উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১১


প্রহর – একটা ব্যাকুলতা অনুভব করছি।
যেটা না বলা যায় না সহ্য করা যায়।
অন্য কেউ রাত্রি কে স্পর্শ করেছে সেটা আমার
মোটেও পছন্দ হচ্ছেনা।তারপর ও সহ্য করে
নিচ্ছি।
হয়ত এটাই ওর জন্য ভালো।
আফটা অল ধরতে গেলে ও মানুষ ই।
ওর স্বভাব মানুষ দের মতই।

রাত্রি- আচ্ছা প্রহরের মনে কি আমার জন্য কখননই
কিছু ফিল হবেনা।
ও ত বলেছিল আমার উপর শুধু ওর ই অধিকার।
তাহলে আজ অন্য কেউ আমাকে ধরেছে ও কিছু
বলছে না যে!?

ইলা- কিরে কি হয়েছে?

স্বপ্ন – পা মচকে গেছে।
ডাক্তার কে ফোন কর।

রাত্রি- ডাক্তার আমার ইঞ্জেকশন খুব ভয় লাগে।
প্লিজ!!!!!”

ডাক্তার – এটা দিলে কিছুক্ষন পরেই তোমার পা ঠিক
হয়ে যাবে।

প্রহর – ডাক্তার ইঞ্জেকশন দিতেই রাত্রি স্বপ্নের
হাত আকড়ে ধরল।
সেটা মোটেও সহ্য করার মত নয়।

স্বপ্ন – ওকে উপরে দিয়ে আসি।

ইলা- হ্যা যা।

প্রহর – না থাক আমি দিয়ে আসছি।

রাত্রি- আমি কিছুটা খুশি ই হলাম।
প্রহর কোলে তুলে নিলো আমাকে।
আমি ত চাচ্ছিলাম ই ও আমার খেয়াল রাখুক।
এই খুশি আর এই চাওয়া টাই জানান দিয়ে যায় আমি কত টা
প্রহরকে চাই।
আমি শুধু প্রহর কেই দেখে যাচ্ছি।
কিন্তু ও এক বার ও আমার দিকে তাকালোনা।
বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চলে গেলো। সারারাত আমার
ঘুম হল না।
কারন সকালের পর আমি আর প্রহর কে দেখিনি।
পাশে নিমি বেহুশের মত ঘুমাচ্ছে।

প্রহর- পিস্তল ধরে আছি নাইটসস এর সৈন্য দের
দিকে।
৫ জন মিলে ঘিরে আছে আমাকে।
ওরা খবর পেয়ে গেছে রাত্রি এইখানে আছে।
প্রচুর ধস্তাধস্তি র পর আমি ৪ জন কে মারতে
পেরেছি আর ১ জন পালিয়েছে।
এই জায়গা ছাড়ার সময় এসে গেছে না হলে রাত্রির
সাথে সাথে নিমির পরিবারের ও ক্ষতি হতে পারে।

রাত্রি- সারাদিন আমার একবার খবর ও নিতে আসল না।
আজব মানুষ ত। একবার দেখে আসি কি করছে।
আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নামলাম। পা এর ব্যথাটা
এখন নেই।আর ও ও তো এখন ঘুমিয়ে গেছে।
একটু দেখে চলে আসব।

প্রহর – কিছুটা আহত হয়েই রুমে এলাম।শার্ট
খুলে ক্ষত স্থান গুলো দেখতে লাগলাম।
ক্ষতের উপর হাত দিয়ে সেগুলা মিশিয়ে দিচ্ছিলাম।
কিন্তু হঠাত চোখ গেলো আয়নার দিকে।
আমি পিছনে ফিরে তাকালাম।
“তুমি!”

রাত্রি – what the heck!!??এইসব কিভাবে হল? ? এত
কাটে গেলো কিভাবে?? কি হয়েছে দেখি? ?

প্রহর – কিছু হয়নি! তুমি এত রাতে? ?
রাত্রি- কথা ঘুরানোর চেস্টা কোরো না।
দেখি কোথায় কোথায় লেগেছে।

প্রহর – কিন্তু….

রাত্রি- প্রহরের মুখ চেপে ধরলাম।
চুপ এত কথা বলো কেন? ?
চুপ করে বসো।

প্রহর – ( অভ্যাস খুব মারাত্মক জিনিস।তুমি
একবার যদি আমার অভ্যাস এ পরিনত
হয়ে যাও ছাড়ানো খুব কস্ট কর হয়ে যাবে।
তোমাকে আমি অভ্যাস এ পরিনত করতে চাইনা।
)

রাত্রি- নেও হয়ে গেছে।
এটা কি করে হল?

প্রহর – পরে গিয়ে ছিলাম।
রাত্রি- ওহ!

প্রহর – তোমার পা!?

রাত্রি- ঠিক আছে।
আচ্ছা রেস্ট নেও। আসছি।

প্রহর – আমরা কাল চলে যাবো।

রাত্রি- কেনো??

প্রহর – ( কেনোর উত্তর টা কিভাবে দিব
তোমাকে?)

রাত্রি- কি হল কিছু বলো?

প্রহর – আমি বলছি তাই( জোরে করে)

রাত্রি- শুধু শুধু চেঁচাচ্ছ কেনো??

প্রহর – কারন তুমি এক কথা এক বারে বুঝনা

বার বার বলতে হয়।

রাত্রি- যাবো না যাবো না।রুম থেকে
বেরিয়ে যাচ্ছিলাম।

প্রহর – ওর হাত টা ধরে হালকা করে মোচোড়
দিলাম।
যাবে কি যাবে না বলো।

রাত্রি- কি করছ ব্যথা লাগছে।
প্লিজ ছাড়ো।

প্রহর – তোমার উত্তর টা কি আগে বলো।

রাত্রি- আচ্ছা আচ্ছা যাবো।

প্রহর – গুড। যাও এখন।

রাত্রি- এ কখন ই শুধরাবেনা।
আর এর মত এক জনকেই আমার পছন্দ হতে হল??
আল্লাহ দুনিয়া তে আর কেউ ছিল না?

ইলা- কিছু বলবে রাত্রি।

রাত্রি- আপি আজ আমিরা চলে যাবো।

ইলা- কেন? কোনো সমস্যা? ??

প্রহর – না কিন্তু ওর কাকু খুব চিন্তা করছে তাছাড়া বাড়ি
ও ত খালি পরে আছে।
সেটা ত ঠিক না।
তাই আরকি।

ইলা- তোমরা এতদিন ছিলে খুব ভালই কাটছিল দিন গুলা।
মিস করবো তোমাদের।

নিমি- আমি কিন্তু যাচ্ছিনা।
আমি আরও কিছুদিন থাকব।

রাত্রি- কিন্তু!

প্রহর – ওকে।
কোনো সমস্যা নেই।

সবাইকে বিদায় দিয়ে গাড়ি তে উঠে গেলাম।

রাত্রি- একে দেখে মনে হচ্ছে এর মধ্যে
কোনো ফিলিংস ই নেই।
ফিলিংলেস কোথাকার।
পাশে একটা সুন্দরী বসে আছে তাও দেখছেনা।
এই যে! শুনছ?

প্রহর – কান আছে সেহেতু শুনতেও পাই।
বলো।

রাত্রি- তোমার কি ক্ষুদা লাগেনা?? ৩ টা বাজে খুব
ক্ষুদা লেগেছে।

প্রহর – গাড়ি থামালাম। বসো আমি আসছি।
কিছু খাবার কিনে আনলাম।
নেও ধরো।

রাত্রি- আমি খাচ্ছিলাম। নেও তুমিও নেও।
প্রহর – আআমার ক্ষুদা নেই।
রাত্রি- কি বলো। ? তুমি পানিও খাওনি ।এতক্ষন হয়ে
গেলো।

প্রহর – আমার ক্ষুদা নেই।

রাত্রি- তুমি মানুষ ই ত????
প্রহর – গাড়ি থামিয়ে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম।

রাত্রি- কি হল গাড়ি থামালে কেন? ??
প্রহর – কি বললে তুমি?
।।
রাত্রি- আমি ত এমনি বলছিলাম।
তুমি সিরিয়াস হচ্ছ কেনো?

প্রহর – তুমি চুপ করে বসে খাও।
বেশি কথা বললে তোমাকে খেয়ে নিব।

রাত্রি- মুখ বাঁকালাম।

প্রহর – গাড়ি ছুটে চলেছে। চারিদিকে আধার
নেমে আসছে।
পাশে রাত্রি চোখ বন্ধ করে আছে।
ঘুমিয়েছে মনে হচ্ছে।
আধার বেড়েই চলেছে চারিদিকে।
রোডের ২ পাশেই ঘন জংগল।
এই রোডেই ওইদিন রাত্রির উপর হামলা হয়েছিল।
আজ ও কি হয় নাকি ভাবতে ভাবতেই গাড়ি থেমে
গেলো হঠাত।

রাত্রি- ওমা এত জোড়ে কেউ ব্রেক করে?
সিট বেল্ট না থাকলে ত এখনি বারি খেতাম।

প্রহর – গাড়ি ব্রেক করিনি ,গাড়ি থেমে গেছে।
দেখছি কি হয়েছে
।তুমি বসো।

রাত্রি-চারিদিকে ঘুট ঘুটে অন্ধকার।
দম বন্ধ হয়ে আসার মত।
অন্ধকার মনে হচ্ছে এখনি গ্রাস করে নিবে।
চাদ টা মেঘে ঢাকা পরে গেছে।
আমি গাড়ি থেমে নেমে গেলাম।
প্রহরের পাশে দাঁড়ালাম।

প্রহর – নাহ!

রাত্রি- কি হল।

প্রহর – হেটেই যেতে হবে মনে হচ্ছে।

।রাত্রি- কি বলছ? আর ইউ মেড??
এটা কি ৫ মিনিট এর রাস্তা যে হেটে যাবো।তার উপর
বার বার বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।

প্রহর – ত কি এইখানেই থাকব।
কিছু ত একটা করতে হবে।
সামনে যেতে থাকি। যদি কিছু পাই।
লিফট নেওয়া যাবে।

রাত্রি- আরে আমাকে একা রেখে কই যাচ্ছ।
আমি প্রহরের হাত চেপে ধরলাম।
প্রহরের হাত টা অনেক ঠান্ডা।
তোমার হাত এতো ঠান্ডা কেনো?
চলবে
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *