অন্ধকার

অন্ধকার !! Part- 07 (Last-Part)

তনু দেখে নেহাল চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। কোন কিছু বলছে না৷ তাই ও আস্তে আস্তে নেহালের দিকে তাকাতেই, হঠাৎই নেহাল কোন কিছু না বলেই ওকে সোজা কোলে তুলে নেয়৷ তনু পুরো অবাক হয়ে যায়। ও অবাক কণ্ঠে বলে উঠে,
~ একি! কোলে তুললেন যে?
— তোমার জন্য অনেক বড়ো একটা সারপ্রাইজ আছে। তবে সেটা এখানে না অনেক দূরে। তুমি চোখটা একটু বন্ধ করো। আমি বললেই তবে খুলবে৷
~ আবার সারপ্রাইজ! আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যা বলবেন।
তনু চোখ দুটো বন্ধ করে নেহালের গলা জড়িয়ে ধরে থাকে। নেহাল ওর পাওয়ার দিয়ে ব্ল্যাক হোল এনে ওরা ওদের কাঙ্ক্ষিত জায়গায় চলে আসে। তনু ফিল করে একটা ঠান্ডা বাতাস ওর পুরো শরীরে এসে লাগছে। সাথে পানির ঢেউয়ের শব্দ। নেহাল ওকে নিয়ে কোথায় আসলো? একটু হেঁটে নেহাল তনুকে নিচে নামিয়ে দিয়ে ওর পিছনে দাঁড়িয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,
— এবার চোখ মেলে তাকাও।
তনু আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায়। ও পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। তনু দেখে, খোলা আকাশের নিচে সমুদ্রের ঠিক সামনে অনেক সুন্দর করে একটা বেড রাখা৷ বেডের উপর গোলাপের পাপড়ি। আশেপাশে রঙবেরঙের লাইট লাগানো। অনেক সুন্দর করে সাজানো পুরো জায়গাটা। তনু একদম অবাক হয়ে গিয়েছে। নেহাল পিছন থেকে ওর কানে কানে বলে,

— গভীর সমুদ্রের মাঝে এই দ্বীপটা আমি বানিয়েছি। শুধু তোমার আর আমার জন্য। এই দ্বীপের আশেপাশে ম্যাজিক্যাল বেড়িয়ার দেওয়া আছে৷ তাই কোন শত্রু আমাদের খুঁজেও পাবে না৷ এবং দেখতেও পারবেন না৷ আমাদের জীবনের বিশেষ মুহূর্তটাকে আরও বিশেষ করতে এই ছোট প্রচেষ্টা। তোমার পছন্দ হয়েছে তো?
~ অনেক অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। আমি কখনো ভাবতেও পারি নি, আমার এই ইচ্ছাটা আপনি না জেনেও বুঝে যাবেন৷ সত্যিই আমি অনেক অবাক হয়েছি।
নেহাল তনুকে নিয়ে আস্তে আস্তে বেডের কাছে গিয়ে ওকে বসিয়ে দেয়৷ তনু বঁধুর মতো চুপচাপ বসে আছে আর খুব খুব লজ্জা পাচ্ছে। নেহালও বেডে উঠে তনুর সামনে বসে। ওর হাত দুটো ধরে অনেকক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। তনুর বাম গালে একটা ছোট্ট করে কালো তিল আছে। যেটা নেহালের সবচেয়ে বেশি পছন্দ। ও আস্তে করে তনুর গালে তিলের উপর ওর আঙুলের স্পর্শ বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,
— কখনো ভাবি নি আমার বিয়ে হবে৷ তাও একটা মানুষের সাথে। জীবনটা আসলেই অদ্ভুত তাই না?
~ হুম। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
নেহাল তনুর রিং ফিঙ্গারটা নিয়ে অনেক দামী ডায়মন্ডের একটা রিং পরিয়ে দেয়৷ তনু রিংটা দেখে পুরো অবাক। আলোতে চিকচিক করছিল ডায়মন্ডটা। ও খুব খুশি হয়ে বলে,
~ আপনি এগুলা কোথায় পান? এত সুন্দর।
— এটা ডার্কনেসের রিং৷ এই রিং এ কিন্তু ম্যাজিক্যাল পাওয়ার আছে। দেখবে?
~ হ্যাঁ হ্যাঁ।
— রিংটায় চুমু দিয়ে তুমি যা চাইবে তাই চলে আসবে। তবে মৃত বা জীবিত কোন মানুষ বা এমন কোন কিছু আসবে না৷
~ ওহহ! তাহলে আমি একটা জিনিস চাইবো এটার কাছে। চাই?
— হ্যাঁ হ্যাঁ চাও।
তনু রিংটায় একটা চুমু দিয়ে মনে মনে একটা জিনিস চায়। নেহাল দেখে হঠাৎ করে চারদিক কেমন আলোতে ভরে যাচ্ছে। ও আকাশে তাকিয়ে দেখে অনেক বড়ো একটা চাঁদ উঠেছে। জ্যোৎস্নার আলোতে চারদিক ভরে গিয়েছে। পরিবেশটা আরও রোমান্টিক আর সুন্দর হয়ে গিয়েছে। তার মানে তনু চাঁদ দেখতে চেয়েছে। অবশ্য এই চাঁদটা নকল। নেহাল তা জানে। তবে তনুকে সেটা বলে না। তনু খুব খুশি হয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আবার নেহালের দিকে তাকিয়ে বলে,
~ এই চাঁদটা দেখতে গিয়েই আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম। তাই আজকের এই বিশেষ দিনে এই চাঁদটাকেও সাথে চাই।
নেহাল মুচকি একটা হাসি দিয়ে তনুর গালে হাত রাখে। ভরা জ্যোৎস্নার আলোতে তনুকে যেন আরও বেশি নেশাকাতর লাগছিল। নেহাল আস্তে আস্তে তনুর ঘোরে পড়ে যাচ্ছে। তনুর মিষ্টি গোলাপি ঠোঁটটা ওকে অনেক আকর্ষণ করছে। আর তনু নেহালের নেশাকাতর দৃষ্টি দেখে লজ্জায় লাল টুকটুকে হয়ে যাচ্ছে। নেহাল তনুকে বলে,
— আজ তোমাকে অনেক অনেক বেশি সুন্দরী লাগছে৷ এই পুরো বিশ্বে তোমার চেয়ে বেশি সুন্দরী আর একটিও নেই৷ শুধু তুমি আর তুমি।
তনু মুচকি হেসে দেয়। মাথা নিচু করে লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে ও বলে,
~ জি না। আমার থেকেও আপনাকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে৷ একদম রাজার মতো।
— রাজা যখন তার রাণীকে কাছে পায় তখন সেও এমনিই অনেক সুন্দর হয়ে যায়৷ এবার রাজা তার রাণীটাকে একদম আপন করে নিতে চায়। তাকে ভ্যাম্পায়ার কুইন বানাতে চায়৷ সে কি প্রস্তুত?

~ ইসসস, জানি না৷ চুপ করুন তো আপনি। (লজ্জায় মেয়েটা শেষ)
নেহাল আর এক মুহূর্ত দেরি না করে তনুর মিষ্টি ঠোঁটটাকে একদম নিজের করে নেয়৷ নিস্তব্ধ মনোরম পরিবেশ যেন ওদের মাঝের ভালবাসাটাকে আরও গভীর করে দিচ্ছে। ওরা দুজন আস্তে আস্তে এক হয়ে যাচ্ছে। ওদের মন ওদের দেহ আর সবশেষে ওদের আত্না একদম এক হয়ে যায়। নেহাল দেখে হঠাৎ করেই তনুর পুরো শরীর থেকে অনেক পাওয়ারফুল আলোক রশ্মি বের হচ্ছে। নেহাল কোন ভাবে তাকাতেই পারছে না এই আলোর তাপে৷ আলোটা ওর শরীর থেকে বের হয়ে সোজা আকাশের বুকে উঠে যাচ্ছে। নেহাল তনুকে ছাড়ে না৷ ওর খুব ভয় হচ্ছিল। ও ফিল করে তনুর পুরো শরীর আস্তে আস্তে একদম বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। অস্বাভাবিক শক্তি অনুভব করছে নেহাল। নেহাল শুধু বলছে,

— তনু তুমি কি ঠিক আছো? তনু…
কিন্তু তনু কোন কথা বলছে না৷ আস্তে আস্তে এই পাওয়ারফুল আলো আবার তনুর মাঝে ঢুকে যায়৷ নেহাল তাকিয়ে দেখে তনু একদম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। ওর পুরো শরীর অনেক ফরসা হয়ে গিয়েছে। ওর চুল গুলো অনেক বড়ো বড়ো হয়ে গিয়েছে। চোখের পাপড়ি বড়ো হয়েছে। শরীরের গঠন আরও আকর্ষণীয় হয়ে গিয়েছে। মোট কথা তনুকে পুরো অপ্সরাদের মতো লাগছিল। তনু আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায়। নেহাল অস্থির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
— ঠিক আছো তুমি?
~ হ্যাঁ। তবে আমি না আমার মাঝে অনেক অস্বাভাবিক শক্তি অনুভব করছি। আচ্ছা আকাশে এই নীল গোলকের মতো এটা কি?
— কি তুমি দেখতে পাচ্ছো আমার বেরিয়ারটা? ওয়াও তনু তুমি তো তাহলে আমার থেকেও পাওয়ারফুল ভ্যাম্পায়ার হয়ে গিয়েছো। এই বেড়িয়ার একমাত্র আমি ছাড়া আর কারো দেখার ক্ষমতা ছিল না৷ কিন্তু তুমি তো দেখতে পাচ্ছো। তারমানে তুমি আমার চেয়েও শক্তিশালী হয়ে গিয়েছো।
~ কি বলছেন? সত্যিই?
— হ্যাঁ তনু৷ আর তুমি আগের থেকেও অনেক সুন্দরী হয়ে গিয়েছো। আমার জানা মতে তোমার ভয়ংকর কোন রূপ ধারণ করার কথা ছিল। কিন্তু তুমি অনেক সুন্দরী রূপ পেয়েছো। দেখবে তোমার ভ্যাম্পায়ার রূপ?
~ হ্যাঁ।

— আসো।
নেহাল একটা বড়ো আয়না নিয়ে এসে তনুকে সেই আয়নার সামনে দাঁড় করায়। আর বলে,
— দেখো।
তনু নিজেকে দেখে চিনতেই পারছে না। ও অবাক পানে নিজেকে দেখছে৷ তনু দেখে ওরও নেহালের মতো সামনের দুটো দাঁত বড়ো বড়ো। তনু বলে উঠে,
~ আমি কি আমার পাওয়ার এর পরীক্ষা করতে পারি? আমার খুব ইচ্ছা হচ্ছে আমার শক্তি দেখতে৷
— হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই আমিও দেখতে চাই। এক কাজ করো সমুদ্রের দিকে তোমার ডান হাতটা তাক করে মনে মনে আগুনের কথা ভেবে ফায়ার করো। একদম তোমার সব শক্তি দিয়ে ফায়ার করবে।
~ ঠিক আছে৷
নেহালের কথা মতো তনু যেই ওর সব শক্তি দিয়ে সমুদ্রের দিকে আগুন মারে, ওরা দেখে বিশাল বড়ো মানে দশ তলা বিল্ডিংয়ের এর চেয়েও বেশি আগুনের প্রস্থ আর লম্বা ত চোখেই দেখা যায়। নেহাল দ্রুত ওকে থামায়৷ ও রীতিমতো ভয় পেয়ে যায়৷ তনু নিজেও অবাক। নেহাল বলে উঠে,
— তনু তুমি তো মুহূর্তেই পুরো একটা গোটা দেশ শেষ করে দিতে পারো। তোমার পাওয়ারের কোন লিমিট নেই৷ তুমি কখনো তোমার সব শক্তি ব্যবহার করবে না। নাহলে অনেক সমস্যা হবে।
~ ঠিক আছে৷ আচ্ছা এখন আমি চাইলে কি আপনার পাশে থেকে শত্রুদের সাথে ফাইট করতে পারবো?
— হ্যাঁ পারবে৷ তুমি একাই একশো জানো? মারসুকে এবার আর কেউ বাঁচাতে পারবে না।
~ হুম। আমার স্বামীর শত্রু মানে ও আমারও শত্রু। ওকে আমিও ছাড়বো না।
নেহাল দেখে তনু একদম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। অনেক সাহসী হয়ে গিয়েছে আগের থেকে। এটাই চাচ্ছিল ও। ও তনুর কাছে এসে ওর কানে কানে বলে,
— মিস ভ্যাম্পায়ার কুইন এবার আমরা আমাদের বাকি সময়টা কাজে লাগাই? কি বলেন?
তনু লজ্জায় নেহালকে আস্তে করে একটা ধাক্কা দিয়ে বলে, খালি লজ্জা দেয় আমাকে৷ কিন্তু নেহাল তনুর ধাক্কায় অনেক দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে। তনু ভয় পেয়ে যায়। নেহাল হাসতে হাসতে আবার ওর কাছে এসে ওর ঠোঁটটা নিজের করে নেয়। যাতে ওর শক্তটা নেহালের উপর কোন কাজ না করে। সেদিন রাতের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল তনুর কাছে নতুন নতুন এক্সপেরিয়ান্স। আর ভালবাসার আদান প্রদান তো আছেই৷
পরদিন সকালে ওরা আবার তনুর বাসায় চলে আসে। তনু ফ্রেশ হয়ে নেহালের দেওয়া নতুন ড্রেসটা পরে নেয়। কারণ ও ভ্যাম্পায়ারদের কুইন হয়ে ডার্কনেসে যাবে প্রথম বারের মতো। নেহালও ওরানতিশের মতো মানে ভ্যাম্পায়ার কিং এর পোশাক পরে নেয়। আজ অনেক দিন পর ও ওর প্রাসাদে যাবে৷ নেহাল তনুর হাতটা ধরে বলে,
— কি রেডি তো? ডার্কনেসে তোমাকে দেখার জন্য হাজার হাজার ভ্যাম্পায়ার অপেক্ষা করছে।
~ হ্যাঁ।

— তাহলে চলো।
নেহাল আর তনু একে অপরের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। নেহাল ওর বিশেষ পাওয়ার ব্যবহার করে তনুকে নিয়ে ডার্কনেসে টেলিপ্যাথ হয়ে যায়৷ ওরা এখান নেহালের রুমে আছে৷ তনু দেখে শুধু নেহালের রুমটাই মনে হয় ওদের বাড়িটার সমান৷ এত্তো বড়ো। তনু অবাক হয়ে বলে,
~ এত বড়ো রুমে থাকেন আপনি?
— হুম৷ রাজা বলে কথা। এই রুমে আগে আমার বাবা-মা থাকতো। তারা এখন কেউই বেঁচে নেই।
~ ওহ! আপনার কোন ভাই বোন নেই?
— নাহ! সবাইকে মেরে ফেলছে মারসু।
~ আপনি কোন চিন্তা করবেন না ওকে আমি শেষ করবো।
— আচ্ছা আচ্ছা। এখন চলো সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।
~ চলুন।
নেহাল আর তনু ওদের রুম থেকে বের হতেই দেখে রাইগার দাঁড়িয়ে আছে। ওদের স্বাগত জানায়৷ পুরো পথ জুড়ে ফুল বিছানো। ফুলের উপর দিয়ে ওরা হেঁটে যাচ্ছে। তনু নেহালের হাত ধরে আশেপাশে দেখতে দেখতে যাচ্ছে। নেহালের প্রাসাদ বিশাল বড়ো। ওর প্রাসাদে কাজ করা মেয়ে ভ্যাম্পায়ার গুলো তনুকে দেখে খুব খুশি হচ্ছে। এত সুন্দরী মেয়ে ভ্যাম্পায়ার ওরা আগে কখনো দেখে নি৷ সবাই খুব খুশি। কিছু পথ হাঁটতেই ওরা দুজন সবার সামনে চলে আসে। তনু দেখে হাজার হাজার ভ্যাম্পায়ার জড়ো হয়েছে। ওর খুব নার্ভাস লাগছিল। নেহাল তনুর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে ওকে অভয় দেয়। তারপর সবার দিকে তাকিয়ে জোর কণ্ঠে বলে উঠে,
— আমার ডার্কনেসবাসী আমি যেমনটা আপনাদের কাছে ওয়াদা করে ছিলাম যে আমি আমার রাণীকে যেভাবে হোক নিয়ে আসবো। এবং আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব৷ এই হলো আপনাদের ডার্কনেসের নতুন রাণী, লিরা ফিরুন্দিস। তনু আজ থেকে তোমার নাম লিরা ফিরুন্দিস৷
~ অনেক সুন্দর নাম।
— এবার তুমি কিছু বলো।
~ জি। আমি লিরা ফিরুন্দিস, আপনাদের রাজার একমাত্র এবং শেষ রাণী৷ আমি ওয়াদা করছি আমি আপনাদের সবাইকে সকল ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করবো। আপনারা কি আমাদের সাথে থাকবেন?
— হ্যাঁ…. (সবাই)
নেহাল পুরো অবাক হয়ে যায়। তনু সত্যিই একজন রাণীর মতো ভাষণ দিচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে বিকট বিকট শব্দ হয়। সবাই আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে মারসু রাইবেদান তার বিশাল আর্মি নিয়ে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে। সাধারণ ভ্যাম্পায়ারদের উপর অ্যাটাক করছে। নেহাল কিছু বলার আগেই তনু খুব ক্ষিপ্ত হয়ে নেহালের সামনে এসে মারসুদের দিকে ওর সর্বোচ্চ পাওয়ার দিয়ে পালটা অ্যাটাক করে৷ মুহূর্তেই মারসু এবং ওর শয়তান সাথীরা নিঃশেষ হয়ে যায়। হাজার হাজার ভ্যাম্পায়ার তনুর ক্ষমতা দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে যায়। এরকম শক্তি তারা আগে কখনো দেখেনি। তনু এবার নেহালের দিকে ঘুরে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,
~ আমি থাকতে আপনার কাছে কেউ আসতে পারবে না৷
নেহাল খুব খুশি হয়ে তনুকে ধরে বলে,
— তুমি একটু আগে কাকে মেরেছো জানো?
~ কাকে?

— আমাদের সবার বড়ো শত্রু মারসু রাইবেদানকে। ও আমার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। তুমি তো মুহূর্তেই ওকে শেষ করে দিলে।
~ বলেন কি! তাহলে আর কোন বিপদ নেই?
— না৷ আজ থেকে তুমি, আমি এবং আমরা সবাই শান্তিতে এখানে থাকতে পারবো। যতদিন নতুন কোন শত্রুর আগমন না হয়।
~ তাহলে তো খুব ভালো।
— হ্যাঁ।
হঠাৎ ওরা দুজন দেখে, যত ভ্যাম্পায়ার ছিল তারা সবাই মাথা নত করে বলছে, রাজা ওরানতিশের জয়, রাণী লিরা ফিরুন্দিসের জয়৷ আমরা সবাই আজ থেকে আমাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের আনুগত্য আপনাদের পায়ের কাছে দিলাম। নেহাল তনুর দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে সবার উদ্দেশ্য বলে,
— আমি চাই আপনার সবাই সুখে শান্তিতে থাকুন৷ আপনাদের আনুগত্য আমি ওরানতিশ গ্রহণ করলাম। আজ সবার জন্য আনন্দের একটা দিন৷ আজ পুরো ডার্কনেস আনন্দে ভেসে যাক। সবার জন্য সব কিছু ফ্রী। সবাই আনন্দ করুন৷
নেহালের কথা শুনে সবাই আনন্দে উল্লাসিত হয়ে উঠে। নেহাল আর তনু মানে ওরানতিশ আর লিরা ফিরুন্দিস একসাথে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ওদের ডার্কনেসের জনগণকে দেখছে আর খুশিতে হাসছে। আজ থেকে ওদের জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু হবে৷
— সমাপ্ত।

—-> একটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক রোমান্টিক ধারার গল্প লেখার ইচ্ছা ছিল। তাই এবার এটা লিখে দিলাম। আশানুরূপ সাড়ার থেকেও অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি এই ডার্কনেস গল্পটায়। আমি সত্যিই খুব অনুপ্রাণিত। এখন আপনাদের কাছে জানতে যাই, পুরো গল্পটি কার কাছে কেমন লেগেছে। আশা করি জানাবেন৷ যাদের মন্তব্য অনেক সুন্দর হবে তাদের মন্তব্যগুলো নিয়ে আমি একটা পোস্টও দিব৷ তাই সবাই মন্তব্য করুন৷ জানিয়ে দিন কেমন লেগেছে এই কাল্পনিক ধারার গল্পটি।
© আবির খান।