অন্ধপ্রেম !! Part- 20
(#গল্পের নাম অন্ধপ্রেম অথচ রাজের ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছিনা আমরা..আচ্ছা ভালো কি ছেলেরায় ভাসতে পারে আমারা মেয়েরা পারিনা..শীতলের ভালোবাসা কি অন্ধপ্রেম নয়??)
.
চারদিকে ঘন অন্ধকার ..পরিতক্ত্য একটা রাস্তা দিয়ে ড্রাইভ করছে রাজ ..
রাজ আজ প্রচুর ড্রিংক করেছে ..
আজকেও রাজ শীতলের গায়ে হাত দিয়েছে …
শীতল ফ্লোরে বসে বসে কান্না করছে ..
নাক দিয়ে ব্লিডিং পড়ছে …ঠোঠ কেটেও গিয়েছে অনেক টুকু ..
গাল দুটো ফেটে গিয়েছে ..
শীতলের গায়ের বেশ অনেক জায়গায় আঘাত করেছে রাজ ..
.
.
.
রাজ আজকে প্রমান করে দিলো তার কাছে প্রতিশোধ সবচেয়ে বড় ..
রাজ আরো প্রমান করেছে সে কখনো ঠিক হবেনা ..
শীতল বুঝতে পেরেছে সে বৃথায় চেষ্টা করেছিলো …
কি কি করেনি শীতল রাজকে আপন করে নিতে ..
একটা ভুল বোঝাবুঝি কে রাজ তার জিবনকে লক্ষ্য করে নিয়েছে …
শীতল তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে নিজের ভালোবাসা দিয়ে রাজকে স্বাভাবিক জিবনে ফিরিয়ে আনতে বাট শীতল ব্যার্থ হয়েছে আজ…
রাজ স্পষ্ট বলে দিয়েছে শীতলের কোনো জায়গা নেই রাজের জিবনে ..
রাজ বলেছে শীতলের প্রয়োজন শেষ রাজের কাছে ..
শীতলের কোনো ব্যাপারে সে মাথা ঘামাবেনা …
.
.
.
সকাল হয়েছে ..
শীতল ফ্লোরে ঘুমিয়ে পড়েছিলো ..
একটা রিংটনে তার ঘুম ভাঙলো …
শীতল ফোন রিসিভ করলো ..
টেলোফোন থেকে কেউ ফোন করেছে …
রাজের এক্সিডেন্ট হয়েছে ..
সে এখন মেমোরিয়াল ক্লিনিকে ভর্তি ..
সিচিয়েশন গরুত্বর রাজের ..
শীতলের হাত পা কেপে উঠলো খবর শুনে ..
শীতল তাড়াতাড়ি ক্লিনিকে গেলো …
বাড়িতে কাউকে না জানিয়েই গেলো ক্লিনিকে ..
ক্লিনিকে গিয়ে রাজের ক্যাবিনে ঢুকার সময় শীতলের হার্টবিট বাড়তে শুরু করলো ..
হাজার হোক বাঙালি মেয়ের স্বামি বলে কথা ..
.
.
রাজের পা ভেঙে গিয়েছে ..
একটা হাতও ভেঙেছে।শরীরের অনেক জায়গায় বেশ চোট লেগেছে …
শীতল রাজকে এমন অবস্থায় দেখে জোরে জোরে কান্না শুরু করলো ..
রাজের জ্ঞান না ফিরা পর্যন্ত শীতল ক্লিনিকের নামাজ ঘরে নফল নামাজ পড়লো সারাদিন ..
রাজের জ্ঞান ফিরার পর রাজকে বসায় সিফ্ট করা হয় ..
.
.
.
ডক্টর বলেছে রাজ ঠিক নাও হতে পারে বিকোজ রাজের চোট গুলো বেশ বড় রকমের ছিলো ..
রাজ কখনো নিজের পায়ে দাড়াতেও পারবেনা এটা শীতল ভাবতেও পারছেনা ..
রাজের জ্ঞান ফিরার পর শীতলকে দেখে রাজ অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিলো শীতলের দিকে ..
.
.
.
রাজ রাতে শীতলকে মেরে ধরে বলেছিলো তার জিবন থেকে চলে যেতে ..
.
.
.
বাসায় রাজকে নিয়ে এসে স্বামির পায়ে সকল সেবা উৎস্বর্গ করে দিতে থাকলো শীতল ..
শীতল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে রাজকে সুস্থ করে তুলতে ..
প্রতিদিন রাজকে ডক্টর এসে দেখে যায় ..
শীতল কোনো নার্সের উপর ভরসা করতে পারেনি তাই শীতল নিজেই নার্সের সকল কাজ করলো ..
শীতল দিন রাত এক করে দিলো রাজকে সুস্থ করতে..
শীতল ঠিক মতো একদিনও খায়নি ,ঘুমায়নি ।
রাজ এতোদিনে শীতলের সাথে একটাও কথা বলেনি ..
শীতল শুধু প্রয়োজনীয় কথা বার্তা বলতো রাজের সাথে .
.
.
.
রাজ শীতলকে খুব কাছ থেকে দেখলো..
শীতলের মায়াবতির রুপ এর আগেও দেখেছে রাজ ..
কতটা ধৈর্য্য দান করেছে আল্লাহ শীতলকে যার জন্য এতোকিছুর পরও স্বামি সেবা করে যাচ্ছে ..
স্বামির জন্য নিজের জিবনকেও জিবন মনে করছেনা ..
শীতল. সব সময় রাজের পাশে থাকে ,,রাজকে খাওয়ানো ,গোসল করানো থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছু শীতল নিজের হাতে করে ..
শীতল রাতে প্রায় পুরোটা সময় ধরে জায় নামাজে বসে বসে রাজের জন্য দোয়া করে ..
.
.
চাচা ,খালা ,কাজল শীতলকে সব সময় শান্ত্বনা দেয় রাজ খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে ..
কাজল রাজকে বিনোদনের জন্য ভিবিন্ন বই পড়ে শোনায় ..
শীতল তখন রাজের হাত পায়ে তেল মালিশ করতে ব্যাস্ত থাকে ..
.
.
.
প্রায় দেড় মাস পর রাজ সুস্থ হলো ..
এতোদিনেও রাজ কিসের সংকোচে যেনো শীতলের সাথে একটা কথাও বলেনি ..
কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি রাজ এতো তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে ..
ডক্টররা যেখানে বলে ছিলো রাজ সুস্থ নাও হতে পারে ..
শীতলের সেবা যত্ন সব মিথ্যে করে দিয়ে রাজকে সুস্থ করে তুললো ..
.
.
.
রাজ অনেক দিন পর অফিসে যাচ্ছে ..
হাত ঘরি ,ওয়ালেট ,রুমাল ,সবকিছু এগিয়ে দিলো শীতল রাজকে .
রাজ মাথা নিচু করে নিলো শীতলের হাত থেকে ।
.
.
.
রাজ রুম থেকে বের হওয়ার সময় শীতল বললো ..
_আপনার সব দরকারি জিনিস পত্র গুছিয়ে রেখেছি ডেস্কে ..
আপনার ড্রেস গুলো আলমাড়িতে পাবেন …
জুতো গুলো ড্রয়ারে রেখছি ..
আপনার ঔষধ গুলো কখন কটা করে খাবেন তা টেবিলে নোট বুকে লিখে রেখেছি ..
রাজ কিছুটা অবাক হলো শীতলের এমন ভিহেবে ..
রাজ এতোদিনে শীতলকে বললো …
_আমাকে এসব বলছো কেনো .??
তুমি আছোতো এগুলো গুছিয়ে আমাকে দেওয়ার জন্য ..
তুমি কি কোথাও যাচ্ছো শীতল ??
শীতল বেশ হালকা ভাবে তার কাজল কালো চোখ দিয়ে রাজের চোখে তাকালো ..
নিজের হাত দিয়ে কোমরে গুজে রাখা শাড়ির আচলটা বের করলো …
রাজ আবার বললো ..
_এই শাড়িতে তোমাকে আরো অনেক সুন্দর লাগছে একদম নববধূ ..
রাজ কথাটা বলে শীতলের দিকে তাকালো ততক্ষন শীতল বারান্দায় চলে গিয়েছে ..
.
.
রাজ হালকা হাসি ঠোটে রেখে ডোর ওপেন করে বের হয়ে গেলো ..
.
.
.
দুপুর হয়েছে রাজ শীতলকে ফোন করলো ..
রাজ প্রথমবার শীতলকে ফোন করলো ..
শীতলের ফোন অফ কেনো যেনো .
.
.
শীতল ট্রেনে বসে বসে ভাবছে এতোদিন যা হয়েছে তার সাথে সেসব কথা ..
শীতল নিজেকে শান্ত্বনা দিলো এই এক বছর তার সাথে যা হয়েছে তা একটা এক্সিডেন্ট মাত্র ..
শীতল নিজের মনকে মানিয়ে নিয়েছে ।
সে বুঝতে পেরেছে সবার ভালোবাসা পাওয়ার ভাগ্য নেই ..
সবাই ভালো থাকতে পারেনা জিবনে যেরকম শীতলও থাকতে পারেনি ..
সব পিছুটান ছেড়ে ,সব সম্পর্ক ছিন্ন করে শীতল রাজের জিবন সংসার আর মিথ্যে মায়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ..
.
.
.
হ্যাঁ শীতল আজ রাজের জিবন থেকে মুক্ত হয়েছে .
সে আজ রাজের খাচা থেকে বেরিয়ে এসেছে ..
জিবন তাকে কোথায় নিয়ে যাবে সেটায় দেখবে সে ..
.
.
.
বাবার বাড়ি যাওয়ার সাহস ওর নেই ।
বাড়িতে গেলে শীতলের সাথে যা হয়েছে তা সবাই জেনে যাবে ..
রোদ রাজকে মাডার করবে এটা নিঃশ্চিত শীতল ..
শীতলের যাওয়ার মতো তেমন জায়গা নেই ..
শীতলের এক খালা থাকে চট্রগ্রামে ..
শীতল সেখানে যাচ্ছে ..
.
.
শীতলের সাথে কথা হয়েছে তার খালার ..
.