ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 06

আদ্রঃ আমার ও তো খেতে ইচ্ছা করছে।।আহ তার লিপস আর লাইক স্ট্রবেরি 😍।।না জানি কতোটা মিষ্টি হবে।।আর যখন আমার উপর পরেছিলো নাহ তার কোমড়ে যখন টাচ করলাম……..

আর কিছু বলতে পারলো।।
(মেঘ আদ্রর কলার ধরে)

মেঘঃ তোর সাহস কিভাবে হয় বৃষ্টি কে নিয়ে এইসব বলার।।আজ তো তোকে আমি মেরেই ফেলবো।।(বলেই মুখে দিলো এক ঘুষি 👊)

আদ্র কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোহান মেঘ কে টেনে পিছে নিয়ে গেল

রোহানঃ কুল মেঘ শান্ত হ।।

মেঘঃ হাউ ডেয়ার হি😤😤আমার বৃষ্টি কে এইসব কথা বলার সাহস পায় কোথায় ও🤬।।ওকে আজ আমি খুন করে ফেলবো(রোহানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আবার আদ্রর কলার চেপে ধরলো)

এইবার আদ্রও গেল রেগে।।

আদ্রঃ কিছু বলছি নাহ বলে এটা ভাবিস নাহ তুই আমাকে মারতে এলে আমি তোকে ছেড়ে দিবো।।কি ভুল করেছি আমি হ্যা কি ভুল(চিৎকার করে)

মেঘঃ ভুল?? তোর সব থেকে বড় ভুল হলো আমার বৃষ্টি কে নিয়ে এইসব বলা।।

রোহান গিয়ে আবার মেঘকে টান দিলো।

রোহানঃ মেঘ স্টপ।।কলেজে মারামারি করলে প্রবলেম হবে।।তুই অফ যা।

মেঘঃ আজ রোহানের জন্য তুই বেঁচে গেলি।। বাট ফার্দার যদি দেখি বৃষ্টির দিকে চোখ তুলে তাকাস তাহলে তোর চোখ আমি উপরে ফেলবো
(আদ্রর কলার ছেড়ে)

আদ্রঃ কাজটা ভালো করলি নাহ মেঘ।।ভেবেছিলাম সব ভুলে নতুন করে ফ্রেন্ডশিপ করবো।।বাট তুই।।আর কি বললি তোর বৃষ্টি ।। তারমানে তুই তরীকে লাইক করিস।।আর তারজন্য আমার গায়ে হাত তুললি।।এখন তো তাহলে আমি তরীকে নিজের করেই ছাড়বো।।যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।

মেঘ আবার ক্ষেপে আদ্রওকে ধরতে গেল রোহান আটকালো।।ইশারায় মেঘকে নিষেধ করলো।।মেঘ একবার রোহানের দিকে তাকিয়ে তার হাত ঝাড়ি মেরে সরিয়ে ক্যানটিন থেকে বেরিয়ে গেল।।

এইদিকে আদ্রও কাকে যেন ফোন করতে করতে বেরিয়ে গেল।।

মেঘ ক্যানটিন থেকে বেরিয়ে দেখলো তরী রোদ আর ত্রিধার সাথে হেসে হেসে কোথায় যেন যাচ্ছে।।
মেঘ গিয়ে সোজা তরীর হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরালো

তরী অবাক হয়ে তাকালো

মেঘঃ কলেজে কি ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করতে আসিস তুই হ্যাঁ।। একবার ক্যানটিনে ছেলের উপর পরে যাস এখন আবার আরেক ছেলের গায়ে পরে যাচ্ছিস(হাত জোরে চেপে ধরে)
এতো জোরেই চেপে ধরেছে যে তরীর মনে হচ্ছে তার হাত ভেঙেই যাবে।

তরীঃ সবাই দেখছে ভাইয়া হাত ছাড়ো(কাঁদো কাঁদো গলায়)

মেঘ নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে তরীর দিকে।। এইদিকে সবাই হা করে দেখছে।।কেউ কিছু বলছে নাহ।।কারন কলেজের সবাই মেঘের রাগ সম্পর্কে ভালোই জানে।

এইদিকে তরীর এতোটাই ব্যাথা পাচ্ছে যে চোখ থেকে অজান্তেই পানি বের হয়ে গেল।।

তরীঃ আমার লাগছে ভাইয়া(নাক টেনে)

মেঘের হুস আসলো তরীর চোখের পানি দেখে।।খেয়াল করলো তরীর হাত চেপে ধরেছে।।যার কারনে হাতে রক্ত জমাট বেধে লাল হয়ে গেছে।।
মেঘ তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিলো

মেঘঃ আ……

তরী ছাড়া পেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেল কলেজ থেকে।

রোহান মেঘের কাছে আসলো।

রোহানঃ কি করছিস তুই।। একজনের রাগ আরেকজনের উপর দেখাচ্ছিস

মেঘঃ ওর দিকে কেন তাকাবে কেউ(ফোপাঁতে ফোপাঁতে)

রোহানঃ এতে ওর কি দোষ।। ও কি ইচ্ছা করে কিছু করেছে(মেঘকে ঝাকি দিয়ে)

সবাই এখনো ঢেব ঢেব করে তাকিয়ে আছে।

রোহানঃ এখানে কি ফ্লিম চলছে। যার যার কাজে যাও সবাই(চেচিয়ে)

সবাই ধীরে ধীরে চলে গেল।।

রোহানঃ কি করছিস এসব তুই মেঘ।।তরীকে কেন তুই…….

মেঘ কিছু নাহ বলে পার্কিং এড়িয়া তে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়িতে বসতে যাবে রোহান পথ আটকালো।

রোহানঃ কি করছিস তুই মেঘ।।কেন এতো রাগ দেখাচ্ছিস।।রিলেক্স

মেঘঃ(গাড়ির দরজা লাগিয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিলো)রোহান।।আমি😣..আমি ওর হাতে…..ওর হাত লাল হয়ে…..বাট আমি তো ইচ্ছা করে ওকে হার্ট করতে চাইনি।।রাগটা কন্ট্রোল করতে(টেনশন ভাব নিয়ে)

রোহানঃ তোর রাগটা কন্ট্রোল করার দরকার ছিলো।।ওর কি দোষ ছিলো বল

মেঘঃ বৃষ্টি ব্যাথা পেয়েছে🥺।।ওর চোখে পানি ছিলো আমি কিভাবে ওকে😔(ইমোশনাল হয়ে)

রোহানঃ ইটস ওকে৷ তুই বরং ওকে বাড়িতে গিয়ে সরি বলে দিস।

মেঘঃ আমি এখনই ওর বাড়িতে যাবো।।

রোহানঃ ওকে যা।।কাল দেখা হবে।

মেঘঃ হুম।।টাটা।

মেঘ রোহানের থেকে বিদায় নিয়ে সোজা খান বাড়িতে গেল।।

মেঘকে দেখেই নেশা এগিয়ে গেল।।

নেশাঃ আরে মেঘ তুই এখানে তাও এতোদিন পর।।কিভাবে কিভাবে হুম(খুশি খুশি ভাব নিয়ে)

মেঘঃ এমনি আসলাম ফুপি।।কেন আসতে পারিনাহ বুঝি

নেশাঃ ধুর কি বলিস।।আয় ভিতরে আয়।।

মেঘ বসলো।।

মেঘঃ মামা কোথায় ফুপি?

নেশাঃ উনি তো অফিসে

মেঘঃ আর আকাশ আর শ্রাবণ

নেশাঃ ওরা তো স্কুলে।।

মেঘ তরীর কথা জিজ্ঞাসা করবে তার আগেই নেশা-

নেশাঃ তুই আজ কলেজ যাসনি

মেঘঃ হ্যা কেন??

নেশাঃ ওহহ কলেজ কি ছুটি হয়ে গেছে

মেঘঃ নাহ ছুটি হয়নি।।আমার আর ক্লাস নেই তাই চলে এসেছি

নেশাঃ ওহহ তাই হয়তো তরী এখনো আসে নি

মেঘঃ কিহহ😕তরী বাড়ি ফিরেনি

নেশাঃ কই নাহ তো।।কেন কি হয়েছে

মেঘঃ ফুপি আমি আসছি একটুপর।।(মেঘ বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে।।নেশা পিছন থেকে কতোবার ডাকলো সারা পেল নাহ।)

নেশাঃ কি হলো ব্যাপার টা।।তরীকে একটা ফোন দিয়ে দেখি।।।

নেশা অনেকবার ট্রাই করলো বাট তরীর ফোন সুইচড অফ বলছে।
নেশা মেঘকেও ট্রাই করলো বাট মেঘও ফোন ধরছে নাহ।।

নেশা কিছু নাহ ভেবে নীড়কে ফোন দিলো।।

নেশাঃ নীড় আপনি প্লিজ তাড়াতাড়ি একবার তরীর কলেজে যান

নীড়ঃ কি হয়েছে নেশা।।আর তোমার গলা এমন লাগছে কেন

নেশাঃ নীড় তরী ফোন তুলছে নাহ।।মেঘ এসেছিলো একটু আগে।। তরী বাসায় আসেনি শুনে সে ও কিছু নাহ বলে বেরিয়ে গেল।।মেঘ ও এখন ফোন তুলছে নাহ।।নীড় আপনি কিছু করুন।।আমার কেন যেন মনটা ভালো টেকছে নাহ।।আমার মেয়েটার কিছু হলো নাহ তো(কেঁদে দিয়ে)

নীড়ঃ নেশা স্টপ।।কেঁদো নাহ তুমি।।আমাদের প্রিন্সেস এর কিছু হয়নি।।আমি দেখছি।।প্লিজ তুমি কান্না করো নাহ।

নেশাঃ নীড় প্লিজ আপনি কিছু করুন😭

নীড়ঃ আমি এখনই তরীর কলেজে গিয়ে খবর নিচ্ছি।।তুমি চিন্তা করো নাহ

নীড় ফোন রেখে অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে বসে পড়লো।ড্রাইভ করতে করতে কথাকে ফোন দিলো।

নীড়ঃ মামনি তুমি কোথায়

কথাঃ আমি তো একটু হাটতে বের হয়েছি।।কেন রে কি হয়েছে

নীড়ঃ তুমি প্লিজ একটু বাড়ি যাও তাড়াতাড়ি।। আর গিয়ে নেশাকে সামলাও।।ও হয়তো কাদঁছে

কথাঃ কি হয়েছে??আর নেশা কাঁদছে কেন।।আর তুই বা কোথায়

নীড়ঃ এতো কিছু বলার টাইম নেই।।তুমি বাড়িতে যাও।।আমি বাড়ি এসে সব কিছু বলছি

কথাঃ আমি বাড়িতে অলমোস্ট চলে এসেছি।

নীড়ঃ ওকে নেশার দিকে খেয়াল রেখো আমি রাখছি এখন।

নীড় ফোন কেটে দিলো।নীড়ের কান্ডকারখানা সব কথার মাথার উপর দিয়ে গেল।।

নীড় খুব ভালো করেই জানে নেশা এখন কেঁদে কেঁদে অস্থির হয়ে যাবে।।তাই কথাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বললো।

নীড় সোজা কলেজে গেল।গিয়ে দেখলো কলেজ পুরো ফাঁকা।। ফাঁকা হওয়ারই কথা প্রায় ৫ টা বেজে গেছে।।দারোয়ান কে বলে গেট খুলে ভিতরে ঢুকলো।।আর খুব অবাক হলো।।কারন মেঘ কলেজের মাঠে হাটু গেড়ে বসে আছে।
নীড় ধীর পায়ে মেঘের দিকে এগোতে লাগলো।।কেন যেন নীড়ের ও এখন খুব অস্থির লাগছে ।। সত্যি কি তরীর কিছু হয়ে গেল।।যদি তার প্রিন্সেস এর কিছু হয়ে যায় তাহলে নেশাকেই বা কি জবাব দিবে নীড়।ভাবতেই এক অদ্ভুত অস্থিরতা সারা মনে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

নীড়ঃ মমেঘ ততরী কোথায়(কাপা গলায়)

চেনা মানুষের গলা শুনে মেঘ উপরের দিকে তাকালো।
নীড় মেঘকে দেখে অবাক হলো।।
মেঘ নীড়কে দেখেই উঠে নীড়কে জড়িয়ে ধরলো।

মেঘঃ মামা বৃষ্টি।। মামা বৃষ্টিকে পাচ্ছি নাহ।।কিছু করো মামা।।আমি অনেক খুঁজেছি।।বাট কোথায় পাচ্ছি নাহ।

কথাটা শুনে নীড় ও থ মেরে গেল।।
নীড়ের কোন জবাব নাহ পেয়ে মেঘ নীড়কে ছেড়ে তার দিকে তাকালো।

মেঘঃ মামা প্লিজ কিছু করো।।মামা(নীড় কে ঝাকি দিয়ে)

নীড়ের হুস আসলো।

নীড়ঃ মেঘ আমার প্রিন্সেস।। আমার প্রিন্সেস কোথায়।।ওকে তো খুঁজতে হবে।।মেঘ প্লিজ কিছু একটা করো

মেঘ বুঝতে পারলো নীড় এখন তরীকে খোঁজার অবস্থায় নেই।।তাই মেঘ পুলিশ কে ফোন করলো তরীকে খোঁজার জন্য।।

নীড়কে নিয়ে খান বাড়িতে পৌছালো।
নীড়কে দেখে নেশা দৌড়ে এলো।।

নেশাঃ নীড় তরী কোথায় ওকে তোমরা পেয়েছো।।নীড় আপনি কথা বলছেন নাহ কেন।।নীড়

মেঘঃ ফুপি তুমি শান্ত হও।।বৃষ্টি কে আমরা পেয়ে যাবো।তুমি একটু মিষ্টি নিয়ে মামা কে খাইয়ে দাও।।মামার সুগার ডাউন করেছে।।

নেশা মিষ্টি এনে নীড়কে একটু খাইয়ে দিলো।

মেঘঃ মামা তুমি কি এখন ঠিক আছো

নীড়ঃ একটু ভালো।।

নেশাঃ নীড় তরী🥺

মেঘঃ ফুপি পুলিশদের খবর দেয়া হয়েছে।। তারা খুঁজতে শুরু করেছে।

নেশাঃ বাট ও কেন এমন করলো।।আর কোথায় বা গেল।। রাত ১০ টা বেজে যাচ্ছে এখনো ওর আসার টাইম নেই।।তোমরা কিছু তো একটা করো।।পুলিশ এর উপর সব দায়িত্ব দিয়ে তো বসে থাকা যাবে নাহ😥

মেঘঃ ফুপি আমি যাচ্ছি সাথে।।তুমি মামাকে দেখে রাখো।।

মেঘ বাসা থেকে বেরিয়ে গেল।


এখন কথা হচ্ছে তরী কোথায়🤔

সেটা ও বলবো।।বাট😁

চলবে?