||আগুনের গোলা ভূতের গল্প||
আজ থেকে প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের ঘটনা আমি তখন ছোট। আমাদের বাড়ির পশ্চিমে ছিল একটা বড় জঙ্গল। আমরা ছিলাম যৌথ পরিবার। তখন আমাদের রান্নাঘর কলপাড় ও বাথরুম ছিল বাড়ির শেষ সীমানায় সাধারনত গাঁয়ের বাড়িগুলো যেরকম হয় আর কি। আর এগুলো ছিল ঐ জঙ্গলের পাশেই। আর তাই আমাদের বাড়ির এমন কোন মানুষ নেই যে যারা এই জঙ্গলের ভয়াবহতা সম্বন্ধে জানতো না। সন্ধ্যা হতে না হতেই সেখানে নানা রকম ভূতুরে পাখিরা ডাকতো যা শুনলে শরীরের রক্ত হিম হয়ে যেত। আমার চাচার মুখে শুনেছি তারা যখন ছোট ছিল তখন নাকি প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে অনেক ভাল ভাল খাবারের গন্ধ পেত কিন্তু কোন এক কারনে পরবর্তীতে সেই গন্ধটা আর কেউ পায়নি যাই হোক মূল ঘটনায় আসি। একদিন রাতে আমার আম্মা ও ছোট ফুফু যায় রান্না করতে। তারা যখন রান্না করতেছিল তখন হঠাত্ ঐ জঙ্গলের মাঝে একটা বাচ্চার কান্না শুনতে পেল।
আমার আম্মা ছিল অনেক ভীতু তাই তিনি সেখান থেকে দোড়ে চলে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমার ফুফু ছিল অনেক সাহসী প্রকৃতির তিনি আমার আম্মাকে বললেন ভয় নেই কারন আমাদের এখানে আগুন আছে, আগুনের কাছে কোন খারাপ জিনিস আসতে পারে না। তারপর তারা শুনতে পেল বাচ্চাটা কখনো কাঁদছে আবার কখনো হাসছে। মাঝে মাঝে ভূতুরে পাখির ডাকও শোনা যাচ্ছে। কিছুক্ষনপর শব্দটা ধীরে ধীরে রান্নাঘরের কোনায় শোনা যাচ্ছে। তারা তখন ভয়ে চুপ করে রইলো। তার কিছুক্ষনপর কান্নাটা থেমে গেল। তারপর তারা শুনতে পেল টিউবওয়েলে কে যেন হাতমুখ ধুচ্ছে তাই সাহস করে তারা দুজনেই বাইরে বের হল কিন্তু কি আশ্চর্য কলপাড়ে কেউ নেই। সেদিন তারা অনেক ভয় পায়। একদিন রাতে আমার বড় চাচার অনেক বাথরুম পেল তাই তিনি তাড়াতাড়ি হারিকেন না নিয়েই বাথরুমে চলে গেলেন। সেদিন ছিল আমাবস্যা। রাত প্রায় দেড়টা বাজে। তিনি শুনতে পেলেন কারা যেন ঐ জঙ্গলে দৌড়াদৌড়ি করছেন। চাচা ভাবলেন মনে হয় চোর হতে পারে তাই তিনি তাড়াতাড়ি বাথরুম শেষ করে জঙ্গলের ভিতর তাকিয়ে দেখলেন দশ বারোটা আগুনের গোলা ছোটা ছুটি করছে এবং এ গাছ থেকে ও গাছ বেয়ে বেয়ে যাচ্ছে এটা দেখে তিনি দৌড়ে ঘরে চলে আসেন। পরের দিন এ ঘটনা দাদাকে বললে তিনি বললেন এগুলো আসলে ছিল জ্বীন। আর জ্বীনেরা কদম গাছ পছন্দ করে বেশি। বলাবাহুল্য ঐ জঙ্গলে একটা বড় কদম গাছ ছিল। আর ঐ কদম গাছ নিয়ে অনেক ভয়াবহ ঘটনা আমাদের বাড়িতে ঘটেছে সেগুলো পরে পোষ্ট করবো।