তুমি আমার ভালোবাসা

শারীরিক সম্পর্ক- তুমি আমার ভালোবাসা !! Part- 07

ফাহাদ গাড়ি থেকে নেমে প্রিয়ার সামনে দাঁড়ালো। চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে পরিষ্কার করতে করতে প্রিয়াকে বললো,
“দুলাভাই চলেন বাড়ি যাই।”
ফাহাদের এমন কথায় আকাশ থেকে মনে হয় মাটিতে পড়লো প্রিয়া। এদিক-ওদিক তাকিয়ে বললো,
“কাকে বলতেছেন স্যার?”
“আপনাকেই বলতেছি দুলাভাই।”
“কি যা তা বলতেছেন? কে কার দুলাভাই?”
“কে আবার? আপনি আমার দুলাভাই।”
“আমি আপনার দুলাভাই হতে যাবো কেন আজব!”
ফাহাদ এবার ধমক দিয়ে বললো,
“তাহলে আমায় শালা বললেন কেন?”
প্রিয়া একটু চমকে গেলো। তোতলাতে তোতলাতে বললো,
” ক..ক…কখন বললাম?”
“কখন বললাম তাই না? আমি স্পষ্ট শুনেছি আপনি আমাকে শালা বলেছেন।”
“আপনি ভুল শুনেছেন স্যার।”
“কিহ্? কি বললেন আপনি? আমি ভুল শুনেছি? দ্যাট’স মিন আমি বয়রা? এই আয়মান চৌধুরী ফাহাদকে বয়রা বলা?”
প্রিয়া মিনমিন করে বললো,
“শুরু হয়েছে তার নাম নিয়ে মহাভারতকে শুদ্ধ করা।”
মুখে বললো,
“এমা! ছিঃ ছিঃ। আমি আপনাকে বয়রা বলবো? এত সাহস আছে নাকি আমার?”
ফাহাদ এবার সানগ্লাসটা চোখে পড়তে পড়তে বললো,
“হ্যাঁ এটা সবসময় মাথায় রাখবেন।”
“সেই তো! কোথায় হাতি আর কোথায় হরিণ!”
“ওয়েট ওয়েট। কে হাতি আর কে হরিণ?”
“কেন স্যার, আপনি হাতি আর আমি হরিণ।”
“স্টুপিড লেডি আমায় দেখে হাতি মনে হলো আপনার?”
প্রিয়া মনে মনে বললো,
“হাতি তো দেখতে তাও সুন্দর আছে। আপনাকে তো আমার গণ্ডার মনে হয়।”
ফাহাদ চেঁচিয়ে বললো,
“চুপ করে আছেন কেন?”
পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রিয়া কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো,
“আপনি সবসময় আমার সাথে এমন করেন কেন স্যার? আমার ভয় করে তো।”
“এই এই চুপ! রাস্তাঘাটে একদম কান্নাকাটি করবেন না।”
এরমধ্যে পৃথা দোকান থেকে চলে আসে। পৃথাকে দেখে ফাহাদ বললো,
“উনাকে নিয়ে বাড়িতে যান।”
“জ্বী স্যার।”
ফাহাদ চলে যাওয়ার পরই প্রিয়া বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিলো। পৃথা বললো,
“বসের সাথে কি কথা বলছিলি রে?”
“কথা বললাম কই? ঝগরা করছিলাম।”
“কি বলিস? স্যার ঝগরা করে?”
“কেনো রে? তোদের কি মনে হয় তোদের বস দুধে ধোয়া তুলসী পাতা? এক নাম্বারের একটা বজ্জাত। প্রথমদিন থেকেই জীবনটা তেজপাতা বানিয়ে খাচ্ছে।”
পৃথা দুষ্টুমি করে বললো,
“সবসময় বস তোর সাথেই কেন ঝগরা করে বলতো? ভালোবাসার পূর্বলক্ষণ নয়তো?”
প্রিয়ার মুখের বর্ণ পাল্টে যায় এবার। আনমনা হয়ে বলে,
“ভালোবাসা বলতে কোনো শব্দ নেই আমার জীবনে। লেট হয়ে যাচ্ছে, বাড়ি ফিরতে হবে।”
“হুম চল।”
প্রিয়া বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমের দরজা আটকিয়ে শুয়ে পড়ে। বুকের ভেতর অশান্তি হচ্ছে খুব। শোয়া থেকে উঠে বসে। এত কষ্ট কেন হচ্ছে। সারাদিনের ব্যস্তায় সব ভুলে থাকা গেলেও রাতে কেন সব স্মৃতি এভাবে দুমড়ে মুচরে দেয়। রাতটা এত স্বার্থপর কেন। কেন এসব অতীত পিছু ছাড়ছে না। ভালো থাকার অভিনয় করতে যে খুব কষ্ট হয় খুব।
আলমারি থেকে ডায়েরী বের করে প্রিয়া। ডায়েরী লেখার স্বভাব ছোট থেকেই। জীবনের বেশিরভাগ ঘটনাই প্রিয়া ডায়েরীতে লিপিবদ্ধ করে রাখে। মাঝখানে বেশিকিছুদিন ডায়েরী লিখেনি প্রিয়া। পুরনো ডায়েরীটা দেখে আপুর একটা কথা পড়ে যায়। আপু বলেছিল,
“যখন খুব বেশি মন খারাপ হবে তখন ডায়েরী খুলে নিজের লেখাগুলো পড়বি। হয়তো কষ্ট হবে কিন্তু এটা বুঝতে পারবি লাইফে কি কি তুই ডিজার্ভ করিস আর কতটা রিকোভার করতে পেরেছিস।”
ডায়েরীর প্রথম, মাঝখানে কয়েকটা পেজ পড়েই দম আটকে আসে প্রিয়ার। এই কষ্টগুলো এত অসহনীয় কেন। ডায়েরী না পড়ে এবার প্রিয়া লিখা শুরু করে। লিখতে লিখতে কখন যে টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল করেনি প্রিয়া।
ঘুম ভাঙ্গে সকালে মায়ের ডাকে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে নয়টা বাজে।
“হায় আল্লাহ্! এত বেলা হয়ে গিয়েছে। ঠিক সময়ে যদি আজ পৌঁছাতে না পারি তাহলে বস আজ আমায় পাউডার ছাড়াই ওয়াশিং মেশিনে ধুবে।”
প্রিয়া তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিলো। আলমারি থেকে কাপড় নিতে নিতে মাকে বললো,
“এত দেড়িতে কেউ ডাক দেয়?”
“মারবো এক চড়। সেই সাতটা থেকে ডাকছি। তুই তো উঠিসনি ঘুম থেকে।”
প্রিয়া আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি গোসল করতে চলে যায়। সময় নেই বিধায় না খেয়েই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। বাড়ির ভেতর থেকে বোঝাই যাচ্ছিলো না যে, বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। আবার বাড়িতে এসে ছাতা নিতে হলো। মা পিছন পিছন গিয়ে বললো,
“আজ তো হিজাবও পড়লিনা। খেলিও না। খাবারটা নিয়ে যা। ওখানে গিয়ে খাস। আর হিজাবও দিয়ে দিলাম। চুল শুকালে পড়ে নিস। তোর আবার হিজাব ছাড়া নাকি আনইজি লাগে।”
মা নামের এই মানুষটা কি করে যে এত খেয়াল রাখতে পারে! প্রিয়া শুধু একটা পার্স নিয়ে বের হয়েছিলো মা ভ্যানিটিব্যাগ এগিয়ে দিলো। ভ্যানিটিব্যাগের ভেতর পার্সটা ঢুকিয়ে প্রিয়া অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
.
.
সকালঃ ১০:২০
সবাই অফিসে এসে কাজ শুরু করে দিয়েছে। প্রিয়ার চেয়ারটাই ফাঁকা। ফাহাদ তার পিএ তোয়াকে ডেকে বললো,
“এই চেয়ার ফাঁকা কেন? কে আসেনি?”
“স্যার প্রিয়া আসেনি।”
“কেন?”
“তা তো জানিনা স্যার।”
“এই মেয়েটা অলটাইম লেট করে আসে। এটাকে অফিস আর এলাও করা যাবে নাকি এখন আমাকে সেটাই ভাবতে হবে। ও আসলে আমার রুমে পাঠিয়ে দিবে। কাজটাকে কি পেয়েছে ও? খামখেয়ালি? এসব খামখেয়ালিপনা আমার অফিসে চলবে না একদম। নিয়ম, টাইমিং সব যদি মানতে পারে তবেই কেবল এই অফিসে চাকরী করতে পারবে। নয়তো না।”
ফাহাদের রুমের সাথে ব্যালকোনির মত জায়গা আছে। যেটা কাঁচ দিয়ে আবৃত। ওখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিল আর কফি খাচ্ছিলো ফাহাদ। হঠাৎই বাহিরে চোখ আটকে যায় সাদা থ্রি-পিছ পড়া একটা মেয়ের দিকে। ছাতার কারণে মুখটা দেখা যাচ্ছে। তবে মেয়েটা অফিসের দিকেই এগিয়ে আসছে। কে এই মেয়ে! মেয়েটা কি আমার অফিসেরই। ফাহাদ দ্রুত নিচে নামলো। কিন্তু বিধিবাম! মেয়েটাকে আর পেলো না। ফাহাদ ভাবতে লাগলো,
“কে এই মেয়ে! কেন আমার এমন লাগলো।মেয়েটাকে দেখার জন্য আমি নিচে পর্যন্ত নেমে গেলাম!”
প্রিয়া অফিসে আসতেই পৃথা প্রিয়ার কাছে এসে বললো,
“আজ তো তোর খবর আছে রে প্রিয়া।”
“কেন?”
“আবার জিজ্ঞেস করছিস কেন? আজও তুই লেট করে আসছিস। বস আজ খুব ক্ষেপে আছে তোর ওপর। এবার বোধ হয় তোর চাকরী নিয়ে টানাটানি পড়েই গেলো।”
“বলিস কিরে! এখনো তো আমি অন্য কোথাও চাকরীর জন্য ট্রাই করিইনি। যদি চাকরীটা চলে যায়?”
ফাহাদের পিএ তোয়া এসে বলে,
“প্রিয়া স্যার তোমায় ডেকেছিলো।”
“জ্বী ম্যাম যাচ্ছি।”
“একটু টাইমিং মেনে চলতে পারো না?”
“স্যরি ম্যাম।”
“আমাকে স্যরি বলে কি হবে? দেখো স্যার কি করে। স্যার কিন্তু খুব রেগে আছে।”
“হুম।”
প্রিয়া ভয়ে ভয়ে স্যারের কক্ষের দিকে আগায়। হাত-পা ভয়ে সমানে কাঁপছে। প্রিয়া দরজায় নক করে বললো,
“মে আই কাম ইন স্যার?”
“ইয়েস কাম”
প্রিয়া ভেতরে ঢুকতেই ফাহাদ বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। প্রিয়া সাথে সাথে কানে ধরে বলে,
“স্যরি স্যরি স্যার। এবারের মত ক্ষমা করে দিন প্লিজ। আর কখনো লেট হবে না। প্রয়োজনে ইচ্ছোমত আপনি আমায় বকেন আজ আমি একটা টুঁশব্দও করবো না। যে শাস্তি ইচ্ছে হয় দেন কিন্তু চাকরীটা কেড়ে নিয়েন না প্লিজ প্লিজ প্লিজ।”
প্রিয়া আকুতি-মিনতি করেই যাচ্ছে কিন্তু ফাহাদের কানে এসব কোনো কথাই যাচ্ছে না। ফাহাদ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বৃষ্টিতে আধভেজা হয়ে এসেছে। দীঘল লম্বা চুলগুলো থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। চোখে-মুখেও বৃষ্টির পানির ফোঁটা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সামনের কাটা চুলগুলো কপালে গালে লেপ্টে আছে। ফাহাদ মনে মনে বলে ফেলে,
“এই তো আমার সেই বৃষ্টিভেজা সাদা পরী। যাকে দেখে আমার হৃদস্পন্দন এক সেকেন্ডের জন্য থেমে গিয়েছিলো। বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। এই সাদা পরীটাই প্রিয়া। এতদিন তো চোখে পড়েনি মেয়েটাকে। নিজের সৌন্দর্যগুলো কি এতদিন লুকিয়ে রাখতো মেয়েটা? এতটা অসস্তি কেন লাগছে আমার! আজ লেট করে আসার কারণেই কি ওকে আমার চোখে বিঁধলো। আচ্ছা এক পলকের দেখায়ও কি ভালোবাসা যায়? তবে কি এই মেয়েটা আমার ভালোবাসা!”
হাজারও কথা ভেবে যাচ্ছে ফাহাদ।
প্রিয়া তখনো কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ফাহাদের কোনো রেসপন্স না পেয়ে প্রিয়া কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো,
“এবারের মত কি ক্ষমা করা যায় না?”
ফাহাদের কল্পনার ঘোর কাটলো। প্রিয়ার মুখের দিকে তাকালো। বাচ্চাদের মত ঠোঁট বাঁকিয়ে কানে ধরে আছে। ঠোঁটের নিচে গাঢ় কালো একটা তিলও আছে। বাঁকানো ঠোঁটজোড়ায় হাত দিয়ে ধরে বলতে ইচ্ছে করছে,
“এভাবে কেঁদোনা গো তাহলে যে তোমার প্রেমের অতল সাগরে ডুবেই মরে যাবো যেটা তুমি জানতেও পারবে না।”
প্রিয়ার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। প্রিয়া মনে মনে ভেবেই নিলো, এবার আর চাকরী বাঁচানো যাবেনা। সব চেষ্টাই তো বৃথা গেলো। হুট করেই মাথায় একটা বু্দ্ধি এলো।
“কান ধরে উঠবস করলে কেমন হয়?”
যেই ভাবা সেই কাজ। প্রিয়া কান ধরে উঠবস করতে লাগলো। এবার ফাহাদ শব্দ করে হেসে দিলো। হাসতে হাসতেই বললো,
“এখনো বাচ্চা রয়ে গেছেন।”
প্রিয়া এবার একটু সস্তি পেয়েছে। একবার হেসেছে মানে চাকরীটা বাঁচানো যেতে পারে। তবে এত সহজে যে বস ছেড়ে দিবেনা এটাও জানে প্রিয়া। একটা ধোলাই তো দিবেই। অবশ্য সেটার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে প্রিয়া। ফাহাদ হাসি থামিয়ে বললো,
“কিছু দিয়ে মাথাটা মুছে নিন। নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।”
ফাহাদের কথা শুনে প্রিয়ার মাথাটা ভনভন করে ঘুরে উঠলো। এটা স্বপ্ন নাকি সত্যি! চোখ দুইটা বড় বড় করে তাকিয়ে আছে প্রিয়া। ফাহাদ মুচকি হেসে বললো,
“এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছেন কেন?”
“আপনি কি ফাহাদ স্যার নাকি ভূত?”
“আমি ফাহাদের ভূত। এবার আপনার ঘাড় মটকাবো।”
“আমি কি আপনাকে একটু টাচ করতে পারি স্যার?”
ফাহাদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
“কেন?”
“দেখতাম, আপনি সত্যিই মানুষ নাকি ভূত।”
ফাহাদ এবারও শব্দ করে জোরে জোরে হাসলো। প্রিয়া নিজেই নিজের গায়ে চিমটি দিলো।
” ও বাবাগো।”
ফাহাদ হাসি থামিয়ে বললো,
“কি হলো?”
“আমি তো বাস্তবেই আছি। তার মানে আপনি যা বললেন সত্যি?”
“হ্যাঁ। এত অবাক হওয়ার কি আছে?”
“কিন্তু..স্যার….”
“কিন্তু টিন্তু সব পড়ে হবে। এখন যান মাথাটা মুছে নিন।”
প্রিয়া বেড়িয়ে ভাবতে লাগলো,
“কেমনে সম্ভব এটা!”
প্রিয়া বের হয়ে আসার পর পৃথা এসে বললো,
“দোস্ত কি হলো রে? বস কি খুব বকেছে? চাকরীটা কি আছে?”
প্রিয়া চুপ করে আছে।
“কিরে বল না? স্যার কি বললো?”
“বললো, কিছু দিয়ে মাথাটা মুছে নিতে। নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।”
“এ্যা? এটা কিভাবে সম্ভব? স্যার যেই হুংকার ছেড়েছিল আমরা তো ভেবেছিলাম আজ তুই শেষ! তুই কি মজা করছিস প্রিয়ু?
“আরে না রে। মজা কেন করবো? সত্যি বলছি। স্যার এটাই বলেছে।”
“আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না রে প্রিয়ু।”
“আমারও প্রথমে বিশ্বাস হয়নিরে।”
.
প্রতিটা দিন হন্যে হয়ে খুঁজেছে প্রিয়াকে মৃন্ময়। যে নিজ থেকে হারিয়ে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া যে বোকামি এটা মৃন্ময়ের অবাধ্য মন বুঝতেই চাচ্ছে না। আজ অনেকদিন পর ল্যাপটপ ওপেন করে মৃন্ময়। মৃন্ময়ের হার্টবিট বেড়ে যায়। ল্যাপটপের ওয়ালপেপারে যে প্রিয়ার ছবি ছিল এটা তো ভুলেই গিয়েছিল মৃন্ময়। প্রিয়ার হাসিমাখা মুখটা দেখে মৃন্ময়ের প্রতিটা হৃদস্পন্দন জানান দেয়, ভালোবাসি প্রিয়া। তবে কি নতুন করে ভালোবেসে ফেললো মৃন্ময়। ল্যাপটপে আরো কিছু ছবি পেলো মৃন্ময়। ছবিগুলো ফোনে নিয়ে স্টুডিও এর দোকানে গেলো। পাঁচটার মত ছবি পেয়েছে। সবগুলো ছবি বের করে ফ্রেমে বাঁধিয়ে এনেছে মৃন্ময়। মৃন্ময়ের বেডরুমজুরে এখন শুধু প্রিয়ার ছবি। প্রিয়ার একটা ছবিতে চুমু খেয়ে বললো,
“ভালোবাসি।”
মৃন্ময়ের মা ঘরে ঢুকে বললো,
“এমন পাগলামির মানে কি মৃন্ময়?”
“কোনটা পাগলামি মা? এটা তোমার চোখে পাগলামি হতে পারে কিন্তু আমার কাছে আমার ভালোবাসা।”
“হারিয়ে বুঝে লাভ কি?”
“সমস্যা নেই তো। খুঁজে বের করে নিবো।”
“যদি অন্য কারো হয়ে যায়?”
“এত অল্প সময়ে ডিসিশন নেওয়ার মত মেয়ে প্রিয়া না। একবার শুধু দেখা পাই, প্রয়োজনে পা ধরে ফিরিয়ে আনবো।”
পেছন থেকে মৃন্ময়ের বন্ধু সাদিক বললো,
“সেদিনও তুই প্রিয়ার পা ধরেই মাফ চেয়েছিলি। সেদিন মাফ চেয়েছিলি ছেড়ে যাওয়ার জন্য আর এখন চাইবি ভালোবাসার জন্য?”
“দেখ সাদিক,ভুল তো মানুষই করে তাই না?”
“না জানা ভুলগুলো ক্ষমা করা যায় কিন্তু জেনেশুনে ভুলগুলো ক্ষমা করা যায় না। সেদিন কিন্তু একবারের জন্য তুই ওর কথা ভাবিসনি।”
“আমি জানি উত্তর দেওয়ার মত কিছুই নেই আমার কাছে। এখন আমি শুধু জানি, আমি ভালোবাসি প্রিয়াকে। আর ওকে আমি খুঁজে বের করবোই।”
রাতঃ১০:৫০ মিনিট
ফাহাদ মাকে ফোন দেয়। এই রুম থেকে ঐ রুমে ফোন দেওয়ার কি আছে ভেবে পায় না ফাহাদের মা। ফোন রিসিভড করার পর ফাহাদ বললো,
“তাড়াতাড়ি একটু আমার রুমে আসো তো।”
ফাহাদের মা ভয় পেয়ে গেলো। না জানি, কি হলো। ফাহাদের রুমে যাওয়ার পর ফাহাদ মায়ের হাত ধরে টেনে বিছানায় বসে। মায়ের কোলে আয়েশ করে মাথা রেখে ফাহাদ বললো,
“ও মা ভালোবাসা মানে কি গো?”
“হঠাৎ এই প্রশ্ন? হলো কি তোর আজ?”
“তুমি না বড্ড প্রশ্ন করো মা। আচ্ছা কাউকে এক পলক দেখেই কি ভালোবাসা যায়?”
“উদ্দেশ্য সৎ হলে এক সেকেন্ডই যথেষ্ট। তুই কি কারো প্রেমে পড়েছিস ফাহাদ?”
“প্রেমে পড়েছি কি না জানিনা মা, তবে ভালোবেসে ফেলেছি।”
“কি বলছিস? সত্যি? কে সেই মেয়ে? ছবি আছে? দেখা। মেয়েটা দেখতে কেমন? তোকে ভালোবাসে তো?”
“উফফ! মা এত অস্থির হচ্ছো কেন? আর একসাথে এত্তগুলো প্রশ্ন? মেয়েটা তো জানেই না যে, আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।”
“তাহলে জানিয়ে দে।”
“হুম জানাবো। আরেকটু সময় যাক, অবশ্যই জানাবো।”
“সময় নিতে গিয়ে আবার দেড়ি করে ফেলিস না কিন্তু।”
“না মা, এই ভালোবাসাকে হারাতে দেওয়া যাবে না।”…
চলবে…