প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 38

টুকটাক ঘুরাফিরা করে সবাই হোটেলে ফিরে আসলো
আহানা লিজা আর বেবির সাথে এক রুমে আর শান্ত আর অন্য ২টো ছেলে এক রুমে,বাকিরাও আলাদা আলাদা রুম নিয়েছে
আহানা ফ্রেশ হয়ে এসে একটু শুতেই ওর ঘুম এসে গেলো
রাত ৯টায় সবাই বের হয়ে যাচ্ছে ডিনার করার জন্য,নিচে খাবারের হোটেল
আহানা গভীর ঘুমে,বেবি আর লিজা ওকে রেখেই চলে গেছে
সবাই টেবিলে বসতেই শান্ত এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো আহানাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে নাহ,কি ব্যাপার!কই গেলো মেয়েটা?
.
রাফি স্যার খেতে খেতে বললেন আহানা আসেনি কেন?লিজা?
.
স্যার ও ঘুমায়,তাই আর জাগাইনি
.
তাই বলে ও সারা রাত না খেয়ে থাকবে?ডিনারের জন্য তুললে না তোমরা?

কি করবো?
.
স্যার আমি আহানাকে নিয়ে আসতেসি
.
ওকে
.
শান্ত আহানাদের রুমে এসে দরজায় ২বার নক করে ভিতরে ঢুকলো,আহানা চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে
.
আহানা?উঠো,চলো ডিনার করবে
.
শান্তর কথা শুনে আহানা লাফ দিয়ে উঠে বসলো
তাড়াহুড়ো করে ওড়না খুঁজে পরে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে রইলো ওর দিকে
আপনি এখানে?
.
তুমি ডিনারের জন্য আসো নি কেন?চলো খেতে চলো
.
লিজা আপু,বেবি আপু ওরা কোথায়
.
ওরা তোমাকে রেখেই চলে গেছে,এখন চলো
শান্ত আহানার হাত ধরে নিয়ে গেলো,শান্তর পাশে নিহাল বসেছে,আর এখন নিহালের পাশের সিট খালি,শান্ত রাগী চোখে নিহালের দিকে চেয়ে আছে,ইচ্ছে করে ও এমন করসে তা জানতে আর বাকি নেই
আহানা গিয়ে নিহালের পাশে বসলো
আহানা এটা খাবা,ওটা খাবা,এটা একটু দিই,ওটা একটু দিই
শান্তর মেজাজ গরম হয়ে গেছে আহানার প্রতি নিহালের এমন পিরিতি দেখে
ঠাস করে উঠে দাঁড়িয়ে রুমের দিকে চলে গেলো
সবাই খাওয়া শেষ করে এবার চা খাচ্ছে
আহানা শান্তর প্লেটটা নিয়ে শান্তর রুমে আসলো,দরজায় নক করতেই শান্ত চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে বললো আসো পিয়াস,দরজা খোলা

আহানা ভিতরে এসে চেয়ার টেনে বিছানার পাশে বসলো
.
আহানার গায়ের একটা আলাদা গন্ধ আছে,শান্তর নাকে সেটা আসতেই ও মুখ থেকে চাদরটা সরিয়ে ফেললো
আহানা প্লেট এগিয়ে ধরে বললো নিন,খেয়ে নিন,আমি জানি আপনার পেট ভরেনি
.
খাবো না
.
আহানা গ্লাস নিয়ে হাত ধুয়ে এসে বসে লোকমা বানাচ্ছে
শান্তর মনে মনে খুশিতে হার্ট লাফাচ্ছে,তড়িগড়ি করে উঠে বসো গেলো,যেন এটার জন্যই যে অপেক্ষা করতেসিলো এতক্ষণ
আহানা শান্তকে খাইয়ে দিচ্ছে,শান্ত খেতে খেতে বললো তুমি ঐ নিহাল থেকে দূরে থাকবা,ওকে আমার একটুও সহ্য হয় না
.
কেন হয় না?কি করসে ও?
.
না কিছু করে নাই,তাও ওকে সহ্য হয় না আমার,তুমি জাস্ট ওর সাথে মিশবা না,তুমি কারোর সাথেই মিশবা না,তুমি শুধু আমার সাথে কথা বলবা,ঝগড়াও আমার সাথেই করবা
.
আহানা হেসে দিয়ে বললো আপনার সাথেও না,চড়ের কথা ভুলে গেছেন নাকি?
ভাত শেষ, আহানা উঠে গেলো হাত ধুতে
হাত ধুয়ে বের হতেই শান্তর মুখোমুখি হলো
শান্ত চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে ওর ওড়না টেনে মুখ মুছতে মুছতে বললো আরেকটা চড় দিলেও সমস্যা নাই
.
কি বললেন?আজ কি সূর্য উঠেছিলো?নাকি উঠলেও ডুবে নাই মনে হয়,মিঃ অশান্ত এসব কি বলছে!!
.
মজা নিও না তো!
.
আহানা চলে যাচ্ছিলো তখনই রুম সার্ভিসের লোক এসে এক কাপ চা দিয়ে গেলো
.
আহানা দাঁড়াও
.
কি?
.
চা খাবে আমার সাথে?
.
আহানা ব্রু কুঁচকে শান্তর হাতের দিকে তাকালো
.
শান্ত হেসে বললো উপায় আছে,আসো
আহানা এসে সোফায় বসলো,শান্ত তার ব্যাগ থেকে একটা ওয়ান টাইম গ্লাস বের করে কাপের অর্ধেক চা সেটাতে ঢেলে আহানাকে দিলো
চা খাওয়া শেষ করে আহানা শান্তর রুমের দিকে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে
.
আচ্ছা যাও এবার,ঘুমাও
.
আহানা চলে যেতে নিতেই শান্ত বললো পাতানো বউ?
.
আহানা থেমে চোখ বড় করে একবার ওর দিকে তাকিয়ে চলে গেলো
.
শান্ত হাসলো,আহানাকে এভাবে জ্বালাতে বেশ লাগে
পরেরদিন সকাল সকাল সবাই আবার কাজে ফিরে গেলো
.
আহানা??কফি খাবে?
.
না,ও কফি খায় না
.
আহানা তুমি বলো,আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করি নাই শান্ত
.
আমি কফি খাই না
.
ওহহ
.
আহানা নকশা বানাচ্ছে পেপারে
শান্ত ও তার নকশা বানানোয় ব্যস্ত, পাশে কারোর উপস্থিতি পেয়ে চেয়ে দেখলো নিহাল দাঁড়িয়ে আছে,পকেটে হাত ঢুকিয়ে মুচকি হাসতেসে
.
কিছু বলবে?
.
ভাই বুঝো না কেন তুমি যে আমি আহানাকে পছন্দ করি?একটু তো আমাদের কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করতে দিতে পারো,সবসময় মাঝখান দিয়ে এসে পড়ো কেন বলোতো?
নিহাল শান্তর কাঁধে হাত রেখে হেসে দিলো
.
কি ভাই?বুঝছো তো??
.
শান্ত নকশা কমপ্লিট করে নিহালের দিকে চেয়ে কান থেকে ইয়ারফোন বের করে বললো কিছু বললে নিহাল?আমি তো গান শুনতেছিলাম
Shape of you!!
.
হোয়াট!তুমি কিছু শুনো নি?

শান্ত ফাইল সব সেট করতেসে,একটা পাতা নিচে পড়ে গেলো, সেটা নিয়ে টেবিলের উপর রেখে দিয়ে নিহালের দিকে তাকালো সে,তারপর নিহালের কাঁধে হাত রেখে বললো
তুমি ওর কলিগ রাইট?
.
ইয়াহ
.
আর আমি ওরর পাতানো বর,বর বুঝো তো?যার সাথে বিয়ে হয়
.
মানে?পাতানো মানে কি?
.
মানেটা সহজ,ছোটবেলায় আমি আর আহানা বর বউ ছিলাম
.
তো, এখন তো না তাহলে?
.
আরেহ হতে কতদিন,হয়ে যাবো রিয়েল লাইফের বর বউ,তোমার আপত্তি আছে নাকি?
.
আমার তো মনে হয় না আহানা তোমাকে লাইক করে
.
আমিও আহানাকে লাইক করি না,ওর প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই বাট কি করবো বলো আমার পাতানো বউ তো,বউকে তো আর অস্বীকার করা যায় না
.
শুনো শান্ত,একটা কথা জেনে রাখো আমি কাল আহানাকে প্রোপোজ করবো
.
কাল কেন?আজ কেন নয়?
.
ফাইন!
.
নিহাল শার্টের বোতাম লাগিয়ে ঠিকঠাক হয়ে এগিয়ে গেলো
আহানা রাফি স্যারের সাথে কথা বলে পিছনে তাকাতেই দেখলো নিহাল দাঁড়িয়ে আছে
.
কিছু বলবেন?
.
নিহাল নিচে বসে গেলো হাঁটু গেড়ে
আই লাভ ইউ আহানা
.
কিছুক্ষন আগে বলতেসিলো লাইক করে,আর এখন ৫মিনিটে লাইক লাভে পরিণত হইসে,ভাবা যায় এসব!!
শান্ত হেসে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে মজা নিতেসে
আহানা চোখ বড় করে চেয়ে বললো এসব কি বলতেসেন আপনি?
.
সবাই হাততালি দেওয়া শুরু করে দিয়েছে
.
আপনি আমাকে কতদিন চিনেন যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন??আপনার মাথা ঠিক আছে?
.
শান্ত হাসতেসে মুখে হাত দিয়ে
.
আহানা উইল ইউ বি মাই ওয়াইফ?
.
এক মিনিট,থামুন,আর একটা কথাও বলবেন না,আপনি ভালোবাসলেই তো হলো না,আমি আপনাকে ভালোবাসি না,দু একটা কথা হয়েছে বলে এই নয় যে আপনাকে বিয়ে করবো আমি,আমার সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন??আমার মা বাবা নাই,একা কামাই করে একার সংসার চালাই জানেন আপনি? আমি অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি এসব জানেন?
নিহাল ব্রু কুঁচকে বললো কিহহহ!
ভাবছিলো শশুরমশাই থেকে যৌতুক হিসেবে একটা কার চাইবে আর এখন দেখি উল্টা আমাকেই কার কিনে দিতে হবে

শান্ত এবার এগিয়ে আসতেসে,আহানা নিহাল থেকে চোখ সরিয়ে ওর পিছনে শান্তর দিকে তাকালো
নিহাল বোতাম সব লাগিয়ে ঠিক হয়ে আহানাকে প্রোপোজ করতে আসছিলো আর শান্ত বোতাম ২/৩টা খুলে আসতেসে
এক তলা ভর্তি কর্মচারী আর পি.এ রাফি স্যারের সামনে শান্ত এগিয়ে এসে আহানার মুখোমুখি দাঁড়ালো,এক হাত আহানার পাশের দেয়ালে রেখে,টাই টানতে টানতে বললো উইল ইউ বি মাই পাতানো বউ টু রিয়েল বউ??
.
আহানা হাসবে নাকি কাঁদবে বুঝতেসে না,এরকম প্রোপোজের কথা জীবনে না শুনেছে না দেখেছে,সবসময় সবাই হাঁটু গেড়ে প্রোপোজ করে আর শান্ত কিনা কি একটা লুক নিয়ে শার্টের কয়েকটা বোতাম খুলে দেয়ালে হাত রেখে প্রোপোজ করলো,সে কি সিরিয়াস?
আপনার মাথা ঠিক আছে?অসহ্য,সবাই পাগল হয়ে গেছে!
.
আহানা ব্যাগ নিয়ে চলে গেলো
দুটো ছেলে প্রোপোজ করে দুজনেই রিজেক্ট হলো
শান্ত হাসতোসে কারন সে জানে আহানা এটাই বলবে
.
কি নিহাল ব্রো??ওর ডিটেইলস শুনে চুপ হয়ে গেলা যে,মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না কেন তোমার?
শান্ত এক্সকিউজ মি বলে চলে গেলো
আহানা একটা নির্জন রোডের পাশে যে পর্বত ছিল সেখানে বসে আছে,সবাই খালি মজা করে আমার সাথে,শয়তানটাও বাদ রাখলো না আজ
.
আহানা?
.
কি?আবার কোন মজা মিতে এসেছেন এখানে?যান তো
.
আরেহহ,আমি সিরিয়াস,তোমাকে বউ বানিয়ে ডেইলি ঝগড়া করতে জোস লাগবে
.
যান এখান থেকে,আমি মজা করার মুডে নাই,আর আপনি তো বলেন আমার প্রতি আপনার কোনো ইন্টারেস্ট নেই,তাহলে কিছুক্ষন আগে এটা কি ছিল??হুম?
.
মন চাইলো প্রোপোজ করলাম,মন চাইলে বিয়েটাও সেরে ফেলবো!
.
কিহহহ?আমি আপনাকে বিয়ে?ইমপসিবল,জীবনেও না,আমার জীবন এমনিতেও তেজপাতা এবার করলা বানাতে চাই না
শান্ত আহানার ওড়না টেনে হাতে নিয়ে সেটায় গিট্টু দিচ্ছে আবার খুলছে
আহানা দূরের একটা টিনের ঘরের দিকে চেয়ে আছে আর শান্তকে যা পারছে তাই বলে যাচ্ছে
.
রাফি স্যার ওদের দেখে হেসে বললো দেখসো নিহাল?ওদের দেখলে মনে হয় মেড ফর ইচ আদার,আহানা কিছুক্ষন আগে শান্তর প্রোপোজাল রিজেক্ট করেছে তাও শান্ত ওর পাশে বসে কথা বলছে
আর আহানা শান্তকে রিজেক্ট করার পরেও ওর সাথে দিব্যি কথা বলতেসে,মানে ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে তবে বলতে আর মানতে রাজি না,হাহাহা,নাইস না?আর তুমি তো ২/৩দিন হলো আহানাকে চিনো এরই মাঝে ওকে ভালোবেসে ফেললা?২দিনে ভালোবাসা হয় না নিহাল!
সেটার প্রুভ কি জানো?তুমি আহানার ফ্যামিলির কথা শুনে পাল্টা বলতে পারো নাই যে সবকিছুর পরেও আমি তোমাকেই বিয়ে করবো আহানা,কিন্তু শান্ত এরপরেও বলসে বিয়ে করবে
বাদ দাও,এরকম অটুট সম্পর্কে যাদের মাঝে বিরাজমান তাদের মাঝে জীবনেও ৩য় ব্যাক্তি ঢুকতে পারবে না

ছাড়ুন আমার ওড়না,আপনার আর কাজ নাই?
.
না নাই,আমিও নকশা কমপ্লিট করসি😎
.
ভালো করসেন
আহানা হেসে দিয়ে শান্তর গাল টিপে দিলো আর বললো আপনি একটা পাগল!!
.
শান্ত আহানার দিকে চেয়ে হালকা হাসলো,তারপর ওর চুলের মুঠি ধরে এক টান দিলো আর বললো কেউ তোমাকে প্রোপোজ করলেও আমার বদদোয়ার কারণে সে তোমাকে পাবে না
.
আপনি নিজেও পাবেন না
.
শুনো মেয়ে!! তোমার প্রতি আমার ইন্টারেস্ট নেই একটুও
.
আপনি পাগল না একটা ছাগল আপনি

তুমি শাঁকচুন্নি
.
আহানা শান্তর শার্ট টেনে এলোমেলো করে দিয়ে উঠে এক দৌড় দিলো
.
আহানা তোমাকে বলসি না আমার শার্টে হাত দিবা না,দিলা তো,তোমাকে ছাড়বো না বলে দিচ্ছি!
আহানা হাসতে হাসতে দৌড়ে যাচ্ছে
শান্ত আহানার হাতের কব্জি ধরে ফেলে এক টান দিয়ে কাছে নিয়ে আসলো
.
কি ব্যাপার পাতানো বউ তোমাকে বলসি না আমার জ্যাকেট বা শার্টে হাত দিবা না?
.
কি করবেন শুনি?
.
কি করবো?
.
হুম
.
যেটা বলসিলাম সেটাই করবো তোমার ওড়না তোমার গায়ে থাকবে না
শান্ত আহানার ওড়না টান দিয়ে নিজের গলায় পেঁচিয়ে হাঁটা ধরলো
.
এই আমার ওড়না দিন বলছি
.
দিব না,কি করবা শুনি?
.
আপনার শার্ট ছিঁড়ে ফেলবো
.
ব্র্যান্ডেড শার্ট,তোমার ঐ ছোট ছোট নখে ছিঁড়বে না

নখ নেই তো কি হয়েছে,দাঁত তো আছে
আহানা দাঁত দিয়ে শান্তর শার্ট কামড়াতে লাগলো
.
এই আহানা ছাড়ো
.
না ছিঁড়ে ফেলবো
.
আচ্ছা নাও তোমার ওড়না
.
আহানা দাঁত কেলিয়ে ওড়নাটা নিয়ে চলে গেলো
.
উফ,ডেঞ্জারাস একটা মেয়ে,বাপরে বাপ

দুপুরের পরেই সব কাজ শেষ হয়ে গেলো,সবাই এবার ব্লু ওয়াটার পার্ক যাবে,আহানা চুল আঁছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই কখন থেকে,বেবি আর লিজা সেজেই যাচ্ছে
আহানা রুম থেকে বেরিয়ে করিডোরে এসে সবগুলো রুমের নাম্বার পড়তে পড়তে হাঁটতেসে,৪০১/৪০২/৪০৩
এমন করে করে শান্তর সামনে গিয়ে পড়লো
শান্ত একটা ব্রাউন জ্যাকেট পরেছে,যা লাগছে না!
চুল ও ব্রাউন আর জ্যাকেট ও
.
তুমি এত দেরি করলে কেন আসতে?
.
বেবি আপু আর লিজা আপু রেডি হচ্ছে তাই
.
তুমি রেডি তো?
.
আমি আবার কিসের রেডি,জাস্ট জামা চেঞ্জ করে চুল আঁছড়িয়ে নিসি
.
তাহলে চলো একজায়গায় যাই

কই?আর সবাই তো ব্লু ওয়াটার পার্ক যাবে এখন
.
আরে ব্লু ওয়াটার পার্কের পাশেই স্বর্ণমন্দির চলো আমরা সেখানে যাবো
.
আহানা রাজি হয়ে গেলো,শান্তর সাথে সাথে চললো,দূর থেকে দেখলে মনে হয় এক দু কদম পার হলেই মন্দিরটা ছোঁয়া যাবে অথচ হাঁটতে হাঁটতে মন্দিরটা ছোঁয়া তো দূরে থাক সামনেই আসতে পারছে না তারা,দূর আছে বৈকি
অবশেষে মন্দিরের কাছে এসে দাঁড়ালো দুজনে,টিকেট কাটতে হবে
শান্ত টিকেট কেটে আহানাকে নিয়ে জুতা খুলে ঢুকলো,শান্ত সোজা হেঁটে যাচ্ছে আহানা ভিতরে পা রেখে ডান পাশে তাকিয়ে দেখলো কতগুলো বাচ্চা মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে গাছ লাগাচ্ছে,পরনে কমলা রঙের পেঁচানো কাপড়,তার মানে তারা বৌদ্ধ,একসাথে এতগুলো বাচ্চা!স্কুলের ট্রিপে এসেছে নাকি
.
নাহ!এটা এই মন্দিরের অনাথ আশ্রম,এরা সবাই অনাথ
.
আহানার মনে হলো তার সাথী এরা,কাছে গিয়ে একটা বাচ্চার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো,সে বললো গাছ লাগাবেন?
আহানা মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সাঁই দিলো,তারপর একটা চারা গাছ লাগিয়ে দিলো,উঠে পাশে তাকাতেই দেখলো শান্ত ও গাছ লাগাচ্ছে
হাত ধুয়ে এবার তারা মন্দিরের ভিতরে গেলো,এত সুন্দর এটা!রোদ পড়ে চিকচিক করতেসে,ফুলের বাগানে ভর্তি চারপাশটা
শান্ত একটা ফুল নেওয়ার জন্য ১০বার ট্রাই করেছে তাও পারতেসে না
সব খানে বড়বড় করে লিখা আছে
বাগানের একটা ফুলেও হাত দিবেন না
কোথাও গেলে এমন সাইনবোর্ড দেখলে শান্তর আগ্রহ আরও বেড়ে যায়
চলবে♥