আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 05
বাড়িতে এসে তো অনু আরিয়ানের খেয়ালে ডুবে ছিলো এমন সময় রিমা এসে অনুর পাশে বসে।
রিমা :আচ্ছা সত্যি করে বলতো এই আরিয়ান ভাইয়া কি সেই রাজ?
অনু বলে,”হুম আরিয়ান আমার সেই ক্রাশ রাজ।যাকে আমি সেদিন হারিয়ে ফেলেছিলাম!
তবে অবশেষে আমি আবারো তাকে ফিরে পেলাম।”
রিমা বলে, “তাহলে তোর এখানে লেখাপড়া করতে আসাটা স্বার্থক তাই না? ”
অনু :আরে ধুর কে করতে চাই লেখাপড়া।
আমি তো আরিয়ান কে পেলেই খুশী। আর কোনো কিছু চাই না আমার।
রিমা :ক্রাশ তো অনেক মানুষ খায়!!
কিন্তু কয়জন বলতো তার ক্রাশকে পাই?
তাই বলছি কি আমরা তো এখানে লেখাপড়া করতে আসছি।মনোযোগ দিয়ে না হয় সে কাজটা করি কি বলিস তুই?
অনু বলে,”ক্রাশকে পাওয়ার জন্য ভাগ্য লাগে।তবে সবটা তো আর ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে পারি না।নিজের তো আল্লাহর উপর ভরসা রেখে কিছু তো করতে হবে যাতে করে আমি আরিয়ান কে নিজের করে পেতে পারি।”
রিমা :তাহলে কি লেখাপড়া বাদ দিয়ে এই প্রেম ভালবাসা নিয়ে পড়ে থাকবি?
অনু বলে,”নাহ লেখাপড়া বাদ দিয়ে কেনো পড়ে থাকবো? লেখাপড়ার পাশাপাশি আরিয়ান কে নিজের করে পেতে চেষ্টা করবো।
চেষ্টা করতে তো দোষের কিছু নেই? ”
রিমা বলে,”জানি না কোনটা ঠিক ভুল,তবে এটা জানি এই বয়সে মেয়েরা ভুল পথে চলে যায়।
তুই সে ভুল পথের পথিক না হলে আমি খুশি হবো।”
অনু রিমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারিস এমন কিছু কখনো করবো না যাতে আমার পরিবারের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলে কথা বলার সাহস না পায়।”
রিমা বলে,”হুম এই বিশ্বাস আছে তোর উপর দোস্তো। ”
এরপর রিদি ওদের রুমে ফোন এনে বলে,” তোমাদের বাড়ির সবাই কথা বলতে চায়।”
অনু বলে,”আমি কারো সাথে কথা বলতে চায়না।”
রিমা ফোনটা হাতে নিয়ে সবার সাথে কথা বলে।
তারপর ফোনটা স্পিকারে দিয়ে দেয়।
আবির বলে,”আমার অনু মনু বুঝি রাগ করে আছে আমার উপর? কিন্তু আমি তো জানি আমার বুড়ি সারা পৃথিবীর উপর রাগ করে থাকলেও আমার উপর রাগ করে থাকবে না।
তবে আজ যে আমার জানার মাঝে ভুল ছিলো তা তুই রাগ করে প্রমাণ করে দিয়েছিস। ”
অনু সাথে সাথে রিমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কানের কাছে ফোনটা নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে,”ভাইয়া গো তোমাকে খুব মিস করি।
আর যাই করি না কেনো তোমার উপর
কোনোদিন রাগ করে থাকতে পারবো না।”
আবির বলে,”পাগল বোন আমার কান্না করে না।তাহলে লোকে কি বলবে বলতো দেখি? ”
অনু বলে,”আমি কি মানুষের খায় না পড়ি যে তাদের বলা কথায় কান দিতে যাবো।”
আবির বলে,”এই না হলে আমার অনু মনুর বুড়ির মতো কথা।”
অনু বলে,”ভাইয়া তুমি কখনো বদলাবে না তাই না? ”
আবির :কেনো বনু?
অনু :আমাকে আবারো অনু মনু বলে ডাক দিয়েছো?
অাবির :কি করবো বলতো সেই তোকে যেদিন প্রথম বাড়িতে আম্মু আব্বু হসপিটাল থেকে নিয়ে আসছে তারপর থেকে কোনোদিন তোকে নিজেদের কাছে থেকে দূরে কখনো রাখে নাই।আজ তুই কতো দূরে আছিস বোনটি আমার।
যদি আজও মন ভরে ডাকতে না পারি তাহলে মরে যাবো রে বনু।
অনু বলে,”একদম মরার কথা বলবা না ভাইয়া, আম্মু আব্বুর সাথে কথা না বললেও প্রতিদিন তোমার সাথে ঠিকি কথা বলবো তুমি টেনশন করো না ভাইয়া। ”
আবির :তারা সব সময় তোর ভালো চাই।তাই জন্য এতো দূরে রেখেছে।প্লিজ ভালো বোন আমার রাগ করিস না।
অনু বলে,”আচ্ছা ভাইয়া তোমরা সবাই ভালো থেকে পড়ে কথা হবে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়।”
আবিরের বাবা মা বলে,”জানি মেয়েটা বড্ড বেশী অভিমান করে আছে।আচ্ছা সমস্যা নেই একদিন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
রিমা বলে,”একটু চাচা চাচীর সাথে কথা বললে কি হতো? ”
অনু বলে, “কিছু হতো না কিন্তু অনেক কিছু হতো তাই এখন তুই তাদের হয়ে ওকালতি করা বন্ধ করে দে।”
এমন সময় রিদি এসে ওদের হাতে দুটো শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলে,”দেখ তো এগুলো তোদের পছন্দ হয় কি না?”
রিমা আর অনু তাড়াতাড়ি শপিং ব্যাগ থেকে সাদা ড্রেস বাহির করে।
অনু বলে,”এটা তো এক রং এর সাদা ড্রেস।”
রিমা বলে,”সাদা রং এর কিছু আমি পরবো না।”
রিদি বলে,”আমার সাদা মনে কোনো কাদা নেই।”
অনু :মানে কি?
রিদি” মানে হচ্ছে এটা আমাদের কলেজের ড্রেস। কাল থেকে তোমরা এই সাদা কালারের ড্রেস পরে কলেজে যাবে।”
অনু, রিমা বলে,”আল্লাহ এতো রং ছেড়ে সাদা রং?”
অনু বলে,”আমার সাদা রং এ এলার্জি আছে।আমি সাদা কোনো কিছু পড়ি না।”
রিদি একটা ভ্রূ কুঁচকে রিমার দিকে তাকাই?
রিমা বলে,”আমারো এলার্জি আছে।”
রিদি বলে,”ফাইজলামি পাইছো তাই না শয়তানী গুলো।যে এলার্জি থাকনা কেনো কাল থেকে এই কলেজের ড্রেস পড়ে কলেজ যেতে হবে।”
অনু বলে,”তাহলে যাবো না ঐ কলেজে যে কলেজে বিয়ের আগে আমাকে বিধবা বানিয়ে দিবে।”
রিদি বলে,”রিমার তোমারো একি সমস্যা? ”
রিমা মাথা নাড়িয়ে অনুর কথার সাথে তাল মিলাই।
রিদি বলে,”মন পাখিরা কিছু করার নেই এই ড্রেস পড়ে কাল সকালে রেডি থেকে এক সাথে কলেজে যাবো।”
রিদি সেখান থেকে চলে যায়।রিমা আর অনু মন খারাপ করে বসে থাকে।
অনু বলে,”এখনো বিয়ের বেনারসি শাড়ি পরতে পারলাম না।এরা তার আগে বিধবার সাজে সাজিয়ে দিবে এ দুক্ষু কোথায় রাখবো আমি।”
পরেরদিন সকালে তাদের অনিচ্ছা শর্তেও সেই সাদা ড্রেস পরতে হয়।
অনু রিমাকে বলে,”বান্ধবী শেষ পর্যন্ত বিয়ের আগে বিধবার সাজে সজ্জিত হইলাম।”
রিমা বলে,”কিছু করার নাই চল এখন নিচে যাওয়া যাক।”
নিচে আসার পর অনুর খালা বলে,”বাহ অনুকে তো সাদা কলেজ ড্রেস পরে সেই সুন্দর লাগছে মা শা আল্লাহ।”
অনু মনে মনে বলে,”সুন্দর না ছাই লাগছে সাদা পেত্নী মনে হচ্ছে।”
রিমা বলে, ” জ্বি খালা সত্যি অনুকে সুন্দর লাগছে।”
খালা রিমাকে বলে,”তোমাকেও অনেক সুন্দর আর মিষ্টি লাগছে মামুনি।”
আচ্ছা তোমরা সাবধানে যাও কলেজে কোন সমস্যা হলে আমাদের কল করে জানাতে ভুলবে না।
এরপর ঠিক আছে বলে তিনজন গাড়ি করে কলেজে আসে।রিদি ড্রাইভার কে কলেজের বাহিরে নামিয়ে দিয়ে চলে যেতে বলে।
ড্রাইভার ওদের তিনজন কে বাহিরে নামিয়ে রেখে চলে যায়।
অনু বলে, “চলো বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে আর কি করবো এবার কলেজে প্রবেশ করা যাক।”
রিদি বলে,”আরে কলেজের ভেতরে যাওয়া এতো তারা কিসের তোর, একটু পর যাবো।”
অনু বলে,”বাহিরে কেনো অযথা দাঁড়িয়ে থাকতে যাবো।”
রিদি বলে,”ধেততত তুই একটা নিরামিষ। ”
রিমা বলে,”এখানে অনু নিরামিষ কি করে হলো?”
রিদি বলে,”আমার উনি আসবে,,তার সাথে দেখা না করে আমি কখনো কলেজের ভেতরে যায় না।”
রিমা আর অনু এক সাথে বলে,”ওহ ওও ”
এমন সময় ওদের সামনে একটা কালো রং এর গাড়ী এসে থেমে যায়।
হঠাৎ ওদের সামনে এভাবে গাড়ি থামাতে ওরা তিনজন একটু ভয় পেয়ে যায়।
এরপর গাড়ি থেকে একজন আরিয়ানদের বয়সী ছেলো বাহির হয়ে আসে।
তা দেখে অনু মনে মনে বলে,”শালা ভেবেছিলাম আমার হিরো আসবে কিন্তু আসলো কে জীবনটা বেদনাময়। ”
লোকটা এগিয়ে এসে বলে,”আচ্ছা এখানে ভার্সিটিতে যাবার রাস্তাটা একটু দেখিয়ে দিবেন প্লিজ?”
রিদি তাকে রাস্তার ডিটেল বলে দেয় তারপর সে লোকটা চলে যায়।
অনু বলে,”আচ্ছা রিদি আপু তোমার হিরো আসবে না? ”
রিদি বলে,”আসবে না মানে? অবশ্যই আসবে।একটু তোর পেছনে তাকিয়ে দেখ একবার।”
অনু রিদির কথা শুনে পেছনে তাকিয়ে একদম টাস্কি খাই।
সাথে সাথে রিমার হাত ধরে আস্তে করে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,”আমি জ্ঞান হারাবো, মরে যাবো,বাঁচাতে পারবে না কেউ।”
রিমা বলে, “তুই আর মরে যাবি সে গুড়ে বালি।”
অনু রিমার হাত ছেড়ে দিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকে।
এরপর বাইক নিয়ে রাজ আর আরিয়ান হিরোদের স্টাইলে ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে।
অারিয়ান কে হিরোদের স্টাইলে এন্ট্রি করতে দেখে তো অনু আবারো বড় আকারের ক্রাশ খায়।
আরিয়ান বাইক থেকে নেমে এসে অনুকে দেখে বলে,”বাহ ঝাঁঝ লবঙ্গলতা তোমাকে তো সাদা ড্রেস পড়ে সেই রকম সুন্দর লাগলছে।একদম আকাশের সাদা পরীর মতো।”
অনু তো আরিয়ানের মুখে এমন কমপ্লিমেন্ট শুনে তো খুশিতে গদগদ হয়ে যায়।
অারিয়ান আরো বলে,”আমার সামনে মনে হচ্ছে আকাশের কোনো সাদা হুর পরি দাঁড়িয়ে আছে।আহা অনু তোমাকে দেখে তো যে কোনো ছেলে ক্রাশ খাবে।আমিও ছোটখাটো একটা ক্রাশ খাইলাম।”
রাজ বলে, “বড় আকারে না খেলে হবে,, ছোটখাটো ক্রাশ বেপার না।”
এরপর আর কিছু ফাইজলামি করে রাজ আরিয়ান চলে যায়।আর অনুরা তিন জন কলেজে যায়।
এভাবে প্রতিদিন ওদের সাথে এদের দেখা হতে থাকে আর প্রতিদিন আরিয়ানের করা ফাইজলামি গুলো অনুর অবুঝ মনে সিরিয়াস ভাবে কাজ করতে শুরু করে যার ফলে অনু তার ক্রাশ পাগল হয়ে যেতে থাকে।
এভাবে বেশ কিছু দিন পর সবাই একসাথে ঘুরতে যাবার প্লানিং করে।
অনু রিদি রিমা রেড়ি হয়ে সেখানে গিয়ে যা দেখে তা দেখার জন্য মোটেও কেউ রেড়ি ছিলো না।
(কাকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে 🥴🥴
নতুন কি কাহিনী হলো দেখা যাক)
‘
‘
‘
চলবে…