গল্প- ফাঁদ !! Part- 03
“আপনার চা। ”
বলেই চলে আসতে গেলে আদিত্য হাত ধরে আহেলীকে আটকে নেয়। নিজের সাথে মিশিয়ে এক আঙুল দিয়ে গাল স্পর্শ করে ঠোঁটের কাটা জায়গায় চেপে ধরে। আহেলী ব্যথায় চিৎকার করে ওঠে।
“চুপপপ,, চিৎকার কোরো না। তা না হলে আরো বেশি ব্যাথা পাবে। ”
মুচকি হেসে আহেলীর ঠোঁটে বৃদ্ধাঙ্গুল বুলাতে লাগলো।
“মাই ডিয়ার সুইট হার্ট,,, এতো বড়ো ভুল হয় কি করে তোমার। ছয় মাস এর বেশি হয়ে গেলো এখনো বুঝতে পারলে না,,, আমার কোন সময় কোন জিনিসটার প্রয়োজন ,,, হুম। ”
আহেলী চোখ বড়ো করে তাকালো। সত্যি তো সে তো ভুল করে ফেলেছে। এখন তো চা খাওয়ার সময় নয়। এতো বড়ো ভুল কি করে করলো ও। নিজেকে কোনক্রমে ছাড়িয়ে নিল আদিত্যর কাছ থেকে। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,
“মা,,পপ,,, মাফ কর,, বেন আমি আসলে,, আমি এক্ষুনি আপনার জন্য ব্লাক কফি নিয়ে আসছি। ”
বলেই রুদ্ধশ্বাসে রুম থেকে বের হয়ে ছুটে চলে এলো কিচেন রুমে।
“ইসস আমার মাথাটা সত্যি খারাপ হয়ে গেছে। আমি চা কেন করলাম! ”
নিজের মনে কথা গুলো বলে চটজলদি ব্লাককফি বানিয়ে নিল। আদিত্য তখন কিচেন রুমে নিজেই চলে এসেছে। হঠাৎ কিচেনে আদিত্য কে দেখে আহেলী ভয় পেয়ে যায়।
“আপনি,, কেনো,,, আপনি আসতে গেলেন কেনো? আমি তো ,,,,”
আহেলীকে বলতে না দিয়ে আদিত্য কফির কাপটা হাতে নিয়ে নেয়। কফির কাপে এক চুমুক দিয়ে আহেলীর কোমর ধরে টেনে নেয়।
“আহ,, কোমরে ব্যথা “।
আদিত্য চেয়ারে বসে আহেলীকে কোলে বসিয়ে নেয়।আহেলী নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু আদিত্য পুনরায় কোমরে চাপ দিলে আহেলী আর ওঠার চেষ্টা করে না। আদিত্য কফির কাপে একের পর এক চুমুক দেয়।
“কার কথা ভাবছিলে?
“এতোক্ষণ আহেলী মুখ নীচু করে বসে ছিল। মুখ তুলে আদিত্যর দিকে না তাকিয়ে বললো।
“বিশ্বাস করুন,, আমি কারুর কথা ভাবছিলাম না। আমি বুঝতে পারিনি,, ”
“এতো সামান্য ভুল কি করে হয় তোমার? কিছু তো মাথার মধ্যে চলছে! তোমার চোখ মুখেই তা ফুটে উঠছে”।
আদিত্য আহেলী র মাথায় টোকা দিয়ে কথা গুলো বলে। আহেলী খুব নীচু স্বরে বলে,
“আমি সত্যি বলছি আমার মাথায় কিছুই চলছে না। আমি তো,,, ”
“ব্যাস চুপপপ হয়ে যাও। আমি সব জানি সব বুঝি। দাদী থাকলেতো অসুবিধা হতো,, তাই তো সুযোগ বুঝে দাদীকে সরিয়ে দিলে,, ইন্টালিজেন্ট গার্ল হুমম”।
এবার আহেলী জোড় করেই আদিত্যকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়। চিৎকার করেই বলে ওঠে,,
“কিসব বলছেন আপনি? সুযোগ বুঝে দাদীকে সরিয়েছি মানে? আর আমার মাথায় কি চলছে? কি সব বলছেন আপনি? আমার শরীর খারাপ তাই ভুল করে করে ফেলেছি। আমি তো বলছি আমি দাদীকে চলে যেতে বলিনি। ”
“গলার আওয়াজ নীচে,, এই বাড়িতে একমাত্র আমিই গলা উঁচু করে কথা বলবো। যা ইচ্ছা করার কর আমি সময়ে বোঝাবো। ”
আহেলীকে ধাক্কা দিয়ে আদিত্য কিচেন থেকে বেরিয়ে যায়। আহেলী ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে।
/
/
/
/
/
তানভীর নিজের স্টাডি রুমে বসে মদের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে আর সিগারেট টানছে। হঠাৎ ফোন আসায় ব্যালকনিতে উঠে চলে গেলো।
“বলো,,, তোমার কলের অপেক্ষাতেই ছিলাম। ”
“হুমম কাজ হয়ে যাবে নিশ্চিন্তে থাকো। ”
“ওকে,,, ”
লাইনটা কেটে দিয়ে তানভীর হাসতে থাকে।
“ফাইনালি,,, ফাইনালি আমি যা চাইছি তাই হচ্ছে।”
/
/
/
/
/
/
/
আহেলী ছাদের এক কোণে বসে অনবরত কেঁদেই চলেছে।
” কেনো হচ্ছে আমার সাথে এমন! কি করেছিলাম আমি? আমার অপরাধটা কি? মা বাবা চাচু সবাই আমাকে এখন ঘৃণা করে। বাবাতো আমাকে মৃত মনে করেন। মা ও আজকে আমার মৃত্যু কামনা করলে। কেনো!… কেনো এমন হচ্ছে! আমার সাথেই কেনো হচ্ছে? আমি তো কারু কোন ক্ষতি করিনি,,, তাহলে কেন এমন হচ্ছে,,,,।”
নিজের সাথে কথাগুলো বলে দুহাতে মুখ ঢেকে কাঁদে।
/
/
/
/
/
সকালে কলিংবেলের আওয়াজে নীচে এসে দরজা খোলে আহেলী। অরেঞ্জ কালার এর টিশার্ট গায়ে দেওয়া একটা ছেলেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুঝতে পারে ছেলেটি ‘ক্রুরিয়ার’ অফিস থেকে এসেছে।
“জ্বী ,,, বলুন”।
“ম্যাডাম আপনার নামে একটা পার্সেল আছে”।
“পা,, র,, পার্সেল,,, আমার নামে পার্সেল! কে পাঠিয়েছে? ”
“জানি না ম্যাডাম, প্লিজ সাইন করুন এখানে। ”
সাইন করে দিলে ছেলেটি চলে যায়। আহেলী দরজাটা বন্ধ করে দেয়। একটা মাঝারি সাইজের বাক্স। কি আছে এর মধ্যে! আহেলী বুঝতে পারে না। কি থাকতে পারে এর মধ্যে,,,,,,
.
.
.
.
.
চলবে………
(ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন)