তোমাকে খোঁজে !! Part- 10
দু’দিন পর নেহাল একটু সুস্থ হলে ছুটে আদিবার বাড়িতে চলে আসে।আদিবা সায়ানের সাথে বিয়ের জন্য শপিং করতে যাচ্ছিল। এমন সময়ে নেহালের কন্ঠস্বর শুনে কেঁপে ওঠে।নেহাল বাইরে থেকে চিৎকার করে আদিবাকে ডাকে।আদিবাকে আসতে না দেখে নেহাল সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায় আদিবার রুমে। তারপর আদিবার পাশে সায়ানকে দেখ নেহাল একটু অবাক হয়।তবুও মনে কোনো প্রশ্ন জাগে না।নেহাল ছুটে এসে আদিবাকে জোড়িয়ে ধরে।আর বলে, কেন চলে আসলে তুমি? আমি তো কস্টে যন্ত্রণায় তোমার সাথে অমনটা করেছি।তাই বলে চলে আসবে আমাকে ছেড়ে? আমার ভালোবাসাটা তুমি কবে বুঝবে আদিবা?
সায়ান টেনে নেহালকে আদিবার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। তারপর নেহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর বলে, ওহহ তাহলে তুমিই সেই নেহাল যে আদিবাকে বন্দী করে রেখেছিলে? সমাজের চোখে তুমি ওকে অনেক নিচে নামিয়েছো! অনেক কস্ট দিয়েছো ওকে তুমি।কিন্তু আর না।বলেই নেহালকে মারতে যায় সায়ান আর নেহাল সায়ানের হাতটা ধরে বসে।আর বলে, সায়ান তুমি এখানে কি করছো?
নেহালের এমন প্রশ্নে আদিবা মনে মনে ভাবে, নেহাল কি তাহলে সায়ানকে চেনে?
আমি জানি গত কাল তোমার সাথে আমার বোনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। আমার অসুস্থতার কারণে সম্ভব হয় নি।তোমার বাবা-মা ফোন করলে তুলছে না কেন সায়ান?
নেহালের এমন কথা শুনে আদিবা এবার বুঝতে পারে।তাহলে মিতির বিয়ে সায়ানের সাথেই ঠিক হয়েছিলো।
সায়ান কিছু না বলেই নেহালের কলারটা টেনে ধরে আর বলে, তোমার বোনকে আমি বিয়ে করতে পারবো না।আমি আদিবাকে ভালোবাসি।আর তুমি আমার সেই ভালোবাসার গায়ে হাত তুলেছো।মেরে ফেলতে চেয়েছো ওকে।
এসব তুমি কি বলছো সায়ান?
ঠিকই বলছি।আমি শুধুই বাবা-মায়ের কথা ভেবে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।কিন্তু যার ভাই এমন গুন্ডা,মাস্তান তাকে বিয়ে করা কোনো প্রশ্নেই আসে না।তাছাড়াও আমি আদিবাকে ভালোবাসি।
এটা তুমি বলতে পারো না সায়ান।আমার বোনটা খুব আশা নিয়ে বসে আছে তোমার জন্য।আমার বোন বলেছে ওর তোমাকে পছন্দ হয়েছে।আর আমি আজ পর্যন্ত কখনো আমার বোনকে ওর পছন্দের জিনিস না দেওয়া রাখি নি।
বিয়েটা কি ছেলে খেলা নাকি নেহাল? যাকে ইচ্ছা জোড় করে বিয়ের আসর থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাবা।তাকে বন্দী করে ব্লাকমেইল করবা? এমন কি তাকে মেরেও ফেলতে চায়বে।আচ্ছা, তোমার কি মনে হয়, আমাকে জোড় করলে তোমার বোনকে আমি বিয়ে করবো?
অবশ্যই করবে।কারণ তুমি তোমার বাবা-মায়ের সাথে গিয়ে কথা দিয়ে এসেছো।তোমার মা নিজে বলেছে আমার বোনকেই তার পুত্রবধূ করবে।
হ্যাঁ, বলেছিলো কারণ তখন আমি ভেবেছিলাম আদিবা অন্য কাউকে ভালোবাসে। তার সাথে সুখে আছে।কিন্তু না আদিবা তো তোমার কবলে আটকে ছিলো।এখন যখন আদিবা চলেই এসেছে, আমি চায় না আদিবাকে এই অবস্থায় ফেলে রেখে অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে।
সায়ানের কথাটা শুনে নেহাল রেগে যায়। সায়ানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে কলারটা চেপে ধরে নেহাল।আর জোড় গলায় বলে, আদিবা শুধু আমার।সায়ানও নেহালের কলারটা চেপে ধরে।তারপর দুজনের মধ্যে বিশাল দস্তাদস্তি হয়।
কিছুক্ষণ পর,, হসপিটালে মিতি নেহালকে না পেয়ে বুঝতে পারে নিশ্চয় আদিবার বাড়িতে এসেছে।তাই মিতি হসপিটাল থেকে চিন্তা করতে করতে আদিবার বাড়িতে চলে আসে।এদিকে আদিবার বাবা-মাও আজ বাড়িতে নেয়। মিতি নিচে কাউকে স্বাভাবিক কন্ঠস্বরে ডেকে না পেয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসে।এসে দেখে নেহাল আর সায়ানের মধ্যে দস্তাদস্তি হচ্ছে। আদিবা পাশে বসে দর্শকের মতোন দেখছে।কিছুই করছে না।মিতি গিয়ে দুজনকে ছাড়ানোর চেস্টা করে কিন্তু পারে না।তারপর ফল কাটা ছুড়িটা উঠিয়ে আদিবার গলার কাছে ধরে।আর বলে, তোমরা থামো।নইলে যাকে নিয়ে তোমাদের মধ্যে এতো যুদ্ধ তাকেই আমি মেরে ফেলবো।মিতির কথাটা শুনে তাই গিয়ে নেহাল আর সায়ান শান্ত হয়।
মিতি আদিবাকে ছেড়ে দেয়। আর বলে, শান্ত হও তোমরা।তারপর কাঁদতে কাঁদতে নেহালের সামনে এসে দাড়ায়। আর নেহালের হাতটা নিজের মাথায় চেপে রেখে বলে, আমার দিব্যি ভাই কখনো তুমি ভাবির কাছে আসবে না।বলো ভাই আর কখনো আসবে না।
নেহাল চুপ করে আছে।কোনো উত্তর দেয় না।মিতি আবার বলে, তুমি যদি আর কখনো ভাবিকে ভালোবাসার অধিকার নিয়ে এসে ডেকেছো তো আমার মরা মুখ দেখবে।
এসব কি বলছিস বোন?
ঠিকই বলছি।যদি আমার কথা না রাখো তাহলে সত্যি আমার মরা মুখ দেখবে।
মিতি ঘুরে আদিবার সামনে এসে দাড়ায়। তারপর আদিবাকে বলে, আমার ভাই আর কখনো তোমার কাছে আসবে না।ভালো থেকো ভাবি।
কথাটা বলে, নেহালের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। আর যাওয়ার সময় সায়ানের বাবা-মা মিতিকে পছন্দ করে যেই আংটিটা পরিয়ে দিয়েছিলো সেটা খুলে সায়ানের হাতের মুঠোয় ধরিয়ে দেয়।আর বলে, সুখে থাকবেন আপনারা।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
চলবে,,,,,