ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 2 !! Part- 14

নীড় মেরিনকে বুকের সাথে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : কি হয়েছে কি? বলো তো…
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরে করে কাদতে লাগলো। থামার নামই নিচ্ছেনা।
নীড় : কি হয়েছে কি বলো?
মেরিন কেদেই যাচ্ছে।
মেরিন : আপনি কোথাও যাবেন না আমাকে ছেরে please ….
নীড় : ঠিকাছে। যাবোনা। কিন্তু কি হয়েছে কি বলো তো…
মেরিন : না আপনি কোথাও যাবেন না।
নীড় মেরিনকে কোলে করে ওদের রুমে নিয়ে গেলো।

কান্না করতে করতে মেরিনের হিচকি উঠে গেছে।
নীড় : দেখি একটু পানি খেয়ে নাও।
মেরিন: না আমি আপনাকে ছারবো না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাচ্ছিনা॥ আর তোমাকেও ছারতে বলছিনা… but পানি তো খাও।
মেরিন : উহু….
নীড় : আচ্ছা তুমি শুয়ে পরো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন : না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাবোনা….
এদিকে বৃষ্টি আরো বেরে গেলো। ভেতরে পানি ছিটে আসতে লাগলো।
নীড় : একটু নামো… আমি বারান্দার দরজা জানালা লাগিয়ে আসি…
মেরিন : উহু… আপনি নীরার কাছে চলে যাবেন ।
নীড় : না আমি কোথাও যাবোনা।
মেরিন : নীরার কাছে যাবেন…
নীড় : এবার কিন্তু রাগ ওঠাচ্ছো।
বললাম তো আমি কোথাও যাবোনা। নামো।
মেরিন : না আপনি নীরার কাছে যাবেন… নীরা আপনাকে কিছু করে ফেলবে…
নীড়: কি শুরু করেছো বলো তো রাত দুপুরে? ইচ্ছা করে এমন করতেছো তাইনা?
মেরিন : …
নীড় : নামো জানালা লাগাতে দাও।
মেরিন কিছু না বলে নিজের বুকে পাথর কোল রেখে নেমে গেলো। এরপর রুম থেকে বের হতে নিলো। দেখে নীড়ের রাগ উঠে গেলো। দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
.
নীড় : এতো জেদ থাকা ভালোনা। মেরিন নীড়ের দিকে তাকালোও না।
নীড় : আমার বউটা বুঝি রাগ করলো?
মেরিন:…
নীড় মেরিনকে বসিয়ে মেরিনের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
নীড় : কোথাও যাবোনা তোমাকে ছেরে। আর না তোমাকে যেতে দিবোনা।
মেরিন কান্নাভরা চোখে নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিলো। মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কোথাও যাবেন না বলুন….
নীড় :যাবোনা… তাহলে তোমাতে হারাতে দাও…

৩:৪০টা….
মেরিন নিশ্চিন্তে নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তখন নীড়ের ফোন বাজলো। নীড়ের দেখার সময় নেই। বারবার বাজতেই আছে। বিরক্তি নিয়ে নীড় ফোন হাতে নিলো। দেখলো নীরা। ধরলোনা। বেজেই যাচ্ছে। নীড় ভাবলো ফোন বন্ধ করবে। তখন ১টা voice message এলো। নীড় প্লে করলো।
নীরা: তুমি আসবে না… এটাই তো শেষ…. please এসো।
নীড়: কিভাবে যাই? মেরিন… কিন্তু যদি না যাই হয়তো নীরা নামটা কখনো আমাদের জীবন থেকে যাবেনা…. আজকে আমাকে যেতে হবে মেরিন… তোমার সাথে নতুন করে জীবন সাজানোর জন্য।
তুমি ঘুম থেকে ওঠার আগে আবার চলে আসবো।
নীড় মেরিনের চোখে মুখে অসংখ্য ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলো। মেরিন শক্ত করে নীড়কে জরিয়ে ধরে রেখেছে। নীড় কোনো রকমে নিজেকে ছারিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
নীড় গিয়ে দেখে চারদিকে খুব সুন্দর করে সাজানো। আর ৫ লোক। মুখ ঢাকা।
নীরা : hello baby… welcome …
নীড় : দেখো আসলে আমার তারাতারি যেতে হবে।
নীরা : হামম যাবেই তো। ওপরে…
নীড় : মানে?
নীরা: জানবে জানবে এতো তারাতারি কেন। boys …
সাথে সাথে লোক গুলো নীড়কে আটকে ফেলল। নীড় তো অবাক।
নীরা : অবাক হলে বেবি? আজকে কতো কতো অবাক হওয়ার আছে তোমার? তারিখ মনে আছে ? ২৩শে জুন। আজকের দিনেই ৩বছর আগে এই জায়গায় এ সময় তুমি আমাকে propose করেছিলে । আর আজকে আমি তোমাকে জানে মারবো… বুঝেছো… জানে মারবো।
নীড় : what?
নীরা : অবাক হলে বেবি… মনে আছে ৩বছর আগে আলমগীর হোসেন নামে কেউ ১জন তার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলো তোমার আর তোমার বাবার কাছে? কিন্তু তোমরা accept তো করোই নি উল্টা দালাল বলে অপমান বের করে দিয়েছিলে… শুধু তাই নয়,,, তার ব্যাবসাটাও expose করেছিলে । যার জন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছিলো। ৬মাস জেল খেটেছিলো।
নীড় : ৬মাস জেল কমই ছিলো। ওই লোকটার হওয়ার দরকার ছিলো। মেয়ে বিক্রির দালালী করে।
নীরা : shut up… just shut up… business is business বুঝেছো।
নীড় : তুমি ওই বাজে লোকটার হয়ে কথা বলছো কেন?
নীরা : খবরদার বাজে বলবেনা। কারন সে আমার বাবা। তোমার আর তোমার বাবা specially তোমার জন্য আমার বাবা জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে ভীষন বাজে ভাবে সব জায়গায় অপমানিত হতে হয়। বাবার মুখে কালি পর্যন্ত দেয়া হয়। যেদিন বাবা arrest হয় সেদিনই আমি তোমাকে আমার প্রেমের জালে ফেলার plan করি আমি আর ভাইয়া। কিন্তু জেল থেকে বের হওয়া পর এতো এতো অপমান বাবা আর মেনে নিতে না পেরে আমার বাবা suicide করে। সময় থাকতে hospitalএ নিয়ে গেলেও বাবা বেচে গেলেও কোমায় চলে যায়। গত বছর ৫ই জুন মারা যায়।
নীড় অনেকটা অবাক হলো।
নীড় : ৫ই জুন…

নীরা : হ্যা হ্যা ৫ই জুন…. মেরিন ভেবেছিলো ৫ই জুন আমি তোমাকে জানে মেরে দিবো। কিন্তু ও তো জানতো না যে আমি আগে থেকেই তোমাকে মারার জন্য এই ২৩শে জুন তারিখটা ঠিক করে নিয়েছি। মেরিন
বড় বড় shooter, killer , gangstar সবাইকে hire করে রেখেছে। যেন আমি ওদেরকে তোমাকে মারার জন্য ওদেরকে ফোন করলেই যেন মেরিন খবর পেয়ে যায়। but… আমি কেন লোক ভারা করবো? তোমার ভালোমানুষির জন্য তোমার কি শত্রুর অভাব আছে?
guys put off your mask….
.
নীড় তাকালো ওদের দিকে। কাউকেই ও চেনেনা।
নীরা: কাউকেই তুমি চেনোনা। এরা নিরব ঘাতক। তোমার সকল শত্রুদের মেরিম আয়ত্তে আনলেও এদের হদিস জানেই না…. জানবে কি করে,,, ৩বছরের সম্পর্ক তো আমার সাথে তোমার । জানো আজকে তোমাকে শেষ করবো। তাহলে তো মেরিন এমনিতেই শেষ…
কারন মেরিন হলো রুপকথার রাজ্যের সেই রাক্ষসী যার প্রাণ পাখিতে থাকে। তুমি হলো সেই পাখি… এখন এরা তোমাকে মেরে দুর্বল বানাবে… আর আমি আরামসে তোমাকে shoot করবো। start boys ….
ওরা নীড়কে মারতে লাগলো। নীড় কোনো রকমে ছুটে ওদের ৫জনের সাথে মারামারি করতে লাগলো। মেরে মেরে একেকটার হাল
নাজেহাল করে দিলো নীড়। একেকটা নিচে পরে রইলো।
তখন নীরা নীড়ের মাথায় বারি মারলো।
.
নীড় মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো। নীরা দুরে পরে থাকা গান টার কাছে গেলো। হাতে নিলো।
নীরা : আহারে আমার আশিক….
এখন কি করবা? good bye my জান…
নীড় দারানোর চেষ্টা করলো। দারিয়েও গেলো।
নীরা : আহা…. তোমার পায়ের বেগের থেকে আমার গুলির বেগ অনেক বেশি। স্থির হয়ে দারাও। তোমার heart বরাবর shoot করি…
নীড় বুঝতে পারলো যে এখন ওর মৃত্যু নিশ্চিত। যদি মেরিনের কথাটা শুনতো। মৃত্যুর আফসোস নেই। আফসোস ১টাই,,,, মেরিনকে ভালোবাসি বলা হলো না। নীড় চোখ বন্ধ করে নিলো।
নীড় : i love you মেরিন…
নীরা shoot করে দিলো। নীড় শুনতে পেলো।
.
কিন্তু কিছুই realize করলো না। সাথে সাথে চোখ মেলল। দেখলো ওর সামনে ওকে রক্ষা কবজের মতো মেরিন দারিয়ে আছে।
নীড় : মেরিন…
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে ছুটে গেলো।
তখনই নীরা আবার shoot করতে নিলে মেরিন ধা ধা করে নীরার গায়ে সবগুলো গুলি ঢুকিয়ে দিলো। এরপর ধপাস করে বসে পরলো।
afterall মেরিন গুলি চালানোতে expart..😎..
আর নীরা তো কিছুদিন ধরে শিখেছে।
নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব হয়ে গেলো। সবকিছু এতোটাই দ্রুত ঘটলো… ১টা মিনিটও মনে হয় সম্পুর্ন হয়নি….
নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
.
রক্তে গা ভিজে গেছে।
নীড় : মমমেরিন…
জন: ম্যাম…
নীড় নিজের শার্ট খুলে মেরিনের গুলির জায়গায় বেধে দিলো। আর দেরি না করে মেরিনকে কোলে তুলে দৌড়াতে লাগলো।
নীড় : কি করলে মেরিন…কি করলে… কেন করলে…. আমি তোমার কিছু হতে দিবোনা।
মেরিনের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তবুও জোর করে খুলে রেখেছে। নীড়কে দেখছে। দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে তবুও মুখে আজও হাসি।
নীড় মেরিনের দিকে তাকালো।
গাড়িতে তুলল।জন গাড়ি start দিলো।

নীড়: তোমার কিছু হবেনা। আমি হতে দিবোনা…
মেরিন : নীহড়… আআহমার ভভভভীষন ইচ্ছা ছিলো আআআপনার বববুহকে শেষ নননিঃশ্বাস নিবো। আআআহজকে সেটা পপপূরন হচ্ছে…. এর থেকে বববড় পপাওয়াহ আর নেই…
নীড় : চুপ, একদম চুপ।
মেরিন আর চোখ খুলে রাখতে পারছেনা।
মেরিন : এএএকবার শেষ ববাহরের মমমতো বববলুন না আআআপনি, আআআপনি আআমাকে ঘণা করেন… please ১বার…
নীড় : …
মেরিন : ভভভালোবাসি বলতে বববলিনি। ককিন্তু ১বার বলুন নাহ ঘৃণা করি… ১বার… এটা না শশুনে যে আমি মমরেও শান্তি পাবোনা…
নীড়: just stop it..
মেরিন : এতোটুকুও বববলতে পপপারবেন না…
নীড়: না পারবোনা। কারন আমি তোকে ঘৃণা করিনা । ভালোবাসি….
“ভালোবাসি” কথাটা মেরিন নিতে পারলোনা। জ্ঞান হারালো…
.
নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে দৌড়ে পাগলের মতো হসপিটালে ঢুকলো।
নীড় : ডক্টর… ডক্টর… আমার বউকে বাচান, আমার মেরিনকে বাচান…
আমার #ভালোবাসার_মেরিন কে বাচান।
ডক্টররা নীড়কে হাজার চেষ্টা করেও OT এর বাইরে রাখতে পারলো না। জেদ ধরে ও ভেতরে রইলো। ওর ১কথা যে ও বউকে ছেরে ১চুলও নরবেনা…
.
কিছুক্ষনপর…
গুলি বের করা তো শেষ।
ডক্টর : oh my god…
নীড় : কি হয়েছে ডক্টর?
ডক্টর : ওনার তো heart attackও হয়েছে। উনাকে বাচাবো কিভাবে…?
নীড়ের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেলো। ওর মনে পরলো মেরিনের বলা সেদিনের কথা। মেরিন বলেছিলো যে নীড়ের মুখে ভালোবাসি শুনলে খুশিতে heart attack করবো।
ডক্টর: এই মুহুর্তে ডক্টর তপুকে বাসা থেকে ফোন করে আনো….
তপু এলো। তপু তো মেরিনের medical history জানে। তপু তারাতারি action নিলো।

৩ঘন্টাপর…
অবগশেষে surgery শেষ হলো। তবে মেরিন বাচবে না মরবে সেটার গ্যারান্টি ডক্টররা দিতে পারলোনা। মেরিনকে icu তে shift করা হলো। নীড় তবুও মেরিনকে ছারেনি। নীড় মেরিনের হাত ধরে কাদছে।
নীড় : ১টা বার তোমায় ভালোবাসার সুযোগ দিবেনা? ১টা বার… এতোদিন তো কেবল তুমিই ভালোবাসলে…. আমাকে তো একটু সুযোগও দিলেনা… আমিও যে তোমার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। তুমি যে আমার #ঘৃণার_মেরিন নও…. আমার ভালোবাসার মেরিন….
ভালোবাসি তোমাকে। ভীষন ভালোবাসি…
.
জন : কেন আমি তোর কথার অবাধ্য হলাম না… এখন আমি তাকে কি জবাব দিবো? কিভাবে বলবো তাকে? আমি তার দেয়া দায়িত্ব যে পূরন করতে পারলাম না। আর নিজের সাথেই বা কি করে নজর মিলাবো….
oh no… দাদুভাই কে তো মনে হয় জানানোই হয়নি। এখনই ফোন করি…. না আমি নিজে গিয়ে নিয়ে আসি….
.
চলবে…