অপ্রিয় হলেও সত্যি

অপ্রিয় হলেও সত্যি !! Part- 11

আসফি মেঘকে কোলে তুলে সোজা বাথরুমে চলে যায়৷ মেঘকে বাতটাবে নামিয়ে পানি ছেড়ে দেয়।
-এগুলো কি হচ্ছে বের হন আপনিও আমি একা পারবো।
-না পারবা না৷
আসফি মেঘের চিল্লানিকে কোন পাত্তাই দিচ্ছে না উল্টে উপোভগ করছে। আর মাঝে মাঝে কিস করে যাচ্ছে। মোট কথা খুবই অসস্থির মধ্যে দিয়ে মেঘের গোসল শেষ করলো৷
-এখন জামাটাও অপনি চেঞ্জ করবেন। 🤬
-তুমি বললে করতে পারি😁
এবার মেঘ এমন একটা চিল্লান দিলো আসফি কানে হাত দিয়ে বার হতে বাদ্ধ হলো। আসফি গিয়ে অন্য বাথরুমে কাপড় পালটে নেয়।
মেঘ বেরিয়ে আসে নীল রং এর একটা সারি পরে। ফরসা গায়ে নীল রং মানায় বেশ। রাত বেজে গেছে ৪ টা৷৷ চুল আচরাতে বেলকনিতে যায়। চুল গুলো আচরে দোলনায় বসে গাটা এলিয়ে দেয়। রাতে আকাশে ঈদের চাঁদ দেখা যাচ্ছে সেতো ভুলেই গেছিলো কিছু দিন পরে ঈদ। রমজানের ঈদটা কি ভালো কেটেছিলো। হাসি ঠাট্টা মজা। ২ টা মাসের মধ্যে সব পাল্টে গেলো। আসফি তার অচেনাকে মিস করেছে। কি অদ্ভুত কিছু দিন আগে জাকে দেখার জন্য ছটফট করতো আজ সে কাছে আসলে কষ্ট হয়। আল্লাহ চাইলে কিনা করতে পারে৷ যাকে সারাটা জীবন বাবা বলে মেনে আসলাম এতটা ভালোবাসা দিলাম সে ধোকা দিলো। টাকা পৃথিবীর মানুষের কাছে টাকাই সব।
মলিন হাসি ফুটে ওঠে ঠোঁটের কোনে।
-তুমি এখানে সারা বাড়ি খুঁজে আসলাম আমি।
পেছনে ফিরতে আসফিকে দেখতে পায়। চুপ করে বসে আছে।
-অলে বৌ টা এতো রাগ তার দেখো। মুখটা অপ করে রেখেছো। বাচ্চা বৌ টাকে বাচ্চামি করতে দেখিনা কতদিন।
-😕😕
-ভেংচি কাটছো কেন।
মেঘ উঠে চলে যেতে গিলে আসফি হাতটা ধরে টান মারে,
-কই যাচ্ছো। (গালে চুমু দিয়ে)
মেঘ কেঁদেই দিলো।
-কাঁদছো কেন।
-কান্না পাচ্ছে তাই। (বুকে মাথা ঠেকিয়ে)
-কি হইছে বলো কেঁদো না কষ্ট হয় আমার। এই চোখে পানি না ঠোঁটে হাসি দেখতে চায় আমি। কি হইসে বলো।
-জানিনা কষ্ট হচ্ছে ।
আসফি মেঘকে আষ্টেপৃষ্ঠে আকরে ধরে।
এভাবে অনেকটা সময় মেঘ কাঁদতে থাকে প্রায় ১ ঘন্টা পর, মেঘ কান্না থামিয়ে।
-ছাড়ুন।
-না৷
-কেন৷
-আমার বৌকে আমি ধরবো না তো কে ধরবে।
মেঘ আসফির দিকে তাকিয়ে,
-খারাপ লাকতেছে কেন আমার৷
-কি হইছে৷ বলো আমাকে কাকে মনে পরতেছে৷
মেঘ এবার আসফিকে জড়িয়ে ধরলো, আসলে পুরোনো সব কথা মনে পরে মনের অজান্তেই কষ্ট হচ্ছে খুব খুব কষ্ট হচ্ছে তার৷ বেশি মনে পরছে বাবার সাথে কাটানো দিন গুলোর কথা, একটা লোক কিছু সম্পত্তির জন্য কিভাবে এতো নিচু খেলা খেলতে পারে। এই মুহুর্তে তার পাশে কোন অপন লোক প্রয়োজন আসফি তাকে কষ্ট দিয়েছে কিন্তু ভালো যে বাসে তাকে।
-কেঁদেই চলেছো কেঁদেই চলেছো। কি হচ্ছে এগুলো দেখো কান পেতে বুকে কষ্ট হচ্ছে শোন৷
মেঘ এখন কিছুটা সামলে নিলো নিজেকে,
-চলে একটা জায়গায় নিয়ে যায়৷
-কোথায়।
-চলোতো।
আসফি মেঘকে নিয়ে বেরিয়ে পরে,
এক অচেন পথের উদ্দেশ্যে, অনেকটা সময় ড্রাইভ করার পর তারা এসে পৌছায় একটা নদীর কাছে।
-এখানে কেন এসেছি।
-চলো তো৷
আসফি মেঘকে বাইরে এনে নদীর একটা পাশে বাতাসে দাড় করায়। রাত তখন ১০ টা। মেঘের একটু ভয় ভয় করছে কিন্তু পাশে থাকা প্রিয় মানুষটাকে দেখে খুব ভালে লাগছে।
-ভয় হচ্ছে তাইতো একহাতে মেঘকে জড়িয়ে।
-একটু।
-মেঘ৷
-হুম।
-ক্ষমা করবা না আমাকে৷
মেঘ একাকিত্বে ভুগছে এতো কষ্ট না সয়ে তাকে মেনে নিয়ে পথ চলাটা ভালো বিয়ে তো হয়েছেই৷
মেঘ কিছু না বলে আসফিকে জড়িয়ে ধরে৷
-ভালোবাসি।
-আমিও।
আসফি আজ আকাশের চাঁদ পেয়েছে অবশেষে সে তার মেঘের কাছ থেকে ক্ষমা পেলো। আরো বেশ কিছুটা সময় সেখানে থেকে ওরা চলে আসে বাসায়।
বাসায় এসে মেঘ মায়ের সাথে দেখা করে রুমে আসে,
-তুমি কাল থেকে কলেজ যাবে এই কয় দিন যা যা মিস গেছে আমি সবটা পুষিয়ে দিবে ভালো করে পড়িয়ে। কাল থেকে একটা নতুন দিনের শুরু হবে। (মেঘকে কাছে টেনে চুমু দিয়ে)
-হুম।
-চলো ঘুমাতে। মেঘ আসফির বুকে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে,
সাকালে,
মেঘের ঘুম ভাঙতে আসফির বুকে আবিষ্কার করে নিজেকে। মুখ তুলে তার দিকে দেখতে, কি অপরুপ সুন্দর সে এক দম বাচ্চা দের মতো ঘুমচ্ছে তাকে দেখলে মায়া হয়৷ ভালোবাসা গুলো আরো দিগুণ বেড়ে যায়।
-এভাবে দেখছো যে আমার তে নজর লেগে যাবে।(টিপ টিপ করে চেয়ে)
-আপনি উঠলেন কখন।
-এখন।
-😕
-ভেংচি কাটো কেন।
-ছাড়ুন নামাজ পরবো।
-আইলা ধরে রাখছি বুঝি৷ (মেঘকে আরো শক্ত করে জরিয়ে)
-আইলা ধরে ন রাখলে কি করেছেন ছাড়ুন আমাকে।
-না।
-নামাজের ওয়াক্ত চলে যাচ্ছে মাহা বিপদ তো।
-আচ্ছা যাও৷ একটু ধরলে খালি যায় যায় করে।
– হ ভালো।
মেঘ উঠে,
-এই এক মিনিট আপনিও উঠবেন।
-কেন
-নামাজ পরবেন আবার কেন। আপনি কিন্তু তো বলবেন না কোন কিন্তু নাই আজ থেকে৷ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন ভালো ছেলে হয়ে থাকবেন।
উঠুন। ।
-আমি উঠছি তার আগে সর্ত আছে।
-কি সর্ত?
-নামজ শেষে যা চাইবো তাই দিতে হবে রাজি।
-কি চাইবেন, 🧐
-যা চাই তাই আগে বলো দিবা।
-আচ্ছা দিবো এবার উঠে পরুন বেলা উঠে গেলো।
দুজনে ওজু করে নামাজ পরে নিলাম৷ আমার এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করছে। কি অসাধারণ আমার জীবনটা আবার সুখের আলো পেলো।
নামাজ শেষ করার পর,
-নামাজ শেষ এবার আমার কথা রাখার পালা।
-জী বলুন মহাশয় কি লাগবে আপনার।
-বেশি কিছু না আমাকে একটা কিস করলে হবে তুমি নিজে থেকে।
-কি।
-কি না জী৷ (মুখটা এগিয়ে দিয়ে) নেও করো করো।
-আরে।
-কি আরে ওয়াদা দিছো জলদি পুরোন করো।
মেঘ একটু এগোতে এগোতে গেলে আসফি পুরোটা এগিয়ে মেঘকে ধরে বসে।
৫ মিনিট পর ছেড়ে দেয়।।
-এবার যেতে পারো৷ গিয়ে রেডি হয়ে নেও। কলেজ যাবা।
মেঘ বেরিয়ে আসে লুচু পোলা খালি উল্টো পাল্টা।
মেঘ আসফির জন্য কফি বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়। তার পর মায়ের সাথে দেখা করে রেডি হয়ে নেয়।
আসফি খাবার খেয়ে মেঘকে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
এভাবে দুষ্টু মিষ্টি ভালোবায় কেটে যায় ১ বছর। মেঘের hsc পরিক্ষা শেষ। আজ রেজাল্ট দিবে আসফি খুব খেয়াল রেখে মেঘকে সাপর্ট করেছে। মেঘের জীবনের সেই ভয়ানক এক মাসের কথা মেঘ ভুলেই গেছে৷
রেজাল্ট পেয়ে যায় মেঘ GpA5 পেয়েই পাশ করেছে সে বরাবর ই ভালো student ছিলো।
-জান । (আসফি)
-হুম।
-তোমাকে আবার বিয়ে করবো।
-হুম। 😳
-হুম এই বিয়েটা সবায় জানবে আর এটা পরিপূর্ণ বিয়ে হবে ফলে আমি আমার সব অধিকার পাবো। 😉
-আপু ডাকছে আমি যাবো।
মেঘ দৌড়ে চলে আসে।
-ধুর বাবা বৌ এক আমার দেখো খলি পালায়।
মেঘ আমায়রার রুমে চলে আসে, (সেদিন মেঘ আমায়রাকেও নিয়ে আসে সবাই একই সাথে থাকে এখন ওরা)
-আপু
-কিরে কখন এলি।
-মত্র
-কিছু বলবি।
-কেন এমনি বুঝি আসা যায় না।
-হুম আসা যায়। কিন্তু এই সময় আমার ভইয়া তোকে ছেড়ে দিলে এটা অবাক না।
-আপু তুমি সুধু লজ্জা দেও।
-ওলে বুড়ি আমার লজ্জা পায়।
আচ্ছা চল তোর রেজাল্ট এর সেলিব্রেশন হবে,
-আচ্ছা তাই৷
-হুম এতো ভালো রেজাল্ট করেছিস। তোর জন্য উপহার রাখছি।
-দেখাও।
-চোখ বন্ধ কর।
মেঘ চোখ বন্ধ করতে আরাবি মেঘকে একটা চেন পরিয়ে দেয়।
-নে খোল।
-দেখতো পছন্দ হয় কিনা
-ওয়াও আপু খুব সুন্দর তুমি দিয়েছো খারাপ হতে পারে। ধন্যবাদ (আরাবিকে জরিয়ে ধরে)
-😊।
-বাহ দুই বোনের কি প্রেম আর আমি একলা একলা প্রহোর গুনি।
-তুইতো গুনবি ভাইয়া এখন ভালে করে দেখে নেে আগামি ৩ দিন বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তুই ওকে দেখতে পাবি না।
-আইলা। এ কেমন কথা আমি থাকবো কেমন করে।
-তা জানি না তবে তোর বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তুই ওকে দেখতে পাবি না।
-এটা কেমন শাস্তি।
-শাস্তি না এটা নিওম।
-এ কেমন নিয়ম।
-আমি জানি না তুই যা এখন। ঘরে যা আজ থেকে মেঘ এই রুমে ঘুমবে।
-আমি ঘুমোবো কি নিয়ে তাহলে।
-কোল বালিস নিয়ে। যা। কালকে হলুদ তার প্রস্ততি কর। আর অপেক্ষা কর😉
আরাবি আসফিকে বার করে দিয়ে দরজা লক করে দেয়।
-চল আপু ঘুমিয়ে পর। কাল সকালে উঠতে হবে।
মেঘ আরাবির সাথে ঘুমিয়ে পরে।।
কিন্তু আসফির ঘুম নাই খালি এদিক ওদিক করছে।
-নাহ বৌরে ছাড়া খালি খালি লাগে।
বৌ আমার নিশ্চিত আরামে ঘুমচ্ছে আর আমার ঘুম নেই।
জাহ আরতো এই রাতটা সুধু মানিয়ে নি।
সকালে,
আরাবি সমস্ত বাসার সাজানোর কাজ দেখছে, কোতায় কি বাদ পরলে হাজার হোক ভাই এর বিয়ে।
কিছু সময় পর আারাবি মেঘকে সাজাতে চলে যায়।
একটা জামদানি হলুদ সারি ফুলের গয়না৷ পরিয়ে দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷
মাসআল্লাহ আমার বোনটাকে পরির মতো লাগছে।
মেঘ লজ্জা পায়।
-চল এবার তোকে স্টেজে বাসায়।
আরাবি মেঘকে নিয়ে স্টেজে বসিয়ে দিয়ে চলে যায়
মেঘের চোখ দুটো আসফিকে খুঁজছে।
-ধুর বাবা নেই কেন উনি গেল কই।
হটাৎ মেঘ দেখতে পায়,
চলবে,
(সাজিয়ে লিখতে পারিনি মেবি তার জন্য দুঃখিত)