তারে আমি চোখে দেখিনি

তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 25 (শেষ)

তারে আমি চোখে ………..

মাহির সব খানে মায়াকে খোঁজে কিন্তু কোথাও পায় না।পাগলের মতো হয়ে যায় মাহির।আর রাস্তা দিয়ে ড্রাইভিং করতে করতে চোখের পানি মুছে বাড়ির দিকে আসে।কস্টে মাহিরের বুকের ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে। আর ভাবছে, এতোটা কস্ট কেন মায়াকে দিলো।কিন্তু মাহিরেরও যে কোনো দোষ নেয়। সবই স্নিগ্ধার চক্রান্ত। আজ যদি স্নিগ্ধা এমনটা না করতো তাহলে তো মায়া মাহিরের কাছেই থাকতো।

ওদিকে মায়া বাবা-মায়ের সাথে পুলিশ নিয়ে বাড়িতে আসে।স্নিগ্ধা মাহিরের রুমে জোড়ে মিউজিক বাজিয়ে ড্যান্স করছে।এতো জোড়ে মিউজিক বাজানোতে বাড়ির সকলের অসুবিধা হচ্ছে।তাই সবাই কানে হাত চেপে বসে আছে। বাড়ির সকলের সাথে সোহাগের রাগও চরম পর্যায়ে উঠে গেছে।

সোহাগঃ আমার মেয়ে বাড়িতে নেয় আর এখানে ফুরতি করা হচ্ছে? ওই মেয়েকে আমি এক্ষুনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বেড় করে দেব।

বলে সোহাগ উপরের দিকে যেতে লাগে।সোহাগকে মিরা আটকিয়ে দেয়।আর কান্না জড়িত কন্ঠে জড়িয়ে ধরে সোহাগকে বলে,

মিরাঃ নাহ্ এরকম কিছু করবে না তুমি।ওই মেয়ে কি বলেছে শোনোনি? ও বলেছে ওকে কিছু বললেই নারী নির্যাতনের মামলা করবে।ওগো আমার মেয়েটাকে আগে ফিরে আসতে দাও তারপর যা করার করো।

মিরাকে কাঁদতে দেখে সোহাগ থেমে যায়।মিরার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিতে থাকে।এমন সময় মায়ারা আসে।মায়া খেয়াল করে মাহিরের রুম থেকে খুব জোড়ে মিউজিকের শব্দ আসছে।কারও সাথে কথা না বলেই মায়া সোজা উপরে চলে যায়।পুলিশ মায়ার পিছু পিছু আসে।মায়ার বাবা-মায়ের অবস্থা দেখে বাড়ির সবাই এগিয়ে এসে তাদের সোফাতে নিয়ে বসায়।আর জানতে চায় কি হয়েছে।তারা সব খুলে বলে।

মায়া রুমে এসে মিউজিকটা অফ করে দেয়।আর ড্যান্স করতে করতে থেমে যায় স্নিগ্ধা।রাগী দৃষ্টিতে পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে মায়া দাড়ানো।স্নিগ্ধাকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে মায়া এগিয়ে আসে।তারপর,

মায়াঃ ঠাসসমমস!

স্নিগ্ধাঃ হে মায়া!

গালে হাত দিয়ে বলে।

মায়াঃ ঠাসসসমমম!

স্নিগ্ধাঃ মায়…আ

মায়াঃ ঠাসসস!

স্নিগ্ধাঃ মায়া তুমি কিন্তু?

মায়া আর কিছু বলতে দেয় না স্নিগ্ধাকে।একসাথে অনেকগুলো থাপ্পড় বসিয়ে দেয় স্নিগ্ধার দু’গালে।

মায়াঃ ঠাসসসস! ঠাসসসম! ঠাসসসস! ঠাসসসস! ঠাসসসস!

তারপর মায়া স্নিগ্ধাকে ধরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।একজন মহিলা পুলিশ এসে স্নিগ্ধাকে ধরে বসে। মায়া এগিয়ে এসে স্নিগ্ধার সামনে আঙুল উঁচিয়ে বলে,

মায়াঃ তোর এতো সাহশ তুই আমার বাবা-মাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিস! আমার অনুভবকে দিয়ে তোর হাত, পায়ের মালিশ করিয়েছিস! তোকে তো আমি…

মায়া স্নিগ্ধাকে আবার মারতে যায় একজন পুলিশ মায়াকে থামিয়ে দেয়। তারপর মায়ার সাহসীকতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মহিলা পুলিশগুলো স্নিগ্ধার হাতে হ্যান্ডকেপ পরিয়ে দিয়ে স্নিগ্ধাকে ঠেলতে ঠেলতে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। স্নিগ্ধা মায়ার কাছে ক্ষমা চায়। মায়ার পায়ে অবদি পরে তবুও মায়া স্নিগ্ধার প্রতি একটুও দয়া দেখায় না।পুলিশদের বলে ওকে যেন ফাঁশিতে ঝোলানো হয়।ফাজিল মেয়ে আমার বাড়িতে এসে আমাকেই আমার রুম থেকে বের করে দিয়েছে!

কিছুক্ষণ পরে মাহির বাড়িতে আসে।মায়ার বাবা-মাকে দেখে মাহির অবাক হয়। কিভাবে স্নিগ্ধার কবল থেকে বেড়িয়ে আসলো যানতে চাইলে সবাই মাহিরকে সবকিছু খুলে বলে।সবকিছু শুনে মাহির মায়াকে খোঁজ।

মাহিরঃ আমার মায়া কোথায় মিরা মা?

মিরার কাছে জানতে চায় মাহির।

মায়াঃ তোমার রুমে দরজা আটকে বসে আছে।যাও গিয়ে মান ভাঙাও।

মাহির চোখমুখ মুছে ছুটে নিজের রুমের কাছে যায়।দেখে দরজাটা ভেতর থেকে আটকানো। মাহির বাইরে থেকে মায়াকে ডাকতে থাকে।

মাহিরঃ এই মায়া দরজাটা খোলো!

মায়াঃ না খুলবো না।

মাহিরঃ কেন? আমার রুমে একটা কাজ আছে প্লিজ আসতে দাও!

মায়াঃ নাহহ! দেবো না আসতে।আপনি কাল আমাকে রুম থেকে বের করে দিয়েছিলেন না? এখন তার শোধ তুলবো।

মাহিরঃ কিসের শোধ?

মায়াঃ ওইযে আমাকে একদিন রুম থেকে দূরে রেখেছেন তাই আপনাকেও দুইদিন দূরে থাকতে হবে।

মাহিরঃ এটা কেমন জেদ তোমার? আচ্ছা তুমি কি কখনো বদলাবে না?

মায়াঃ নাহহ

মাহিরঃ আচ্ছা ঠিক আছে বদলাতে হবে না।আমার দরকারি একটা জিনিস আছে দরজাটা খোলো আমি নিয়েই চলে যাচ্ছি।

মায়াঃ সত্যি? নিয়েই চলে যাবেন তো?

মাহিরঃ হুমমম।এইবার খোলো।

মায়াঃ ঠিক আছে।

মায়া দরজাটা খুলে দিতেই মাহির রুমে গিয়ে ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।

মায়াঃ একি আপনি এটা কি করছেন?

মায়া আর কিছু বলার আগেই মাহির মায়াকে কোলে তুলে নেয়। তারপর মায়াকে বিছানায় নিয়ে এসে বসিয়ে দেয়।আর কান ধরে মায়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে,

মাহিরঃ ছরি মায়া! আমি মানছি আমার ভুল হয়ে গিয়েছিলো। তাই বলে আমাকে আর তোমার থেকে দূরে সরিয়ে রেখও না।তোমাকে কস্ট দিয়ে যে আমিও ভালো নেয়। বিশ্বাস করো মায়া! আমি যা কিছু করেছি শুধু পরিস্থিতির চাপে পরে করেছি।আর তোমার বাবা-মায়ের কথা ভেবে করেছি।

মায়া কিছু না বলে, মাহিরের দিকে তাকিয়ে হাতের ইশারায় মাহিরকে উঠে দাড়াতে বলে।মাহির উঠে দাড়ায়। তারপর মায়া বলে,

মায়াঃ কাল আমার সামনে আপনি স্নিগ্ধাকে স্পর্শ করেছেন।ওর হাত, পায়ে মালিশ করে দিয়েছেন।

মাহিরঃ মায়া তুমি চাইলে আমি প্রতিদিন তোমার হাত, পায়ে মালিশ করে দিতে পারবো।

মায়াঃ চুপ থাকুন। আগে যা বলেছিলাম তায়। আপনি এই রুম থেকে দুইদিন দূরে থাকবেন এটাই আপনার শাস্তি।

মাহিরঃ ঠিক আছে।

মুখটা কালো করে মাহির রুম থেকে বেড়িয়ে আসে।টানা দুইদিন মাহিরকে পাত্তা দেয় না মায়া।দুইদিন পরে মায়া নিজেই মাহিরের কাছে যায় আর মাহিরকে বলে এখন আপনি আপনার রুমে আসতে পারেন।আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি আমি।জবাবে মাহির মায়াকে এড়িয়ে চলে যায়।মায়া পেছন থেকে মাহিরকে ডাকতে থাকে কিন্তু মাহির কোনো কথায় বলে না।মায়া চিন্তায় পরে যায়।তাহলে কি এবার মাহির শোধ তুলবে তার সাথে কথা না বলে? আচ্ছা মাহির যদি মায়ার সাথে কথা না বলে তাহলে মায়া কি করবে? সেটা ওদের উপরই ছেড়ে দিয়।মান-অভিমানের খেলা সব সম্পর্কের মধ্যেই থাকে।এতে ভালোবাসা কমে না।বরংচ বাড়ে।আল্লাহ হাফেজ।

।।।।।।।।সমাপ্ত।।।।।।।।

 

(বিঃ দ্রঃ “ তারে আমি চোখে দেখিনি ! সিজনঃ-1, 2 !! লেখাঃ মস্ত লিজা ” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)

বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ মস্ত লিজা ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন…………

👉আমাদের ফেসবুক পেজ

 

তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *