My Mafia Boss- Season- 1 !! Part- 17
রুহী রোয়েনের যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকলো।লোকটাকে বুঝা কষ্টদায়ক।কখনো ভালো ব্যাবহার কখনো ধমক?তবে খারাপ লাগেনা ওনার বকা গুলো কেমন যেন সয়ে গেছে।নিজে নিজে কিছুক্ষন হাসে রুহী।প্যাকেটটি খুলে একটি ডার্ক ব্লু কালারের শাড়ী বের করে রুহী। কালো আর নীলের কম্বিনেশন খুব সুন্দর শাড়িটা।রোয়েনের চয়েজ আছে বলতে হবে।রুহীর মন খারাপ হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে কারন শাড়ী তে ও পরতে পারেনা। শাড়ীটি হাতে নিয়ে কিছুক্ষন বসে রইলো রুহী।
রোয়েন আজ ডার্ক ব্লু কালারের ব্লেজার পরেছে ভিতরে কালো শার্ট।ভীষন মানিয়েছে রোয়েনকে।আজ বলিউডের নায়কদের ও যেন হার মানিয়ে দেবে রোয়েন।রুহীর রুমের দিকে এগোতেই রোয়েনের ভীষন রাগ লাগলো মেয়েটা শাড়ী না পরে বসে আছে।রুহী শাড়ী পরোনি কেন এখনো?ধমক দিয়ে বলে রোয়েন।
রুহী কিছুটা কেঁপে উঠে। দাঁড়িয়ে গিয়ে পিছনে যেতে থাকে।আ আ আসলে ক ক কি আ আ আমি শাড়ী পরতে পারিনা বলে মাথা নিচু করে রুহী।রোয়েন রুহীর কাছে এসে দাঁড়িয়ে শাড়ীটা হাতে নেয় রোয়েন। রুহী রোয়েনের দিকে তাকায় ক ক কি করতে চাচ্ছেন?রুহী ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে।জাস্ট সাট আপ যা বলছি করতে থাকো ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে ফেলল। রোয়েন রুহী কে শাড়ী পরালো। পাঁচ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসো বলে নিচে নেমে যায় রোয়েন।রুহী চুল গুলো কে আছড়ে ছেড়ে দিলো পিঠের ওপর হালকা সাজ নিয়ে নিচে নেমে এলো।
রোয়েন রুহীর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।যতোবারই দেখে নতুন করে মায়াবতীর মায়া জালে জড়িয়ে যাচ্ছে রোয়েন।রুহীর হাত ধরে বেরিয়ে গেল রোয়েন।গাড়িতে চেপে বসলো ওরা আজ ড্রাইভার এনেছে রেয়েন।পিছনে ওরা দুজন বসে আছে।রুহীর একটি হাত রোয়েন নিজের বুকের সাথে আটকে রেখেছে।গাড়িটা একটা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে থামলো।রেস্টুরেন্ট টা রোয়েন বুক করেছে আজ তাই ভিতরে আর কাউকে দেখা গেলোনা।পুরো নির্জন রেস্টুরেন্ট রুহীর কেমন ভয় ভয় লাগছে।রোয়েন রুহীর হাত ধরে একটা রুমে নিয়ে এলো।লাইটিং করা পুরো রুমটা।লাল রং এর বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো রুমটাকে।দেয়ালের মাঝে রুহীর নাম লেখা।রুহীর আজ নিজেকে ভীষন স্পেশাল মনে হচ্ছে।রুহীর মুখে ভুবন ভুলানো হাসি ফুটে উঠলো।
পছন্দ হয়েছে রোয়েন জিজ্ঞেস করে উঠলো।
হুম।আমার জন্য এতো কিছু করেছেন?
হুম।রুহী!!!গম্ভীর কন্ঠে ডাকল।
জি।রোয়েনের দিকে ফিরে তাকালো রুহী।
রুহীর একটি হাত নিজের হাতে নিলো রোয়েন।লাল একটও বক্স থেকে ডায়মন্ডের একটি রিং বের করে রুহীর আঙ্গুলে পরিয়ে দিলো রোয়েন।
আংটি কেন?
আমার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিলে,এত যত্ন করে খাইয়ে দিলে, আমাকে এত্ত সুন্দর গল্প শুনানোর জন্য।
হুম।একটা প্রশ্ন করতে পারি?
রোয়েনের মুখ কিছুটা কঠিন হয়ে যায়।কি?
আমায় বিয়ে করছেন কেন আপনি?
এ প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই আমি।
প্লিজ রোয়েন বলুন না।
রুহী খুব খারাপ হচ্ছে। চিন্তা করতে পারবানা আমি করে বসবো রাগী গলায় বলল রোয়েন।
আমি জানি আপনি কেন বিয়ে করছেন আমাকে?প্রতিশোধ নেয়ার জন্য না?আপনাকে খুন করতে দেখেছি আমি সেজন্য না?বিশ্বাস করুন কাউকে বলবোনা প্রমিজ।প্লিজ যেতে দিন আমাকে আটকে রাখবেন না।
কি বলতে চাস তুই?তোর ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বিয়ে করছি আমি?তোর মামীর থেকে তোকে বাঁচাতামনা যদি প্রতিশোধ নেয়ার মতো কোন ইচ্ছা থাকতো আমার।স্কুলে ভর্তি করাতামনা যদি প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা থাকতো আমার।এতিম খানায় সেলাই মেশিন পাঠাতামনা যদি তোর ওপর প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা থাকতো।আর কি বললি তোকে যেতে দিবো?কেন কি সমস্যা আমার কাছে থাকতে?রুহীর একটি হাত চেপে ধরলো রোয়েন।কি সমস্যা বল?চিৎকার করে বলছিলো রোয়েন।
রুহী ব্যাথায় কাতরিয়ে উঠলো। আহ প্লিজ ছেড়ে দিন।
ছেড়ে দিবো?কখনো না তোকে সারাজীবন আমার হয়ে থাকতে হবে।রুহীর কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে নিলো রোয়েন।দু হাতে রুহীকে জড়িয়ে নিজের খুব কাছে টেনে আনলো।
রোয়েনের চোখ দুটো ভীষন লাল হয়ে আছে।ফোঁসফোঁস আওয়াজ বের হচ্ছে।রুহী ভয়ে রোয়েনের ব্লেজারের কলার খামচে ধরে মাথা নিচু করে আছে।।
রুহীর থুতনি ধরে মাথা উঁচু করালো রোয়েন।নিজের ঠোঁট রুহীর ঠোঁটে চেপে ধরেছে ও।পাগলের মতো চুমু খাচ্ছে রুহীকে।রোয়েন মাতাল হয়ে গেছে রুহীর ভালবাসায়।ওর মাঝেই ডুবে থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে
ওর।রুহীর প্রত্যেকটা নিশ্বাস ওকে উন্মাদ করে দিচ্ছে।
রুহী ও আজ বাঁধা দিচ্ছেনা রোয়েনকে।বরং ওর ভালবাসায় নিজেকে একান্ত ভাবে সঁপে দিয়েছে নিজেকে।নিজে ও এই ভালবাসাবাসির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে।রোয়েন কে খুব জোরে জড়িয়ে ধরেছে নিজের সাথে।
রুহীর সারা মুখে চুমো খেয়ে আধাঘন্টা পর ছেড়ে দিলো রোয়েন।অন্যদিকে ফিরে চোখ বড় বড় করে নিশ্বাস নিচ্ছে রোয়েন।রুহী ও পিছন দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে।বুকের ভিতর ধুকপুকানি বেড়ে গিয়েছে ওর।
রোয়েন নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে রুহীর হাত টেনে একটি টেবিলের সামনে নিয়ে এলো।বসো!!!রোয়েন অন্যদিকে ফিরে বলল।রুহী বসে পড়লো।
রোয়েন রুহীর পাশে না বসে কোনার একটি চেয়ারে বসেছে।রুহীর দিকে ঠিক মতো তাকাতে পারছেনা রোয়েন।খাবার শেষে নিচে নেমে এলো দুজন।রোয়েন গাড়িতে অন্যদিকে ফিরে বসেছিলো।তবে আগের মতোই রুহীর হাত বুকে আটকে রেখেছে।
ঘরে ফিরে রুহী শাড়ি পাল্টিয়ে একটি স্যালোয়ার সাদা একটি কামিজ পরে নিলো।রোয়েনের রুমে উঁকি দিতেই দেখলো শুয়ে শুয়ে ফোন চালচ্ছে রোয়েন।রুহী কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা।যাবে কি যাবেনা এ নিয়ে দ্বিধায় ভুগছে ও। ঠিক তখনই রুম থেকে রোয়েনের কথা ভেসে আসলো।এতো উঁকি না দিয়ে এসে শুয়ে পড়ো চিৎকার করে বলল রোয়েন।
রুহী চুপচাপ খাটে এসে রোয়েনের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে।রোয়েন রুহীর মাথায় আলতো করে চুমো একেঁ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
চলবে