মিঃ নিরামিষ !! Part- 40 (শেষ পার্ট)
নিবিড় strongly তুলির খেয়াল রাখছে,,অনেক দোয়ার পর তুলি মা হতে চলেছে এখন যদি কোনো সমস্যা হয় এই ভেবে নিবিড় তুলির যত্ন করছে,,শুধু নিবিড়ই না তার সাথে মা বাবা নিরব বুয়া সবাই খেয়াল রাখছে তুলির,,
আর তুলিও খুব ভয়ে ভয়ে প্রতিটা দিন কাটাচ্ছে কে জানি যদি কোনো বিপদ হয়ে যায়,,
৭টা মাস কেটে গেসে দেখতে দেখতে মনে হয় কতটা বছর হয়ে গেছে,দিন যেন কাটতেই চায় না,,
তুলি অপেক্ষার সিড়ি গুনছে,কবে কোল আলো করে আসবে আমার সন্তান,,
নিবিড়-এত চিন্তা কেন করো,,আমরা আছি তো,,আর তুমি তো আমাদের চাইতেও সাবধানে থাকো তাহলে?
তুলি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,কোনো একটা ভয় ওকে তাড়া করে বেড়ায়,,
সেদিন নিবিড় তুলির কাছ থেকে উঠে ভার্সিটিতে গিয়েছিল,,,
তুলি মাথায় তেল দিয়ে তেলের বোতলের ছিপি আটকাতে ভুলে গিয়েছিল,,
বোতলটা হাতে লেগে কখন যে নিচে পড়ে গেসে তার খবর ও নেই তুলির,,
ঘুমিয়ে পড়লো তুলি ,,
ঘুম থেকে উঠে বিছানা থেকে নামতেই পা পিছলে পড়ে গেলো তুলি,,
যখন চোখ খুললো আশেপাশে দেখলো মা নিবিড় আর নিরব দাঁড়িয়ে
তুলি পেটে হাত দিয়ে এক চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো
নিবিড় তুলির হাত ধরে বললো কিছু হয় নি,ইটস ওকে
তুলি শান্ত হয়ে পেটের দিকে তাকালো,,অনুভব করতে লাগলো বাচ্চাকে,যেন একটা খারাপ স্বপ্ন দেখলো
নিবিড়-সাবধান হতে বললাম আর আজকেই অসাবধান হয়ে গেলা
তুলি পেটে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে
নিবিড় রুম থেকে চলে গেলো
মা তুলির হাত ধরে পাশে বসে ওর মাথা মুছে দিলো
আল্লাহ রক্ষা করেছে আজকে,হাজার হাজার শুকরিয়া,,কি হতো তা না হলে,,
তুলির কিছুই মনে নেই,পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল
বাসায় আসার পর থেকে নিবিড় গম্ভীর হয়ে আছে,তুলির সাথে কথা বলতেসে না,তুলি কয়েকটা কথা বললো তার উত্তরও দিলো না নিবিড়
তুলি কিছু না খেয়েই মার কাছে গিয়ে শুয়ে পড়লো
মা জিজ্ঞেস করলো খেয়েছে কিনা তুলি বললো হুম
রাত ২টা বাজে
মায়ের রুমের দরজাটা আস্তে করে খুলে নিবিড় তুলিকে তুলে নিয়ে চলে আসলো তাদের রুমে
তুলি-কি হয়েছে?
নিবিড়-চুপ
তুলিকে নামিয়ে প্লেট এনে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে লাগলো নিবিড়,তুলির দিকে তাকাচ্ছে না
তুলি খাচ্ছে আর চোখ দিয়ে তার পানি বেয়ে বেয়ে পড়তেসে
নিবিড় প্লেট রেখে হাত দিয়ে তুলির চোখ মুছে দিলো,,
তুলি আরও জোরে কেঁদে নিবিড়কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো
নিবিড় আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না,,সেও তুলিকে ধরলো শক্ত করে,,
তুলি-সত্যি আমি বুঝিনি কি করে এমনটা হলো,,
নিবিড়-ঠিক আছে,
আল্ট্রা করে জানতে পারলো তাদের ছেলে বাবু হতে চলেছে,,,
জামা কাপড় জিনিস পত্র সব রেডি,,
নিবিড় ভার্সিটি যায় আর বারবার কল দিয়ে তুলির খবর নেয়,,
তুলি এ কদিন ওর মায়ের বাসায় আছে,,মা ওর পুরা খেয়াল রাখছে,,
নিবিড় ভার্সিটি থেকে সোজা তুলিদের বাসায় যায়,, মাঝে মাঝে নিজের বাসায়ও আসে,,
একদিন♠
ভোরে নিবিড় ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে নিয়ে চায়ের জন্য বের হতে যাবে তুলির আওয়াজে তুলির দিকে তাকালো,পেটে হাত দিয়ে নড়াচড়া করতেছে,,
নিবিড়-তুলি???খারাপ লাগতেসে???কি হয়সে বলো??
তুলি- হালকা পেট ব্যাথা করে
নিবিড় -Doctorকে কল করবো??বেশি ব্যাথা করে??
তুলি-না ঠিক আছে,টেনসনে এমন হচ্ছে,,
নিবিড় তুলির জন্য ও চা বানিয়ে আনলো,,
নিবিড়-আজ আমি ভার্সিটিতে যাব না,,
তুলি-কিছু হবে না,হলে ফোন দিব আপনাকে,শুধু শুধু ছুটি নিয়েন না,,
নিবিড় ৮টার দিকে রেডি হয়ে বের হলো,,তুলিকে বললো দরকার ছাড়া যেন বিছানা থেকেও না নামে,,
সারাদিন গিয়ে বিকাল হয়ে গেসে,নিবিড় সারাদিনে ১০০বার কল করেছে তুলিকে,,
তুলি-শুধু শুধু টেনসন করতেছিলেন😒
নিবিড়-সাবধানতার কূল নাই বুঝছো তুলি,,
মা-নিবিড় বিকাল হয়ে গেছে,দুপুরে খাও নাই এখনও,,তাড়াতাড়ি fresh হয়ে খেতে আসো
নিবিড়-হুমম আসতেছি
নিবিড় fresh হয়ে খেতে চলে গেলো,,
তুলির পেটে খুব জোরে ব্যাথা শুরু হলো,মনে হচ্ছে কথা বলার শক্তি টুকু নাই,,
হাতের সাথে লেগে গ্লাস পড়ে গেলো,,তুলির রুম থেকে আওয়াজ আসায় নিবিড় ভাত মুখে না দিয়েই দৌড় দিলো,,
তুলি চোখ বন্ধ করে কাতরাচ্ছে
নিবিড় এসে তুলিকে ধরলো,,
নিবিড়-বেশি কষ্ট হচ্ছে,মা মা তাড়াতাড়ি আসো
মা দৌড়ে আসলো,,
নিমিষেই ওকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো,,
নিবিড় মা বাবা আর নিরবকে ফোন দিয়ে আসতে বললো,,
সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনছে,,
তুলির স্বাস্থ্য আর বাকি রিপোর্ট দেখে doctor সোজা মানা করে দিলো সিজার করানো যাবে না,,নিবিড় টেনসনে পড়ে গেলো
নরমালে তো আরও কষ্ট
তুলির কষ্ট দেখে নিবিড়ের বুক ফেটে যাচ্ছে,রাত ২:৩৫ বাজে এখনও তুলি চিৎকার দিচ্ছে,এত কষ্ট সয্য করতে গিয়ে ৩বার জ্ঞান হারিয়েছে তুলি,,জ্ঞান ফিরলেই ব্যাথায় চিৎকার শুরু করে তুলি
নিবিড়-প্লিস কিছু একটা করুন,,বিকাল থেকে কষ্ট পাচ্ছে,আমি আর ওর কষ্ট দেখতে পারতেসি না,প্লিস হাত জোর করতেসি,বাচ্চা লাগবে না আমার,ওরে লাগবে,ওরে বাঁচান প্লিস
তুলি আবারও জ্ঞান হারালো
ওর পাশে নার্স ২জন ছিল,ওরা বাইরে গেলো ডাক্তার কে বলতে
১মিনিট পর তুলির জ্ঞান আবার আসলো,,পেটের ব্যাথা যেন আরও ঘাড়ো হলো,তুলির চোখে ভাসলো ক্লাস ১০এ থাকতে একটা ভিডিও দেখেছিল তুলি,,নরমালে বাচ্চা হওয়ার,,
তুলির চোখের সামনে ভিডিওটা যেন খুব স্পষ্ট হয়ে গেলো
তুলি জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া শুরু করলো,,মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে লাগলো আর দুহাত পেটে নিয়ে চাপতে লাগলো,সারাদিন এত ব্যাথা পেয়েছে এখন এটা স্বাভাবিক লাগতেসে,,কারন ওর মন হলো যা করতে হবে নিজেকেই করতে হবে,,নাহলে ওর নয়ত বাচ্চার ক্ষতি হয়ে যাবে
নার্সরা ডাক্তারের সাথে কথা বলতেসিলো,নিবিড় রিকুয়েস্ট করতেসিলো ওদের কিছু করার জন্য হঠাৎ কিছুক্ষন পর বাচ্চার কান্নার শব্দ ভেসে আসলো কেবিন থেকে,নিবিড় ও বাকি সবাই রোবটের মত তাকিয়ে আছে
নিবিড় কেবিনে দৌড়ে গেলো
তুলি বসে বাচ্চা হাতে নিয়ে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে আর কাঁদতেসে,কারন ওর নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না সে নিজের বাচ্চাকে নিজেই আনতে পেরেছে,,ফুটফুটে একটা ছেলের জন্ম দিয়েছে তুলি
নিবিড় হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে কাছে এসে বাচ্চাকে কোলে তুলে নিলো,,
তুলির দিকে তাকিয়ে আরেক হাত দিয়ে তুলিকে জড়িয়ে ধরলো,,
নার্সরা হাতে তালি দিতেছে,,মা বাবা সবাই আসলো,,কারোর বিশ্বাস হচ্ছে না তুলি একা কি করে এটা পারলো,,
পরেরদিন♥
তুলি ঘুমিয়ে আছে,নিবিড় বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটতেসে সারা হসপিটাল
মা-তুলির মত মনের দিক দিয়ে শক্ত মেয়ে খুব কম দেখেছি আমি
তুলির মা-জানেন ও জীবনেও ব্যাথা পেলে আমাদের বলতো না,,যতক্ষন না আমরা ওর চোট দেখতাম
দুদিন পর তুলিকে নিয়ে নিবিড় বাসায় ফিরলো,,পুরা বাসা সাজানো হয়েছে,,দরজায় লিখা
ওয়েলকাম টু our house
♥Mr.Tarif♥
তুমুর নামের সাথে মিল রেখে তুলি এই নাম রেখেছে,,আর ওর নামের সাথেও মিলে,,
নিবিড় মুগ্ধ চোখে তারিফের দিকে তাকিয়ে আছে,,
তুলি-আমার নিরামিষ বর আমাকে একটা বাচ্চা গিফট করেছে,,আসলে চাইলেই মন দিয়ে কঠিন পাথরকে নরম করে তোলা যায়,,
আর যদি সেই কঠিন পাথরকে নরম করা যায় তাহলে সে শুধু তোমারই,কারন যে মনকে তুমি আয়ত্তে আনতে পেরেছো এত সাধনা করে এটা সবাই পারবে না,,
ভালো থাকুন সবাই,,সুস্থ থাকুন,,
Story was good but some kind of artificial love story not natural
☺️☺️☺️