Psycho is Back !! Part- 20
–তুমি??
—-হুম আমি।।সারপ্রাইজ হচ্ছো?
—–মোটেও না বাট বিরক্ত হচ্ছি।।বলে পাশ কাঁটিয়ে চলে যেতে নেয় ইউসুফ।। তখনি তার হাত খপ করে ধরে ফেলতেই ইউসুফ তার হাত ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগে,,
—-ডোন্ট টাচ মি?? ডোন্ট ড্যার তানহা।।আঙ্গুল উঁচু করে বললো।।
—–আমাকে কি আর একটা সুযোগ দেয়া যায় না।।
—-নাহহহ!! একটা মানুষ কে কয়বার সুযোগ দেয়া যায়? একবার, দুবার, নয়ত তিনবার।।আর তোমাকে আমি হাজার বার সুযোগ দিয়োছি??
—–প্লিজ আর একটা সুযোগ।।তুমি তো আমাকে ভালবাসো তাই না।।প্লিজ!!!বলে আবার জড়িয়ে ধরলো তানহা।।
ইউসুফ তখন ঝাটকা মেরে ফেলে দেয় তানহাকে।।
যার ফলে তানহা ছিটকে কিছুটা দূরে গিয়ে পরে যেতে নেয় কিন্তু সামলে নে নিজেকে।।
আর ইউসুফ বলে উঠে,,
—-ভালবাসতাম,, কিন্তু এখন ভালবাসি না।।বুঝেছো??এসব কিছু তোমার জন্য হয়েছে।।তুমিতো মুক্তি চেয়েছিল,,দিয়ে ছিলাম মুক্ত করে তোমায়।।তো কেন আবার ফিরতে চাইছো!!!ওহো তোমার সো কল্ড বয়ফ্রেন্ড তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে?? হুম!!
—–ইউসুফ আমি জানি আমি খুব বড় ভুল করেছি।।আমি ক্ষমা চাইছি।।আমি সত্যি বুঝতে পেরেছি,,, তুমি ছাড়া আমি অচল,, তোমার মতো কেউ ভালবাসবে না আমাকে!! প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও।।কাঁদতে কাঁদতে বলল তানহা।।
কিন্তু ইউসুফের মন গলছে না বরং জমে থাকা রাগ গুলো সব মাথায় চেপে বসচ্ছে।।
সে দাঁতের চোয়াল শক্ত করে বলে উঠে,,
—-লিসেন তানহা!! আগের সেই ইউসুফ হলে,,যে তোমার ভালবাসায় একটাইমে পাগল ছিল,, তাহলে হয়তো তোমার এই ন্যাকা কান্না দেখলে গলে যেত।।বাট এখন যে ইউসুফ দাড়িয়ে,, সে তোমাকে বিন্দুমাত্র সহ্য করতে পারে না।।কারণ তোমাদের মত মেয়েদের ছ্যাছড়ামী স্বভাব, কখনো ঠিক হবে না।।আর রইলো ভালবাসা?? তা সেই এক বছর আগে তোমার সাথে কবর দিয়েছি।।আর হে আমার লাইফে যেমন মেয়ে চাইতাম, স্বপ্ন দেখতা, তার নখের সমানো তুমি নই!! আমি যেমনটি চাই তাম, যা তোমার মাঝে খুজঁতাম!! তেমন মেয়ে আমি পেয়েছি।।আর ও তোমার থেকে শত গুনে ভাল আছে।।সো গো টু হ্যাল।।বলেই সামনের দিক আগাতে নেয়।।তখনি তানহা চেঁচিয়ে বলতে লাগে,,
—-হে ঠিক!! হতে চাইও না তোমার সেই মেয়ের মতো!! কারণ আমি তো আর বাবা-মা ছাড়া নই!!
ইউসুফের পা থেমে গেল।।সে ভ্রুকুটি কুঁচকে বলে উঠে,,
—-মানে!!
এবার তানহার ঠোঁটে বাঁকা হাসি,,
—–মানে!! কেন তুমি জানো না!! তোমার সেই স্বপ্নের মতো মেয়ের খবর,,, বলে তাচ্ছিল্যের হাসি দিল।।
—–যা বলার সাফ সাফ বলো!!
—–ও বেবী,, যাকে তুমি দ্বিতীয়বার ভালবাসতে শুরু করেছো তার সম্পর্কে জানো তো??
—–জানব না কেন সে আমার ফুফাতো বোন কুহু!!
কুহুর নামটি শুনে তেলে বেগুনে জলে উঠে তানহা আর বলতে লাগে,,,
—-কত তাজ্জব বিষয়,, তাই না!! দ্যা ওয়ান এন্ড অনলি স্টার ইউসুফ, সে ভালবাসে এমন এক মেয়েকে যে পিতৃত্ব হীন, যার জানাই নেই সে কার মেয়ে,, যার নিজের কোনো পরিচয় ও নেই,, যাকে সমাজ বলে,, জারজ,,নাজায়েজ।। হাহ্হহ।। সো ফানি!!
ইউসুফের এটি শুনে যেন মাথা আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।।কি বলছে এসব।। সব কিছু তার এলো মেলো লাগছে,, তজরপর ও নিজেকে সামলে বলে উঠে ,,,
—-ওর নাম, পরিচিতি দিয়ে আমার কিছু যায় আসে না,, দরকার হলে, সে তার নামেই বাঁচবে,, বা আমার নামে,,।। বলে চলে যেতে নে তার পর আবার ফিরে এসে,, তাহনাকে বলে,
—-ও যদি কোনো পতিতালয় থেকে উঠে আসতো না..!! তাও আমি তাকে একি রকম ভাবে ভালবাসবো।।বলে হন হন করে চলে যায় ইউসুফ।।
আর তানহা এতো অপমান সহ্য করতে না পেরে মাটি বসে নিচের চুল ছিড়তে লাগলো।।আর চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো।।
_____________________________________________★
নানুমা ধীরে ধীরে চোখ খুললেন।।আর চারপাশে চোখ বুলালেন।।তখন বেহুঁশ হওয়ার পর তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।।জ্ঞান না ফিরায় ডাক্তার ডাকা হয়।।তিনি ধীরে ধীরে বসে পরেন,, সামনে তার ছেলে, ছেলের বউ, তার নাতি-নাতনী বসে।।
কুহু তার নানুমার হাত ধরে বসে।।তার ছেলে, আর ছেলের বউ হাজার প্রশ্ন চোখে তাকিয়,,
এবার না পাড়তে তিনি মুখ খুলে বলতে লাগলেন,,,
—–সে বার কায়নাত ভার্সিটি পাশ করে বের হয়ে,, ঢাকা আসে চাকরির জন্য।। সেখানেই থাকার জন্য তার বান্ধুবির সাথে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে ওঠে।। ভাল চলছি সব।।তখন তোরা বিদেশে থাকিশ,, তখন মাত্র তুই সেখানে নিজের বিজনেস দাঁড় করিয়েছিস,, আর এখানে পাওনাদারের টাকা শোদ করতে হিমশিম খাচ্ছিলাম তোর পাঠানো টাকা দিয়ে।।তোকে চাপ ও দিতে পারছিলাম না তখন।।তাই বাধ্য হয়েই কায়নাতকে ছাড়ি একা।। সেটাই যেন হয়েছিল ভুল।।বলে তিনি কিছুক্ষন থামলেন তারপর আবার বলতে লাগলেন,,
কিছু মাস ভালই কাঁটছিল, তখন তোরও বিজনেস এর সফলতা আসতে লাগলো,, পাওনাদারের ঝামেলা মিটে গেল।।তাই ভাবলাম আমি নিজে গিয়ে এবার কায়নাতকে নিয়ে আসবো,, আর চাকরি করতে দিব না।।এবার বিয়ে দিয়ে ফরজ কাজ আদায় করব।। কিন্তু তা যেন আর হলোই না।মপরের দিন খুব ভোরে বাসার ডোরবেল বেঁজে উঠে,, যেয়ে দেখি কায়নাত এসেছে,, দেখতে কেমন যেন বিধ্বস্ত লাগছে,, উস্কোখুস্কো চুল,, শুকনো মুখ, চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে তার,, মনে হচ্ছিল কত রাত জানি নির্ঘুমভাবে কেঁটে গেছে তার।।এসব দেখে বুকটা আমার ধক করে উঠে।।আমাকে দেখে কায়নাত জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে,,
তখন কায়নাত,, ওকে আমরা খুব কম কান্না করতে দেখেছি।।সে কান্না করতে করতে এক পর্যায় বেহুঁশ হয়ে যায়।।আমি এঁকা মানুষ, কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না,, কাজের মেয়েটিকে দৌড়ে পাশের বাসায় একটি ভাবি থাকতো,, তিনি আবার ডাক্তার ছিলেন,,তাকে ডাকতে পাঠাই।।উনি এসে কায়নাত দেখে চিন্তিত সুরে বললেন,,
—–আপা আপনার মেয়ে কি ম্যারেড?
—–না আপা।।
—–ওতো প্রেগন্যান্ট।।
—–কি বলছেন,,??
—–জি আমি ঠিক বলছি,, আর ওই নাওয়া, খাওয়া একদম বন্ধ করে দিয়েছে,, তাই ওই সেন্সলেস হয়ে গেছে।। আপনি চাইলে টেষ্ট করাতে পারেন, আমার কথা বিশ্বাস না হলে।। আমি আসি।।
সেদিন আমার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গেছিল।।এত কষ্টে মানুষ করে কি লাভ হলো কায়নাত আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে দিল।।সেদিন খুব মেরে ছিলাম কায়নাতকে।। সে শুধু কেঁদে কেঁদে বলেছিল,,
—–মা আমি কোনো দোষ করি নি।। এ যে আমার ভালবাসার চিহ্ন।।
ওই তারপর থেকে একদম চুপচাপ হয়ে যেতে লাগলো,,শুধু পেটে হাত দিয়ে বিরবির করে কথা বলতো শুধু।। এর মাঝে এলকায় জানাজানি হবে বলে তাকে গর্ভপাত করারনোর জন্য হাসপালে নিয়ে যাই।।কিন্তু তখন অনেক দেড়ি হয়ে গেছে।।
তাই ওকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাই।।এর মাঝে কায়নাতে কাছে কি ভাবে কি হলো জানতে চাই কায়নাত তখন বলে,,
—–মা,, ভালবাসা কি ভুল!!
—–ভালবাসা ভুল না ভুল মানুষকে ভালবাসা ভুলরে মা।।
তখন কায়নাত দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে এর একটি বক্স এগিয়ে দেয়।।
আর বলতে লাগে,,
—–মা আমি যে অফিসে যব করতাম,, সেই অফিসের আঙ্কেল আমাকে অনেক আদর করতেন।।তার দুই ছেলে বড় ছেলে হাবিব(আয়মানের বাবা) আর ছোট ছেলে ফাহিম(এহসানের বাবা)।।হাবিব তখন বিদেশ থাকতো,, আর ফাহিম দেশেই থাকতো।।ফাহিমের সাথে আমার ভাল বন্ধুত্ব হয়ে উঠে।।কিন্তু হাবিবের সম্পর্কে কিছু জানতাম না তখন।।আমি ভাবতাম সে একাই।।এক দিন আমাদের বস মানে হাবিবের বাবা খুব অসুস্থ হয়ে যাওয়ায়, ফাহিম তাকে নিয়ে চলে যায় আব্রড।। তখন অফিস সামলাতে দেশে আসে হাবিব।।তার পি এ হিসেবে কাজ করতে লাগলাম।।এক পর্যায় তার সাথে ও আমার বন্ডিং ভাল হতে লাগলো,,বন্ধুত্ব হতে লাগে,, এক পর্যায় আমরা…..!!
_____________________________________________★