অবশেষে তুমি আমার !! Part- 07
‘ রাজ চড় খেয়ে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না। অধরার গায়ে এলোপাতাড়ি বেল্ট দিয়ে বাড়ি দিতে লাগলো। এবার অধরা বাধাঁ দিচ্ছে না। ” শুধু চোখের পানি ফেলছে। রাজ এবার বেল্ট ফেলে দিয়ে বললো,’ এতো দিন যা করেনি আজ তা করবো এই বলে অধরার শাড়ি সম্পূর্ণ খুলে ফেলে তাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। অধরা আজ আর রাজকে বাঁধা দিতে পারে না। শরীরটা অবশ লাগছে মাথা ঝিমঝিম করছে। রাজ অধরার ঠোঁটে যখন কিস দিবে তখনি বুঝতে পারে অধরা সেন্সলেন্স হয়ে গেছে।
-এই অধরা কি হলো কথা বলো? অধরা কোন কথা বলছে না। রাজের রাগ অনেকটা কমে যায়। রাজ স্পর্ষ্ট দেখতে পায় তার বেল্টের আঘাতে অধরার শরীরের অনেক জায়গা কেটে গেছে। রাজের মন চাচ্ছে অধরাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিতে। কিন্তু না সে কখনোই পারবে না। সে দুসহ্য স্মৃতি ভোলার মতো নয়।
– রাজ গ্লাসে নিজের হাত আঘাত করে নিজেই রক্তাক্ত করে। তবুও যেন সে শান্তি পাচ্ছে না। এদিকে অধরার চোখে জলের ছিটা দিতেই অধরার জ্ঞান ফিরে। রাজ প্রাথমিক ভাবে অধরার যেখানে যেখানে আঘাত করেছিল সেখানে ওষুধ লাগিয়ে দেয়। অধরা পলকহীন নয়নে রাজের দিকে চেয়ে থাকে। মাঝে মাঝে ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠে।
-পরের দিন অধরা বিছানা থেকে উঠতে পারে না। সারা শরীর ব্যাথা করছে অধরার। বাসায় পেইনকিলার ও নেই যে খেয়ে নিবে।
– এদিকে রাজ সকালে শুয়ে আছে হঠাৎ রাজ বুঝতে পারলে তার বুকের উপর কে যেন শুয়ে আছে। রাজ চোখ খুলেই চমকে যায়।
– এই তুই এখানে কেন ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে।”
-আমি থাকবো না অন্য কেউ থাকার কথা? আমিই তো তোমার বউ হবো।
” ত্রিযামিনী সকাল সকাল কি শুরু করলি? আন্টিকে বলতে হবে তোর জন্য যেন কর দেখে।”
” রাজ কেন বুঝো না আমি তোমাকে ভালোবাসি। একটু জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে দাও না।” এই বলে ত্রিযামিনী, রাজকে জড়িয়ে ধরে যখনি কিস করতে যাবে রাজ তখনি চড় বসিয়ে দেয় ত্রিযামিনীর গালে।”
” তুমি আমাকে মারলে? মারতে পারলে আমায়?” কি করেছি আমি? একটু তো আদর নিতেই চেয়েছি। ”
” ত্রিযামানী জানিস একটা মেয়ের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ কি? ”
” জানি না তুমি বলো!”
” একটা মেয়ের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে তার সতিত্ব। আর তুই সেটা নষ্ট করতে চাচ্ছিস। এই জন্য তোকে থাপ্পর দিলাম।”
” আমি তোমাকে ভালোবাসি রাজ। তাই আমার রুপ, যৌবন সবই তোমার।”
” আশ্চর্য কতদিন বলবে ত্রিযামিনী আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না। ভালোবাসার দরজাটা শৈশবেই বন্ধ হয়ে গেছে। সবার জীবনেই কিছু স্বপ্ন থাকে সে স্বপ্নগুলো এখন আমার জন্য দেখা পাপ। আর একটা কথা সব সময় মনে রাখবি আমি তোকে বোন হিসেবে দেখি। আর দেখে যাবো। আর ভবিষৎতে হুটহাট করে আমার ঢুকে যাবি না। ”
” হ হ আমি তোমার বোন আর যারে নিয়ে সারারাত কাটাও সেটা তোমার বউ তাই না? চাকরানীটার মাঝে কি আছে যেটা আমার মাঝে নেই?” তুমি তো কোন মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাও না। তাহলে ও মেয়েকে নিয়ে রাতে থাকো সেটা কেন?”
” ত্রিযামিনী সেদিন যা দেখছিস সব ভুল দেখছিস। ও মেয়ে মাতাল হয়ে আমার রুমে ছিল। তাড়িয়েও দিতে পারি না। শুনেছি মা-বাবা কেউ নেই। ”
” বাহ মা-বাবা কেউ নেই ভালো কথা একটা এতিম খানায় রেখে আসলেই তো পারো!”
” অধরা জানালায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাজ আর ত্রিযামিনীর কথা শুনছে। আর চোখের জল ফেলছে। আর মনে মনে ভাবছে রাজ অন্য কোন মেয়ের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে না। তবে কেন আমার সাথে পশুর মতো ব্যবহার করে? হৃদয়ে কি একটু দয়াও নেই?
” ত্রিযামিনী অধরাকে দিয়ে আমার লাভ হচ্ছে। বিদেশী ক্লাইন্টদের মেনেজ করতে পারি। সেটা তোকে বুঝতে হবে না যা তো এখান থেকে। ”
”সত্যি বলছো তো?”
” হু সত্যি।”
– হিহি আমি জানি আমার রাজ ওই চাকরানীর সাথে কিছু করতে পারে না। ” কথাটা বলে চলে গেল। ”
” এদিকে অধরা বেলকণিতে গিয়ে দেখে সেদিন সেই ছেলেটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। অধরাকে দেখেই হাতের ইশারা দিচ্ছে।”
” অধরা ছেলেটাকে দেখেই ভিতরে এসে পড়লো।”
” দু’দিন পর রাজ অধরাকে বললো,’ বাজার করে নিয়ে আসতে।”
” অধরা শুধু বললো,’ বাড়িতে এতোগুলো লোক থাকতে আমি না হয় আজ না যাই?”
” কি বলছিস? রাত বারোটায় অন্য ছেলের সাথে বাসায় আসতে পারলে, বাজারে যেতে পারবি না?
” অধরা কিছু বললো না টাকা নিয়ে বাজারে চলে গেল। বাজার করে রিক্সা পাচ্ছে না। ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এমন সময় তিয়াস বললো,’ কি গো ম্যাডাম আমি কি আপনার ড্রাইভার হতে পারি?”
” অধরা তিয়াসকে দেখে চমকে যায়! আমতা আমতা করে বলে আপনি?”
” কেন অন্য কাউকে আশা করছিলেন? ”
” না আপনি চলে যান আমি একাই যেতে পারবো। ”এই মেয়ে কালকের মতো কি রাইফেল বের করতে হবে?”
‘অধরা কিছু না বলে গাড়িতে উঠলো। গাড়িটা বাসায় না নিয়ে তিয়াস একটা রেস্টুরেন্টে থামালো। রেস্টুরেন্টে অধরা আর তিয়াস বসে আছে। ওয়েটার কফি দিয়ে গেল। কফিতে চুমুক দিচ্ছে অধরা, তিয়াস মনোযোগ দিয়ে অধরার কফি খাওয়া দেখছে। তিয়াসের মনে হচ্ছে এভাবে যুগ-যুগ যদি অধরাকে সামনে বসিয়ে রাখতে পারতো। ”
” তি হলো আপনি কফি খাচ্ছেন না কেন?.”
” ওহ্ খাচ্ছি এই বলে কফিটা শেষ করে তিয়াস অধরাকে বললো,’ আমার ফোন পাচ্ছি না। তোমার কাছে ফোন আছে?
” হ্যাঁ আছে তো। ”
” তাহলে আমার নাম্বারে একটা ফোন দাও। ”
,” অধরার তিয়াসের নাম্বারে ফোন দিতেই। পকেটে থাকা ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠলো।”
” ইউ চিট! ‘”
” আচ্ছা বলো তো তোমার নাম্বার কি দিয়ে সেভ করবো?”
” আপনি কিন্তু আমাকে মিথ্যা বলছেন। ”
” আচ্ছা অাজ তাহলে উঠা যাক। ”
” তিয়াস অধরাকে বাসায় পোঁছে দিয়ে চলে যায়। ”
” এভাবে কয়েকদিন কেঁটে যায়।”
” অধরা অসুস্থ থাকায় রাজেও কেন জানি কয়েকদিন রাতে আসেনি জ্বালাতে। কয়েকটা দিন যেন খুব সুন্দর যাচ্ছিল।”
– একদিন সকালে, ত্রিযামিনী এসে বললো,’ আপু সরি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি। ক্ষমা করে দিয়ে। ”
– অধরা কিছু বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে তার সাথে। এমন সময় ত্রিযামিনীর মা এসে বললো,’ রাজের কাছে শুনেছি তোমার নাকি মা-বাবা কিছু নেই। আজ থেকে মনে করবে আমিই তোমার মা। আজকে আমাদের বাসায় মেহমান আসবে। তাদের সাথে বেড়াতে যাবো। তুমি শাড়ি পরে রেডি হয়ে নেও। ত্রিযামিনী অধরাকে সাজিয়ে রুমের বাহিরে নিয়ে আসতেই দেখে বাহিরে অনেক মেহমান।
– ত্রিযামিনীর মা অধরাকে দেখিয়ে দিয়ে বললো,’ এটা আমার মেয়ে। একদম লক্ষী একটা মেয়ে। ”
– অধরার সামনে সোফাতে বসে থাকা মহিলাটা বললো,’ আমরা এমনি একটা মেয়েকে তিয়াসের বউ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম। আপনাদের আপত্তি না থাকলে আজই আন্টি পরিয়ে দিয়ে যেতে চাই।”
” অধরা কি বলবে বুঝতে পারছে না। সে এ বিয়েটা করতে পারবে না। কোন ভাবেই না। তিয়াস অধরার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে আর ইশারায় বলছে, কেমন দিলাম সারপ্রাইজড!
– তিয়াস বাবা অধরাকে আন্টা পরিয়ে দাও তো।”
” তিয়াস যখন অধরার হাতে আন্টি পরিয়ে দিবে এমন সময় অধরা চারপাশে তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছিল। তিয়াস অধরার বাম হাতটার অনামিকা আঙুলে যখনি আন্টি পরিয়ে দিতে যাবে ঠিক সেই সময়ে রাজ দৌড়ে এসে অধরাকে টান দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলতে লাগলো,’ এ বিয়ে হবে না। ‘
রাজের কান্ড দেখে তিয়াস চমকে যায়।
– চলবে””””””””