আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 04
তো যাই হোক রিদি রাজকে এভাবে ডাক দেওয়াতে সবাই ওদের দিকে এটেনশন দেয়।
রিদি অনু আর রিমাকে দেখিয়ে বলে,”meet my cousin sisters!”
ছেলে গুলো তো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।তাদের তাকিয়ে থাকা দেখে ওর খুব বিরক্তিকর লাগছিলো।
তাই আর বেশী সময় চুপচাপ থাকতে পারে না।
অনু বলে,”তা আপনারা আগে কখনো বুঝি মেয়ে মানুষ দেখেন নাই? ”
ওদের মাঝে সিয়াম নামের একজন বলে,”মেয়ে তো দেখেছি কিন্তু আপনার মতো অদ্ভুত সুন্দরি দেখি নাই।”
সিয়ামের কথায় তাল মিলিয়ে নিরব বলে,”একদম ঠিক কথা আরে রাজ আরিয়ান তোরা তো কিছু বলবি না একদম চুপচাপ থাকবি? ”
অনুর এদের কথা শুনে শরীর জ্বলে যাচ্ছে রাগে অন্য দিকে ক্রাশ না কি তার দুলাভাই সেই জন্য দুঃখে কষ্টে কলিজা ফেটে যাচ্ছে কি করবে বুঝতে পারছে না।
এমন সময় ওদের সামনে এসে একজন চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে অনুর পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে।
অনু তার মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে,”এই যে মিস্টার বেপার কি আপনার?মেয়ে মানুষ দেখলেই তাদের নিজের চোখকে এক্সরে মেশিন বানিয়ে দেখতে হবে কেনো?
সব গুলো ছেলে দেখি এক রাস্তার পথিক! ”
রিদি বলে,”আরে অনু থাম ভাইয়া তোর দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে নেই যে এতো কথা শোনাতে হবে।”
অনু বলে,”সে কেনো তাকাবে আমার দিকে? ”
এবার আরিয়ান সামনে এসে বলে,”ডান হাতে ঘড়ি,বাম হাতে ব্রেসলেট, নাকে ছোট একটা স্টোনের নাক ফুল,মাথায় সুন্দর করে হিজাব পড়া,মার্জিত ড্রেস পড়ে ওড়না এক পাশে রাখা।চোখে গাড়ো করে কাজল লাগানো, ঠোঁটে হালকা লিপজেল দেওয়া তুমি তো পুরাই যে কোনো ছেলের ক্রাশ তা কি জানো তুমি?”
অনু বলে,”এই প্রশংসা এখন শুনে কোনো লাভ নেই।নিজের জি এফ কে ভালো মতো কমেন্ট করেন।আপনার তো ক্রাশ আমি না তাহলে হবে।”
অারিয়ান রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”রাজ রে তোর শালিকা কিন্তু পুরোই ঝাঁঝ লবঙ্গ।
তার সাথে পারা দাম আছে।
ছোট খাটো একটা ক্রাশ খাইলাম তার উপর।”
এবার অনু বিস্ময়ের চোখে রিদি দিকে তাকিয়ে বলে,”আপু রাজ তোমার বিএফ তাহলে ঐ লোকটাকে কেনো রাজ বলছে উনি।”
রিদি বলে,”আজব কাহিনী তো রাজকে তো রাজ বলবে না কি অন্য কাউকে বলবে ? ”
অনুর মাথা পুরো গুলিয়ে যাচ্ছিলো তখন বলে,”আমি এনাদের কিছুদিন আগে ঢাকাতে একটা বড় শপিং মলে দেখেছি।”
আরিয়ান কে দেখিয়ে বলে,”এনাকে তো পেছন থেকে কেউ একজন রাজ বলে ডাক দিয়েছিলো তা শুনেছিলাম। ”
আরিয়ান তখন বলে,”ম্যাডাম আপনি হয়তো এটা দেখেছেন আমি চেঞ্জিং রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।তো সাধারণভাবেই রাজ চেঞ্জিং রুমে ছিল আর আমি বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
তাই রাজকে পেছন থেকে রাজ বলে ডাকছিলো আমাকে ডাক দেয় নাই।
আমার নাম রাজ এটা কি জানেন?
আমার রাজ নামটা ভালো লাগে না।
আর একবাড়িতে দুই জনের এক নামে ডাকবে তা আমার পছন্দ না তাই ব্যবহার করি না।
অনু এবার রিদিকে বলে,”তাহলে তোমার বিএফ কে আপু? ”
রিদি রাজের হাত ধরে দাঁড়িয়ে বলে,”অবশ্যই রাইদুল ইসলাম রাজ।”
অনু এবার হাফ ছেড়ে বাঁচে তারমানে যাকে সে রাজ ভেবেছে সেই আরিয়ান।
যাক বাবা আমার ক্রাশ দুলাভাই না অন্যকেউ তা না হলে কি যে করতাম জানি না মনে মনে বলে।
আরিয়ান এবার অনুর মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে, ” সুন্দরী ম্যাডাম আপনি কার খেয়ালে হারিয়ে গেলেন অন্য দুনিয়াতে? ”
অনু মুখ ফসকে বলে ফেলে আপনার খেয়াল ছাড়া আবার কার স্যার?
আরিয়ান বলে,” আজব কাহিনী। ”
অনু বলে,” এখানে আজবের কি আছে।”
এবার রাজ আরিয়ান কে উদ্দেশ্য করে বলে,”
কিরে তোর কি আমার শালি টা পছন্দ মানে এই মেয়ে অনুকে পছন্দ হয়েছে? ”
আরিয়ান বলে,”আমাকে কি পাগলে কামড় দিয়েছে যে এই রকম ফাজিল গায়ে পড়ে ঝগড়া করা মেয়েকে পছন্দ করতে যাবো? ”
রাজ বলে,”যাক তাও ভালো না হলে তো আমাকে এখুনি জিএফ চেঞ্জড করতে হতো! ”
অনু নিজের একটা ভ্রু কুঁচকে রাজের দিকে তাকিয়ে বলে, “কেনো তার পছন্দ হলে আপনি আমার সাথে প্রেম করবেন? ”
রাজ বলে,”আসলে ছোট থেকে আরিয়ানের সব পছন্দ গুলো আমি নিজের করে নিতে ভালোবাসি তাই।”
অনু বলে,”তা ঠিক আছে।আপনি আমার বোনের সাথে প্রেম করছেন তা করেন আমার সমস্যা নেই।কিন্তু ভুল করেও আমার সাথে প্রেম করার কথা মাথায় আনবেন না।”
অারিয়ান অনুকে বলে,” I really like your attitude sweet heart! ”
অনু তো খুশী তে গদগদ হয়ে বলে,”ধন্যবাদ আপনাকে।”
অনুর তো মনের মধ্যে একশোটার মতো লাড্ডু ফুটছে।
যাক অবশেষে তার ক্রাশের সামনে সে দাঁড়িয়ে আছে।উফফ এমনটা কি ভাবা যায়।
ভাগ্যিস নামটা ভুল শুনেছিলো তা
হলে যদি রাজের উপর ক্রাশ খেতে তাহলে কি কেলেঙ্কারিটাই না হয়ে যেতো।
শেষে বোনের বিএফ নিয়ে টানাটানি বেধে যেতো।আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছে।
আরিয়ান বলে,”তা মিস ঝাঁঝ লবঙ্গলতা আপনার নামটা কি জানতে পারি? ”
এবার রিমা বলে,”ওরা নাম অনু।”
অনু এবার রাগী চোখে রিমার দিকে তাকিয়ে বলে,”এই তোরে কে দুধের মধ্যে লেবুর রস হয়ে পড়তে বলছে? চুপচাপ থাকতে পাড়িস না? ”
রিমা বলে,”এতো সময় ধরে তো চুপচাপ বিনোদন নিচ্ছিলাম। তুই যেখানে আছিস সেখানে তো ফ্রি তে বিনোদন পাওয়া যায়।”
এবার রিদি বলে, “আচ্ছা অনেক হয়েছে এবার আমি বলছি এ হচ্ছে আমার খালাতো বোন আরিয়াত ইসলাম অনু।আর এ হচ্ছে অনুর চাচাতো বোন রিমা ইসলাম।”
রিদি আবার বলে,”এ হচ্ছে রাইদুল ইসলাম রাজ।আমার বি এফ।”
রাজ আরিয়ান কে দেখিয়ে বলে,”এ হচ্ছে আমার মামাতো ভাই আরিয়ান রাজ চৌধুরী। ”
রিদি বলে,”অনু আর রিমা ঢাকাতে থাকতো এখানে এসেছে কালকে।”
আরিয়ান বলে,”তারা যে ঢাকা থাকে তা কিন্তু আগেই জানতে পেরেছি।
তা ঝাঁঝ লবঙ্গ কি এখানে বেড়াতে এসেছে? ”
রিদি বলে,”আরে নাহ,,ওরা।
দুজন এখানে থেকে লেখাপড়া করবে তাই আজ ওদের কলেজে ভর্তি করাতে নিয়ে আসছিলাম।
আর কলেজের কাজ শেষে ওদের নিয়ে তোমাদের সাথে দেখার করতে আসছি।”
রাজ বলে,”ভালো কাজ করেছো।
আগে তো জানতাম না যে তোমার থেকে সুন্দরি কাজিন আছে।”
রিদি বলে,”এই একদম অনুর দিকে নজর দিবে না।অনু দেখতে যেমন সাধারণ ও কিন্তু সাধারণ মানুষ না। ”
রাজ বলে,”তাই না কি? তা কি এমন স্পেশাল আছে আপনার মাঝে? ”
অনু আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,”তা না হয় সময় হলে জানতে পারবেন!
প্রথম দেখায় এতো জানতে হয় না।”
আরিয়ান বলে,”আরে মিস অনু আমি তো আপনার প্রতিটা কথায় মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি,
আহা দেখিয়েন মুগ্ধতার বসে আবার আপনার প্রেমে না পড়ে যায়। ”
রিমা এবার অনুকে টান দিয়ে বলে, “থাক ভাই আপনি মুগ্ধতা তে সীমাবদ্ধ থাকেন প্রেম করতে হবে না।”
আরিয়ান বলে,”আমার তো কপালে শনি লাগে নাই যে এমন একটা ফাজিল মেয়ের সাথে করবো প্রেম।”
অনু বলে,”এই যে এতো ফাজিল বলেন না।কখন আবার এই ফাজিলের প্রেমে পড়ে যান বলা তো যায় না।”
আরিয়ান বলে,”আচ্ছা দেখা যাবে এখানেই তো থাকবেন এখন থেকে পরে না হয় সময় করে দুজন দুজনা কে চিনে নিবো? ”
অনু বলে,”জ্বি অবশ্যই তার আর বলতে হবে না।”
রাজ বলে,”কি রে আরিয়ান তুই কি আমার সামনে ফ্লাট করছিস? ”
আরিয়ান বলে,”পাগল না কি?তোর সামনে এমন কাজ তো ভুলেও করবো না আমি।”
রাজ :সমস্যা নেই তো আমাদের।
তোর যা কিছু সে সব তো আমারি তাই না দোস্ত?”
অনু বলে,”একটা যুক্তি আরিয়ানের যা সব যদি রাজের হয় তাহলে রাজের যা তা আরিয়ানের না কেন?”
আরিয়ান বলে,”love you anu,,,এই তো কথার মতো কথা বলেছো তুমি।
রাজ এবার তুই উওর দে? ”
রাজ চুপচাপ কোনো কথা নেই তার মুখে।
আরিয়ানের মুখে love you শুনে তো অনু আকাশে উড়িতেছে।
এমন সময় রিদি বলে “আচ্ছা অনেক সময় হয়ে গেছে পড়ে দেখা হবে এখন বাড়িতে যেতে হবে আমাদের।”
রাজ বলে,”আচ্ছা ঠিক আছে পরে সময় করে যখন আসবে ওদের সাথে নিয়ে এসো কিন্তু। ”
অনুর তো মনের মাঝে লাড্ডু ফুটছে।
সে মাঝে মাঝে তার ক্রাশ কে দেখতে পারবে তাই।
আরিয়ানের সামনে থেকে তো যেতে ইচ্ছা করছিলো না তবুও তাদের যেতে হলো।
বাড়িতে এসে তো অনু আরিয়ানের খেয়ালে ডুবে ছিলো এমন সময়…
(আরিয়ান কি প্রেমে পড়বে অনুর?? 🙄🙄)
‘
‘
‘
চলবে…..