বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 48

আমান আর আবির কেবিনে চলে যায়,,,তিথি আর রিতু আগে থেকে কিছুটা সুস্থ,,,অনেক দিন তাদের মেডিকেল থাকতে হয়,,, রিতু আর তিথি অনেক গল্প করে এক সাথে,,, দুইজনে যেন তাদের ছেলেবেলা ফিরে পায়,,,প্রায় অনেক দিন মেডিকেলে থাকায় তিথির মাথা বিগড়ে যায়,,,তার মোটেও ভালো লাগছে না আর,,
তিথি রিমানের ছোট বল একটা নিয়ে খেলছে,,মুখ টা মলিন করে বসে বসে বাচ্চাদের মত খেলছে,,রিতু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে তিথি করছে কি,,,
রিতুঃ কি রে বাচ্চাদের মত বল নিয়ে খেলছিস কেন?
তিথিঃ আচ্ছা রিতু তুই কি রে বল তো?
রিতুঃ কেন আমি আবার কি করলাম?
তিথিঃ আমার কি মনে হয় জানিস?
রিতুঃ কি মনে হয় আমি কি জানি?
তিথিঃ যে তুই একটা মানুষ না,,তুই একটা গন্ডার যে রকম একটা জেল খানায় আছিস,,
রিতুঃ মাথা ঠিক আছে তোর কি সব বলছিস?এই টা জেল খানা কি ভাবে হ্যাঁ
তিথিঃ আমার মাথা ঠিক আছে হয়তো তোর মাথা গেছে এই পাওয়ারি ওষুধ খেয়ে খেয়ে,,,একটা জেল খানায় রেখে দিচ্ছে আমাদের,, আজ আসুক ওই হারামি ওকে আমি কাঁচা মরিচ দিকে কাক দিয়ে রান্না করে করে গাপুশ করে করে খাই,,,হুম বাদর একটা শয়তান ছেলে আমাকে এই খানে রেখে গেছে আমি ১০০% সিউর যে সে আমাকে ইচ্ছে করে এখানে রাখছে হুম
রিতুঃ এলিয়েন কি তোকে এমনি এমনি আমরা বলি হ্যাঁ
তিথিঃ হে হে তুই তো অনেক ভালো আর ওই হারামি তো আরো বেশি,,,
অই সময় আমান আর আবির কিছু খাবার নিয়ে আসে,,কেবিনে ঢুকতে শুনে তিথির গালাগালি,,,
আবিরঃ কি ব্যাপার আজ মিসেস এলিয়েন এতো ক্ষেপে আছে কেন,,
তিথি হাতের বল আবিরকে মেরে দিয়ে বলে
তিথিঃ ওই হারামি তুই আমাকে এই জেল খানাতে কেন রাখছিস হ্যাঁ 😠
আমানঃ নে আবির তোর এলিয়েন ক্ষেপেছে আমি মুভি দেখি একটু
আবিরঃ কিসের মুভি?
আমানঃ আরে মিসেস এলিয়েন আর মিস্টার বজ্জাত এর(খিলখিল করে আমান আর রিতু হেসে দেয়)
আবিরঃ কানের নিচে কষে কষে চড় দিবো ফাজলামি করছিস
তিথিঃ চড় দিয়ে দেখো তো আমার ভাইকে,
কাঁচা গিলে খাবো
আবিরঃ তিথি শুনো
তিথিঃ তুই শুন আমাকে এখান থেকে যদি নিয়ে না যাস আজ তাহলে আমি আজকে তোকে তেলাপোকার চাটনি বানিয়ে খাবো হুম
আবিরঃ আচ্ছা আমি ডাক্তার এর সাথে কথা বলবো
তিথিঃ ডাক্তার এর চৌদ্দ গুষ্টি কিল্লাই আমি
আবিরঃ ডাক্তার এর গুষ্টি কিল্লালে ম্যাডাম আরো এক মাস এখানে থাকতে হবে বড় বড় ইনজেকশন দিবে তারপর এতো গুলো ওষুধ হুম
তিথি ঢোক গিলে ভয়ে কান্না করে দেয়,,
তিথিঃ সবাই খারাপ সবাই (নাক টেনে টেনে কান্না করে)
আবির তিথির কাছে এসে বসে,,রিতু মুচকি হাসে,,আমান রিতুকে আসতে করে বলে
আমানঃ তুমি হাসছো?আর তিথি কান্না করছে মানে কি?
রিতুঃ আরে দূর নাটক করছে তিথি,,,আসলে ছোট থেকে ওকে আমি ছিনি জানো স্কুলে যখন সে হাতের কাজ না করে যেতো তখন ম্যাম যখন ওর সামনে যেতো প্রচুর কেঁদে দিতো আর বলতো ওর নাকি প্রচুর জ্বর ছিলো এই সেই,,ম্যাম ওর কান্না দেখে কিছু তো বলতো না,পরে তিথি পুরো ক্লাস উড়াই ফেলতো নেচে নেচে,,,
আমানঃ হাহা প্রচুর ফাজিল তো এই তিথি,,
রিতুঃ কত ফাজিল তা তো দেখো নাই আমি ওর এই সব এর জন্য যে কত টুকু আমাকে বিপদে পড়তে হয়ছে আমি জানি,,,
আবিরঃ তিথি আমার লক্ষিটি প্লিজ কান্না অফ করো প্লিজ
তিথিঃ হয়ছে আর আদর দেখাতে হবে না,,,আমাকে সব সময় কান্না করায় সব সময়
আবিরঃ কিই আমি কান্না করাই তোমাকে?
তিথিঃজ্বি হে এখন আর নাটক করিয়েন না হু
আবিরঃ আচ্ছা কি করতে হবে বলো?
তিথিঃ সিউর তো?
আবিরঃ হ্যাঁ সিউর,,

তিথিঃ প্রমেস
আবিরঃ ওকে প্রমেস
তিথিঃ আমার শর্ত হলো আপনি এখন ডান্স করবেন
আবিরঃ কিইইইইইইই?পাগল নাকি
তিথিঃ প্রমেস করেছিলেন ওকে শুধু আপনি না আমান ভাইও হুম
আমানঃ আরে তিথি আমি কি দোষ করেছি যে আমাকে এই শাস্তি পেতে হচ্ছে,,,
তিথিঃ অনেক হাসি পাচ্ছিলো আপনার তাই না ভাইয়া,,এইবার আপনি ও আসুন
রিতুঃ একদম ঠিক কাজ করেছিস,,,উচিত শিক্ষা হয়েছে,,যাও যাও আমান সামনে গিয়ে ডান্স শুরু করো
আমান রাগী লুক নিয়ে রিতুর দিকে তাকিয়ে বলে
আমানঃ তোমাকে আমি দেখে নিবো হুম
রিতুঃ ও তা দেখে নিয়ো বাসায় গিয়ে এখন যা বলা হয়ছে তা করো,,,
আবিরঃ তোতাপাখি দেখো এইটা মেডিকেল প্লিজ
তিথিঃ প্রমেস করেছিলেন ওকে এখন তোতাপাখি কাক পাখি,ময়না পাখি সব পরে বলিয়েন এখন চুপচাপ তা করেন যা বলছি,,,
আবির আর আমান বেচারা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে,,,মুখ টা বানিয়ে সামনে যায় একটু,,
রিতুঃ আচ্ছা কি গানে নাচবে ওরা তিথি
তিথিঃ হুম তাই তো,,ওয়েট ওই বজ্জাত শুনেন আপনার ফোন দেন
আবির রাগী লুখ দিয়ে ফোন দেয়,,
তিথিঃ মুখে হাসি রাখুন যদি এই রাগ মুখে দেখি না তাহলে আবার নাচাবো মনে রাখিয়েন হুম
আবিরঃ বদমাশ মেয়ে একটা কপালে জুটেছে (আসতে করে)
তিথিঃ কিছু কি বলেছিলেন?
আবিরঃ জ্বি না ম্যাম
তিথিঃ না আমি কিছু শুনার আওয়াজ পাইছি তাই
আবিরঃ এলিয়েনরা সব পায়,,,
তিথিঃ হু হয়ছে,,আমি গান ডাউনলোড করে নেই দাঁড়ান,,
আমান আবিরের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
আমানঃ ভাই কি গান দিবে কে জানে,,মান সম্মান সব খাইতেছে এই মেয়ে,,
আবিরঃ যা আরো জোরে জোরে হাস,,
আমান আর আবির মুখে হাত দিয়ে হাতের আঙুল চাবাচ্ছে এই ভেবে যে তিথি কি গানে তাদের নাচতে দেয়,,
তিথি একটা গান ডাউনলোড করে আর জোরে বলে
তিথিঃ ইয়েস এই গানে আপনি ডান্স করবে ইয়াহুউউ
রিতুঃ কি গান শুনি,,
তিথিঃ এহেম এহেম আপনারা দুইজন রেডি হন আমি গান বাজাচ্ছি,,
Laila main laila aisi hoon laila
Har koi chahe mujhse milna akela
আবিরঃ কিইইই?
আমানঃনাআয়ায়ায়ায়া
রিতুঃ ইয়েএসসসস
তিথিঃ চুপ দুইজন নাচ শুরু করা হোক হু
তিথি একটু চুল গুলো সরিয়ে ভালো করে বসে বলে
তিথিঃ কি ব্যাপার দাড়িয়ে আছেন কেন হ্যাঁ
আবিরঃ আমাদের ইজ্জতের ফালুদা করতে কি ব্যস ভালো লাগে তোমার হুম
তিথিঃফালুদা থেকে মনে পড়ছে লাউয়ের ফালুদা কিন্তু হেবি ট্যাশ উফফ মুখে পানি এসে যাচ্ছে
আমান আর আবিরঃ ইয়াক
তিথিঃ এখানে ইয়াক এর কি আছে হ্যাঁ
আবিরঃ এই সব পাও কই তুমি
তিথিঃ আপনারা দুইজন এই শর্তে থেকে বাঁচতে পারেন
আমান আর আবির অনেক খুশি হয়ে তিথির কাছে গিয়ে বসে,,,মুখে দুইজনের হাসি
আমানঃ কি বলো আমরা রাজি
আবিরঃ হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা রাজি
তিথিঃ আরে আরে আগে শুনেন তারপর না হয় লাফালাফি করিয়েন,,
আবিরঃ তাও কথা তুমি যে মেয়ে এতো সহজে তো আর,,,
তিথিঃ মানে?(ক্ষেপে গিয়ে)
আমানঃ আবির চুপ কর তো তিথি তুমি বলো
রিতু তো মজা নিচ্ছে এই সব দেখে,,,,
তিথিঃ আলুর পায়েস,মুলার ভর্তা,কেঁদে চাটনি,,,টমেটোর ফালুদা,,,ব্যাঙের রোষ্ট,,,কাঁকড়া ফ্রাই,,ইঁদুরের কোরমা,,,ছোট ছোট পোকার নুডুলস,,,আর কেঁচো বেরানি খেতে হবে,,,
তিথি এই সব বলছে আর এই দিকে আমান,আবির বমি করতে করতে শেষ আর রিতুও,,,
তিথিঃ আমি তো ভালো খাবার বললাম আর এরা দেখি দূর
নার্স দৌড়ে আসে এসে দেখে এই অবস্থা,,,, আমান আর আবিরকে একটা কেবিনে রাখা হয় ওই খানে ওদের সেলাইন দেওয়া হয় কারণ ওরা প্রচুর পরিমাণ বমি করে,,
রিতুঃ তুই আসলে একটা এলিয়েন
তিথিঃ আমি কি করলাম আজিব
রিতুঃ ওরা এসেছে আমাদের দেখতে আর এখন ওরা নিজে মেডিকেলে ভর্তি,,,
তিথিঃ স্বামীদের দায়িত্ব স্ত্রীদের পাশে থাকা বুজলি তাই তো ওরা ওই পাশের কেবিনে ভর্তি,,
রিতুঃ আমি কাকে কি বলছি উফফ,,,
তিথিঃ তোকে কে বলতে বলছে হু,,,
রিতুঃ মানুষ কবে হবি হ্যাঁ
তিথিঃ যেদিন মঙ্গল গ্রহ থেকে একটা এলিয়েন আসবে আর তাকে দেখবো ওই দিন,,
রিতুঃ আয়নার সামনে যা তাহলে দেখতে পারবি এলিয়েন
তিথিঃ হু,,,

এইদিকে আমান আর আবির শুয়ে আছে বেচারা দুইটা খাবার নিয়ে আসছে তাদের বউদের আদর করে খাওয়াবে আর নিজে খাবে তাদের এখন সেলাইন দিয়ে শুয়ে থাকতে হচ্ছে,, মেডিকেলে ভর্তি হতে হয়ছে,,
পরিবারের সবাই আসে,,,মা তো প্রচুর ক্ষেপে যায়,,,
মাঃ আবির আমান তোরা ওদের দেখতে এসে নিজেরা ভর্তি হলি?কত বার বলেছি বাহিরের খাবার খাইস না এখন দেখ তো বমি করে করে লম্বা হয়ে শুয়ে আছিস
আমানঃ ছোট মা আমরা বাহিরে কিছু খাই নাই
মাঃ তাহলে কি খেয়েছিস যে এমন অবস্থা দুইটার
আবিরঃ তোমার আদরের মেয়ের জন্য আজ এমন অবস্থা
বাবাঃ তিথি আবার কি করছে
মাঃ শুনো তিথি কিছু করে নাই,তোমার ছেলে সব সময় আমার মাসুম মেয়েটার উপর উল্টো পালটা দোষ চাপায়,,
আবিরঃ বাহা বাহা আজকাল আমাকে ও বিশ্বাস করো না,,(কান্না সুরে)
মামানিঃ আমি জানি এই সব তিথির কাজ,,ও ছাড়া এমন কেউ করতে পারে না,,
আমানঃ রাইট আন্টি আজকে তুথি আমাদের এমন এমন খাবার এর নাম বলছে যে আমরা দুইভাই আজ এখানে ভর্তি
মাঃ কানের নিচে কষে চড় লাগাবো ফাজিল দুইটা আমার মেয়েটা এমনি অসুস্থ আর তোরা
মামানিঃ ভাবি ওদের কেন বকছেন তিথি কেমন আমার জানা আছে,,অই মেয়ে এমন ছোট থেকে কত বার তো আমিও বমি করছি ওর এমন কথা শুনে,,খেতে বসে এই সব বলতো আর খেতো
আমানঃ ইয়াক আমি নাম শুনে এমন অবস্থা আর সে বলে বলে খেতো আবির ভাই অল দ্যা বেস্ট সত্যি এলিয়েন তোর বউ
আবিরঃ(একবার সুস্থ হও মিস তিতা এলিয়েন তারপর বুজাবো মজা,,)
মাঃ আচ্ছা তোরা শুয়ে থাক সেলাইন শেষ হতে আরো সময় আছে আমরা তিথিকে দেখে আসি,,
বাবাঃ আমি পরে আসছি একটু ওদের সাথে কথা বলি
আবিরঃ ছেলের দুঃখ ছেলেই বুজে মেয়েরা তো আস্তা একটা শয়তান এর আম্মা,,,
মাঃ কি বললি তুই
আবিরঃ কই না আমি তো বলেছি মেয়েরা কত দয়ালু কত মহান
মাঃ সুস্থ হয়ে নে বাদর ছেলে তারপর বুজবি মজা
আমানঃ ভাই রে আমাদের দুঃখ আর কেউ বুজবে না আজ অসহায় বলে,,
এইদিকে তিথি বাদাম খাচ্ছে আর আবিরের ফোনে টম এন্ড জেরি দেখছে,,,রিতু একটা বই নিয়ে পড়ছে,,,
মা ও মামানি বড় মা ভিতরে আসে দেখে তিথি হাসতে হাসতে শেষ আর বাদাম মুখে দিচ্ছে একটার পর একটা
বড় মাঃ এই মেয়েকে দেখে বুজা যাচ্ছে না যে সে অসুস্থ আর তার বর পাশের কেবিনে সেলাইন দেওয়া অবস্থা
মামানি মাথা নিচু করে রাখে কথাটা শুনে,,মা বলে উঠে
মাঃ ভাবি আপনি ও কি বলছেন তাহলে কি আমার মেয়ে এখন কান্না করবে আজিব,,ওরা ওদের দোষে আজ ভর্তি মেডিকেলে আমার মেয়ে কি করবে এখানে
তিথি তাকিয়ে দেখে মা,,ফোন টা রেখে মাজে ডেকে উঠে
তিথিঃ আম্মু

মা তিথির পাশে যায় তিথি জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ মিস ইউ আম্মু
মাঃ মিস ইউ টু বাচ্চা (কপালে চুমু দিয়ে)
মামানিঃ বাদর মেয়ে আবির আর আমানকে এমন কেন করেছিস হ্যাঁ আজ তোর জন্য ওরা দুইজন সেলাইন দিয়ে শুয়ে আছে
তিথিঃ আরে মামানি ওদের ভিটামিন এর অভাব তাই বমি করছে,,
রিতু হেসে দেয় আবার সবাই কে দেখে চুপ করে যায়,,মামানি রাগী লুক দিয়ে তাকায়, মা ও হাসে বড় মা ও,,,
এইদিকে আমান আবির বেচারা দুইটা তাদের দুঃখের কথা বাবাকে বলছে কিছু ক্ষন পর বড় বাবা ও আদে চার জন ছেলে মিলে তাদের দুঃখ শেয়ার করছে আর এই দিকে তিথি মাকে জড়িয়ে ধরে একটা একটা বলছে মামানি তো রেগে আগুন,মা ঈ বড় মা রিতু হাসছে,,
চলবে,,,,,