সে কি জানে ! Part- 04
-” ঠাসসসস,,আপনার লজ্জা করে না রেয়ান।একজন পুলিশ হয়ে এমন বাজে কাজ করতে।।আর আমাকে এভাবে উঠিয়ে আনার মানে কি?? ”
থাপ্পড় আর কথাটা বলে আমি নিজেই বোকা বনে গেলাম।।রেয়ান ভয়ার্তক ভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।।তার চোখ ২টো লাল হয়ে আছে,,,আর মুখ শক্ত করে রেখেছে সে।।
এমন ভয়ংকর রুপ আমি কখনও দেখি নি।।ভয়ে রিতিমতো হাত-পা কাঁপছে আমার।। থাপ্পড়টা মারা হয়তো উচিত হয়নি আমার।। কয়েকটা কথা শুনিয়ে দিলেই তো হতো।। থাপ্পড় মারার কি প্রয়োজন ছিল??এখন তো রেয়ান আমার কোনো কথা শুনবে না।।যদি সে আরও খারাপ কিছু করে।।যদি আমার ছেলেকে আর মাকে…..আল্লাহ জানে এ পুলিশ গুন্ডা এখন কি করবে!!!
কোনোমতে কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললাম……
—” দে,,,দেখুন রেয়ান!!এ,,ভাবে তাকিয়ে লা,,,ভ নেই,,,দোষ কিন্তু আপনারই।।আপনি এত বাজে কাজ কেন করে…… ”
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই রেয়ান আমার হাত ২টো দেওয়ালের সাথে খুব শক্ত করে চেপে ধরেলেন।। দাঁতে দাঁত চেপে বলেন…..
—” অনেক সাহস না তোমার।।আমাকে থাপ্পড় মেরেছো তুমি তাই না।। এটার ফল ভুগবা তুমি এখন।।”
কথাটা বলেই আমাকে এক টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো রেয়ান,,,তারপর খুব রুডলি আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বলল,,,
—” আমার কাছে আসা তোমার পছন্দ না,,, তাই না?? এখন থেকে আমার কাছেই থাকতে হবে তোমার।। ”
বলেই আমাকে টানতে টানতে পুলিশ স্টেসনের বাইরে নিয়ে যেতে থাকে।।পুলিশ স্টেসনের সব মানুষ তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।।খুব অসস্তি হচ্ছে আমার।।রেয়ান থেকে নিজের হাত ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছি।।প্রতিবারের মতো এবারও ফলাফল শূণ্য।।এবার না পেরে জোড়ে চিল্লিয়ে বলে উঠি….
—” রেয়ান ছাড়ুন আমার হাত।।আমার লাগছে।।আমি আমার ছেলে কাছে যাবো।।প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।। ”
কে শুনে কার কথা!! রেয়ান নিজের মতো টানতে টানতে আমাকে গাড়ির কাছে নিয়ে যায়।।এক ধাক্কায় গাড়ির ভেতরে ডুকিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে বসে।।।
গাড়িতে ডুকেই রেয়ান প্রথমে গাড়ি লক করে দেয়। এদিকে আমি গাড়ি খোলার ব্যর্থ চেষ্টা করেই যাচ্ছি,,,তা দেখে সে বলে উঠে,,,,
—” কোনো লাভ নেই মরুভূমি।।গাড়ি লক।।চুপচাপ বসে থাকো নাহলে…….”
—” নাহলে কি করবেন কি আপনি?? এত বাজে একটা মানুষ কেমন হতে পারে??আসলে কি জানেন আপনি মানুষই না,, আপনি একটা অমানুষ।।ভালোভাবে বলছি আমাকে আমার ছেলের কাছে যেতে দিন।।নাহলে কিন্তু আমি… ”
—” তুমি কি হ্যাঁ?? কিছু করতে পারবে না তুমি আমার।।তাছাড়া কি যেন বলছিলে,,, নিজের ছেলের কাছে যেতে চাও,,, তাই না??সেটা আমাকে থাপ্পড় মারার আর এগুলো বলার আগে ভাবা উচিত ছিল।।এখন যেতে দিচ্ছি না তোমায় কোথাও।।আমার কাছেই থাকবে তুমি।।”
—” প্লিজ এমন করবেন না রেয়ান।।আমাকে যেতে দিন আমার ছেলের কাছে।।ও মনে হয় এখন কান্না করছে আমার জন্য।।আমি আমার ছেলের কাছে যাবো রেয়ান।।প্লিজ যেতে…..”
আর কিছু বলতে পারলাম না আমি।।তার আগেই রেয়ান সেই আগেরবারের মতো আমার মুখে একটা সাদা কাপড় চেপে ধরলেন।।সাথে সাথে আমি অজ্ঞা হয়ে গেলাম।।
.
.
.
.
কিছুক্ষন আগে…….🍁🍁
চেয়ারে বসতেই রেয়ান আমার সামনে একটা ফোন রাখে।। একটা ভিডিও চলছে ফোনটায়।। যেখানে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আমার ছেলে আর মাকে কয়েকজন লোক বন্ধী করে রেখেছে।।ভিডিও-টা দেখে মুহুর্তেই মাথা গরম হয়ে যায় আমার।।রেয়ানের তাতে কোনো খেয়াল নেই,,,সে আমার কাছে আসতে আসতে বলে…..
—” আমাকে এখন,,,এ-ই মুহুর্তে বিয়ে করতে হবে তোমাকে।।নাহলে তোমার ছেলে আর মাকে….”
এটুকু শুনেই রাগটা যেন আর হিংস্রতায় পরিণত হয়।।বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ” ঠাসসসস ” করে থাপ্পড় মেরে দি রেয়ানকে।।তারপর কথাগুলো বলি……
.
.
জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে এক অন্ধকার রুমে আবিষ্কার করি।। যতটুকু অনুভব করছি,,,আমাকে একটা চেয়ারে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাখা হয়েছে।।প্রচুর ভয় লাগছে আমার।।সাথে অন্ধকার রুমটার কিছু বিকট আওয়াজ যেন আমাকে আরো ভয় পাওয়াতে সক্ষম!!
ভয়েরচটে কয়েকবার জোড়ে জোড়ে রেয়ানের নাম ধরে ডাকি।।কিন্তু কোনো সারা শব্দ নেই।।ভয়টা যেন আরও বেড়ে গেল আমার।।ছোট বেলা থেকেই অন্ধকার ভয় পাই আমি।।যার জন্য রিতিমতো কপালে ঘাম জমে গেছে আমার।।
হঠাৎ কারো কন্ঠে গানের আওয়াজ পাই……..🍁🍁
” সে কি জানে,, তোকে অভিমানে হাসাতে??
সে কি পারে,, বুকে ধরে তোকে ভুলাতে??
তোর প্রিয় গান কে গেয়ে শোনাবে?বল
আমার থেকে কে তোকে ভালো জানে!!
ইশারাতে তোকে খুঁজে বেড়াই স্বপ্নে তোর
নাম ডেকে হেসে ফেলি আনমনে।কে নিয়ে
যাবে তোকে রুপকথা দেশে?? বল আমার
থেকে কে তোকে ভালো জানে!!
.
.