প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 09

শান্ত ঔষুধের প্যাকেটটা আহানার হাতে ধরিয়ে দিলো
.
তারপর কিছুক্ষন থেমে বললো যাও বাসার দিকে যাও
.
আহানা মাথার ঘাম মুছতে মুছতে বললো কয়টা বাজে?
.
৩টা ২০,কেন?
.
বাই
আহানা কিছুটা জোরেই হেঁটে পিউদের বাসার দিকে রওনা হলো

শান্ত পিছন পিছন একটু গিয়ে বললো কোথায় যাও তুমি?
.
আহানা শান্তর প্রশ্নের জবাব না দিয়েই চলে গেলো
.
এই মেয়েটা ধন্যবাদ দিতে জানে না,!
শান্ত মুখ বাঁকিয়ে বাসায় ফিরে আসলো

আন্টি আপনার চেনা জানা কেউ আছে যাদের টিউটর লাগবে?
.
জানি না ঠিক,কেন তুমি পড়াবে?
.
হ্যাঁ আন্টি যদি বলতেন তাহলে আমার উপকার হতো
.
আচ্ছা পেলে জানাবো তোমাকে
পিউকে পড়িয়ে আহানা এবার গেলো আকাশদের বাসায়,আকাশ ৩য় শ্রেণির ছাত্র,তাকে পড়িয়ে এবার আহানা আর হাঁটতে পারছে না মনে হয় এখনই পড়ে যাবে,তাও আস্তে আস্তে হেঁটে বাসায় ফিরলো,বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে পানি নিয়ে খেয়ে বিসকিট মুখে দিলো,সাথে সাথে বমি এসে গেলো,সকালে একটা বিসকুটের পরে আর কোনো খাবার পেটে পড়েনি,বমি হওয়ারই কথা,বাথরুম থেকে বেরিয়ে আহানা কেঁপে কেঁপে রান্নাঘরে গিয়ে ভাত বসালো আর আলু সিদ্ধ করতে দিয়ে এসে বিছানায় বসলো

কিরে শান্ত কি ভাবস এতো?
.
আসলে নওশাদ ভাবতেসি আহানা মেয়েটা মনে হয় কিছু লুকাচ্ছে
.
লুকালেও কি না লুকালেও কি,তোর কি তাতে?
.
হুম সেটাই,আমিও না! কোথাকার কোন মেয়ের জন্য ভাবতেসি,হুদাই সময় নষ্ট!
.
শান্ত রুমে এসে আলমারি থেকে টি শার্ট নিতে গিয়েই ফ্লোরে কি যেন ঝুন ঝুন শব্দ করে পড়লো
শান্ত নিচে ঝুঁকে হাতে নিয়ে দেখলো সেই নীল কাঁচের চুড়ি যেটা সেদিন শান্ত ঘাস থেকে নিয়েছিল,এটা তো আহানার
শান্ত চুড়ি গুলো ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিলো,আবার কি মনে করে সেগুলো তুলে এনে ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখলো

খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে,কালবৈশাখী হতে পারে,বৈশাখ মাস তো
.
আহানা জানালা সব আটকিয়ে বসে আছে,কনিকা আপু ডিউটিতে,মীম আপুকে তো দেখিই না অনেকদিন,কারেন্ট গেলো চলে,অনেক খুঁজে মোমবাতি জ্বালিয়ে বসলো আহানা,মোমবাতিটা নিভার আগেই সব সেরে ফেলতে হবে,আগুন বাড়িয়ে দিয়ে ভাত রেঁধে নিলো আহানা,আলুর ভর্তা করে খাটের উপর বসে পেট পুরে ভাত খেলো,এবার ভালো লাগতেসে,আর আলু ২টা আছে,পেঁয়াজ ২টা,কাল চলবে,পরশু কি করবো?কেউ তো ধার ও দিবে না
.
মোমবাতিটা নিভিয়ে শুয়ে পড়লো আহানা,মেঘ খুব জোরে জোরে ডাকতেসে
.
শান্ত বারান্দার গ্লাস খুলে বের হয়ে চোখ বন্ধ করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভিজতেসে
কি গো মা?ভালো আছো?হুম ভালো তো থাকবেই তোমার ছেলে সবসময় তোমার খেয়াল রাখে,মা জানো আমার না কেন জানি আজ মন ভালো নেই,কি কারনে ভালো নেই ঠিক বুঝতে পারতেসি না আমি,তুমি জানো মা?
জানো বাট বলবে না,কারন তুমি চাও আমি যেন নিজের মন খারাপ নিজেই ঠিক করি,কারোর হেল্প না নিয়েই,হ্যাঁ বেশি ভিজবো না এভাবে বকা দিতে হবে না আমাকে😒
.
বৃষ্টি কমে গেছে,শান্ত হাত দিয়ে চুলের থেকে পানি গুলো ঝাড়তে ঝাড়তে বের হয়ে রুমে ফিরে আসলো,তোয়ালেটা নিয়ে মাথা মুছতে মুছতে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে
ঐ মেয়েটা ঔষুধ খেয়েছে কিনা কে জানে!বেয়াদব একটা মেয়ে কথা শুনে না একদম,কত বড় সাহস হলে মানুষ prescription রোডে ফেলে দিতে পারে!

সকাল হতেই আহানা উঠে পড়লো,আজ আর ভার্সিটিতে যাবে না ঠিক করেছে,বই নিয়ে পড়তে বসলো তারপর মনে করলো বাসায় থাকলে তো খিধা লাগবে বারবার,তার চেয়ে বরং ভার্সিটিতে যাই,রুপার সাথে কথা বললে বেশ লাগবে,খিধা লাগলেও টের পাবো না
কালকের পান্তা ভাত নুন দিয়ে মেখে খেয়ে ব্যাগটা গুছিয়ে নিলো আহানা,বড় এক বোতল পানি নিয়ে বের হলো,বাসা থেকে
বের হওয়ার আগেই দেখা হলো তারেক রহমানের সাথে,উনি আহানাকে দাঁড়াতে বললেন
.
আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল,কেমন আছেন?

ওয়ালাইকুম আসসালাম,ভালো আছি,তোমাকে একটা কথা বলার জন্য দাঁড়াতে বলেছি
.
জ্বি বলেন
.
পাশের একটা কলেজের দুটো মেয়ে এখানে থাকার জন্য বারবার রিকুয়েস্ট করতেসে,ওরা বলেছে ১বছরের টাকা advance ও করে দিতে পারবে,তুমি তো ২মাসের ভাড়া দাও নি এখনও,১মাসের মধ্যে ২মাসের টাকা জোগাড় করে দাও নাহলে আমি তোমাকে বাদ দিয়ে ঐ দুটো মেয়েকে বাসা ভাড়া দিয়ে দিব,বুঝেছো আশা করি?
.
আহানা চুপ করে থেকে বললো আচ্ছা
চুপচাপ হেঁটে যাচ্ছে আহানা,আজকে যে করেই হোক একটা টিউশনি খুঁজে বের করতেই হবে
.
ভার্সিটিতে এসে রুপাকে অনেক খুঁজলো,ফকিন্নি আজও আসে নাই,ওরে ছাড়া আমার একটুও ভালো লাগে না
আহানা গালে হাত দিয়ে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে,কাল যে বৃষ্টি হয়েছিল তার কারণে ক্যামপাসের ঘাস সবুজ থেকে আরও সবুজ হয়ে গেছে,কি সুন্দর লাগতেসে,মনে হয় সকল গ্লানি দূর হয়ে গিয়েছে
দূরে তাকাতেই আহানার চোখে পড়লো একটা কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ
আহানা খুশিতে আটখানা হয়ে মুখটা তুলে ভালো করে দেখলো গাছটা,আরে এটা তো এতদিন দেখিই নাই আমি,যাওয়ার সময় কাছে গিয়ে একবার দেখে আসবো
আহানা এবার ক্যামপাসের মাঝখানে বটগাছটার দিকে তাকালো
শান্ত বটগাছের তলায় নওশাদ,সূর্য,রিয়াজ আর তমালের সাথে হাসি ঠাট্টা করতেসে
আহানা ওদের দেখে ব্রু কুঁচকে চোখ ফিরিয়ে নিলো
.
কিরে শান্ত ভাই কাউকে খুঁজিস নাকি?
.
নাহ তো,ক্যামপাসটা দেখতেসি, ভালো লাগতেসে
.
নওশাদ আর সূর্য দাঁত কেলিয়ে চোখ টিপে বললো হুম অনেক জোস😂
আহানা ক্লাস থেকে বের হচ্ছে না,রুপা নেই শুধু শুধু ক্যামপাসে গিয়ে কি লাভ,তাই সে একা বসে আছে ক্লাসে
সবাই ক্লাস থেকে বেরিয়ে ক্যামপাসে ঘুরাঘুরি করতেসে,অবশ্য ক্লাসে ও কয়েকজন আছে তারা তাদের কাজে ব্যস্ত,কেউ পড়তেসে,কেউ গান গাইতেসে,কেউ বা খাচ্ছে
.
শান্ত ভাই তোমার সখিনা আসতেছে

শান্ত সানগ্লাসটা পরে শার্টের হাতা উঠাতে উঠাতে আহানাদের ক্লাসরুমের দিকে চলে গেলো
.
কিরে এলিনার কথা শুনে শান্ত ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসের দিকে কেন গেছে?
.
কি হলো তমাল?শান্ত কই?আমাকে দেখে নাই নাকি?ওর সাথে আমার কিছু কথা ছিল
.
না আপু জানি না তোমাকে দেখেছে কিনা,মনে হয় ওয়াসরুমে গেছে,ও আসলে বলবো তোমার সাথে কথা বলতে
.
ওকে ফাইন
.
শান্ত ক্লাসরুমে ঢুকে একদম মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালো
সবাই শান্তকে দেখে তাদের কাজ ফেলে তাকিয়ে আছে
আহানা শান্তকে দেখেনি,চুপচাপ টেবিলে মাথা রেখে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে সে,কৃষ্ণচূড়া গাছটা তাকে টানতেছে,ওর প্রিয় ফুল কৃষ্ণচূড়া,আজ অনেক গুলো কুড়িয়ে নিব যাওয়ার পথে
.
এসবের জন্য আসো এখানে?পড়া নাই লেখা নাই হুদাই বসে থাকো তোমরা!!
.
আহানা চমকে মাথা তুলে তাকালো শান্তর দিকে
.
শান্ত ওর দিকে তাকাতে তাকাতে চলো গেলো
আহানা কিছু না বুঝে পাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই বই নিয়ে পড়তে বসে গেছে,যারা খাচ্ছিলো এতক্ষণ তারা খাবার হাতে রেখেই গড়গড় করে পড়া শুরু করে দিয়েছে
.
আজব তো লোকটা! এমন করে কেন,কত বড় সাহস আমাদের ক্লাসে এসে আমাদেরই ধমক দেয়
.
কিরে শান্ত ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসে গেছিলি কেন?
.
কেউ পড়ালেখা করে না ঠিকমত তাই ধমক দিয়ে আসলাম
.
তোর জরিনা আসছিল বলসে তোর সাথে নাকি কিসের কথা আছে
.
উফ!!আচ্ছা আমি কি মেয়েটাকে বলসি আমি ওরে লাইক/লাভ করি?তাহলে এরকম করে আমার পিছে লেগে আছে কেন?
.
শুন শান্ত এলিনার মত অনেক মেয়েই তোর জন্য পাগল,সবাই তো আর গলায় ঝুলতে পারে না,এলিনার দাপট বেশি তাই তোর কোলেও উঠে গেছে,কদিন পর তো!
.
নো ওয়ে!আমি জীবনেও ওরে বিয়ে করবো না,ওর প্রতি আমার কোনো interest নেই

ছুটি হয়ে গেছে আহানা টিউশনির দিকে যাচ্ছে তারপর মনে করলো এখনও ৩০মিনিটের মত সময় আছে,আমি গিয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটা দেখে আসি বরং☺
আহানা গাছটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,কি অপূর্ব!এত সুন্দর কেন,লালে লাল হয়ে আছে চারিদিকটা
আহানা খিলখিল করে হেসে নিচে বসে ঝরে যাওয়া ফুলগুলো কুড়াতে লাগলো,গোটা ফুল ও নিচ্ছে আবার ঝড়ে যাওয়া পাপড়িও নিচ্ছে
ব্যাগের একটা সুতা খুলে গিয়ে ঝুলতেসে কদিন ধরে,আহানা সেটা ছিঁড়ে নিয়ে ফুলগুলোর গোড়ায় গিট্টু দিয়ে দিয়ে একটা ফ্লাওয়ার ক্রাউন বানালো,তারপর সেটা মাথায় দিলো,সুতাটা মাথায় লাগিয়ে কানের নিচ দিয়ে নিয়ে গলার পেছনে গিট্টু দিয়ে আটকালো,আয়না হলে ভালো হতো,দেখতে পারতাম কেমন লাগতেসে আমাকে☺
তারপর তার নজরে পড়লো দূরে একটা লেক,সেখানে এসে পানির উপর মাথা নিয়ে দেখতে লাগলো নিজেকে
উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রঙ আমার,অবশ্য গায়ের রঙের সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারনা নেই,আশ্রমের সেই মা টা বলেছিল আমার গায়ের রঙ নাকি উজ্জ্বল শ্যামলা
আমার মুখে কোনো মেকআপ নেই,নেই কোনো লিপস্টিক,কাজল তো দূরেই থাক,অবশ্য একবার আমি ঠোঁটে লিপস্টিক দিসিলাম,হিহি সেটা ছিল মজার ঘটনা,মীম আপু বিটের তরকারি রান্না করেছিল,উনি বিট কাটার সময় আমি একটা ছোট্ট বোতলের ছিপিতে করে বিটের রস নিয়ে ফোনের ক্যামেরা দিয়ে সেই রঙ লাগিয়েছিলাম ঠোঁটে,আমাকে কি সুন্দর লাগতেছিলো সেদিন
লিপস্টিক দিলে মেয়েদের অনেক সুন্দর লাগে
আহানা পানিতে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে হাসতেসে,তার বাসায় আয়না নেই,ফোনের ক্যামেরায় মাঝে মাঝে নিজেকে দেখে সে,আজ পানিতে দেখতেসে
দুনিয়ায় কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে,আমি তো তাদের নখের যোগ্য ও না
মুখটা ফ্যাকাসে করে হাত দিয়ে আহানা পানিটা ঘোলায় দিয়ে উঠে আসলো
শান্ত বাইক নিয়ে সেই পথ দিয়ে বাসায় ফিরতেসিলো আহানাকে দেখলো গাছের নিচ থেকে নিজের ব্যাগটা নিতেসে

ও এখানে কি করে?
শান্ত বাইক থেকে নেমে তাকিয়ে আছে আহানার দিকে
আহানা শান্তকে দেখেই থেমে গেলো
শান্তর দিকে আহানা ফিরে তাকাতেই ওকে দেখে শান্ত কিছুটা চমকে গেলো কারন ওর মাথায় খুব সুন্দর করে কৃষ্ণচূড়ার একটা ক্রাউন,বাজারে কত ফুলের ক্রাউন সে দেখেছে,গোলাপ,গাঁধা আরও কত কি তবে এমনটা এ প্রথম দেখলো
প্রকৃতির পরীরা যেমন কৃত্রিম পন্যের বাইরে সাজে ন্যাচারালি ঠিক তেমনটা আজ আহানাকে লাগতেসে
.
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে হেঁটে চললো
শান্ত সামনে গিয়ে ওর পথ আটকালো
আহানা বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে
.
সে কিছু বলার আগেই শান্ত বললো ঔষধ খেয়েছিলা?
.
হুম!
.
ব্যাস শান্ত বাইক নিয়ে চলে গেলো,আর একটা কথাও বললো না একটি বার তাকালো ও না
.
ওমা এটা জিজ্ঞেস করার জন্য বাইক এখানে ব্রেক করলো,আজব লোক তো!আজব লোক আজগুবি তার কাজকর্ম
.
শান্ত কিছুদূর গিয়ে ভাবলো আহানা প্রতিদিন এই পথ দিয়ে কই যায় দেখবো একটু
শান্ত বাইক ঘুরিয়ে আহানাকে ফলো করলো,আহানা একটা বাসায় এসে সেই বাসার কলিংবেলে চাপ দিলো
শান্ত উঁকিবুকি দিয়ে বুঝার চেষ্টা করতেসে ভেতরে কি হচ্ছে,পরক্ষনেই বাসার সামনের রুমের জানালা দিয়ে আহানাকে সে দেখতে পেলো
একটা ছোট্ট মেয়েকে টেবিলে বসিয়ে পড়াচ্ছে
.
ওহ তাহলে টিউশনি করাতে আসে এখানে
.
শান্ত বাইক নিয়ে চলে গেলো তার বাসার দিকে
.
আহানা বাসায় ফিরার সাথে সাথে আসলো রুপার কল
.
কিরে রুপা আজ ভার্সিটিতে আসলি না কেন?
.
একটা অনুষ্ঠানে গেসিলাম,কাল আসবো সিউর
.
আচ্ছা
চুলটা বেঁধে আলু একটাকে ১০টুকরা করে কেটে ভাজলো আহানা
হিহি,ভর্তা করলে ২টা আলু লাগে,আর আজ ভাজি করায় ১টা লাগলো,এই ১০টুকরো আলু দিয়ে আমার আজকে ভালো খাবার জমবে,গরম ভাত উইথ আলু ভাজা
বাকি যে আলু আছে সেটা কাল ভেজে নিব,পরশু পেঁয়াজ আর ভাত,তার পরেরদিন ও পেঁয়াজ আর ভাত,ব্যাস আগামী ৩দিনের মেনু রেডি,তারপর থেকে কি হবে!টিউশনি না পাওয়া পর্যন্ত খালি ভাত আর নুন খাবো,হুম ডান☺
আলু ভাজা দিয়ে গরম ভাত খুব মজা করে খেলো আহানা,এই বুদ্ধি আগে আসলে আমার আরেকটা আলু বেঁচে যেতো,ঘরে তো তেল ছিল,ফ্রুটোর বোতলের এক বোতল তেল আছে,কনিকা আপুর থেকে একটা ডিম ধার নিয়ে একদিন খাব ভেজে,না থাক তেল শেষ হয়ে গেলে বেতন পাওয়ার পর তো তারেক আঙ্কেলকে সব টাকা দিয়ে দিতে হবে,উনি ২মাসের ৮হাজার টাকা পান,৬হাজার টাকা পরেরমাসে বেতন পেয়ে উনাকে দিয়ে বলবো বাকি ২হাজার দিতে দেরি হবে,যাই হোক তেল এত খরচ করা ঠিক হবে না,আমি বরং ডিমটা সিদ্ধ করে নিব,তাই ভালো হবে
.
বুয়া!চিকেন কই?আমার চিকেন ছাড়া খাবার খেতে মন চায় না জানো না!
.
আইতাছি,মুরগী হইতে একটু দেরি হইসে,রান্নাটা শেষ,নেন খান
.
শান্ত ফোনে গেমস খেলতে খেলতে আরেক হাত দিয়ে ভাত খাচ্ছে হঠাৎ আহানার কথা মনে পড়লো,আগের মত খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিছে নাকি কে জানে,হুহ আমার কি!
.
পরেরদিন ভার্সিটিতে আসতেই আহানা তো অবাক,তাদের ক্লাস রুম কেমন জড়ো হয়ে আছে স্টুডেন্টের ভিড়ে
.
রুপা আহানাকে দেখে খুশি হয়ে ওর হাত ধরে টেনে জড়ো হওয়া লোকালয়ের ভিতরে ঢুকে গেলো
.
হাই রুপা!হাই আহানা
.
হাই!

শুনো আমার এই শুক্রবারে বিয়ে,তোমরা দুজনেই আসবা এই নাও কার্ড
রুপা তো কার্ড পেয়ে লাফাতে লাফাতে সিটে চলে গেলো
আহানা মিরাকে অভিনন্দন জানিয়ে রুপার পাশে এসে বসলো
.
কিরে?মিরার বিয়ে,আমরা নাচগান করবো,তুই এমন মুখটা বাংলার পাঁচ করে রাখছিস কেন?
.
তুই যাইস আমি যাব না
.
কিন্তু যাবি না কেন?
চলবে♥