অদ্ভুত ভালোবাসা

অদ্ভুত ভালোবাসা ! পর্ব- ১১

গল্প বিলাসী (নিশি)

অনেক্ষন যাবৎ বসে আছি নিশি আসছেনা যেই চলে যাওয়ার জন্য
উঠতে যাবো তখনি দেখি নিশি আসছে

এ আমি কোন নিশিকে দেখছি খুব কান্না করেছে চোখ গুলো ফুলে
আছে দেখেই বুঝাযাচ্ছে

নিশি আমার সাথে দেখা করার সময় কখনো চুল বেধে আসতো না আজ
চুল কাঠি দিয়ে বেধে এসেছে

এসে দেখি নীল আগেই চলে আসছে গিয়ে পাশে বসলাম

দুজনেই চুপচাপ লেকের পাড়ে বসে আছে কেউ কিছু বলছেনা

সরি নিশি। প্লিজ আমার সাথে রাগ করে থেকোনা। প্লিজ তুমি আমাকে যা
শাস্তি দাও আমি মেনে নিবো

তাহলে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও

বলো কি জানতে চাও

বাবা মা তোমার কাছ থেকে দুরে কেনো? আর ঐ মেয়েটিই বা কে?

প্লিজ নিশি এইসব নিয়ে আমি কথা বলতে চাইনা এইসব ছাড়া অন্য কিছু বলো
আমার তাড়া আছে যেতে হবে
( সরি নিশি আমি জানি এগুলো বললে যে তুমিও আমার থেকে দুরে সরে
যাবে কিন্তু আমিতো তোমাকে হারাতে চাইনা)

এরিয়ে যাচ্ছো?
তোমাদের মাঝে কি হয়েছে আমি জানিনা আর যেহেতু তোমার বলার
ইচ্ছেও নেই তাই আমিও আর জানার জন্য জোড় করবো না

তবে একটা কথা বাবা মাকে যেদিন তোমার বাড়িতে নিয়ে আসতে
পারবে সেদিন ই আমাকে কল করবে তার আগে না বলেই চলে
আসছিলাম

নিশি কথাগুলো বলেই চলে যাচ্ছিলো হাত টা ধরলাম

এতোবড় শাস্তি আমাকে দিওনা নিশি আমি কোনোদিনও বাবা মাকে ফিরিয়ে
নিয়ে যেতে পারবোনা

তাহলে আমাকে ও আর প্রয়োজন নেই তোমার।

নাহ নিশি তোমাকে যে আমার ভিষন প্রয়োজন বলেই নিশিকে জড়িয়ে
ধরলাম

প্লিজ নিশি আমাকে একা করে দিওনা আমি তোমার কাছে অনেক কিছু
লুকিয়েছি অনেক কিছু।

তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা বলেই নীল কাঁদতে লাগলো

আমিও নীলকে জড়িয়ে ধরলাম যাবোনা কথা দিলাম

কি হয়েছে আমাকে বলো তুমি আমি সব ঠিক করতে পারবো কিনা জানিনা
তবে তোমার পাশে থেকে সাহায্য করবো

নিশির কথা গুলোতে কেনো জানি খুব শান্তি লাগছিলো তারপরও জড়িয়ে
ধরে রাখলাম

নীল তাকাও আমার দিকে?
আমাকে বলোনা কি হয়েছে তোমাদের মাঝে?

অন্যদিন বলবো প্লিজ

নাহ আমি আজকেই শুনবো

জোড় করছো?

হ্যা। তাই

ওকে তাহলে শুনো

নীল আজ আর বের না হলে হয়না?

কেনো?
আজ কি কোনো কাজ আছে?

নাহ তেমন কিছুই না আজ তোর সেলিম আংকেল আসবে তার পরিবার
নিয়ে।

তাতে আমার কি?

তাতে তোমার অনেক কিছু।
আর আজ তুমি বের হবেনা কিছুক্ষন পর তোমার এংগেসম্যান্ট

আকাশ থেকে পরলাম মনেহয় বাবার কথা শুনে

বাবা আমি এখন বিয়ে করবো না আর তুমি তা খুব ভালো করেই জানো

হ্যা জানি আর কি করে কি করতে হয় তা আমি খুব ভালোভাবে জানি
আজ সেলিম এর মেয়ের সাথে তোমার এংগেসম্যান্ট না আমি বিয়েটাই
দিয়ে দিবো

সেই মেয়ে যে কিনা সারাদিন ক্লাবে পরে থাকে?
সেই মেয়ে যে কিনা রাতের পর রাত ক্লাবে ছেলেদের সাথে
কাটায়?
ঐ মর্ডান মেয়েকে আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না আমি বিয়ে করলে
অদিতিকেই করবো

ঐ অদিতিকে বিয়ে করলে ভিখারি হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা
তোমার?

আর সেলিমের মেয়েকে বিয়ে করলে তুমি তার কোটি কোটি টাকা
সম্পত্তিশালী হতে পারবে তাতে আমার ব্যবসার দিক থেকেও ভালো
হবে দুইদিকেই লাভ আর লাভ

তুমিতো আমাকে কোটিপতি করার জন্য বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নাওনি বরং
নিজের ছেলেকে বিক্রি করে দিচ্ছো তাই বলো তবে আমিও অবুঝ
নই যে আমি তোমার সব কথা শুনবো

দরকার হলে আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো তার পরও আমি বিয়ে
করবো না
বলেই বেড়িয়ে আসছিলাম

শুনো। আজ তোমার বাবার টাকা আছে বলেই অদিতি তোমার কাছে
আছে আজ যদি আমি তোমাকে টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি থেকে বঞ্চিত করে
দেই দেখবে কোথায় গিয়ে দাড়ায়
তোমার অদিতি

আর যাই হোক অদিতি আমাকে
ছেড়ে যাবেনা আমি কিছুতেই ঐ মেয়েকে বিয়ে করবো না

তাহলে তুমিও শুনে রাখো আজ থেকে নীল নামের কেউ আমার
পরিবারে নেই।
এই বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা থেকে সব কিছু থেকে তোমাকে বঞ্চিত করা
হলো

আজ থেকে তোমাকে আমি চিনিনা আর তুমিও আমাকে বাবা আর তোমার
মাকে মা বলে চিনবে না কিংবা পরিচয় দিবেনা

প্রয়োজন নেই তোমার বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সার আমি চলে গেলাম। বলেই
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসলাম

বেড়িয়ে তো আসলাম কিন্তু যাবো কোথায়? কি করবো? কিচ্ছু মাথায়
আসছেনা?

এরই মধ্যে রিয়াদের কথা মনেহলো রিয়াদ নিশ্চয়ই আমাকে হেল্প
করবে তার কাছে যাই

রিয়াদ দেখতো কে আসছে?

দেখছি মা

আরে তুই এই অসময়ে?

ভিতরে ঢুকতে দে তারপর তো বলি

ও হ্যা তাইতো চল

ভিতরে গিয়ে দেখলাম আংকেল বসে আছে আন্টিও আসলো

কি ব্যাপার নীল? কোনো সমস্যা?

,,,,,

বলনা না বললে বুঝবো কি করে?

বলছি রুমে চল

ওকে চল

রুমে গিয়ে রিয়াদ কে সব খুলে বললাম

এখন কি করতে চাস তুই?

আমি জানিনা রে কি করবো কিন্তু আমি ঐ মেয়েরে কোনো দিন
বিয়ে করবো না তুইতো জানিস অদিতি আমাকে কতটা ভালোবাসে?

হ্যা জানি।
অদিতি জানে?

নাহ কি করবো কিছু মাথায় আসছেনা

কল বাজছে তোর

অদিতি বলো

কি হয়েছে ভুলে গেছো? আজ যে দেখা করার কথা ছিলো

নাহ ভূলিনি আসছি তুমি থাকো

তুই যা অদিতির সাথে দেখা করে আয় আমার এখানেই থাকবি পরে ভেবে
দেখা যাবে কি করা যায়

থ্যাংকস দোস্ত পাশে থাকার জন্য।

আরেহ দুর আমি দেখি কি করা যায়

গিয়ে দেখি অদিতি রেগে আগুন হয়ে আছে

এতো দেরি কেনো নীল?

একটু কাজ ছিলো তাই।
অদিতি?

হ্যা বলো

আমাকে ছেড়ে যাবেনাতো?

আমি কোনো দিনও তোমায় ছেরে যাবোনা কোথায় যাবো আমার
নীলকে ছেড়ে?
এই কথা কেনো বলছো?

নাহ এমনি।

কি হয়েছে নীল? মন খারাপ?

কিছুনাতো

আমি স্পস্ট বুঝতে পারছি কিছু হয়েছে?বলোনা কি হয়েছে?

বলতে চাইছিলাম না অদিতির জোড়াজোড়িতে বলতে বাধ্য হলাম
তারপর যা হলো সব খুলে বললাম

কিছু হয়নি সব ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করোনা

এরপর কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসলাম।

রিয়াদ তার বাবাকে সব খুলে বললো কারন বাবাই যে তার সবচেয়ে বড়
বন্ধু।

সবতো শুনলাম কিন্তু কালতো আমরা কক্সবাজার যাচ্ছি তোর চাচার বাসায়
এসে নীলের একটা ব্যাবস্থা করবো কি বলিস?

বাবা তুমি যা ভালো মনে করো

এরই মধ্যে নীল আসলো

নীল?

জ্বি আংকেল

আমি জানি তোর মনের ভিতর কেমন ঝড় চলছে এই সফিক থাকতে
তোর কোনো চিন্তা নেই
আজ থেকে আমার দুই ছেলে
বলেই জড়িয়ে ধরলেন

আমি জানতাম আংকেল তুমি কখনো আমাকে ফিরিয়ে দিবে না তাইতো
তোমার কাছে ছুটে এসেছি

এইভাবে কিছুদিন চলে গেলো।
এরমধ্যে একটা বিষয় নীল খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছে যে অদিতির
চোখে সেই আগের ভালোবাসা নেই

কোথায় যেনো একটু কমতি আছে

একদিন সন্ধ্যা বেলায়

রিয়াদ আমি একটু ফেক্সিলোড টা করে আসি রাতে অদিতির সাথে কথা
বলতে হবে

ওকে তারাতাড়ি চলে আসিস

বের হয়ে কাজ শেষ করে চলে আসছিলাম দেখলাম অদিতি একটা
ছেলের সাথে খুব হাসাহাসি করছে

কে এই ছেলে ?
অদিতির সব কাজিনকে তো আমি চিনি একেতো কোনোদিন ও দেখিনি

কে হতে পারে? এর সাথে সময় কাটাচ্ছে
ঠিক তেমন ভাবেই যেমন ভাবে আমি আর অদিতি কাটাই

কিছুক্ষন পর তারা একটা গাড়িতে উঠলো আমিও তাদের ফলো করতে
লাগলাম

ওরা একটা রেষ্টুরেন্ট এ গিয়ে বসে কথা বলেছিলো আমিও অপজিট
টেবিলে বসে সব কথা রেকর্ড করলাম

তোর মনে এই ছিলো ছিঃ

আমি সেখান থেকে সোজা বাসায় চলে আসলাম

বাসায় এসে ঐ ছেলের খোজ নিয়ে জানতে পারলাম এইটা অদিতির ই
বয়ফ্রেন্ড অনেক কোটিপতি বাবার ছেলে।

রাতে কল দিলো এমন ভাবে কথা বলছে যেনো নীল ছাড়া ওর আর
বেচে থাকার শক্তি নেই

বেশ স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলে রেখে দিলাম কাল যা করার করবো

পরের দিন

অদিতি দেখা করতে আসবে আজকে?

হ্যা আসো জান। জানো তোমাকে খুব মিস করছি

আসছি বলেই ফোনটা রেখে মৃদু হাসি দিলাম
হায়রে টাকা

অদিতির কাছে গিয়ে বসলাম

খেয়েছিলে আজকে?

হুম। খেয়েছি। তুমি?

হুম। ঘুম হয়নি? চোখ ফুলে আছে যে?

নাহ গতকাল রাতে হয়নি আশা করছি আজ রাত থেকে খুব ভালো ঘুম হবে

নীলের কথা শুনে অদিতি কেমন ভয় পেয়ে গেলো ( কিছু জানতে
পারলো নাতো নীল?)

মানে কি? কি বলতে চাইছো নীল?

তারপর রেকর্ডটা অদিতিকে শুনাতে লাগলাম

( ও মাই গড এইটা কি করে সম্ভব আকাশ আর আমিতো সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম
নীল কি করে এইসব করলো)

কি হলো চুপ করে আছো কেনো?

তো কি করবো ( খুব স্বাভাবিক ভাবে বললাম যেনো কিছু বুঝতে না
পারে)

কেনো কিছু বুঝতে পারছোনা?

নাতো।কাদের রেকর্ড এইগুলা আর আমাকেই বা কেনো শুনাচ্ছো?

( এমন ভাবে বলছে যেনো কোনো মিথ্যা বলতেই জানেনা )




continue….
.বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *