বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 46
তিথির হাত পা সব কাঁপতে থাকে ভয়ে কি করবে,,,,বাসায় আমান আর আবির ও নাই যে রিতুকে নিয়ে দৌড়ে মেডিকেল যাবে,,,বাবা দৌড়ে আসে আর অপেক্ষা করে না কিছুর জন্য রিতুকে কোলে নিয়ে তাড়াতাড়ি গাড়িতে নিয়ে মেডিকেল নিয়ে যায়,,তিথি বাড়ির সবাই ও যায়,,,
এই দিকে আমান আর আবির অনেক দিন পর একটা পার্কে আসে,,,অনেক সুন্দর জায়গা টা,,,আবির দুইটা আইসক্রিম নিয়ে আসে,,,আমান আইসক্রিম টা নিয়ে বলে
আমানঃ মনে আছে ছোট বাবার সাথে আমরা এই খানে প্রতি দিন বিকালে আসতাম,,খুব মজা হতো তখন
আবিরঃ হুম ছোট বেলার কাহিনী তো ভুলার নয়,,,সব সময় আমরা খেলতাম মজা করতাম,,,মনে আছে অই যে রিয়ার কথা
আমানঃ হাহা হুম মনে আছে রিয়ার কথা,,এখন দুই ছেলের মা,,
আবিরঃ হুম তোর হতো আর কি হাহা
আমানঃ হ্যাঁ মনে আছে কলেজে সবার সামনে আমাকে প্রোপজ করেছে
আবিরঃ অনেক লাভ করতো তোকে
আমানঃ আমি তো করতাম না,,ওর জন্য আমার মনে এমন কোনো ফিলিংস ও ছিলো না যা রিতুর জন্য আছে,,,আমি যেমন রিতুর জন্য ফিল করি ওকে ভালোবাসি,,ওর জন্য অনুভূতি,,,সব কিছু শুধু রিতুর জন্য আসে আর কখনো এমন কিছু হয় নাই অন্য কারো জন্য
আবিরঃ বাহা তাহলে তো বুজা যায় আমার ভাই মজনু হয়ে গেছে
আমানঃ হাহা তুই ও তো,, তুমি যেমন তিথিকে ছাড়া অসম্পূর্ণ সেম আমিও রিতুকে ছাড়া,,,মেয়েটা অনেক কষ্ট পাইছে জীবনে আমাকে কখনো বলতো না কিন্তু ওর চোখের দিকে যতবার তাকাতাম তোত বার ওর কষ্ট গুলো ভেসে উঠতো রিতুর চোখে,,,
আবিরঃ হুম জানি যা ওর সাথে হয়ছে তা হয়তো কখনো আমরা তার বরতি করতে পারবো না,,সব কিছু আমার জন্য হয়েছে আমান
আমানঃ আরে দূর কিসের তোর জন্য
আবিরঃ শিহাব তো আমার উপর প্রতিশোধ নিতে তিথিকে পেতে সে এমন করেছে মাঝ খানে রিতুর লাইফটা শেষ করে দিলো ওর ফ্যামিলি সব কিছু কেড়ে নিলো
আমানঃযা হয়েছে তা ভালোর জন্য আল্লাহ আমার ভাগ্যে আমার রিতু রেখেছে তাই,,আর আমি হেপ্পি
আবিরঃ হুম বুজছি এখন খেয়ে নে
আমান আর আবির তাদের কথা বলতে থাকে,,অনেক ক্ষন পর আবিরের ফোনে কল আসে ফোন হাতে নিয়ে দেখে নিয়ার মা বিরক্তি ভাব নেয়
আমানঃ কে করলো কে যে তুই ফোন ধরছিস না
আবিরঃ নিয়ার মা বাদ দে
আমানঃ ধর হয়তো ইম্পর্টেন্ট কথা আছে তাই কল দিচ্ছে
আবির আমানের কথায় ফোনটা ধরে
নিয়ার মাঃ আমি তোমায় কত কল দিচ্ছি কেন ধরছো না আবির
আবিরঃ কি বলবেন বলেন তাড়াতাড়ি
নিয়ার মাঃ প্লিজ তিথিকে বাঁচাও নিয়ার বাবা কিছু লোক ভাড়া করে তিথিকে মেরে ফেলার জন্য প্লিজ ওকে বাঁচাও
আবিরঃ কিইইই কি বলছেন এই সব
নিয়ার মাঃ আবির তারা অনেক আগে গেছে প্লিজ তিথিকে বাঁচাও
নিয়ার মায়ের কথা শুনে আবির প্রচুর ঘাবড়ে যায়,,ভয়ে গলা শুকিয়ে যায় এই ভেবে তিথি ঠিক আছে তো,,
আমানঃ কি হলো তুই চিন্তিত যে
আবিরঃ নিয়ার বাবা কিছু লোক ভাড়া করে তিথিকে মেরে ফেলার জন্য,,
আমানঃ বাসায় কল দে তাড়াতাড়ি দেখ ওরা কই তিথি কেমন আছে
আবির বাসায় কল দেয় কেউ ধরে না আবিরের বুক ধুপধাপ করে শব্দ করছে ভয়ে,,,গাড়িতে উঠে বসে আমান রা আবির,,আমান ড্রাইভ করে আর আবির কল দিয়েই যাচ্ছে তখন সীমা এসে কল টা ধরে আবির ধমক এর সুরে বলে
আবিরঃ কল ধরতে এতো ক্ষন লাগে
সীমাঃ ছোট সাহেব আপনি
আবিরঃ তিথি ওকে ফোন দাও
সীমাঃ আ,,সলে সবাই মেডিকেল কিছু লোক এসেছে আর,,,
আবিরের হাত থেকে ফোন পড়ে যায়,,,ভয়ে আমানকে বলে
আবিরঃ আমান মেডিকেল তিথি
আমান মেডিকেল এর দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়,,দূরে যাত মেডিকেল এর ভিতর আমান ও পিছনে পিছনে যায়,,,
তিথি কান্নায় ভেঙে পড়ে,,,মামানি মা তিথিকে শান্তনা দেয়,,,
তিথিঃ আমি যদি না যেতাম তাহলে ওরা কখনো রিতুকে মারতো না,,,ওরা আমার রিতুকে কেন মারলো মা,,এতো বছর পর তো ওকে ফেলাম
আবির দৌড়ে আসে বাবাকে মাকে মামানিকে ওদের দেখে আবিরের বুকটা মুচড়ে উঠে,,,তাদের ভিড়ের মাঝে তিথিকে দেখে কলিজায় যেন পানি আসে,,,
তিথিকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ আল্লাহর কাছে লাক্ষ লাক্ষ শুকরিয়া যে তুমি ঠিক আছো,,
তিথি কান্না করতে থাকে,,,আবিরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,আবিরের হুশ আসে যে সবাই মেডিকেলে,,আমান তিথিকে ঠিক দেখে খুশি হয়,,,
আমানঃ যদি তিথির কিছু না হয় সে ঠিক আছে তাহলে মেডিকেলে কেন সবাই আর তিথি এই ভাবে কেন কান্না করছে?কি হয়েছে তাহলে
আবিরঃ হ্যাঁ তিথি তুমি কান্না করছো কেন কি হয়েছে
তিথিঃ রি,,,তু
আমান এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে
আমানঃ রিতু কি তিথি?
তিথিঃ আ,,মি আর রিতু আমার রুমে গল্প করছিলাম রিমানকে কাপড় চেঞ্চ করতে আমি রুম থেকে বের হই এসে দেখি কয়েকজন লোক রিতুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে
আমান একটু পিছনে যায়,,,আমান নিচে বসে পড়ে ভেঙ্গে পড়ে সে রিতুর অবস্থা শুনে,,,আবির আমানকে তুলে ধরে,,,আমান আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে
আমানঃ ভাই আমার রিতুর সাথে কেন এমন,,,মেয়েটা আর কত কষ্ট পাবে,,,আমি কি ভাবে বাঁচবো ওকে ছাড়া,, কি ভাবে আমি আর রিমান ওর কিছু হলে থাকবো বল
আবিরঃ কিছু হবে না রিতুর,,,বেস্ট এর চেয়ে বেস্ট ডাক্তার আনবো কিছু হতে দিবো না আমি ওর,,,,,
আমানঃ তিথি রিতু কই
তিথিঃ আই সি ইউ তে ভাইয়া
সবাই অপেক্ষা করে বাহিরে,,,তিথি কান্না করতে থাকে আমানের চোখের পানি যেন আজ আটকে রাখতে পারছে না,,,
কিছু ক্ষন পর ডাক্তার আই সি ইউ থেকে বের হয়ে আসে,,সবাই এগিয়ে যায়
আমানঃ আমার রিতু কেমন আছে ও ঠিক হয়ে যাবে তো? প্লিজ ডাক্তার প্লিজ আমার রিতুকে বাঁচিয়ে দেন,,
ডাক্তারঃ দেখুন এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না কারণ উনার প্রচুর রক্ত ঝরেছে,, ছুরির আঘাত লাগায় উনার কিডনি দুইটা নষ্ট হয়ে যায়,,ছুরির আঘাত প্রচুর করে যা পুরো কিডনির উপর পড়ে,,,উনার দুইটা কিডনি নষ্ট হয়ে যায়,,
সবাই থমকে যায়,,,,আমান পড়ে যাচ্ছে আবির আকড়ে ধরে
আবিরঃ ডাক্তার এখন
ডাক্তারঃ দেখুন উনার অবস্থা বেশি খারাপ,,,,কিডনি প্রয়োজন একটা হলে ও,,,একটাতে উনাকে বাঁচানো যাবে,,যদি না কিডনি না পাওয়া যায় তাহলে রিতুকে বাঁচানো অসম্ভব না
আমানঃ ডাক্তার আমি কিডনি দিবো আমার কিডনি নেন আর বাঁচান প্লিজ আমার রিতুকে বাঁচান
ডাক্তারঃ দেখুন উনার সাথে মিলতে হবে কারণ উনার সাথে যদি না মিলে তাহলে কখনো সসম্ভব না,,আপনার রক্তের গ্রুপ কি?
আমানঃ আমার তো এবি পজিটিভ আর রিতুর এ+ পজেটিভ তাহলে
কারো এ+পজেটিভ রক্ত না,,,সবাই অনেক চিন্তিত তখন তিথি বলে উঠে
তিথিঃ আমার এ+পজেটিভ,রিতু একবার আমায় রক্ত দেয় কলেজ থাকতে আমার ছোট একটা এক্সিডেন্ট হওয়ায়,,,প্লিজ আমার কিডনি একটা রিতুকে দেন প্লিজ ডাক্তার তবুও আমার রিতুকে আমার বেস্টুকে আমায় ফিরিয়ে দেন,,
ডাক্তারঃ দেখুন রক্ত এক হলে তো হয় না কিডনি যদি না মিলে,,,
তিথিঃ প্লিজ ডাক্তার আপনি আমার টা পরীক্ষা করে দেখেন দেখবেন ঠিক মিলবে তবুও আমার রিতুলে বাঁচান প্লিজ ডাক্তার
আবির কিছু বলে না ভয়ে অবশ্যই সে শেষ কিন্তু রিতুর জীবন বাঁচানো ও ইম্পর্টেন্ট,,,,
তিথিঃ ডাক্তার এক কিডনিতে তো বেঁচে থাকা যায় তাই না আমার তিতুও বাঁচবে তাহলে আমিও বেঁচে থাকবো প্লিজ ডাক্তার অল বাঁচিয়ে দেন,,
ডাক্তারঃ ওকে চলুন আমার সাথে
তিথি ডাক্তার এর সাথে চলে যায়,,কিছু ক্ষন পর ডাক্তার এসে বলে
ডাক্তারঃ মিসেস আবির রহমান এর সাথে মিসেস আমান রহমান এর কিডনি মিলে,,,,এখন অপেরশন করা হবে আপনাদের মধ্যে কেউ উনার সাথে দেখা করে আসতে পারেন,,,
আবির একটা রুমে যায়,,অই খানে তিথিকে চেমচ করিয়ে রাখে,,তিথি আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ রিতু ঠিক হয়ে যাবে তো
আবিরঃ তোমার মত বন্ধু থাকলে ঠিক কেন হবে না,,যে নিজের চিন্তা মা করে তার চিন্তা করছে আজ তোমার জন্য আমার মনে অনেক সম্মান জমেছে তিথি,,,কিছু হবে না কারো দেখো
আমান ও আসে আমানকে দেখে আবির সরে যায়,,
তিথিঃ কিছু হবে না ভাইয়া রিতুর কিছু না,,,
আমান ঝাপ্টে তিথিকে জড়িয়ে ধরে,,
আমানঃ কি বলবো বুজছি না আমি,,আমার রিতুর জন্য যা তুমি করছো তার জন্য আমি আজীবন তোমার কৃতজ্ঞ থাকবো,,,
তিথিঃ কি বলছেন এই সব,,রিতু আপনার বউ যেমন তেমন আমার বেস্টু বোন আমার সব,,ছোট থেকে ওকে আমি আগলে বেঁচে ছিলাম,,আমার বোন সে প্লিজ ভাইয়া কান্না অফ করুন সব ঠিক হবে,,
একটা নার্স আসে
নার্সঃ সময় হয়েছে চুলন মিসেস তিথি
তিথিকে নিয়ে যাওয়ার সময় আবির শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে,,তার মন মানছে না তার তোতাপাখিকে ছাড়তে,,,,ভয়ে কুকড়ে উঠে তার বুক,,,
নার্সঃ তাড়াতাড়ি চলুন
তিথি আবিরকে একটু সরিয়ে মুচকি হেসে বলে
তিথিঃ কিছু হবে না,,
আবির তিথির কপালে আলতো করে চুমু দেয়,,,তিথিকে নার্স নিয়ে যায় অপেরশন রুমে,,এক সাথে দুইজন আজ আই সি ইউ তে,,সবার অবস্থা খুব খারাপ,,, তাদের পরিবারের দুইজন এক সাথে আই সি ইউ তে ভয়ে সবার তো যেন বুক ফেটে যাচ্ছে,,
এই দিকে আমান ভেঙ্গে পড়ে রিতুর অবস্থা আর আবিরো ভেঙ্গে পড়ে তিথির জন্য,, দুইজনের দুখ হাসি সব কিছু ওই আই সি ইউর ভিতরে,,, আজান দিচ্ছে ওই সময় মাগরিবের আমান আর আবির বাবা ওরা তাড়াতাড়ি মসজিদে চলে যায় অযু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়,,এই দিকে মা আর মামানি মেডিকেলর পাশে মেয়েদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা আছে সেখানে নামাজ পড়ে,,
তিথিকে রিতুর পাশে আনা হয়,রিতুর দিকে তাকিয়ে আছে তিথি,,তিথিকে এখনও ইনজেকশন দেওয়া হয় নাই বেশুর,,তিথি রিতুর হাত ধরে বলে
তিথিঃ কিছু হবে না তোর,,আমাদের রিমান এর দুই মা তার কাছে ফিরে যাবে,,কিছু হবে না তোর কিছু না,,
তিথিকে বেহুঁশ এর ইনজেকশন দেওয়া হয়,,অপেরশন শুরু হয়,,
সবার প্রার্থনায় আজ রিতু আর তিথি,,,সবাই দোয়া করছে তাদের রিতু আর তিথি যেন তাদের কাছে সুস্থ ভাবে ফিরে আসে,,এই দিকে রিমান প্রচুর কান্না করছে সীমা একদম রাখতে পারছে না হয়তো তার মনে জানা হয়ে গেছে তার দুই মা আজ মৃত্যুর মুখে,,,
চলবে,,,,,,,,