অন্তরালে তুমি আমি !! Part- 05
“আবিরের হাত পুড়ছে, অহনা চুলাটা অফ করে আবিরের হাতটা ধরে টান দেয়।তারপর আবিরের হাতটা কল ছেড়ে দিয়ে ঠান্ডা পানির নিচে ধরে।ফ্রীজ থেকে বরফ এনে আবিরের হাতে ঘষতে থাকে।”
“আবির তাকিয়ে দেখে অহনার দুচোখ গড়িয়ে পানি পরছে।তখন আবিরের আরও বেশি খারাপ লাগে।অহনার থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,”
—কাল আমি এমনটা করেছি না তোমার সাথে?
—প্লিজ আবির ভুলে যাও নাহ যা হয়েছে! এভাবে নিজেকে কেন পুড়াচ্ছো? এটা দেখে তো আমার আরও বেশি কস্ট হচ্ছে, তুমি বুঝছো না?
“অহনা আবিরকে জড়িয়ে ধরে।আর বলে,”
—আমি তো তোমার সারপ্রাইজটা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।কিন্তু হুট করে কিভাবে ওখানে আদি চলে আসলো বুঝলাম না।
—সারপ্রাইজ!!! কিসের সারপ্রাইজ?
“অহনা আবিরকে সব খুলে বলল।জলি বলেছিস আবির সারপ্রাইজ দিতে তাকে রুমে ডেকেছে।আর যতোক্ষণ না আবির বলবে চোখ খোলা যাবে না।”
—তুমিই বলো আবির আমি কি কোনো ভুল করেছি? আদি এসে যখন আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো তখন রুমটা অন্ধকার ছিলো। ওকে আমি দেখিনি আবির।তবে ওর প্রতিটা স্পর্শে আমার কাছে অস্বস্তিবোধ হচ্ছিলো।আমি যখন বুঝতে পারি ওটা তুমি নও তখন চোখ খুলতেই তোমাকে আমার সামনে পায়।তোমাকে কিছু বোঝানোর আগেই তুমি আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাড়িতে নিয়ে আসো।আর ওই শাড়িটা নিয়ে কতো কথা শুনাও।ওটাতো তুমিই আমাকে অফিসে থাকতে পাঠিয়েছো। তাহলে কেন আমাকে এতোটা কস্ট দিলে?
“অহনার কথা শুনে আবিরের কাল রাতে জলির ফোন করে বলা কথাগুলো মনে পরে যায়।আবির ভাবে তাহলে এই সবকিছু জলিরই প্লান?”
“আবিরকে চুপ করে থাকতে দেখে অহনা বলে,”
—কি ভাবছো আবির? কিছু বলছো না কেন?
—অহনা ভুল করে ফেলেছি আমি।
—মানে?
—আমি তোমাকে কোনো শাড়ি পাঠাই নি।এমন কি কোনো সারপ্রাইজ প্লানও করি নি। বন্ধুদের জোড়াজুড়িতে পার্টিতে তোমাকে শুধু ফোন করে সময় মতো আসতে বলেছিলাম।
—তাহলে….
—সবকিছু জলির প্লান।
—কি বলছো আবির? জলি এমনটা কেন করবে?
—সে অনেক কথা।তোমাকে আমি অফিস থেকে ফিরে শোনাবো।
—কিন্তু..
“আবির অহানার ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে থামিয়ে দেয়।”
—চুপপপপ! আর কোনো কথা নয়।অফিস থেকে এসে সব খুলে বলবো।
“অহনা আর কোনো কথা বলে না।” “আবির রুটি বেলে ছেঁকে, আলুভাজি করে, অহনাকে খাইয়ে দিয়ে টিফিন রেডি করে নিয়ে অফিসে চলে যায়।”
“আবির চলে যাওয়ার পর অহনা ভাবতে থাকে, আবির কখন আসবে?” “আর কখন শুনবে সবটা।সব না শুনলে যে অহনার মনে শান্তি হচ্ছে না। তাহলে কি জলি এমনটা করেছে? কিন্তু কেন? এতে জলির কি লাভ?”
“অহনা গোসল করে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের ভেজা চুল ঝারছে।”
“হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ।অহনা ভাবে এমন সময় আবার কে এলো?”
“অহনা ভেজা চুল এক হাত দিয়ে মুছতে মুছতে দরজাটা গিয়ে খুলে দেয়।আর তাকিয়ে দেখে দরজার সামনের দেয়ালে হেলান দিয়ে আদি দাড়িয়ে আছে।”
“দরজা খোলার শব্দে আদি সামনে তাকিয়ে অহনাকে দেখে দাঁত কেলিয়ে হাসে।”
—আপন…
“অহনা আর কিছু বলার আগে আদি অহনার মুখটা চেপে ধরে।অহনা চিৎকারও দিতে পারে না।আদি অহনার শরীরের গন্ধ শুকে জোড়ে একটা নিশ্বাস নেয়।”
—বাহহ সোনা! তোমার শরীরের গন্ধটা জাস্ট ওসাম।
“অহনার মুখ চেপে ধরায় কিছু বলতে পারে না।তাই হাত দিয়ে আদির চোখের মধ্যে আঙুল ঢুকিয়ে দিতে যায়।কিন্তু আদি অহনার হাত ধরে বসে।তারপর অহনার দিকে নেশা ধরা দৃষ্টিতে তাকায়। দেখে অহনার চুলের পানি গড়িয়ে গলা পর্যন্ত নেমে এসেছে। তাই আদি অহনার মুখ ছেড়ে দিয়ে দুই হাত ধরে দরজার সাথে চেপে ধরে।”
আর বলে,
—জীবনে অনেক মেয়ে দেখেছি।কিন্তু তোমার মতোন দেখিনি।কি রূপ! কি যৌবন! দেখলেই মাতাল করে দেয়! আহহ কাল আবিরের জন্য কিছু করতেই পারলাম না।কিন্তু আজ তো আবির বাসায় নেয় চলো সোনা তোমাকে আদর দিই।
“কথাটা বলেই অহনার কোমড় জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিতেই জলি দূর থেকে অহনা আর আদির কয়েকটা ছবি তুলে নেয়।”
“আদি তার নাকটা অহনার গলায় ছোয়াতে যাবে তার আগেই অহনা নিজের সর্বস্ব শক্তিটুকু দিয়ে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে আদিকে ফেলে দেয়। তারপর ভেতর থেকে দরজাটা লক করে দেয়।”
“দরজার সাথে হেলান দিয়ে অহনা হাঁপাতে থাকে।আর কাঁদে। ভয়ে অহনার শরীর থেকে ঘাম ছুটছে।আর ওদিকে দরজায় লাথি, কিল, গুতা দিয়ে চলেছে দরজায় আদি।”
“আদির এমন কান্ড দেখে অহনা এবার সাহস করে উঠে দাড়ায় আর বলে,”
—এই মুহূর্তে, এখান থেকে আপনি যদি না যান তাহলে আমি চিৎকার করবো।চিৎকার করে পুরো এলাকার লোক জড় করব।তারপর কি অবস্থা হবে আপনার বুঝতে পারছেন?
“অহনার কথাটা জলি শুনে ফেলে। তাই জলি এসে টানতে টানতে আদিকে নিয়ে যায়। দূরে নিয়ে বলে,”
—আজ থাক অন্য একদিন আসিস!
—মানে? আমার ওকে আজই চায় সর জলি..
“আদি যেতে লাগলে জলি আবার আদিকে টেনে ধরে।তারপর আদির মাথায় থাবড়িয়ে থাবড়িয়ে বলে,”
—লুচ্চা! বলদ! বান্দর! তোর কি বুদ্ধি নাই? অহনা যদি চিৎকার করে এলাকার মানুষ জড় করে তাহলে কি অবস্থা হবে বুঝতে পেরেছিস? সেই সাথে আমার প্লানটাও যাবে।
—তাহলে?
—অন্য একদিন আসিস আজ চল।
চলবে,,,,,,,,