00

একগুচ্ছ কদম !! Part- 08

[ গল্পের মাঝে বিভিন্ন ধরনের কথা থাকতে পারে । কিছু কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যও উল্লেখ থাকতে পারে গল্পের ক্ষেত্রে। কারো কাছে চটি লাগলে এক্সট্রেমলি সরি আমার কিছু করার নেই। ]
অন্ধকার রুমে বসে আছে রিদিতা ওর সামনের সোফায় বসে আছে সৌহার্দ্য। আজকে সকালে হুট করে বাহির থেকে রিদিতাকে নিয়ে আসে সৌহার্দ্য এবং বলে চলো আজকে তোমাকে সব সত্যি কথা বলি।
সৌহার্দ্য : আমি মাহিদ রিদানশ বন্ধু ছিলাম তবুও রিদানশ আর মাহিদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল ওরি সবসময় সবকিছুতে আমাকে হারাত যা আমার মনে দাগ কেটে যাচ্ছিল সেই ছোট থেকেই। আত্মীয়-স্বজন বাবা-মা সবার প্রশংসায় শুধু মাহিদ আর রিদানশ আর আমি ছিলাম অপদার্থ।এর জন্য আমি মনে মনে ওয়াদা করেছিলাম এদের এই বন্ধুত্বই শেষ করে দিব আর আমি সেটা পেরেছিও ওদের মধ্যে আজকে যদি কিছু থাকে তা হলো প্রতিশোধের আগুন । ওদের এই শত্রুতা দেখে আমার মনে শান্তি আসে খুব ( বলেই সৌহার্দ্য হাসতে লাগলো )
রিদিতা : ক কি করেছিলেন আপনি
সৌহার্দ্য : উমমম কি করেছিলাম কি করেছিলাম
রিদিতা : বলুন কি করেছিলেন আপনি বলুন
সৌহার্দ্য : আচ্ছা যাও সেটাও বলি !!!

আমরা যখন সদ্য কলেজে ভর্তি হই তখনই মাহিদ আমাদের একজন ক্লাসমেট সানার প্রেমে পড়ে ভালোওবেসে ফেলে । দিন যত যাচ্ছিল মাহিদ মেয়েটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছিল আর মেয়েটা ওহ্ সরি সানা আমার এক্স জিএফ সে আমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছিল আমি ঠিক এই সুযোগটাই কাজে লাগালাম। সানাকে বললাম মাহিদের কাছে বলতে যে ও রিদানশকে ভালোবাসে তাহলেই আমি ওকে মেনে নিব পাগল মেয়েটাও ঠিক তাই করলো আর মাহিদ ওর কথা শুনে সানাকে কিছুই বলেনি কিন্তু আমি ওই সুযোগে মাহিদের কানে বিষ ঢালছিলাম । তারপর একদিন সুযোগ বুঝে সানাকে মেরে দিলাম আর এমনভাবে ওর লাশটা রাখলাম যেটায় সবাই ভাবল ও আত্মহত্যা করেছে ওর হাতে একটা চিরকুট ও রেখেছিলাম মেটায় লেখা ছিল !!
আমার ভালোবাসার মানুষটি আমার সাথে ছলনা করেছে !!!
এই এক লাইনের লেখা মাহিদ আর রিদানশের বন্ধুত্ব শেষ করে। বেচারা রিদানশ‌আর মাহিদ আজো জানে না এগুলো সব আমার করা কাজ ।
এখন ভাবছো তোমাকে কেন এগুলো বললাম তার কারণ হলো আমি জানি তুমি আর রিদানশ একে অপরকে ভালোবাস কিন্তু কেউ কাউকে বলনি আর তুমি যদি ওর ভালোবাসা মেনেও নাও দ্যান হি উইল বি ফিনিশট । আমি কি করতে পারি তুমি নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছ তাহলে ওর কাছে যাওয়ার বা কাউকে বলার চেষ্টা করো না তাহলে তোমার বাপি শেষ হয়ে যাবে। এখন তুমি আসতে পারো যাও যাও ( বলেই হাসতে হাসতে চলে গেল সৌহার্দ্য । আর এদিকে আমি নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলাম ভাবতে লাগলাম একটা মানুষ কিভাবে এতো জঘন্য হতে পারে শুধুমাত্র প্রতিশোধের জন্য একটা মেয়েকে খুন করে ফেললো এখন কিভাবে বাঁচাব রিদানশকে না না উনাকে বাঁচাতেই হবে আমার )

রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছি আর ভাবছি ভালোবাসা পেয়েও পাব না। মানুষটির বেঁচে থাকাটাই আমার কাছে অনেক কিছু আমি দূর থেকেই ভালোবেসে যাবো উনায় । হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো মোহো ফোন করেছে নিজেকে স্বাভাবিক করে ফোনটা রিসিভ করলাম ।
আমি : হ্যা বল
মোহো : কোথায় তুই
আমি : আমি একটু বাহিরে এসেছিলাম বাসায় যাচ্ছি কিছু হয়েছে কি তোর
মোহো : তোর ভাই আমাকে বুঝে না কেন রিদি
আমি : আমি আজকে ভাইয়ের সাথে কথা বলবো। তুই কান্নাকাটি করিস না প্লিজ ইয়ার । আমি রাখছি ( বলেই ফোন টা কেটে দিলাম।না আমাকে আজকেই ভাইয়ের সাথে কথা বলতে হবে । এর একটা বিহিত করতেই হবে আজ। )
বাড়িতে এসে নিজেকে তৈরি করতে লাগলাম ভাইকে কিভাবে কি বলা যায় । উফফফ আজকে ভাই আসছেও না। বিরক্তিকর ব্যাপার কিছুই ভালো লাগছে না । এরইমধ্যে কে যেন দরজায় টোকা দিলো আবার !!!
আন্টি : মাহিদ বাবা এসেছে তোমাকে ফ্রেশ হয়ে খেতে আসতে বলেছে ।
আমি : আচ্ছা আপনি যান আমি আসছি ।
ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসলাম। হাত পা কাঁপছে আমার কখনো ভাইয়ের সামনে কিছু বলিনি আজ কি হবে আল্লাহ জানে।
মাহিদ : দিন কেমন কাটলো তোমার ।
আমি : ভালোই ।

মাহিদ : আজকে তুমি বাড়িতেও ছিলে না ক্লাসেও যাওনি কোথায় ছিলে ।
আমি : মোহোর বাড়িতে ছিলাম ।
মাহিদ : ওহ্ আচ্ছা । খেয়ে নাও ।
আমি : আমার কিছু কথা ছিল ভাই ।
মাহিদ : বলো ।
আমি : তুমি মোহোকে কেন মেনে নিচ্ছো না ওর কি দোষ কি করলে তুমি ওকে মেনে নিবে বলো ভাই বলো ?
মাহিদ : মোহোকে আমি মেনে নিবো কিন্তু
আমি : কিন্তু ( বলেই ভ্রু কুঁচকে ফেললাম )
মাহিদ : প্রথমত তুমি রিদানশের প্রোপোজাল রিজেক্ট করবে। দ্বিতীয়ত মোহোর মনে ওর ভাইয়ের জন্য ঘৃণা সৃষ্টি করবে তাহলেই মেনে নিবো মোহো কে বুঝলে ।
আমি : ( চিল্লিয়ে বলতে লাগলাম ) ভাই তুমি এটা করতে পারো না পারো না তুমি ।
মাহিদ : ( খেতে খেতেই জবাব‌ দিল ) আমি সব পারি সব । সময় হলেই তুমি বুঝতে পারবে ( বলেই উঠে চলে গেল আর আমি নির্বাক হয়ে বসে রইলাম। সবাই সবার স্বার্থ দেখছে আমার কথা কেউই ভাবছে না )
চলবে…….