My Mafia Boss

My Mafia Boss- Season- 1 !! Part- 18

খুব সকালে রুহীর ঘুম ভাঙ্গে একজন কাজের লোকের ডাকে।রুহী চোখ ডলতে ডলতে শুনতে পায় কাজের লোকটি ওকে উঠে রেডি হয়ে নিচে যেতে বলছে।রোয়েন অপেক্ষা করছে নিচে।রুহী ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এলো।রোয়েন খবরের কাগজ থেকে মুখ উঠিয়ে রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল যাও স্কুলের ইউনিফর্ম পরে এসো। আপনি না বলেছিলেন ঐদিনই স্কুলে শেষ দিন ছিলো আমার মাথা নিচু করে বলল রুহী। এক্সট্রা কথা বলা ছাড়া চলে না তোমার?যা বলছি করো ধমক দিয়ে বলে আবার ও পত্রিকায় মনযোগ দিলো রোয়েন।
রুহী চুপচাপ রুমে এসে ইউনিফর্ম পরে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে।রোয়েন ডাইনিংটেবিলে নাস্তা নিয়ে রুহীর অপেক্ষা করছিলো।দুজনে নাস্তা সেড়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে।
রুহী মিটিমিটি হাসছে।রোয়েন আসলে এতোটাও খারাপ না।একটু রাগ বেশি কিন্তু মনের দিক থেকে খুব ভালো সে।রোয়েন রুহীর দিকে একনজর দেখে আবার ফোনে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।রুহীকে স্কুলে দিয়ে রোয়েন কাজে চলে যায়।রুহীকে দেখতেই স্নিগ্ধা ওর দিকে দৌড়ে আসে।
তুই এসেছিস রুহী?
হুম এসেছি।
ঐদিনের পর থেকে ভেবেছিলাম তোকে আর আসতেই দিবেনা।
আমি ও তাই ভেবেছিলাম।কিন্তু আসতে দিয়েছে সে।
হুম। চল ক্লাশে যাই।রুহীর হাত ধরে ক্লাশের দিয়ে চলে গেলো স্নিগ্ধা।
রোয়েন ওর চেয়ারে বসে ওর লোকগুলোর দিকে ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে আছে।লোকগুলো যেন কিছু বলতে চায় ওকে।একজন লোক বলে উঠলো স্যার এখন যে আর মেয়ে পাঠাতে বলেননা বাসায়? লাগেনা আপনার?
মেয়ে দিয়ে কি করবো আমি?রাগী গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
না মানে স্যার আগে তো লাগতো।সোনিয়া লিজা কল দিয়ে দিয়ে মাথা নষ্ট করে ফেলছে।
কল ধরেছো একবার ও?ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।
স্যার ধরছি তারা বলতেছে আপনার বাসায় যাইবো।
রোয়েন টেবিলের ওপর দুটি ব্রিফকেজ রেখে বলল এখানে কিছু টাকা আছে।সোনিয়া আর লিজা কে এগুলো পাঠিয়ে দিও।বলো আমার ঘরের আশেপাশে যেন না দেখি।একজন লোক রোয়েনের দিকে এগিয়ে এলো স্যার সোনিয়া কল করছে।আপনার সাথে কথা কইবার চায়।রোয়েন বিরক্তি নিয়ে ফোন কানে দিলো।
হ্যালো রোয়েন বেবী।
হেই। এসব নামে ডাকবেনা আমাকে।তোমাদের জাস্ট একবার এনেছি বাসায় একশোবার আনি নি যে এভাবে পাগল বানাবে আমার লোকদের।কিছু টাকা পাঠাচ্ছি সেগুলো নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে চলে যাবা।আমার বাড়ির আশেপাশে তোমাদের কাউকে যেন না দেখি।আন্ডারস্টেন্ড???
রোয়েন প্লিজ লিসেন……….থামিয়ে দিলো রোয়েন
যা বলছি করো।ফার্দার কল করবেনা।খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম।ফোন কেঁটে দিলো রোয়েন।টাকা গুলো ওদের মুখের মধ্যে মেরে এসো।
জি স্যার।লোকটি ব্রিফকেজ দুটি নিয়ে বেরিয়ে গেল।
রোয়েন ঘড়ি চেক করলো।১.৫০ বাজে রুহীর ছুটি হয়ে গেছে।তাই আর দেরি না করে স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।
রুহী আর স্নিগ্ধা ক্লাশ শেষে বাহিরে এসে দাঁড়ালো।সোহান নামের ছেলেটিকে দেখে ও আজ ইগনোর করলো ওরা দুজন।সোহান ও অবশ্য কথা বলার সাহস করেনি ঐদিনের কাহিনীর পর থেকে।গল্প করতে করতে রুহী রোয়েনের গাড়ি দেখতে পেল।ভিতর থেকে রোয়েন বেরিয়ে ওদের সামনে এসে রুহীর হাত ধরে গাড়ির সামনে নিয়ে এলো। আজ সারাদিন কি করলে? রাগী গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।ক্লাশ করেছি আর বাকি সময় স্নিগ্ধার সাথেই ছিলাম আস্তে করে বলল রুহী।
রোয়েন এবার শান্ত হয়ে গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বলল ভিতরে ঢুকো। রুহী চুপচাপ গাড়িতে ঢুকে বসলো।
রোয়েন ড্রাইভিংসিটে বসে রুহীর একটি হাত গিয়ারের
এর ওপর দিয়ে রুহীর হাতের ওপর হাত রেখে ড্রাইভিংয়ে মন দিলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে ওদের হাতের দিকে তাকালো।রোয়েন হঠাৎ বলে উঠলো এবার থেকে এভাবেই গাড়ি চালাবো।
কিভাবে? রুহী জিজ্ঞেস করে উঠলো।
এই যে এভাবে তোমার হাত গিয়ারের ওপর দিয়ে।
এতে কি লাভ হবে?
রোয়েন চোখ রাঙ্গিয়ে রুহীর দিকে তাকালো এতো প্রশ্ন করো কেন?
সরি।মাথা নিচু করলো রুহী।
রোয়েনের গাড়ি একটা শপিংমলের সামনে এসে থামলো।দুজনে নেমে পড়লো। রুহীর হাত ধরে ভিতরে ঢুকলো রোয়েন।কিছুদূর হেঁটে একটা বেনারসী শাড়ী লেহেঙ্গার দোকানে ঢুকলো ওরা।
রুহী ভাবছে এখানে কেন এসেছে ওরা?
রোয়েন দোকানদারকে লাল বিয়ের শাড়ী আর লেহেঙ্গা দেখাতে বলল।রোয়েন নিজের পছন্দেই ওর মায়াবতী কে বৌ সাজে দেখতে চায়।রাঙ্গিয়ে তুলতে চায় হাজারো রংয়ে।রোয়েন রুহীকে নিয়ে ভাবছে ওর মায়াবতীকে শাড়ীতে নাকি লেহেঙ্গায় বেশি মানাবে?শেষমেষ দুটো কিনে নিলো রোয়েন।কারন মায়াবতী যাই পড়বে অপ্সরী থেকে কম লাগবেনা।দুজনে উঠে জুয়েলারি শপে এলো।কিছু গলার সেট কিনে বাড়ি ফিরে এলো।
রুহী খাটের ওপর বসে প্যাকেট গুলো হাতাচ্ছিলো আর ভাবছিলো রোয়েন কেন বিয়ে করতে চায়? এ প্রশ্নটা আজ ও অজানা।জিজ্ঞেস করে ও লাভ হচ্ছেনা।
রোয়েন রুমে এসে রুহীকে দেখে খাটের ওপর এসে বসলো।নিজ হাতে প্যাকেট থেকে জিনিস গুলো বের করে আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখলো।রুহী উঠে দাঁড়িয়ে গেল।আমি আজ ও উত্তর টা পেলামনা।
ভ্রু কুঁচকে রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন কোন উত্তর?
কেন বিয়ে করছেন আমায়?
এ নিয়ে বহুবার জিজ্ঞেস করে ফেলেছো কিন্তু কোন লাভ হয়নি হয়েছে ধমক দিয়ে উঠলো রোয়েন।
মাথা নিচু ঝাঁকালো রুহী।
তাহলে বারবার কেন একই প্রশ্ন রুহী?
জানতে চাই।
খুব সাহস বেড়েছে তোমার।
জানার ইচ্ছা কি নেই আমার?আমি ও তো একজন মানুষ।
রোয়েন কিছু না বলে কাজে মনযোগ দিলো।
বিয়ে করতে পারবোনা আপনাকে।
রোয়েনের এবার সহ্য হলো না আর।দৌড়ে এসে রুহীকে দেয়ালে জাপটে ধরলো কেন এসব বলিস সবসময়?আমাকে ভালো লাগেনা তোর?মরে গেলে খুব খুশি হবি না?আচ্ছা তাহলে নিজেকেই শেষ করে দিই অন্তত তুই শান্তিতে থাক।ফল কাঁটার ছুড়িটা কে রোয়েন হাতে নিয়ে নিজের হাতে উল্টাপাল্টা চালাতে লাগলো।হাতটা পুরো রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছে।রুহীর চোখ জোড়া পানিতে ভরে গেছে।সহ্য করতে পারলোনা আর রোয়েনের হাত চেপে ধরলো রুহী প্লিজ আর এমন করবেন না খুব রক্ত বেরুচ্ছে অসুস্থ হয়ে যাবেন আপনি।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।রোয়েনের হাত থেকে ছুড়িটি নিয়ে নিচে ফেলে দিলো রুহী।
কেন আমার যা ইচ্ছা হয়ে যাক।তুমি তো চলে যেতে পারবে।তোমাকে তো কেউ কথায় কথায় বকবে মারবেনা। তুমি তো অনাথ আশ্রমে মজায় থাকতে পারবা।আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাও তাইনা?চিৎকার করে বলছিলো রোয়েন।
না আমি কোথাও যাবোনা।প্লিজ মাফ করে দিন।রোয়েনকে বুকে জড়িয়ে নিলো রুহী। রোয়েন রুহীর মাথায় চুমো দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো নিজের সাথে।কিছুক্ষন পর রুহীকে সামনে এনে ধরলো রোয়েন। রুহীর কাছে এগিয়ে ওর গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া চোখের পানি গুলো কে ঠোঁট দিয়ে শুষে নিলো রোয়েন।
চলবে