একঝাঁক জোনাকির আলো !! Part 31
৩১.
___________________________________
সবাই মিলে ঠিক করেছে রাতারগুলে যাবে।রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন।সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটে এই রাতারগুলের অবস্থান।এটাকে বাংলাদেশের অ্যামাজনও বলা হয়।অ্যামাজনে যেমন সারি সারি গাছের জঙ্গলের মাঝে বয়ে চলে শীতল নদী।ঠিক একুই ভাবে রাতারগুলেও বিস্তর গাছের মাঝে বয়ে চলেছে জলরাশি।নৌকা দিয়ে এই সৌন্দর্য ভ্রমন করা হয়।উত্তরে মেঘালয় থেকে নেমে আসা নদী দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে অপরূপ জলাবন।নদীর মাঝে ভেসেই এর প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।মাঝে শীতল নদী!দুপাশে সারি সারি গাছ,যাদের প্রায় অনেক অংশ পানির নিচে ডুবে থাকে।উপরে তাকালে নীল আকাশের বদলে সবুজ আকাশের দেখা মিলে।দুই পাশের গাছ এক হয়ে এক সবুজ আকাশের জন্ম দিয়েছে এমনটাই মনে হয়।লতা-পাতা জড়ানো গাছ।গাছের ফাঁকে ফাঁকে যখন রোদের কিরণ পড়ে এক অপরূপ সৌন্দর্য বিরাজ করে সম্পূর্ন জায়গা জুড়ে।মনে হয় সবুজের সমারোহে নদীতে রূপ নেমেছে। রোদেলা দুপুরের চাইতে বৃষ্টি ভেঁজা সময় এর সৌন্দর্য বেশি প্রকাশিত হয়।সব মিলে এক অপরূপ লিলা ভূমি।বৃষ্টি ভেঁজা ঋতুতে রাতারগুলের প্রকৃত সুন্দর উপভোগ করা যায়।বৃষ্টির কারনে রাতারগুল পানিতে টইটুম্বুর হয়ে থাকে।হাওর অথৈজলে ভরা থাকে।চারপাশে ভিঁজা সবুজ গাছ, দেখে মনে হয় এক সবুজ ভূবন।এ যেনো অদ্ভুত রূপে ছেঁয়ে গেছে সব।বাংলার রূপ আসলেই সব কিছুর উর্ধ্বে।রাতারগুল না দেখলে তার গভীরতা বুঝা যাবে না।
.
রাফার কাছে রাতারগুলের বর্ণনা শুনে সাফা লাফিয়ে উঠে।সে ভাবতে পারছে না।সিলেটে চা বাগান বাদেও এত সুন্দর একটা জায়গা আছে এটা তার জানা ছিলো না।ভ্রমনের প্রতি সে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেনি।বাবা যেখানে নিয়ে গেছে সেখানেই সে গেছে।বন্ধুদের সাথে তাকে যেতে দেওয়া হত না।তাই সে তেমন কোনো জায়গা সম্পর্কে জানে না।সাফা মনে মনে ঠিক করে এই প্রকৃতির সৌন্দর্য সে ভেসে ভেসে উপভোগ করবে।সাফার লাফালাফি দেখে নিভ্র ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে আছে।তার মাথায় অন্য কিছু চলছে মনে হয়।সবাই হাঁসে সাফার কান্ডে।সকাল সকালই যাবে বলে ঠিক করে।তাই সবাই রেডি হতে চলে যায়।সাফা রাফার পাশে পা ঝুলিয়ে বসে আছে।সে গভীর ভাবনায় মগ্ন।তাকে দেখে মনে হচ্ছে তার চাইতে বড় ভাবুক আর একটাও নেই।সারা দেশের চিন্তা সব তার মাথায়।রাফা তাকে একটা একটা জামা দেখাচ্ছে আর সে এটা না ওটা না এগুলো বলে যাচ্ছে। সাফা ভেবে পায় না রাফা মেয়েটার কি ক্লান্ত লাগছে না?তাকে এত কেনো আদর করে?ইশশ্ কত ভালো!!সাফা হাঁসে মিটমিটিয়ে। রাফা প্রশ্ন করে……….
—– “কি হল? বোকাদের মত হাসছ কেনো??”
সাফা আবার হাঁসে। হাঁসতে হাঁসতে বলে……..
—— “আপনার ক্লান্ত লাগছে না।আমি বার বার না না এটা না ওটা না বলছি!!
—–” না লাগছে না।এবার তাড়াতাড়ি পছন্দ করো।যেতে হবে তো??”
সাফা আবার মনোযোগী হয়।দরজায় টোকার শব্দ। ইফতেখার দাঁড়িয়ে আছে।সাথে ঠোঁটে ঝুলানো মুচকি হাসি।রাফা বলে……
—-” কাকীমা দাঁড়িয়ে আছ কেনো? চলে এসো।
ইফতেখার এগিয়ে আসে।হাত এগিয়ে একটা শাড়ি দিয়ে সাফাকে তিনি বললেন……
—–” এটা পড়।সুন্দর লাগবে।আর রাতারগুলে ভেসে তুমি ছবিও তুলতে পারবে।নৌকার বুকে কলাপাতার সাফা।
ইফতেখার হাঁসে। সাফা মুগ্ধ হয়ে সে হাসি দেখে।ছেলের মতই জীবন্ত হাসি।সাফা খুশি হয়ে শাড়ি নেয়।এতসময় কি পড়বে ভেবে পাচ্ছিলনা।এতো নিমিষেই সমস্যা সমাধান। সাফা শাড়িটা দেখে।কলাপাতা রং এর জামদানী। যার মাঝে গাঢ় সবুজের কাজ ভাসছে।সাফা ইফতেখারকে এক হাতে জড়িয়ে বলল……
—–” ধন্যবাদ আম্মু।
—-” আমার মিষ্টি মেয়ে।এবার পড়ে নেও।আর রাফা রানী আপনার জন্যও আছে।
—-” সত্যি!! আমি ভেবেছি আনোনি।”
—-” মেয়ে যখন দুটো শাড়িও দুটোই হবে তাই না।নেও পড়ে নেও।তাড়াতাড়ি রওনা হলে তাড়াতাড়ি আসতে পারবে।”
সাফা রাফা মাথা ঝাঁকায়। রাফাকে নীল শাড়ি দেওয়া হয়েছে।নীলের উপর আকাশি কাজ।রাফা নিজে আগে তৈরি হয়েছে।তারপর সাফাকে শাড়ি পড়িয়ে সাজিয়েছে।তার কাছে সাফাকে পুতুল পুতুল লাগে।মনে হয় সাফা পুতুল আর সে তাকে সাজাচ্ছে।মেয়েটাকে যেভাবে বসতে বলে ঠিক একুই ভাবে বসে।যেভাবে দাড়াঁতে বলে একুই ভাবে দাঁড়ায়।ভালো লাগে তার।সাফাকে সাজিয়ে একবার দেখে।ইশশ্ কত কিউট লাগছে।সাদা গায়ে কলাপাতার রং একদম খাপখেয়েছে।
_________________________
নিভ্র নিজের রুমে ফোন কানে দিয়ে কথা বলছে।কাকে যেনো বিভিন্ন কাজ করতে বলছে।আর নিজের হাতা ঠিক করছে।নিভ্রর মাথায় কি চলছে বুঝা দায়।ভিড়ানো দরজা ঠেলে মাহি ডুকে পড়ে।নিভ্র চট করে দরজার দিকে তাকায়।মাহিকে দেখেই তার কেমন যেনো রাগ হয়। হয় তো সাফাকে সেদিন মেরেছে তাই।নিভ্র কল কাঁটে।ভ্রুকুঁচকে মাহির দিকে কিছুক্ষণ তাকায়।মাহি লাল গ্রাউন পড়েছে।মুখ ভর্তি মেকাপ।তবে সুন্দর লাগছে।মাহি সুন্দর দেখতে।ডাগরডাগর বড় বড় চোখ।জোড়ভ্রু, গায়ের রং সাদা।যেকোনো ছেলের দৃষ্টি সে আকর্ষন করতে পারবে এতটাই রূপ তার আছে।কিন্তু কথা হচ্ছে যাকে সে আকর্ষীত করতে চাচ্ছে তার তাকে বিন্দু মাত্র ভালো লাগছেনা।তার মূল করান সাফার সাথে বাজে ব্যবহার। মাহি হাসি হাসি মুখে নিভ্রর সামনে দাঁড়ায়। নিভ্র হাতের ফোনে মন দেয়।মাহি অভিমানি সুরে বলে………
—–” পাত্তা দিচ্ছ না কেনো??”
নিভ্র চোখ তুলে একবার তাকায়।আবার চোখ নামিয়ে বলে…….
—–” পাত্তা দেওয়ার কি আছে??আর বিনা পারমিশনে আমার রুমে ডুকেছ কেনো??এগুলো আমার পছন্দ না যানো না তুমি??
নিভ্রর ঝাঁঝালো কথা শুনে মাহি একটু নিভল।একবার ঢোগ গিলে বলল……
—–” আসলে দরজা খোলা ছিলো।আর আমিইত অন্য কেউ ত না??তাই আসতেই পাড়ি।এসব ছাড়ো আমাকে কেমন লাগছে বলো??
নিভ্রর যেনো মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। সাথে এক রাশ বিরক্তি কাজ করছে।এই প্রশ্ন সাফা বাদে কারো মুখে শুনতে তার সত্যিই ভালো লাগে না।সাফা মেয়েটা বাদে সে চায়ও না অন্যকেউ তার আশেপাশে ঘুড়ক।একেই তার মেয়েদের ভালো লাগেনা।তার উপড় মাহিকে তো সে সবচাইতে অপছন্দ করে।নিভ্র চোখ বুজে শ্বাস নেয়।রাগ কমাতে চাচ্ছে। তারপর ঠান্ড গলায় জবাবে বলল…….
——” কেনো তুমি কি আলাদা কেউ নাকি??যে তোমার জন্য আলাদা নিয়ম তৈরি করতে হবে??এভাবে আমার রুমে আসবে না।লাস্ট ওয়ার্নিং। আর কেমন লাগছে তুমি নিজের আয়নার সামনে দাড়ালেই বুঝতে পারবে।আমার রুমে এটা জিজ্ঞেস করার জন্য আসার মনে হয় না??আমি মডেল ডিজাইনার বা মেকাপআর্টিস্ট না।সো গো নাউ।আউট!!”
মাহি হতাশ হয়।কষ্ট লাগে খুব।ছোট থেকেই নিভ্রর পিছনে ঘুড়েছে সে।কিন্তু নিভ্র কখনোই পাত্তা দেয় না।ব্যাপারটা তাকে খুব কষ্ট দেয়।মাহির চোখে পানি চলে আসে।হতাশ হৃদয় নিয়ে সে বেড়িয়ে যায়।নিভ্র তার সামনের চুলগুলো পিছনে টেনে নেয়।ছোট ছোট কয়েকটা শ্বাস নেয়।তারপর আবার নিজের কাজে মন দেয়।
_________________________
আরিফ নিজের শার্টের হাতা ঠিক করতে করতেই রুম থেকে বাহিরে আসে।ঠিক তখনই কারো সাথে বেসামাল ভাবে ধাক্কা লাগে।নিজের দিকে তাকিয়ে তার চেহারা ফেকাশে হয়ে আসে।কত সুন্দর শার্টটা পানি পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।আরিফ নাক ফুলায়।রাগে গিজগিজ করতে করতে সামনে তাকায়।সে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সামনের ব্যক্তি তাকে বলে উঠে……
—–” ও হ্যালো চোখে দেখেন না বুঝি??”
আরিফ সামনে তাকায়।নীলাকে দেখে তার রাগ একটু দমে আসলেও তার কথা শুনে তা আরো বেড়ে গেছে।আরিফ নিজের শার্ট দেখিয়ে বলে…….
—–” এত চিৎকার যে করছেন,আপনার কি কিছু হয়েছে?? নাকি আমার কত সখের শার্ট আপনি ভিঁজিয়ে দিলেন??হুম??নিজে চোখ কি আকাশে নিয়ে ঘুড়েন??
—–” না। আমার চোখ আপনার পকেটে থাকে।এত চিৎকার করে ধমক দেওয়ার মানে কি??”
—–” ত কি করব??আপনাকে কি সুন্দর সুন্দর কবিতা শুনিয়ে দোষ দেখিয়ে দিবো??
আরিফের ভেঙ্গমা দেখে নীলা রেগে আগুন।লোকটা সুন্দর দেখতে হলেও কথা গুলো কেমন গায়ে লাগার মত করে বলে।মনে হয় মুখ দিয়ে কাটাঁ ঝঁড়ছে। নীলাও কম না।হাতের বোতলের বাকি অর্ধেক পানি নিজের পা উঁচিয়ে আরিফের মাথায় গটগট করে ঢেলে দিয়ে দাঁত বেড় করে শব্দ করে হেঁসে বলে……
——” হুম। সুন্দর করে কবিতা বলতে শিখেন।তবেই আমি নিজের দোষ দেখবো।এবার আপনাকে পারফেক্ট লাগছে।”
কথাটা বলেই উড়না উড়িয়ে পিছনে ফিরে হাঁটা দেয়।আরিফ আহাম্মকের মত হা করে তাকিয়ে আছে।তার চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। শরীর ভিঁজে গেছে।গায়ের শার্ট লেপ্টে গেছে।তার চাইতে বড় ব্যাপার সে হতবাক এই মেয়ের এহেন কান্ডে।
__________________________________
নিভ্রকে তৈরি হয়ে নামতে দেখে সবাই অবাক।নিভ্র তাদের সাথে যাবে এটা তারা ভাবতে পাড়েনি। নিভ্রর তেমন পাত্তা নেই।তার বন্ধুরা যে তাকে নিয়ে গভীর ইনভেস্টিগেশনে নেমেছে সে দিকেও তার খবর নেই।নিশান হাসে সবার দিকে তাকিয়ে।একবার চোখ মেরে আকাশের পিঠ চাপড়ে বলে…….
—–” প্রেম কত কিছু করতে পারে।”
আকাশ হা করে তাকিয়ে বলে…….
—-” তাইত দেখছি ভাই।এটা নিভ্র??”
—-” হুম। তোরা তো এখন দেখস। আমি সে অনেক আগে থেকে দেখে আসছি।শক্ট খেতে খেতে আমি রোবটের মত হয়ে গেছি। চিন্তা করিস না তোরাও হবি।কিছু সময়ের ব্যবধানে আবার শক্ট খাবি।এটা তো ট্রেইলার মুভি এখনো বাকি।
সাফাকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখে সবাই হা করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলো।নিভ্রর বন্ধুদের সাফার সাথে এর আগে ওভাবে দেখা হয়নি।সাফা কলাপাতা রংয়ের শাড়ি গায়ে মুড়িয়েছে,খোঁপায় গাঁজরা,চোখে কাজল আর হাত ভর্তি কলাপাতা রংয়ের কাঁচের চুড়ি।ঝুমুড়ঝুমড় সে চুড়ির মোহনিয় শব্দ নিভ্রর কানে বাজে দূর থেকেও।নিভ্র নিষ্পলক কিছুসময় তাকিয়ে ছিলো।মেয়েদের এত সাজ দেখে ছেলেদের মনে হচ্ছে সবাই ঘুরতে না বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। ছেলেদের মাঝে নিভ্রই একমাত্র মনে মনে বেশ খুশি সাফার শাড়ি পড়া দেখে।সবাই মুখ টিপে টিপে হাসছে মেয়েেদের নিয়ে।শুধু নিভ্র বাদে।মেয়েদের নিয়ে যতই হাসা হাসি করুক ছেলেরা, সে দিকে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা তাদের সাজসজ্জা নিয়ে ব্যস্ত।ছেলেদের দিকে দেখার এত সময় কই তাদের।ছেলেরা বেড়িয়ে গেছে।গেটে সবাই গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে।নিভ্র সবাইকে ধোঁকা দিয়ে বাড়ির পিছনের গেটে নিজের গাড়ি রেখে এসেছে।সে অপেক্ষায় আছে সাফা কখন বাহিরে আসবে।সাফা সবার পরেই বাইরে আসে।শাড়ি পরে হাঁটতে কষ্ট।একটু অসাবধানতায় অনেক কিছু হতে পারে।বয়স্ক কেউ যাবে না।মাহি অপেক্ষায় আছে নিভ্রর পাশে বসার।সাফাকে শাড়ি পড়তে দেখে সে নিজেও গ্রাউন পাল্টে শাড়ি পড়েছে।নিভ্রর দৃষ্টি আকর্ষন করতে।রাফা আগেই চলে গেছে।সাফা দু পা এগিয়ে যেতেই কেউ তার মুখ চেঁপে ধরে।সাফা আকর্ষীক এমন কান্ডে ভয় পেয়ে যায়।নিজেকে ছাড়াতে চায়।হাঁসফাঁস করে।হাত পা ঝাড়তে থাকে।নিভ্র সাফার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে……
—–” কুল সাফা আমি, আমি!!”
সাফার যেনো হুশ হয়।প্রান ফিরে আসে।শান্ত হয়ে আসে তার সব।নিভ্র মুখ থেকে হাত সরিয়ে আনে।সাফা কপাট রাগ নিয়ে বলে……
—-” আপনি কি পাগল ডাক্তার সাহেব??এভাবে মুখ ধরেছেন কেনো??এখনি ত দম আঁটকে আমি মারা যেতাম।আল্লাহ…..
সাফা দীর্ঘ করে শ্বাস নেয়।বুকে হাত দিয়ে আর এক হাত কোমড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ হাঁপাতে থাকে।নিভ্র গাড়িতে ঠেস দিয়ে দাঁড়ায়। তার চোখে মুখে হাঁসি।সাফা এবার বলল……
—–” এভাবে ধরে আনলেন কেনো??সবাই আমাকে ফেলেই চলে যাবে।আমি যাই!!”
সাফা উল্টা ঘুড়ে হাটাঁ দেয়।নিভ্র সাফার হাত টেনে ধরে।সাফার কপাল কুঁচকে আসে।তার চোখেমুখে রাগ।নিভ্র এই রাগের কারন খুজে পায় না।নিভ্র সাফাকে কিছুটা কাছে টেনে এনে বলে…….
—–” গাড়িতে বসো।”
সাফা ভারী অবাক হয়।চোখ বড় করে বলে…….
——-” কেনো??”
—-” তুমি আমার সাথে যাবে।আমি যেখানে নিবো সেখানে।”
——” মানে কি??”
নিভ্র সহজ হয়ে দাঁড়ায়। তারপর সাফার দিকে তাকিয়ে বলে……..
——” মানে সহজ।ওদের সাথে তুমি যাচ্ছ না।আমার সাথে যাবে।”
সাফা এতসময়ের রাগ ঝাড়ার সময় পেয়েছে।ঝাঁঝালো গলায় বলে………
——-” কেনো??আপনার মাহিকে নিয়ে যান আমাকে লাগবে কেনো??আমি যাবো না।আর আপনার সাথে কেনো যাবো??আপনি কে হুম??পরে দেখা যাবে কিডন্যাপ করে বিক্রি করে দিবেন।
সাফার এমন রাগী কথা শুনে নিভ্র বিস্ময়ের সাথে অবাক হয়ে বলে………
——” মাহি আসছে কোথা থেকে??আমার তোমার মাঝে মাহি কেনো আসবে??আজব!!”
সাফা সন্তুষ্ট হলো না।আরো রেগে বললো…….
—–” আপনার আর আমার মাঝে আসতে যাবে কেনো??আমি তো আপনার সাথেই নাই।মাহি আপু তো আপনার সব।তাই তো একই রুমে গল্প করেন হুম…..
নিভ্র কিছুসময় ভাবে।তারপর নিজে নিজে হাঁসে। সাফাকে আর কিছু না বলতে দিয়ে তাকে কোলে তুলে নেয়।সাফা হতভম্ভ। এমন কাজ নিভ্র করবে সে ভাবতে পারেনি।সাফা কিছুসময় স্তব্ধ থেকে মোচড়ামুচড়ি করা শুরু করে।নিভ্রর ভ্রুক্ষেপ নেই সেদিকে।গাড়ির দরজা আগেই খোলা ছিলো।সাফাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও পাশে বসে পরে।সাফা এখনো অবাক।হচ্ছেটা কি??নিভ্র বলে উঠে………
——” তোমরা আসলেই বাঁকা হাড়ের তৈরি বুঝলে??তাই সব সময় উল্টাটা বুঝ।সোজা পথ পছন্দ না তোমাদের।এখন চুপ করে বসবে।একটাও কথা না।তাহলে ভালো হবে না।তুমি কিন্তু আমার আসল রূপ দেখনি।যদি দেখতে না চাও তবে চুপ করে বসে পর।”
সাফা চুপ করেই আছে তবে নিভ্রর কথায় না তার কাজে সে হতবাক। নিভ্র ফোন বেড় করে আরিফকে কল করে সে বললো…….
——” আরিফ আমরা যাবো না তোমাদের সাথে তোমরা যাও।অভ্র আর নিশানকে বললেই হবে।ডোল পিটাতে হবে না।রাখি।”
আরিফ হা করে নিজের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকে।নিভ্রর কথা যেনো বুঝতেই পারেনি।সবাই সাফা নিভ্রকে খুঁজে।নিশান বিস্তর করে হেঁসে উঠে।তারপর বলে…………
—-” কি বলেছিলাম??মুভি এখনো বাকি।দেখ এবার সবাই আরো কি কি হয়।”
সবাই বিমোহিত হয়ে বসে থাকে কিছুসময়। নিভ্রর কান্ডে যে সবাই কবে হার্টঅ্যাক করে কারো জানা নেই।মাহি সবার চাইতে বেশি বিস্মিত। সবাই বসে থাকলেও সে উঠে যায়।আর যাবে না সে।যার জন্য যাবে সে তো তার পাখি নিয়ে উড়ে গেছে।এখন আর গিয়ে কি লাভ।
_______________________________
নিভ্র গাড়ি চালাচ্ছে আপন গতিতে।সাফা নিভ্রকে প্রশ্ন করতে করতে হাপিয়ে গেছে। সে বিরক্ত এবার। সাফা হতাশ হয়ে গাড়ির বাইরে মুখ রাখে।মেঘ করেছে আকাশে।বৃষ্টি আসবে হয় তো।জানালা দিয়ে সাঁ সাঁ বাতাস আসছে।সাফার শাড়ির আচঁল দুলছে।মন খারাপ তার।মাহিকে নিভ্রর রুম থেকে বেড়িয়ে আসতে দেখেই তার মন খারাপ।তাহলে কি নিভ্র মাহিকে পছন্দ করে??হয় তো করে।তাদের তো ছোট থেকে পরিচায়। সাফার এই কারনে এখন মনটা আকাশের মত কালো হয়ে আছে।দীর্ঘশ্বাস গুলো আপনা আপনি বেড়িয়ে আসছে।নিভ্র তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা জানার ইচ্ছে কাজ করছে না।কত সখ করে নিভ্রর কাছে শাড়ি পরে গিয়েছিল।কেমন লাগছে প্রশ্নটা করতে চেয়েছিল।কিন্তু তা আর করা হলো না।সাফা জানালায় মাথা রাখে।দু হাত গালে রেখে জানালার বাহিরে মুখ দেয়।নিভ্র প্রচন্ড বিরক্ত সাফার এমন কাজে।একটু তার মুখটাও দেখা যাচ্ছে না।নিভ্র কিছু বলতে চেয়েও বললো না।গাড়ি একটা খোলা মাঠে দাড় করায় নিভ্র।সাফা অবাক।নিভ্র এখানে কেনো গাড়ি দাড় করালো ভাবছে সে।নিভ্র গাড়ি থেকে বেড়িয়ে সাফার পাশের দরজা খুলে দিল।সাফা চোখ কুঁচকে তাকিয়ে আছে।নিভ্র করতে কি চাচ্ছে??সাফার মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুড়ছে।সাথে নিভ্রর প্রতি রাগ।নিভ্র হাত বাড়িয়ে দেয়।সাফা একবার হাত আর একবার নিভ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।নিভ্র ইশারা করে হাত ধরতে কিন্তু সাফার সে দিকে মনযোগ নেই।সে শুধু হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।নিভ্র অনেকসময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।তারপর সাফার হাত ধরে।সাফা চমকায়।নিভ্রর চোখের দিকে তাকায়।নিভ্র কিছু বলতে চায়।কিন্তু কি??সাফা পড়তে পারেনা।নিভ্র হাত টেনে সাফাকে বাহিরে আনে।বিস্তর মাঠ।চারপাশে সবুজের খেলা।দূর দূর পাহাড় দেখা যাচ্ছে। আকাশ মেঘলা।গাছ পালার রং বুঝা দায়।কালো মেঘে সবুজ রং কেমন যেনো হয়ে আছে।বাতাস হচ্ছে। নিভ্র সাফাকে মাঠের মাঝে দাড় করায়।সাফা ঠায় দাড়িয়ে থাকে।প্রকৃতি তাকে মুগ্ধ করছে।কি স্নিগ্ধ তার আলাপ।সাফা চারপাশে চোখবুলায়।নিভ্র আবার হেঁটে গাড়ির কাছে আসে।একটা দীর্ঘশ্বাস নেয়।যা থেকে সে সাহস সঞ্চয় করছে।আজ একটা ভয়ংকর কাজ সে করবে।যা আজ পর্যন্ত কখনোই করেনি।যদি কাজের ফলাফল না হয়।এটা ভাবতেই নিভ্রনীলের এই জীবনে প্রথম ভয় হয়।নিভ্র চোখবুজে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর গাড়ি থেকে সতেজ গোলাপ গুলো নেয়।বুক তার টিপটিপ করছে।জীবনে প্রথম ভয়ের ফিলিংস এতটা ভয়ংকর হয় এটা তার জানা ছিলো না।নিভ্র যত পা এগিয়ে যাচ্ছে তত তার বুকের টুপটিপ সে শব্দ তার গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।না শুনার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।কিন্তু এটা সাফা।এর কোনো বিশ্বাস নেই।চাঞ্চল্যতায় সে তার সব আবেগ, অনুভুতি, মনের কথা লুকিয়ে রাখার এক মহান শক্তি নিজের মাঝে ধারন করে।সাফার মুখ দেখলে খুব কম বুঝা যাবে আসলে সে চায়টা কি??নিভ্র বহু সময় পর্যবেক্ষণ করেও সাফার চাঞ্চল্যতা ঠেলে মন পড়তে পারেনি।তাই ভয়টা তাকে খুব বেশি গ্রাস করছে।
সাফা মনের গভীরতা দিয়ে প্রকৃতি দেখছে।ভালো লাগছে খুব।মেঘলা আকাশ,সতেজ বাতাস,দূর দূরে পাহাড়, আশেপাশে নদীও আছে হয় ত।শাঁ শাঁ পানির চলার শব্দ কানে আসছে।সাফা ঘুড়ে সাথে তার শাড়িও সমান তালে উড়ে।সামনে আসা ছোট চুল সে এক হাতে সরিয়ে দেয় আর এক হাতে শাড়ির কুচি ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।উড়ন্ত উড়না কিছুক্ষণ পর পর ধরে রাখে।সাফা সামনে তাকিয়ে নিভ্রকে দেখে।নিভ্রর হাতে গুচ্ছ ভড়া সাদা গোলাপ দেখে বিস্মেয়ে তাকায়।কৌতুহল যাগে মনে।কেনো আনছে নিভ্র ফুলগুলো?? তার জন্য??সাফা আগ্রহের সাথে তাকিয়ে থাকে।সাথে তার উদগ্রবী মন ধুকপুক ধুকপুক করে।হাত পা কাঁপে।শিরশির অনুভুতিতে জমে যায় সে।মনে জাগে নানান জল্পনাকল্পনা। ডানা ঝাপ্টায় মনের জোনাকিরা।শিহরিত হয় তার আবেগ, অনুভুতিরা।…
নিভ্র সাফার সামনে দাঁড়ায়।থেমে থেমে নিঃশ্বাস নেয় সে।কতসময় তাকিয়ে থাকে সাফার দিকে।বুকের শব্দ সাফার কান অব্ধি যাচ্ছে।নিভ্র বুঝতে পারছে সে নিজের নিয়ন্ত্রন হারাতে পারে যে কোনো সময়।তাই চোখবুজে নেয়।বসে পরে সাফার পায়ের কাছে।হাটু ভাঁজ করে হাত এগিয়ে দেয় সাফার দিকে।সাফা হতবম্ভ। একগুচ্ছ গোলাপ তাকিয়ে আছে তার দিকে।নিভ্র এবার উচ্চশব্দে বলে উঠে………………….
—- “কিভাবে শুরু করবো জানি না।কোথা থেকে করবো তাও বুঝতে পারছি না।আমি কখনো এভাবে মনের কথা বহিরপ্রকাশ করিনি।তুমিই প্রথম নারী যার মাঝে আমি এভাবে নিজের অস্তিত্বে হারিয়েছি।নিভ্র থেকে কখনো ভিলেন তো কখনো মডেল ফডেল আবার কখনো ডাক্তার সাহেব হয়েছি।তুমি কে আমি জানি না??কিভাবে আমার জীবনে পা রেখেছ,তাও জানিনা??কেনো হঠাৎ আমার অন্ধকার জীবনে এসেছো তাও যানি না??কেনো একঝাঁক জোনাকি হয়ে আমার জীবন আলোকিত করেছ??, তাও আমি জানি না।
শুধু জানি আমি আসক্ত
আমি ঘায়েল
আমি পাগল
তোমার কিশোরী বয়সের প্রেমে আমি সিক্ত।
আমার এই সাতাইশ বছর আট মাসের জীবনে এটা প্রথম হার।
আমি হেরেছি।তোমার ওই নীলাভ চোখে আমি মরেছি।
আমি শূন্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আমি নিঃশ্ব হয়ে নিঃশেষ হয়েছি।
তোমার সেই টোলে আমি পাগল হয়েছি।
ভুলেছি নিজেকে।
আমি ভয়ঙ্কর ভাবে আহত হয়েছি তোমার নামক এই ভয়ঙ্কর রোগে।
এই রোগের ওষুধ নেই আমার কাছে।
আছে শুধু তোমার কাছে।
তবে চাইনা এই রোগ সেরে যাক।
চাই এই জ্বলন্ত অগ্নিশিখায় জ্বলতে।
আমি তোমার দুষ্টুমির সঙ্গী হতে চাই।
চাই তোমার চাঞ্চল্যতায় নিজেকে রাঙাতে।
আমি শুধু তোমাতেই ভাসতে চাই।
তোমার তৈরি আগুনে নিজেকে জ্বালাতে চাই।
আমি ভয়ঙ্কর ভাবে তোমাকে চাই।
যে তুমিতে একবেলায় নয় দুবেলায় নয় শতবেলায় আমি হারতে চাই।
আমি শুনতে চাই তোমার ওই বুকের ধুকপুকানির সেই শব্দ।
সেই ভয়ঙ্কর লাজুকলতায় আমি মরতে চাই।
চাই অনন্ত পথ তোমাতে ডুবে কাটাঁতে।
চাই শুধু তোমাকে ভালোবাসতে।
ভয়ঙ্কর অনুভুতিরা আঁকড়ে ধরে আছে আমায় শুধু তোমাকে আমার করবো বলে।
এই প্রকৃতিকে আমি আমার প্রেমের সাক্ষী করতে চাই।ঢেলে দিতে চাই সব আবেগ।জমানো সব অনুভুতি আমি তোমার নামে করতে চাই।তোমার হাত ধরে পারি জমাতে চাই।তোমার অনুভুতিতে নিজেকে নতুন করে খুঁজতে চাই।তুমি কি আমাকে রাঙ্গাবে তোমার চাঞ্চল্যতায়??
হবে আমার জীবনের জোনাকির আলো ????
🍁
নিভ্রর নিজেকে হালকা হালকা লাগছে খুব।এখনো সে চোখ খুলেনি।ভয়েরা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে।যদি সাফার উত্তর না হয়!!
সাফা তাকিয়ে আছে।চোখ যেনো মানতেই চাচ্ছে না।কান যেনো শুধু নিভ্রর বলা কথাগুলোই বাজিয়ে চলেছে মনে।নিভ্র চোখ খুলে তাকায়।সাফার চোখের ভাষা যেনো হঠাৎ করেই সে পড়তে পারছে।মনে হচ্ছে সাফা তার কাছে সচ্ছ আয়না।যা থেকে সে সব পড়ে নিতে পারছে।নিভ্র এবার ভয় মুক্ত। তার ঠোঁটজোড়ায় বিশাল হাসি ফুটে।যা এর আগে কখনোই দেখে নি সাফা।যারা হাসে কম হঠাৎ করেই বেশি হাঁসে তাদের হাসি আলাদা হয়।সাফা তা মিলাচ্ছে।নিভ্র আহত গলায় বলে উঠে……..
——-” জবাবের আশা বাদ।এবার ফুলগুলো তো নেও!!অনেক্ষন বসে আছি।আরো থাকতে পাড়বো। যদি বসে থাকতে বলো।তা না হলে ফুল নিয়ে নেও।কি হল বলো??
সাফা হঠাৎ করেই হেঁসে উঠে।নিভ্র এটা আসা করেনি।সে ভেবেছে সাফা লজুক হবে।অন্যদের মত হাঁসফাঁস করবে।একটু ভীতূ হবে।কিন্তু এমন কিছুই হল না।নিভ্র অবাক।সাফা ফুলগুলো যত্নের সাথে নিভ্রর হাত থেকে নিতে হাত বাড়ায়।নিভ্রর হাতে হাত লাগে।নিভ্রর মাঝে এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করে।সাফার মনে যেনো হঠাৎই দমকা হাওয়া বয়ে যায়।উদ্বেগপূর্ণ মন যেনো হঠাৎ শান্ত হয়ে যায়।নিভ্র হাত আলগা করে।সাফা ফুলগুলো নেয়।বুকে জড়িয়ে নেয়।নিভ্র আগ্রহ নিয়ে বসে সাফার কান্ড দেখে।হঠাৎ হঠাৎ পরিবর্তন হচ্ছে সাফার চেহারা।সাফা নিচের দিকে কিছুসময় তাকায়।তারপর আবার নিভ্রর দিকে তাকায়।চেয়েই থাকে এক ভাবে।মন নামক ভয়ংকর যন্ত্রটা থেমে থেমে কেঁপেকেঁপে উঠছে।সাফার নিজেকে কেমন অদ্ভুত লাগছে।অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু পেলে বোদহয় এমনই হয়।ভেতরের ছটফটানি হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যাচ্ছে উচ্চ মাত্রায়।ইচ্ছে হচ্ছে ঝাঁপিয়ে নিভ্রর বুকে পড়ে বলতে”হ্যাঁ আমি হব আপনার জীবনের জোনাকির আলো।”
নিভ্র এবার ভড়কে যায়।সাফা হঠাৎ এমন করে কেনো তাকাচ্ছে।না শুনার চিন্তাটাও এতটা ডেঞ্জারাস ছিলো না যতটা সাফার মুখ দেখে মনে হচ্ছে। নিভ্র হকচিকে যায়।উদ্বেগী হয়ে উঠে মুহূর্তেই।দ্রুত প্রশ্ন করে…….
—–” কি হয়েছে সাফা??তোমার কি খারাপ লাগছে??আমি উত্তর জানতে চাইনা।তুমি কি ভয় পেয়েছ??কিছুই বলতে হবে না।আমি সত্যিই কিছু চাই না।কোথায় সমস্যা হচ্ছে??অসুস্থ লাগছে কি??সাফা কিছু বলো??
নিভ্রর মুহূর্তেই দুনিয়া পাল্টে যাচ্ছে। না শুনার চেয়ে সাফার কথা ভেবে ভয় হচ্ছে। নিভ্র দাড়াঁতে নেয়।কিন্তু তার আগেই সাফা ভয়ংকর কান্ড ঘটিয়ে ফেলে।নিজের উপড় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাফা নিভ্রর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।নিভ্র যেনো বিস্মেয়েই জ্ঞান হারাবে এমন অবস্থা তার।সাফা হঠাৎ করে ঝড় উঠার মত করে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে।নিভ্রর কলিজায় ভয়ংকর দাগ কাঁটে। সাফার মাথায় হাত রাখে।সাফা নিজের সমস্ত ভর নিভ্রর উপড় ছেড়ে আপন মনে কাদঁছে। নিভ্র সাফার মাথায় হাত বুলিয়ে বিস্মিত হয়ে বসে আছে।ব্যাপারটা তার কল্পনার বাহিরে।শরীর আশার হয়ে আসছে।অনুভুতিরা হঠাৎ হঠাৎ অদ্ভুত ভাবে ডানা ঝাপ্টাচ্ছে।
.
.
#চলবে____________