00

একগুচ্ছ কদম !! Part- 09

[ গল্পের মাঝে বিভিন্ন ধরনের কথা থাকতে পারে।
কিছু কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যও উল্লেখ থাকতে পারে গল্পের ক্ষেত্রে। কারো কাছে চটি লাগলে এক্সট্রেমলি সরি আমার কিছু করার নেই।]
কিছুদিন পরে যখন আমি রিদির কাছে আমার ভালোবাসার প্রকাশ করি তখন সে আমায় জানায় তার সাথে সৌহার্দ্যের একটা প্রণয়ের সম্পর্ক আছে। আমি ভেঙে পড়েছিলাম বাপি আমায় সামলিয়ে রাখছিলেন। ঠিক সেই সময় একদিন সৌহার্দ্য এবং রিদিকে পার্কে একেঅপরের হাত ধরে হাঁটতে দেখে আমার কষ্টটা আবারও বাড়ছিল। রাগের মাথায় এলোমেলো ভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে একটা এক্সিডেন্ট করে বসেছিলাম । ৩বছর হসপিটালে ছিলাম আমেরিকাতে। মোহো জানত না ও জানত আমি রিদিকে কষ্ট দিয়ে দূরে চলে গিয়েছিলাম। বাপি আমাকে তখন সামলে নিয়েছিলেন তবে আমার মনে একটা রাগ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ওদের থেকে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। বাপিকে বলে ওদের পিছনে লোক লাগিয়ে সব খোঁজ খবর নিয়েছি । ৪বছর পরে এই দেশের মাটিতে আবার পা রেখেছি সবার থেকে প্রতিশোধ নিতে।
এতো কিছুর পিছনে যে আছে তাকে শাস্তি পেতে হবে।

বর্তমান……….
অতীত ভাবতে ভাবতে কখন যে রাত শেষ হয়ে সকাল হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলাম আজকে নতুন কিছু হবে ।
রিদিতা : নিজেকে শক্ত করে তৈরি হতে লাগলাম ভার্সিটির জন্য । ওরা আমার জন্য অপেক্ষা করবে । আমি আর ভেঙ্গে পড়ব না একবার যেহেতু ওর থেকে দূরে সরে এসেছি আর যাব না ওর কাছে অনেক কষ্ট দিয়েছি ওকে আমি আর পারব না। ও সবাইকে ধ্বংস করে দিবে ওর চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছি আমি । এইসব ভাবতে ভাবতে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলাম ভার্সিটির জন্য।
মোহো : আমার বাসায় কবে যাবেন বিয়ের কথা বলতে ?
মাহিদ : কিছুদিন পর ।
মোহো : কিছুদিন পর কিছুদিন পরে
কবে মাহিদ ?
মাহিদ : বললাম তো কিছুদিন পরে চেঁচামেচি করছো কেন।
মোহো : চেঁচামেচি করব না তো কি করব ২বছর যাবত আপনার কিছুদিন পর কিছুদিন পর শুনেই চলেছি । আপনি কি চাচ্ছেন বলুন আমাকে ।
মাহিদ : কিছুদিন পরেই যাব সত্যি ( বলেই মোহোর হাতে হাত রাখলাম )।
মোহো : তাহলে কিছুদিন পরেই কথা হবে আমাদের । আসছি ( বলেই হাত ছাড়িয়ে চলে আসলাম । ২বছর যাবত মাহিদকে বিয়ের কথা বললেই এড়িয়ে যায় । বাসায় জানাতে বললে বলে কিছুদিন পর আমি বুঝতে পারছি না কি চায় উনি । কেনো এই লুকোচুরি খেলছেন। আজকে আর ভার্সিটিতে যাব না । )
-হ্যালো পাঠিয়ে দিয়েছ ?
-হ্যা ভাই পাঠিয়ে দিয়েছি সন্ধ্যার পর পর পেয়ে যাবে।
-আচ্ছা ।

ফোন টা কেটে দিলাম। এইবার তোমরা দুভাই বোন অনুতপ্ত হয়ে আমার পিছন পিছন ঘুরবে । অথচ আমি ধরা দিব না । উমমমম সবচেয়ে বড় শাস্তি তো অনুতপ্ত হওয়া । তোমাদের মতো যদি আমিও একি পথে চলে তোমাদের শাস্তি দেই তবে তোমাদের আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্যই থাকবে না। রিদিকে আমি ভালোবাসি আর মাহিদকে আমার বোন। নিজের বোনের ভালোবাসাকে কঠিন শাস্তি দেয়ার মতো মন মানসিকতা আমার নেই । আর আমার ভালোবাসা সে তো সবার খেলায় একটা গুটি ছিল মাত্র যাকে সবাই ব্যবহার করেছে। আর কেউ ব্যবহার করবে না তাকে এইবার সে নিজের মতো বাঁচুক। আমি তোমায় দূর থেকেই ভালোবেসে যাবো কদম ।
ভার্সিটির সামনে রিদি আসতেই ওকে টেনে নিয়ে গাড়ির মধ্যে ফেললাম । আজই শেষ দেখা ওর সাথে আমার।
রিদি : কি চাই আপনার বলুন ।
আমি : আজকে তোমার কিছু সময় চাই । এরপর তোমার সামনে আসব না আর ।
রিদি : বলুন কি বলবেন শুনছি আমি ।
আমি : তোমাদের বাসায় সন্ধ্যায় কিছু জিনিস যাবে তোমরা দুভাই বোন দেখে নিও ।
রিদি : তারপর

আমি : আমার বোনকে যেন তোমার ভাই কখনো কোন কষ্ট না দেয় । আমার বোনকে তোমরা আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছ ঠিক আছে তবে ও যেন কখনো কোন কষ্ট না পায় নাহলে তার শাস্তি পাবে তোমার ভাই । আমি কখনো তোমাদের জীবনে আসব না আমার বাপি কে নিয়ে দূরে চলে যাব তোমরা আমার বোনকে দেখে রেখ ( বলেই রিদিকে জড়িয়ে ধরলাম কষ্ট হচ্ছে খুব তবে ওরা সবাই ভালো থাকুক এটাই চাই আমি চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া পানি মুছে। নিজেকে স্বাভাবিক করে সরে আসলাম । ) তোমার বাসার সামনে এসে পড়েছি নেমে যাও । ভালো থেকো।
রিদি : আমাকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। ওর কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজছে । ও আমার থেকে দূরে সরে যাবে এটা শুনে আমার এতো কষ্ট কেন লাগছে। আমিও তো এটাই চাইতাম । তবে কি রিদানশ ও তার কদমকে ভুল গিয়েছে নাকি এখনো তার মনে শুধু তার কদমই রয়েছে কোনটা ঠিক ?
চলবে …….