অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 49

(আমার রিয়েলি মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,,,,কিছুই মনে থাকছেনা)
.(সর্টের জন্য দুঃখিত_public_7:55)
রাজ দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর ভাবছে একটু আগের কথা…
যেখানে রাজ শীতলকে একটা সি সি টিভি ফুটেজ দেখানো হয়েছিলো…
শীতল সেটা দেখার পর রুমে গিয়ে দরজা লক করে আছে…
.
.
.
শীতলকে ঐ দিন রাতের ফুটোজ দেখানো হয়েছিলো…
শীতল তখন ফুটেজ দেখে কিছু বলেনি বাট মনে মনে ভেবেছে…
এটা না দেখালেও চলতো বিকোজ শীতল তো রাজকে চেনে সে কখনোই শীতলকে ধোকা দেবেনা…
মুখে মুখে রাজকে অবিশ্বাসের কথা বলার একটাই কারণ সেটা হলো রাজকে নিজের থেকে দূরে সরানোর একটা পথ ….

কাজলের বেশ লজ্জা লাগছে…হিমালয় এগুলো কি বলছে…কাজলের মুখ লাল হয়ে গিয়েছে…হিমালয় হাসতে হাসতে বললো…
তোমার তো এখনি যা অবস্থা বাকি জিবন তোমাকে নিয়ে চলবে কি করে…
কাজল অবাক হয়ে তাকালো হিমালয়ের দিকে….
হিমালয় কথা ঘুরিয়ে বললো…
_আচ্ছা এতো বোঝার কাজ নেই এখন এই সুপ খাও…
কাজল মাথা নিচু করে সুপ খেলো কিছুটা…কাজলের কেমন যেনো সব উল্টো পাল্টা লাগছে…
কাজলের মাথা ঘুরছে আর ঘুম পাচ্ছে…
.
.
.
কাজল ঝিম ঝিম চোখ নিয়ে শেষ বারের মতো হিমালয়ের দিকে তাকিয়ে তার হাসিময় মুখ খানি দেখলো….
.
.
.
রাজ দরজা টা জোরে জোরে ধাক্কা দিয়ে ওপেন করলো…
রাজ দেখলো শীতল শাড়ি পরছে…
শাড়ি পরছে বলতে শাড়ি পরার চেষ্টা করছে…
রাজ কিছুটা নিশ্চিত হলো যে শীতল ভুল কিছু করছে না…
.
.
.
রাজের তো ভয়ে প্রায় মরে যাওয়ার মতো সিচুয়েশন হয়েছিলো…
রাজ বললো…
_কি ব্যাপার তুমি শাড়ি পড়ছো কেনো ???
কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে কি ???
আমাকে বলতে আমি তোমাকে শাড়ি পরিয়ে বাহিরে নিয়ে যেতাম…
_আপনাকে কেনো বলবো ??
তাও শাড়ি পরাতে…আপনি আর কখনো যেনো আমাকে শাড়ি পরাতে না পারেন এজন্যই আমি শাড়ি পরা শিখছিলাম…
সব সময় শাড়ি পরানোর নাম করে আমাকে টাচ করার কোনো মানেই হয়না…আমার ঘৃনা লাগে আপনার ছোয়ায়….
রাজ কিছু বলতে চেয়েও বললো না…
রাজের প্রচন্ড রাগ উঠলো …সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে করিডরে চলে গেলো….

শীতল বসে বসে বোর হচ্ছিলো তাই সে টেলিভিশনের সামনে বসলো একটু চ্যানেল ঘোরাঘোরি করতে…
আজকাল চ্যানেলে চ্যানেলে কি সব বাজে বিজ্ঞাপন দেয় …
রাজ শীতলের পাশে বসে বসে পায়ের উপর পা তোলে ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছে…
শীতল একটা চ্যানেলে দেখলো চিকন মোটা হওয়ার বিজ্ঞাপন…সব সময় হারবাল ঔষধের বিজ্ঞাপন কেনো দেখানো হয় সেটাই শীতল বুঝতে পারেনা…
রাজ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বললো…
_শীতল তোমার তো মেদ কমানোর প্রয়োজন নেই…তুমি তো এমনিতেই মাশ আল্লাহ স্লিম ফিট বডির গার্ল…
বলেই রাজ হাসি দিলো…
শীতলের বেশ রাগ হলো…সে অন্য চ্যানেল দিলো….
সেখানেও নাম্বার ওয়ান আরেকটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেলো শীতল….
হর্স পাওয়ার নামের বিজ্ঞাপন একজন বলছে…স্বামি স্ত্রির মধ্যে প্রেম কমে গিয়েছে তাহলে হর্স পাওয়ার সেবন করুন…
.
.
.
শীতল আড় চোখে রাজের দিকে তাকালো….
রাজের তো এমনিনেই কোটি কোটি প্রেম আকাশ থেকে পরে…
আচ্ছা এমন কোনো কিছু নেই যা দিয়ে প্রেম ভালোবাসা কমে যায়…
এই ঔষধ হলে ভালোই হতো তাহলে তারা দুজন খেয়ে নিতো আর দুজনেরই কষ্ট কমে যেত…
_শীতল এই ঔষধ জিবনেও তৈরি করা হবেনা…বৃথা ভাবনা ভেবোনা…একটু আমার কথা ভাবো…
আর এই বিজ্ঞাপন টা কিন্তু বেশ…ভাবছি হর্স পাওয়ার জন্য অর্ডার করবো….
তাহলে আমার প্রতি তোমার একটু ভালোবাসা তৈরি হবে…
এই লাইফে তো কখনো নিজে থেকে আমাকে একটুও আদর করবে বলবে মনে হয়না…এটার হেল্প আমাকে নিতেই হবে দেখছি…
শীতল রাজের দিকে রেগে তাকালো…তারপর সোফায় থাকা কুশন দিয়ে রাজের মাথায় মেরে করিডরে চলে গেলো….
রাজ ল্যপটপে কাজ করা অবস্থায় কিছুক্ষন হাসলো…..
কাজলের জ্ঞান ফিরলো…
সে নিজেকে একটা বেডে আবিষ্কার করলো…
পাশে তাকিয়েই কাজল হিমালয়কে দেখতে পেলো…
হিমালয় একটা পানির গ্লাস কাজলকে খেতে দিলো…
কাজল গ্লাসটাকে ফ্লোরে ছূরে মারলো….
_আপনার কি উদ্দেশ্য…???
আমাকে এভাবে এখানে আনা হয়েছে কেনো ????
আপনি সুপে কিছু মিশিয়র ছিলেন…
কাজল বেড থেকে উঠে দরজায় নক করলো…দরজা বাহির থেকে লাগানো ছিলো…
কাজ বেশ ভয় পেয়ে গেলো…
_প্লিজজ কাজল ভয় পেয়ো না…তোমার কোনো ক্ষতি আমি করবোনা…
এখানে বস…
তোমাকে কিছু কথা বলার আছে…
কাজল ভাদ্য হয়ে বেডে বসলো…
হিমালয় তার চোখের সান গ্লাস টা খোলে ফেললো…
_কাজল ভালো করে দেখো আমার এই চোখ নড়ছেনা কারণ চোখটা মোটামোটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে….
তোমার কাজিন রাজ এই কান্ড ঘটিয়েছে….
কাজল চমকে উঠলো…
হিমালয় আবার বলতে লাগলো…
_স্কুলে থাকা কালিণ রাজ আমার এই কষ্ট টা দিয়েছে…
রাজ নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমাকে কথা দিয়েছিলো তার বোনের সাথে আমার বিয়ে দেবে….
একদিন রাজের সাথে তোমাকে আমি দেখেছিলাম…
বিশ্বাস করো সেদিন থেকে তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছিলাম…
প্রথমে তোমাকে রোজা ভেবেছিলাম …ভেবেছিলাম রাজের বোনকে বিয়ে করে প্রতিশোধ নেবো…কিন্তু তোমাকে দেখার পর থেকে আমার মাইন্ড পাল্টেছে…

হিমালয় কিছুক্ষন থেমে আবার বলতে শুরু করলো….
_একদিন জানতে পারি তুমি রোজা না …রোজার মৃত্য হয়েছে…
রোজা একজনকে ভালোবেসে আত্মহত্যা করেছে…
রোজা ভালোবাসার মূল্য দিয়েছে নিজের জিবন দিয়ে…
রোজার ভালোবাসা তাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো…
.
.
.
এরপর থেকে আমি তোমাকে ফলো করতাম…
আমি তোমার আশে পাশে থাকতাম…
তোমার মনে আছে…
ভিবিন্ন জায়গা থেকে তোমার নামে পার্সেল আসতো…আসলে ওগুলো আমি পাঠাতাম…
সরাসরি তোমাকে ভালোবাসি বললে তুমি মানতে না…
তুমি তো যে সে মেয়ে নও…
তার উপর রাজও এটা মেনে নিতো না…
তাই তো একটা প্ল্যান করলাম…
তোমার মনে ধীরে ধীরে চিঠির মাধ্যমে আমার জন্য জায়গা করে নিলাম…
তুমি তো সাইকোলজির স্টুডেন্ট …তাই তোমার মাঝে কৌতোহূল কাজ করে খুব…
তুমি পেপারের বিজ্ঞাপন গুলো পড়তে ভালোবাসো…
বিষেশ করে হলুদ কালারের লেখা বিজ্ঞাপন…
তাইতো আমি প্ল্যান করে শুধু তোমার জন্যই একটা বিজ্ঞাপন বানালাম একটা পেপারে…যেটা তোমার কাছে গিয়ে পড়লো…
তুমিই প্রতিদিন পেপার কালেক্ট করো পেপার ওয়ালা থেকে‌…
ধীরে ধীরে তোমাকে ইমোর্সোনালি ফাসালাম…
যেনো আমার কাজ সহজ হয়…
কাজল ভাবতেই পারছেনা এই লোকটাকে বিশ্বাস করে দেখা করতে এসেছিলো ময়মনসিংহে…
মানুষকে আসলেই বিশ্বাস করা যায়না…
একটা মেয়ের অনুভূতির কথা একটা মেয়েই বুঝতে পারে…
এভাবে তার মনকে নিয়ে খেলতে পারলো হিমালয়…

_কাজল তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো সেটা তোমার ফেস দেখেই বোঝা যাচ্ছে…
এজন্যই তোমার চোখ থেকে পানি পড়ছে কারণ যাকে ভালোবাসে মন সে যদি বিশ্বাস ভাঙে তাহলেই তোমার মতো চোখের পানি পড়ে…
যেমনটা আমাকে বিশ্বাস করে তোমার চোখ থেকে পড়ছে…
.
.
.
কাজল বললল…
_আমার সাথে এমন নাটক করার মানে কি ???
_আগেই তো বললাম তুমি সরাসরি মানবেনা আমার ভালোবাসা…কারণ তোমার মতো হেলেনাস্টিক বুদ্ধিমতি মেয়েরা আসল ভালোবাসা বুঝতে পারেনা….
তাই তোমাকে ট্রেপে ফেলে কাজটা করতে হয়েছে খুব সাবধানে…
আমি চাই…