একগুচ্ছ কদম !! Part- 02
-গুড মর্নিং স্টুডেন্ট আমি আপনাদের নিউ টিচার রিদানশ চৌধুরী। কিছুদিন আপনাদের ক্লাস নিবো আমি। আশা করি আপনারা কিছু হলেও শিখতে পারবেন । আজকে আপাতত সবার সাথে পরিচয় পর্ব সেরে ফেলি ।
-তোমার নাম কি
– জান্নাত ইসলাম
-তুমি
-সাজি আহমেদ
-তুমি
-মোহো চৌধুরী
একে একে সবার নাম জেনে রিদিতার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় । রিদিতা ওকে খেয়ালই করেননি।
-হে ইউ কাঁপছো কেনো এভাবে নাম কি তোমার
– ( মাথা উঁচু করে বললাম ) রি রিদিতা খান
-এভাবে তুতলাচ্ছো কেনো কথা বলতে পারো না নাকি !
-ক ক কথা বলতে পারব না কেন আ আমি একটু অ অসুস্থ তাই কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে।
-ওহ আচ্ছা।
আরো কিছুক্ষণ ক্লাস নিয়ে বের হয়ে যায় রিদানশ।ওকে বেরূতে দেখে রিদিতা মোহো কে জিজ্ঞেস করে !
-তোর দাভাই এখানে কিভাবে আসলো সে এখানে আবার কেনো এসেছে আর কি ক্ষতি করবে আমার ( বলেই বেরিয়ে যায় রিদিতা )
করিডোরে আসতেই কে যেন টেনে একটা ক্লাসরুমে নিয়ে আসল !
-কে কে আপনি ছাড়ুন আমাকে
-ছাড়ুন বলছি
-কেনো ছাড়ব কদম ফুল
-আ আপনি ছা ছাড়ুন আমাকে ( বলেই নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতে লাগলাম )
-পাগল করে ছেড়েছো তুমি আমাকে আর বলছো তোমাকে ছাড়তে ( বলেই আমার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে গলায় মুখ ডুবিয়ে শ্বাস নিতে লাগল )
-আপনি একটা পাগল বদ উন্মাদ আপনি কেনো এসেছেন আমার জীবনে আবার ।
-হ্যা হ্যা পাগল আমি বদ উন্মাদ আমি তোর জন্য শুধু তোর জন্য কদম ফুল কেন আমাকে ছেড়ে ওই সৌহার্দ্য কে ভালোবাসলি বল না আমি একটা ভুল করেছিলাম তুই আমাকে কেন নিজের মতো করে গড়ে তুললি না আমার ভুল কেনো শুধরে দিলি না কদম বল আমাকে এর শাস্তি যে তোকে পেতেই হবে ( বলেই পাগলের মতো করতে লাগলো ওকে দেখে আমার ভয় লাগতে শুরু করে )
-ছাড়ুন আমাকে আপনি আবার কেনো এসেছেন আমার জীবনে কি চাই আপনার !
-তোকে চাই আমার তোকে তোকে তুই আমাকে ভালবাসলেই আমি কারো কোনো ক্ষতি করব না সত্যি।
-আপনার মতো জানোয়ার কে আর যাই হোক ভালোবাসা যায় না ( বলেই নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে চলে আসলাম ) ।
সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম। পিছন থেকে কে যেন কাঁধে হাত দিতে ভয় পেয়ে গেলাম তাকিয়ে দেখি সাজি আর জান্নাত।
সাজি : কিরে তুই এখানে আর তোকে আমরা সারা ভার্সিটি খুঁজছি ।
আমি : আচ্ছা মোহো কোথায় ওকে দেখছি না যে ?
জান্নাত : ও চলে গেছে !
আমি : চলে গেছে মানে কোথায় গেছে ( ভ্রু কুঁচকে জিগ্যেস করলাম )
সাজি : তুই ওকে ওভাবে বলায় ওর খারাপ লেগেছে তাই চলে গেছে।
আমি : ইশ্ আমি কি ভুলটাই না করলাম ও নিশ্চিত রাগ করেছে চল দেখি মহারানী কোথায় আছে ।
চললাম ৩জনে মোহো কে খুঁজতে । হঠাৎ একটা পিচ্চি এসে আমার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে গেলে !
সাজি : কিরে তোকে আবার কে দিলো চিরকুট ?
জান্নাত : আহ্ ওকে পড়ে দেখতে তো দিবি !
সাজি : আচ্ছা পড় ।
আমি চিরকুট টা খুলে পড়তে শুরু করলাম “মনে আছে ৪বছর আগে এক শ্রাবনে কদম ফুল দিয়ে তোমাকে বলেছিলাম ভালোবাসি আমার কদম ফুল জবাবে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে কেনো কদম কেনো চলে গেলে উত্তর যে দিতে হবে তোমাকে ” চিরকুট টা পড়তেই রিদিতা কাঁপতে লাগলো কোনো কিছু না বলেই দৌড়ে গাড়িতে উঠে বেড়িয়ে পড়লো আর আড়ালে কেউ একজন বলে উঠল এখনি এতো ভয় পাচ্ছো কদম 🌺 সামনে যে আরো অনেক কিছু হবে পারবে তো সহ্য করতে !
চৌধুরী বাড়িতে ঢুকেই মোহো চিল্লাতে লাগলো আর বলতে লাগলো !
-দাভাই দাভাই আবার কেনো এসেছিস তুই আর কি চাইছিস তুই বল তোর জন্য আবার আমার সাথে রিদিতার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে আবারো
-কি হয়েছে কি মোহো ( মোহোর বাপি )
-তোমার ছেলে আবার রিদির লাইফে এসেছে কেন এসেছে তোমার ওই সাইকো ছেলে।
-ব্যস মোহো ব্যস যা হয়েছিল তাতে তোমার ওই রিদির দোষ ছিল ওর জন্য আ আমার ছেলে হসপি ….
-বাপি স্টপ । কি হয়েছে মোহো বল আমি কি তোর বান্ধবীকে কিছু বলেছি বলিনি তো তাহলে এতো চিল্লাছিস কেনো ( ভ্রু কুঁচকে জিগ্যেস করলেন )।
-তুই আর ওর জীবনে যাবি না বলে দিলাম ।
-সেটা আমি বুঝে নিবো ( বলেই মুচকি হেসে বেড়িয়ে গেলাম ) ।
প্রায় রাত বারোটা এমন সময় রিদিতার মনে হলো কেউ ওকে দেখছে কিন্তু ও চেয়েও চোখ খুলতে পারছিল না। ও কোনো রকম উঠেই বেলকনিতে গেল যেতেই ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো রিদানশ ।
-আ আবার কেন এসেছেন আপনি !
-কেন এমন করেছিলে কদম সত্যি কি আমার কোন দোষ ছিল তোমাকে ভালোবাসতাম আমি এখনো বাসি কিন্তু তুমি কি করে আমার জায়গা অন্য কাউকে দিয়ে দিলে কদম 🌺
“যদি আমার জন্য আসো তো আমার জন্যেই আসবে তার ভিতর যেন অন্য কেউ না থাকে ”
চলবে….