পাথরের বুকে ফুল

পাথরের বুকে ফুল ! সিজেন 2 !! Part- 08

রিমন মুখ ডেকেই পাশ কেটেঁ কেটেঁ ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে আসে।রিমি এখনো চোখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রিমন কোনো মতে গোঁফ লাগিয়ে নিজের মাহির রূপে আসতে চায়।ভয় লাগছে সাথে রাগ।এই মেয়ে এখানে কি করে??কথাটা ভেবেই সে পিছনে ঘুরে।রিমি তখন থেকে বলছে জামা চেঞ্জ করা হয়েছে কি না।কিন্তু রিমন কিছু বলে না।কয়েকটা কাশি দিয়ে সে গলার সাউন্ড পাল্টাতে লাগে।তারপর সরু হয়ে বলে উঠে,
—” তুমি এখানে কেনো??আর ডুকলে কিভাবে??সাহস তো কম নয়।”
রিমি ঘুরে তাকিয়ে বললো,
—” আমার সাহস বরাবরই বেশি।তবে কথা হচ্ছে আমার ওয়াসু সিংহের খাঁচায় আছে।ওকে উদ্ধার করতে হবে।বোকার মত কি সব বোমাবাজ টাজ বলে ইনভেস্টিগেশনে চলে এলো। ফাজিল।গেলো তো গেলো সিংহের গুহায়।”
—” মানে??”
রিমনের উৎসুক গলা।রিমি সব খুলে বলে প্রথম থেকে।
রিমন’থ’ হয়ে ভাবতে শুরু করে।কার কথা বলছে ভাবতে ভাবতেই ওয়াসেনাতের কথা মনে পরে।সাথে সাথে মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসে,
—” হায় আল্লাহ!!”

রিমি ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে থাকে।রিমন মনে মনে সব মিলায়।এরা এসেছে বলেই নিচে অরিত্রান তাদের নাম পাল্টে এসেছে।সবাইকে বলেছে নুহাশ আর মাহির নাম বলতে।মানে অরিত্রান সব জানে।শির্ট!! নিশ্চুই রাগের মাথায় মেয়েটাকে মেরে দিবে।রিমিকে দেখলে তাকেও ছাড়বে না।রিমন বললো,
—” তুমি বসো আমি দেখে আসি।”
—” না না আমি জাবো।ও ভুল বুঝে চলে এসেছে।তাই আমিও যাই।”
রিমন পরেছে মহা বিপদে।এরে নিয়ে গেলে আরো ঝামেলা হবে।তাই রিমন ইনিয়েবিনিয়ে কথা বলা শুরু করে।ভয়ে তার কলিজা ছোট হয়ে আছে।তবে মনের মাঝে কোথাও মনে হচ্ছে খারাপ কিছু হবে না।সাথে তার এখন এই রিমি আর ওয়াসেনাতের গাল লাল করে কিছু থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করছে।সিংহ কি খেলার জিনিস যে এভাবে হুট হাট তার পিছনে পরবে।আল্লাহ জানে মেয়েটা বাজবে কি না??অরিত্রান নিজের কাজে নাক গলানো মোটেও পছন্দ করে না।তাই না পারতে চুপ করে থাকতে হবে তাকে।সময় দেখতে হবে।অরিত্রান কখন আসে তা দেখতে হবে।মারলেও অরিত্রান তাকে কল করবে আর বাঁচার তো গ্রান্টি নাই।অরিত্রানের থাবা থেকে কেউ বাঁচে বলে তার মনে হয় না।আল্লাহ আল্লাহ কারাই একমাত্র কাজ।

________________________
গলার পাশ দিয়ে শিরশির করে ঠান্ডা কিছু বেয়ে পরছে।ছোট ছোট রক্তের ফোঁটা গুলো নিশ্চুই হেজাবের ভিতরেই চুয়ে চুয়ে পরছে।ওয়াসেনাত এখনো চোখবুজে আছে।হাতটা মনে হয় ভেঙেই গেছে।আর ধাড়ালো ছুরির কারনে হেজাবের কিছু অংশও ছিঁড়ে গেছে মনে হয়।ওয়াসেনাত নিভু নিভু চোখে এক চোখবুজে আর এক চোখে তাকায়।মুহূর্তেই সে আবার দুচোখ খুলে ফেলে।সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে হালকা আলোতেও বেশ বুঝা যাচ্ছে। লাল লাল চোখে খুবই স্বাভাবিক হয়ে সে ওয়াসেনাতের গলায় ছুরি ধরে আছে।তার একটা হাত ওয়াসেনাতের এক হাত চেঁপে আছে।আর ওয়াসেনাতের আর এক হাত ছুরি ধরার হাতের নিচে পরে আছে।চশমাটা ভেদ করেও লাল লাল চোখ দেখা যাচ্ছে। যা ওয়াসেনাতকে আরো ভয় পেতে সাহাস্য করছে।অরিত্রানের চোখ লাল হলেও খুবই স্বাভাবিক। ওয়াসেনাত নিজেকে শান্ত করতে চাচ্ছে। উত্তেজনায় কোনো ডিসিশন ঠিক হয় না।তার উপর এমন ভয়ংকর সময়ে সব সময় নিজেকে শান্ত রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।এটা তার না তার বাবার কথা।জার্নালিস্ট বাবার জ্ঞান গুলো সে কখনোই আমলে নেয় না।কিন্তু আজ তার সাহসের খুবই প্রয়োজন। তাই সে আমলে নিচ্ছে। বার বার মনে মনে বলছে কুল ওয়াসেনাত কুল।কিন্তু এই কুল ভাবটাই তার আসছে না।কপালে বিন্দু বিন্দু থেকে টপটপ করে পরার মত ঘাম জামা হচ্ছে।একবার চোখবুজে আবার খোলে।এদিক ওদিক চোখুবিলিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা কবে কিনা ভাবছে।কিন্তু তার চিৎকার আদো কেউ শুনবে তো?? ওয়াসেনাত ঢোক গিলে সামনে তাকালো।সরু চোখে গভীর ভাবে সামনের ব্যক্তিকে দেখছে সে।অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে অরিত্রান ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসছে।এই প্রথম লোকটার হাসি দেখছে সে।কিন্তু এত ভয়ংকর আর মারাত্মক হাসি সে তার এই ছোট্ট জীবন দশায় আর দেখেছে বলে মনে হয় না।ভয়ে ওয়াসেনাতের শ্বাসের গতি বারে।প্রতিটা নিঃশ্বাস এসে বারি খায় অরিত্রানের মুখে।অরিত্রান আগের মতই দাঁড়িয়ে হাসছে!!অদ্ভুত সে হাসি!!খুবই সাংঘাতিক!! ওয়াসেনাতের শরীরে কাঁপুনি দেয়।ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বার বার।কিন্তু সে কিভাবে বাচবে তাই ভাবছে।ওয়াসেনাত চোখ নামিয়ে গলায় চেপে রাখা ছুরিটার দিকে তাকিচ্ছে তো অরিত্রানের দিকে একবার তাকাচ্ছে।যা দেখে অরিত্রানের নিজের ঠোঁটদয় আরো কিঞ্চিৎ বাঁকিয়ে হাসছে।
—” ওয়াসেনাত বিনতে তৌফিক। রাইট!!”
ওয়াসেনাত কিছু বললো না।ভয়ে কাপঁছে সে।মনে মনে বলছে ছুরিটা সরিয়ে বলুন যা বলার।কিন্তু মুখে বলতে পাড়লো না।অরিত্রান ছুরিটা আর একটু কাছে হাকিয়ে বললো,
—” সো মিসসস ওয়াসেনাত বিনতে তৌফিক ইউ নো হু এম আই??আমার সাথে গেম খেলতে এসেছো দেখছি!!এক্চুয়েলি তুমি বোকা।বিকজ যে নিজে গেম তৈরি করে তার সাথে খেলতে এসেছো!!তবে বোকা মেয়ে তুমি।সামান্য পিচ্চি মেয়ে হয়ে আমার সাথে খেলতে আশা টাই তোমার বোকামি।ইনভেস্টিগেশন করতে এসেছো না??ইউ নো হোয়াট আমি না চাইলে আমার সম্পর্কে ইনভেস্টিগেশন তো দুর এটা চিন্তাও করতে পারে না।আর তুমি……!!”
কথাটা বলেই অরিত্রান ওয়াসেনাতকে ছেড়ে দিলো।দু’কদম পিছিয়ে ছুড়িটা দিয়ে কপালে চলে আশা চুলগুলো সরিয়ে দিলো।বিকটো শব্দ করে হাঁসতে লাগলো।কি ভয়ংকর সে হাসির ঝঙ্কার!!ওয়াসেনাতের মনে হচ্ছে তার কানে আর্তনাদ করে বাজছে সে সুর।হাসি থামিয়ে অরিত্রান মুহূর্তেই শান্ত হয়ে গম্ভীর গলায় বললো,
—” তা মিসসস বাচ্চা মেয়ে!! তোমার মাথায় গোয়েন্দাগিরির মত কাজের চিন্তা কেনো এলো শুনি??স্পিক আপ!!ফার্স্ট ফার্স্ট টেলমি নাউ!!টেলমি ডাফার গার্ল……….”
অরিত্রানের গলা ফাটানো চিৎকারে ওয়াসেনাত ঝাকি মেরে উঠে।ভয়ে হাত পা কাপঁছে দ্বি’গুন থেকে তিন’গুন তালে।ওয়াসেনাত দরজার দিকে একবার তাকায়।চোখের মনিজোড়া গোল গোল ঘুরায়।এই দরজা দিয়েই সে দৌড়ে পালাবে বলে ঠিক করে।তার আগেই অরিত্রান খুবই শান্ত হয়ে তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকায়।ওয়াসেনাত ভয়ে মরমর অবস্থা।লোকটা কেমন হুট হাট রেগে চেঁচায় আবার হুট করেই শীতল হয়ে পরে।ভারী অদ্ভুত লোক তো??অরিত্রান সাবলিল হয়ে ছুরিটা হাতের মুঠোয় দিবে বললো,
—” বাই দ্যা ওয়ে তোমার জানা উঁচিত আমার কাছে তুমি কিভাবে আসতে পেরেছ।রাইট??ওকে ফাইন। তাহলে শুনুন আপনি যখন খুবই সাবধানে গাড়ির ডেকে ডুকে বসেছেন তখন আবার অসাবধান ভাবে জামার কিছু অংশ বের করে রেখেছিলেন।যা আমার চোখ এড়ালো না।এত এত গার্ডস টোপকে এত সহজে আশাটাও কাকতালীয় নয়।আমি না চাইলে আমার ধারে কাছে আসা অসম্ভব। এতটাই বোকা যে কিছু বিবেচনা না করেই চলে এসেছেন।গুড ভেরী গুড।সো টেল মি এত সাহস কথা থেকে সঞ্চয় করেছেন??বাবার থেকে???!!”
ওয়াসেনাত চমকে তাকালো।লোকটা এত কিছু জানে??এই লোক মোটেও এত সহজ মানুষ না সে জানে।গভীর থেকেও গভীরে এর বাস।শুধু শুধু কেনো যে এর পিছনে ধাওয়া করতে গেলো!!মনে মনে তার খুব রাগ হলো।সাথে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,আল্লাহ এই যাত্রায় বাঁচিয়ে দিও।সত্য বলছি জীবনেও নিজের গণ্ডি পেরিয়ে কিছুই করবো না।আল্লাহ প্লিজজজজ বাঁচাও।”
—” কি হলো বোবা তো মনে হয় এবার আপনি হেয়েগেলেন!!”
ওয়াসেনাত বুঝেনা লোকটা তাকে হঠাৎ আপনি করে কেনো বলছে??অস্বাভাবিক ব্যাপার গুলো মৃত্যুর আগেই ঘটে।তাহলে কি এই লোক এবার মেরেই দিবে??ভয়ে ওয়াসেনাতের কপালে চিন্তার ছাপ করে।বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে ঝিরিঝিরি করে।যা মৃদু আলোতেও অরিত্রানের চোখের দৃষ্টি কাড়ে।অরিত্রান বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,

—” জার্নালিস্ট বাবার মেয়ে গোয়েন্দাগিরি করবে না এটা তো হতেই পরে না রাইট!!”
ওয়াসেনাত চমকের আর এক ধাপে উপরে চলে যায়।গলার সাথে সাথে ঠোঁটও শুকিয়ে গেছে।জিব দিয়ে সে কিছুক্ষণ পর পর শুকনো ঠোঁটজোড়া ভিঁজিয়ে নিয়ে কাপা গলায় বললো,
—” আ..আ..প..নি ককি ভাবে যানলেন বাবা কি কককরে??”
অরিত্রান যেনো ভারী মজা পেলো।হু হা করে হেঁসে ভ্রুজোড়ার উপর ছুরিটা রাখে।কিছুক্ষণ আঁকিবুঁকি করে আবার লাল লাল চোখে তাকিয়ে বললো,
—” তোমার কি মনে হয় আমাকে??যাই মনে হোক তবে সেটা আমি নই।আমাকে বুঝা দায় না মুশকিলের চাইতেও মুশকিল। ভুলেও আমকে নিয়ে ভাবতে যেও না।বাচ্চা একটা মেয়ে।ক্যারিয়ার ব্রাইট।সো আমার সাথে খেলতে আসবে না।ওওও খেলার জন্য তুমি আদো জীবিত থাকবে কি না আই ডোন্ট নো লিটেল গার্ল।সো শেড।”
অরিত্রান জিব দিয়ে কিছু শব্দ করলো।যেনো সে কত দুঃখী। ওয়াসেনাত এই ফাঁকেই দেয় এক দৌড়।কিন্তু বেশি দুর যাওয়ার আগেই অরিত্রান ছুরিটা ছুঁড়ে দিয়ে এক হাতে ওয়াসেনাতের হাত আর এক হাতে তার কোমড় পেঁচিয়ে দেয়ালে চেপে ধরে।লাল চোখের সাথে তার মুখ থেকেও উত্তাপ বের হচ্ছে। ওয়াসেনাত শব্দ করে কেঁদে দিলো।হাত ব্যথায় অবশ হয়ে আসছে।অরিত্রান দাঁতে দাতঁ চেপে বললো,
—” পালাচ্ছ কেনো??নিজে নিজে এসে আবার পালাচ্ছ??বয়স কত নিজের যানো?? জাস্ট ১৮বছর হবে।আর এখনি মরার এত প্রয়োজন??”
ওয়াসেনাত কেঁদে কেঁদে বললো,
—” আ…মি..মরতে চাইনা।আমমমার হহহাত ব্যথা,লাগছে,ছেড়ে দেন প্লিজজজ আর জীবনেও আপনার আশেপাশে আসবো না।ট্রাস্ট মি মিস্টার নুহাশশশ।”
অরিত্রান চোখ বুজে পাশ ফিড়ে। কিছুক্ষণ থেকে আবার ঘাড় কাত করে।চোখমুখ স্বাভাবিক করে। লাল চোখ আবার নিজের রূপে নিয়ে আসতে কয়েকবার পালক ফেলে।নিজেকে কোনো রকম শান্ত করে সে বলে উঠলো,
—” আমাদের বয়সের ডিফারেন্স কত জানো??”
মুহূর্তেই ওয়াসেনাত এক পলক কান্না থামিয়ে বললো,
—” কত!!”

অরিত্রান ওয়াসেনাতের হাত হালকা লুজ করে বললো,
—” ১০বছর।দশ বছরের বড়।মানে বুঝ??হু এম আই??আর আমি তোমার চিন্তা ধারার উর্ধ্বে। সব কিছুর বাহিরে আমার বিচরন।যা লুকায়িত। আর সেই জায়গায় গোয়েন্দাগিরি করতে চলে এলে!! বাচ্চা মেয়ে।”
ওয়াসেনাত ব্যথায় কুঁকড়ে আছে।তবুও মনে মনে বাচ্চা বলার জন্য অরিত্রানকে গালি দিলো।অরিত্রান আরো রেগে গিয়ে ওয়াসেনাতের হাত চেপে ধরে রুদ্ধ গলায় বললো,
—” সামান্য বয়সও জানো না আর চলে এলো ইনভেস্টিগেশনে??বাহ্ দারুন ব্রিলিয়েন্ট তো তুমি!!কিন্তু তুমি জানো না আমি কে??আর যানতেও চেস্টা করবে না।তাহলে কিন্তু ভালো হবে না।এত ফল মারাত্মক ভায়াবহ হবে।তোমার আর আমার পৃথিবী আলাদা।দুজন দুই দুনিয়ার মানুষ।তোমার ওই নিষ্পাপ দুনিয়ার চাইতে মারাত্মক আমার দুনিয়া।ভুলেও আশার চেষ্টা করবে না।ডোন্ট ক্রশ ইউর লিমিট মিসসস ওয়াসেনাত বিনতে তৌফিককককক।আই হোপ ইউ আন্ডারস্টেন।”
ওয়াসেনাত চিৎকার করে কাদঁছে হাতের ব্যথায়।অরিত্রানের টনকনড়ে মুহূর্তেই।ভেসে আসে ওয়াসেনাতের ঝিড়িঝিড়ি কান্নার বিকট শব্দ।কান যেনো মুহূর্তেই থমকায়।সাথে অরিত্রানের ভয়ানক রাগ।যে রাগে সে সবাইকে ভস্ম করে।সে রাগ ফস করেই কমে আসে।অরিত্রানের হঠাৎ খেয়াল হয় সে ওয়াসেনাতের খুব কাছে।খুব খুব বেশিই কাছে।এত কাছে থাকা কি ঠিক??অরিত্রান চশমার মাঝ থেকে ওয়াসেনাতের হালকা ঠোঁট মেলা কান্নায় জড়িত মুখের দিকে তাকায়।এতক্ষণ সে কি করেছে তা মুহূর্তেই তাকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। ভয়ংকর কম্পোন হচ্ছে তার।হাত কাঁপে ধিরি ধিরি করে।ওয়াসেনাতের মুখ টকটকে লাল হয়ে আছে।উত্তপ্ত শরীর হয়ে আছে।হেজাব অগোছালো। লাল নাক সে কিছুক্ষণ পর পর টেনে টেনে কাদঁছে। মৃদু আলোতে এ কি দৃশ্য?? যেনো মুহূর্তেই বেদনা গুলো নাড়ছে তার হৃৎপিন্ডে।অরিত্রানের কি হলো সে জানে না।সব রাগ কই গেলো তাও জানে না।সে চট করে ছেড়ে দিলো ওয়াসেনাতের হাত।কিছুটা দূরে এসে দ্রুত চিৎকার করে বললো,

—” গেট লস্ট……”
ওয়াসেনাত কিছুসময় স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।পরক্ষনেই জীবন বাচানোর তাগিদে সে ছুটে চলে।বেড়িয়ে পরে রুম থেকে।অরিত্রান চোখবুজেই নিঃশ্বাস নিয়েই চলেছে।এটা কি হলো তার??মুহূর্তেই কেমন এলোমেলো হয়েগেলো সে।অরিত্রান নিজের বুক চেপে ধরে।হৃৎপিন্ডটা লাফাচ্ছে তুমুল হারে।যেনো জাম্পিং রেস হচ্ছে।
ওয়াসেনাত বহু কষ্টে রুমের বাহিরে চলে আসলেও তার পা টা আর চলে না।ভয়,ব্যথা তাকে একদম গ্রাস করেছে।ধপ করে সে ফ্লোরে বসে পরে।এত বিশাল লম্বা এরিয়া অথচ কেউ নেই।যার কাছে একটু হেল্প চাইবে সে।হাতের ব্যথা ওয়াসেনাত হু হু করে কেঁদে দিলো।ফুফিঁয়ে কান্নার শব্দদয় বারি খাচ্ছে দেয়ালে দেয়ালে।হাতটা সে তুলতেই পারছে না।হাতের সাথে গলাটাও জ্বালা করছে।ওয়াসেনাত নিজের ডান হাতটা বহু কষ্টে কোলে রাখে।সাদা হাতটা লাল হয়ে ফুলে আছে।নীল রগ গুলো টান টান হয়ে ফুলে গেছে।হাতে পাঁচ পাঁচটা আঙ্গুলের ভয়ংকর ছাপ।বাম হাত বারিয়ে ওয়াসেনাত নিজের গলায় হালকা হাত দেয়।গলাটাও হালকা কেঁটেছে।জ্বালা করছে খুব।এতটা রুড মানুষ হয়??ওয়াসেনাতের জানা ছিলো না।মানুষ এত খারাপ কি করে হতে পারে??তার তো কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো না।শুধু তো একটু আগ্রহ দেখিয়ে আসল কাহিনী যানতে চেয়েছে।এতেই এত রাগ!!ওয়াসেনাতের মনে মনে খুব রাগ হয়।এত বাজে লোক??ওয়াসেনাত কাঁদতে কাদঁতে বললো,
—” এত খারাপ লোক কেনো আপনি মিস্টার আকড়ু??ব্যথা কি আপনিও বুঝবেন।”
কথাটা বলেই ওয়াসেনাত চেঁচিয়ে কেঁদে উঠে।হাতে তার অশহ্য ব্যথা হচ্ছে। তার কান্না এক বিকট পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।একটা মানুষের গায়ের জোর কতটা হতে পারে যে সে নিজের হাতটাই নাড়াতে পারছে না।ভেঙে গেলো তার হাত।কথাটা ভেবে কান্নার মাত্র আরো বাড়ায় সে।
.
.
#চলবে__________________