তারে আমি চোখে দেখিনি

তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 14

আবিরের সাথে কথা বলে মাহির আবিরকে সবকিছু খুলে বলে।আবিরও মাহিরকে অনেক কিছু বোঝায়।কথা শেষ হলে মাহির ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে রাতের অনেকটা সময় কেটে গেছে।এখন না ঘুমালে সকালে আর হসপিটালে পৌঁছানো হবে না।তাই রুমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মাহির পিছনে ঘুরে দাড়াতেই দেখে সামনে মায়া দাড়ানো।কিছু জানার কৌতুহল নিয়ে মায়া তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে।মাহির মনে মনে ভাবে মায়া কি সবকিছু শুনে ফেললো।নাহ এভাবে চুপ না থেকে জিজ্ঞেসা করা যাক।

মাহিরঃ একি মায়া তুমি ঘুমাও নি?

মায়া নিশ্চুপ হয়ে আছে কোনো প্রতি উত্তর দেয় না মাহিরের প্রশ্নে।

মাহিরঃ কি হলো বলো বিছানা ছেড়ে উঠে এসেছো কেন?

মায়া ঘুম ঘুম চোখ দুটো ডলতে ডলতে বলে।
মায়াঃ উফফ্ আপনি কি বলুন তো? রাতে ওয়াশরুমেও যেতে কি আপনার অনুমতি নেওয়া লাগবে?

মাহির একটা মুচকি হাসি দিয়ে মায়ার মুখের কাছে নিজের মুখটা এগিয়ে এনে বলে।

মাহিরঃ আবার শুরু করে দিয়েছো তো?

মায়া মাহিরের শার্টের কলারটা টেনে ধরে।

মায়াঃ কি শুরু করলাম আমি হুমম?

মাহির নিজের কলার থেকে মায়ার হাতটা ছাড়িয়ে নেয়।

মাহিরঃ কথায় কথায় কলার কেন চেপে ধরো?

মায়াঃ বেশ করেছি ধরেছি। আপনার জন্য আমি আমার বাবাকে দেখতে পারি নি। আপনাকে তো শাস্তি দেওয়া উচিৎ।

মাহিরঃ কি শাস্তি দেবে?

মায়াঃ আজকের রাতটার জন্য আপনার ফোনটা আমায় দেবেন।

মাহিরঃ আমার ফোন নিয়ে তুমি কি করবা?

মায়াঃ গেম খেলবো দেন।
বলেই ফোনটা মাহিরের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ওয়াশরুমের মধ্যে চলে যায় মায়া।

মায়া মাহিরের ফোনে বলা শেষের কিছুটা কথা শুনে নিয়েছে।যেই কথাগুলো অনুভবকে নিয়ে বলছিলো মাহির।মায়ার সন্দেহ মাহির অনুভবের সাথেই কথা বলছিলো।এজন্য মাহিরের ফোনের কল লিস্টের শেষ নাম্বারটা মুখস্ত করে নেয়।

আর ওদিকে মাহির ভাবে আবিরের বলা কথাগুলো।আবির মাহিরকে বুঝিয়েছে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটাই পবিত্র।আর ভালোবাসা একদিনে আসে না।আস্তে আস্তে একই সাদের নিচে দুজন মানুষ থাকলে প্রকৃতির নিয়মে সেটা চলে আসে।তাছাড়াও স্নিগ্ধার প্রতি মাহিরের যেই আবেগটা জমেছে সেটা শুধুই ভালোলাগা আর পছন্দ ছাড়া কিছুই না।কিন্তু মায়ার সাথে থেকে মায়ার পাগলামোগুলো আর বাস্তবতা দুটোকে আপন করতে পেরেছে মাহির।যার জন্য স্নিগ্ধা আর মায়ার মধ্যে মায়াকে বেছে নেওয়াই উত্তম বলে বিবেচিত হয়।

মাহিরের ফোন থেকে আবিরের নাম্বারটা মুখস্ত করে মায়া সেই খুশি। গুন গুন করে গানের সুর তুলতে তুলতে ওয়াশরুম থেকে বের হয় মায়া।তারপর মাহিরের মাথার কাছে ফোনটা রেখে ঘুমিয়ে যায়।ঘুম থেকে উঠেই মায়া আড়মোড়া দিতে গিয়ে নিজেকে মাহিরের খুব কাছে আবিষ্কার করে।নরতে চরতেও পারছে না মায়া।মাহির এমনভাবে মায়াকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে রেখেছে যে মায়ার দমই বন্ধ হয়ে আসছে।মায়া হাত পা নারাতে না পেরে মুখের কাছে মাহিরের কান পেয়ে জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দেয়। আর মাহির আহ্ করে এক চিৎকার দিয়ে উঠে বসে।

মাহিরঃ এটা কি হলো?
কান ডলতে ডলতে বলে মাহির।

মায়াঃ তার আগে আপনি বলুন মাঝের বালিশটা সরিয়ে আমার এতো কাছে এসেছেন কেন?

মাহিরঃ তাই বলে কামড় দিবে?

মায়াঃ হ্যাঁ দিবো।আজ থেকে আপনি সোফায় ঘুমাবেন নয়তো আমি।একই তো বিয়ে করে চরিত্রে একটা দাগ লাগিয়ে দিয়েছেন।তার উপর আপনি আমাকে ছুঁয়েছেন এটা জানলে কি অনুভব আমাকে মেনে নিবে? কতো মেয়ে পাগল অনুভবের জন্য যানের আপনি?

মাহিরঃ তাই বুঝি? সেই কতো মেয়ের মধ্যে তোমাকেই যে অনুভব বেছে নেবে তার গ্যারান্টি কি?

মায়াঃ নিতেই হবে।যদি না নেয় তাহলে ধরে বেধে আমার করে নেবো।কতো ভালোবাসি অনুভবকে আমি জানেন আপনি? এতোটা ভালো কি ওই মেয়েগুলো বাসতে পারবে ওকে?

মাহিরঃ তা কতোটা ভালোবাসো?

মায়াঃ ততোটা,, যতোটা ভালো একই সাদের নিচে থেকেও কোনো দম্পত্তি একে অপরকে বাসতে পারে না।
,
,
,
চলবে,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *