আমার ভাল বুন্ধ ছিল।
আমি:- কিন্তু তুই তো আগে বলছিস রাজু তোর
বয়ফ্রেন্ড? আর রাজুর এই অবস্থার জন্য আমাকে
আর তোকে দায় করছে সৌরভ।
তাসলি:- তোর মাথাটা গেছে, ছেলে বুন্ধকে কি
বলে? বয়ফ্রেন্ড বলে। আর রাজুর এই অবস্থার
জন্য আমাদের কেন দায় করছে সৌরভ।
আমি:- এক দিন সময় করে সৌরভকে সবটা বুঝাতে
হবে। তোর হাতে যদি সময় থাকে তাহলে
আমাকে বলিস? এখন আমি যায়। বলে চলে এলাম,
এসে দেখি সৌরভ একা দাড়িয়ে আছে, আর বাকিরা
চলে গেছে। আমি একদম ভয়ে ভয়ে ওর কাছে
গেলাম।
সৌরভ:- এত দেরি করলে কেন? আবার নতুন করে
প্লান করে আসছো তাই না ঐশি তাবাসুম? আমি
তোমাকে আজ একটা কথা বলি। কান খোলে শুনে
রাখো?
আমি:- আমার কান খোলা আছে, বলেন আমি
শোনছি।
সৌরভ:- তোমাকে কত বার বলছি তর্ক না করতে?
তাও তুমি তর্ক কর কেন? তুমি আর মাত্র তিন মাস
আমাদের বাড়ীতে থাকবে। এই তিন মাসে যদি নতুন
করে কারো কোন ক্ষতি করতে চেষ্টা করো।
তাহলে আমার চাইতে খারাপ আর কেও হবেনা।
আমি:- আমি আগেও কারো কোন ক্ষতি করিনি। আর
এখন তো কারো কোন ক্ষতি করতে পারবোই
না। আমি যানি আপনি আমাকে বিশ্বাষ করতে পারেননা।
তবে আমি কিন্তু চোখ বুজে আপনিকে বিশ্বাষ
করি।
সৌরভ:- ঠিক আছে চলো? তখনি আমি অজ্ঞান হওয়ার
বান করে পরে যেতেছি তখনি সৌরভ আমাকে
বুকের জড়িয়ে নিল। সৌরভ আমাকে ডাকতে শুরু
করে দিল, ঐশি শোনছো? কি হলো তোমার, কথা
বলো প্লিজ কথা বলো? আমি সৌরভের কথা কোন
উত্তর দিতেছিনা। আর নিজে কিছু বলছিনা। আমার
ভালোই লাগছে ওর বুকের মাঝে থাকতে। আমি
এখন বুঝতে পারছি সৌরভ আমাকে অনেক লাভ
করে, তবে আমাকে বুঝতে দেই না। তখনি,,
আমি:- কি হইছে এমন করছেন কেন? আমি মরে
গেলে আপনি তো বাজবেন।
সৌরভ:- হ্যা বাজবো তবে যত দিন তুমি আমার স্ত্রী
ততদিন আমার একটা দ্বায়িত্ব আছে। বলে আমাকে
গাড়ীতে বসিয়ে দিল। তারপর গাড়িটা চালাতে শুরু
করছে তবে আজ একদম আসতে আসতে
চালাচ্ছে। প্রাই এক ঘন্টা পরে বাসায় আয়ছি আমরা।
আমি:- আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেসা করবো
আপনাকে?
সৌরভ:- এখন কোন কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।
তুমি ভীতরে যাও?
আমি:- ঠিক আছে, তারপর আমি ভীতরে চলে
এলাম। এসে সোজা রুমে চলে এসে শুয়ে
পড়লাম। আর কখন ঘুমায় গেছি ঠিক মনে নেই।
সকালে যখন ঘুম ভাঙলো চেয়ে দেখি সৌরভ
ঘুমিয়ে আছে। আমি কাছে গিয়ে ওর মুখটা দেখছি,
খোব সুন্দর লাগছে গিরগিটিকে। ইচ্ছে করে
গালে একটা কিস করে দিয়েছি। এই আমি কি করছি
গালে তো লিবিষ্টিক লেগে গেছে। ঘুম
থেকে ওঠে যদি দেখে গালে লিবিষ্টিক তাহলে
আমার অবস্থা খারপ করে দিবে। তারা তারি করে মুছে
দেই। যখনি মুছতে যাবো তখনি,,,
সৌরভ:- তুমি এখানে কি করছো?
আমি:- কিছুনা মুছতে ছিলাম।
সৌরভ:- কি মুছতে ছিলে?
আমি:- আপনার মুখের ঘাম গুলো। কি গরম তাই না?
সৌরভ:- গরম পেলে কোথায় তুমি? ঐশি তুমি ঠিক আছ
তো? নাকি গেছে মাথাটা।
আমি:- আমার অনেক ইচ্ছে ছিল, বিয়ের পর রোজ
সকালে আমার স্বামীর মুখটা আমার শাড়ির আচল দিয়ে
মুছে দেব। আমার এই আশাটা এক বার পূরন করতে
দেন প্লিজ।
সৌরভ:- নিশ্চয় তুমি আমার মুখে কিছু লাগিয়েছো।
বলে সৌরভ গালে হাত দিল আর দেখলো লিবিষ্টিক।
এই তোমার ইচ্ছা তাইনা ঐশি? তুমি আমাকে কিস
করলে কেন?
আমি:- আমার কিস করতে ইচ্ছে হইছে আমি করছি
তাতে আপনার কি? আমি তো আমার স্বামীকে কিস
করছি। এতে দুষের কি আছে?
সৌরভ:- আমি তোমার স্বামী নয়। বলে সৌরভ
ফ্রেসহতে চলে গেল। যাক গিরগিটি তাহলে একটু
লাইনে আসছে।
আমি:- যায় একটু নিছে যায়। আমি নিছে এসে দেখি
তাহমি আপু একা বসে আছে। একবার জিজ্ঞেসা করব
সৌরভ আসলে কে? না থাক ওদের এত সুন্দর
সংসারে কোন জামেলা হোক এইটা আমি চাইনা।
একটু পর সৌরভ নিছে নামছে আর কার সাথে
মোবাইলে কথা বলছে। কথা গুলো খোব
রেগে রেগে বলছে। কাছে এসে তাহমি
আপুকে বলছে।
সৌরভ:- আপু রিপা ফোন করছে। আমি যাচ্ছি আনতে
তুই যাবি আমার সাথে?
তাহমি:- ভাই আমার তো শরিলটা খারাপ লাগছে। এক কাজ
কর তুই ঐশিকে সাথে করে নিয়ে যা।
সৌরভ:- থাক ওকে আমি সাথে নিতে পারবোনা। তার
চাইতে আমি একা যায়।
তাহমি:- ভাই তুই আমার কথাটা শুনবিনা? বুঝতে পারছি কেন
তুই আমার কথা শুনছিস না। কারন আমি তো তোর,,
সৌরভ:- আপু তুই কি বলছিস এই সব? তোরা তো
আমার সব তোরা ছারা আমার কে আছে বল? ঠিক
আছে আমি ঐশিকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি। ঐশি
চল আমার সাথে?
আমি:- একটু দাড়ান আমি এখনি আসছি। বলে রুমে
গিয়ে ফ্রেসহয়ে একটু সাজু গুজু করে নিছে
নামছি। আমার দিকে সৌরভ তাকিয়ে আছে। কাছে
যেতেই,,
সৌরভ:- তুমি এত দেরি করলে কেন? আর এত
সেজেছো কেন?
আমি:- এক জাইগায় যাবো। এতে একটু সাজু গুজু
করে নিলাম।
সৌরভ:- মনে হচ্ছে তুমি বিয়ে করতে যাচ্ছো?
এমন করে সেজে এসেছো?
তাহমি:- ভাই তুই ঐশিকে কি বলছিস? ঐশি কত ভাল
মেয়ে।
আমি:- আমাকে তুমি সাথে নিতে বলছোনা তাই এমন
করছে আপু।
সৌরভ:- হইছে এখন আর আমার নামে বিচার দিতে
হবেনা। চলো এখন,
তাহমি:- ভাই তুই ঐশিক হাত ধরে নিয়ে যা।
তারপর গিরগিটি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে
তাকিয়ে আমার হাত ধরে নিয়ে গেল গাড়ীতে।
আমি:- তাহমি আপু সত্যি অনেক ভাল আমাকে একদম
নিজের বোনের মত ভালবাসে।
সৌরভ:- আর তুমি কি করো? শুধু ক্ষতি করো।
আমি:- আমি কারো কোন ক্ষতি করিনি। তখনি সৌরভ
গাড়ীটা এমন জোরে চালাচ্ছে আমার ভয়ে দম
বন্ধ হয়ে আসছে। আমি কিছু বলছিনা, কারন এখন
বললে লাব হবেনা। কিছুক্ষন পর দেখে গাড়ীটা
আসতে আসতে চালাচ্ছে। আচ্ছা এখন কি আমরা
রিপাকে আনতে যাচ্ছি।
সৌরভ:- হ্যা।
আমি:- রিপাকে আপনি অনেক ভালবাসেন তাইনা?
সৌরভ:- মানে?
আমি:- মানে রিপা আপনার প্রথম স্ত্রী, আর প্রথম
স্ত্রীরীরা অনেক ভালবাসা পাই স্বামীর কাছ
থেকে। তখনি
সৌরভ:- গাড়ীটা থামিয়ে দিয়ে বলে। আর যদি একটা
কথা বল তাহলে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেব। আর
রিপার সামনে তুমি কোন কথা বলবেনা। এমন কি
তোমাকে কিছু জিজ্ঞেসা করলেও কিছু বলবেনা।
আমি:- ঠিক আছে। তারপর গাড়ীটা গিয়ে একটা
বাড়ীর সামনে থামালো। বাড়ীটা অনেক বড়,
দেখে মনে হচ্ছে রিপারা অনেক বড় লোক।
আমি গাড়ী থেকে নেমে সৌরভের পিছু পিছু
ভীতরে গেলাম। ভীতরে ডোকে আমি অবাক
এত সুন্দর বাড়ী আমি জীবনেও দেখিনি। একজন
ভদ্র মহিলা এসে সৌরভকে বলছে।
কেমন আছো বাবা?
সৌরভ:- জি আমি ভাল আছি, রিপা কোথায়?
রিপা একটু উপরে আছে, তুমি বসো আমি রিপাকে
ডেকে দিচ্ছি।
সৌরভ:- ঠিক আছে। তারপর আমি আর সৌরভ দুজনে
সোফায় বসে আছি একটু পর পেছেন থেকে
আমার চোখ চেপে ধরে বলছে বলত আমি
কে?
আমি:- আমি তো এর আগে এখানে আসিনি। তাহলে
বলব কি করে আপনি কে হবেন? তখনি আমি আমার
চোখ থেকে ওর হাতটা সরিয়ে তো পুরায় অবাক
আরে তুমি এখানে কি করে?
চলবে,,,