আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর !! Part- 09

অনু বলে ওঠে,,কোন কানা রে,,যে চোখ বাড়িতে রাখে আসছে,, বেদ্দপ কোথাকার 😤😤

অনু সামনে তাকিয়ে দেখে একজন মধ্যে বয়সী মহিলা ওর দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে।

এই যে এই ভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে,,
আপনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে অন্যায় করছেন তাই তাড়াতাড়ি সরি বলেন।

মহিলা :বেয়াদব মেয়ে দেখেছি এমন মেয়ে দেখি নাই।বড়দের সাথে কি ভাবে কথা বলতে হয় তাই জানোনা।
তোমাকে এ অফিসে ঢুকতে দিয়েছে কে??

অনু :ওরে আমার বড়লোক বেডি,,আমাকে ঝাঁড়ি দিতে আসছে রে,,মনে হয় অফিস ওর ভাইয়ের।

মহিলা :কেমন ফালতু মেয়ে ভাবা যায়।
বড়দের মুখে মুখে তর্ক করতে একটু বাধছে না।
এই মেয়ে কথা বলার কোনো শিষ্টাচার বোধ শেখো নাই?

অনু :আপনি আমাকে শিষ্টাচার বোধ শেখাতে আসবেন না।
আমার শিষ্টাচার সম্পর্কে জ্ঞান যর্থেষ্ট পরিমাণে আছে।

মহিলা :তোমাদের মতো ফালতু মেয়ের সাথে কথা বলে আমার মুড খারাপ করার কোনো ইচ্ছা নাই। সরে যাও আমার সামনে থেকে।

অনু তার সামনে দাড়িয়ে বলে,,সরি,
যেতে দিতে পারবো না,,অনেক কথা বলছেন,,
আগে কাজের কথাটা বলে তারপর যাবেন।

মহিলা :মানে কি?

অনু :মানে টা খুব সোজা।
আপনি বাহিরে যদি একটু অপেক্ষা করতেন তাহলে,
আমার সাথে আপনার ধাক্কা লাগতো না,,
না এতো কথার সৃষ্টি হতো।
তাই,আপনি যখন অপেক্ষা না করে চলে আসছেন,
তখন তো সরি না বলে আপনাকে যেতে দিতে পারি না।

মহিলা :তোমাকে আমি বলবো সরি,,
মাথা খারাপ? কোনোদিন ও না।
তাই বলে অনুকে সাইড করে চলে যেতে লাগে,,

তখন অনু তার হাত ধরে বলে,”আপনি তো জানেনা কার সাথে আপনার দেখা হয়েছে,
সরি না বলা পর্যন্ত আপনাকে আমি ছাড়বো না”।

মহিলা :এই মেয়ে তুমি জানো কার সাথে এমন ব্যবহার করছ তুমি??।

অনু :আমার জানার কোনো প্রয়োজন নাই।কারণ অন্যায় ছোটরা করলে তাদের ঘাড় ধরে সরি বলাইতে সবাই খুব ভাল করে পারে।
আর বড় দের সব অন্যায় মাফ।

মহিলা :আল্লাহ তোমার মতো মেয়ের কোনোদিন ও ভাল করবে না,,ভাগ্যিস তুমি আমার বাড়ির মেয়ে বা বউ না।

অনু :দেখুন আমার আপনার বাড়ির কাজের মেয়ে হবার ও ইচ্ছা নাই ।
আর ঐ সব হওয়া তো দূরের কথা।
তাড়াতাড়ি সরি বলে যেখানে যাবার যান তো।

মহিলা রেগে সরি বলে অনুর থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে চলে যাবার সময় বলে,,”জীবনে তোমার মতো ফালতু মেয়ের সাথে আর দেখা না হলে খুশী হব “।

অনু ও বলল,”আমিও তাই”।



আরিয়ান তখনো মনোযোগ দিয়ে কাজ করছিল।
হঠাৎ করে ওর মুখের সামনে কেউ মিষ্টির প্যাকেট রাখে।।
অবাক হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে,
ফুপু আম্মা!!

আরিয়ান :ফুপুআম্মা আপনি অফিসে,,আমাকে ফোন করলেই তো আমি বাড়িতে চলে আসতাম।

ফুপু আম্মা, কিছু না বলে আরিয়ান কে মিষ্টি খাওয়ায় দেয়।

আরিয়ান :আচ্ছা ফুপু আম্মা হঠাৎ মিষ্টি কেনো?

ফুপু আম্মা :তোমার বিয়ে ঠিক করছি।
মেয়েটা মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর,,শিক্ষিত,,
নামাজ পড়ে,,,একদম সংসারী মেয়ে।
তাই ডেট ও ফিক্সড করে আসছি।

আরিয়ানের গলা দিয়ে কেনো জানি আর মিষ্টি নামতে চাইছে না।
তারপর আরিয়ান জোড় করে পানি দিয়ে মিষ্টি গিলে খায়।

তারপর মুখে একটা সুন্দর হাসি নিয়ে বলে,,,তাহলে তো ভাল কবে বিয়ের আসরে যেতে হবে।
যেদিন বলবেন আমি বর সেজে চলে যাবো।।

ফুপু আম্মা :এইতো সামনের মাসে ঠিক করছি।তোমার কিছু করতে হবে না।
শুধু বিয়ের দিন গিয়ে বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে আসবে।

আরিয়ান :জ্বি, আপনি যা বলবেন তাতেই আমি রাজী।

ফুপু আম্মা :আচ্ছা আমি এখন আসি,,
বাড়িতে অনেক কাজ আছে,,,
সামনে তোমার বিয়ে বলে কথা।

আরিয়ান :জ্বি,আপনার দায়িত্ব বেশি তো।

ফুপু আম্মা :আচ্ছা আরিয়ান তোমার অফিসের সব মেয়ে কি ভদ্র??

আরিয়ান :জ্বি ফুপু ,, কেনো কেউ কি আপনাকে কিছু বলেছে?? যদি বলে,,
আমাকে শুধু তার নাম বলবেন,
দেখুন তার কি অবস্থা করি।

ফুপু আম্মা :নাহ কেউ কিছু বলে নাই,,
শুধু পথের মাঝে এক জঙ্গলি বুনো ওলের সাথে দেখা হয়েছিল।

আরিয়ান :ঠিক বুঝলাম না,কি বলছেন।

ফুপু আম্মা :আরে বাদ দাও,,তোমাকে এসব ভাবতে হবে না।কাজে মন দাও।
আর যে কোনো মেয়ের থেকে দূরে থাকবে।

আরিয়ান :কোনো মেয়েকে তো নিজের কাছে তো দূরের কথা মনেও আসতে দেই না।

ফুপু আম্মা :হুম জানি তো।তুমি আমাদের ভদ্র ছেলে।

আরিয়ান শুধু একটা মলিন হাসি দেয়।

ফুপু আম্মা চলে যায়,যাবার সময় ভাবে মেয়েটা মনে হয় এ অফিসে কোনো কাজে আসছিল।
না হলে এমন ফালতু মেয়েকে আরিয়ান এক মিনিট ও নিজের অফিসে কাজে রাখবে না।এমনিও ফালতু কথা বলা মেয়ে ওর পছন্দ না।



আরিয়ান নিজের কেবিনে বসে আনমনে কি যেনো ভাবছিল।
অারিয়ানের কেবিনে এসে অনু দেখে তার বস অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভাবছে।
এভাবে আগে কখনো দেখে নাই।

অনু :স্যার গো,,স্যার!!

আরিয়ানের কোনো সারা নেই।

অনু এগিয়ে গিয়ে আরিয়ান কে ধাক্কা দিয়ে বলে,
“কি হয়ছে এমন করে কি ভাবেন”?

আরিয়ান আহম্মক হয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে

অনু আবারো বললো,”কেবলা কান্ত হয়ে আমার দিকে হেবলার মতো তাকিয়ে আছেন বেপার টা কি”?

আরিয়ান :তোমাকে কি করা উচিৎ তাই ভাবছি।

অনু :এতো ভেবে কাজ নাই।
ছোট পিচ্ছি বাচ্চা তো নয় যে পাপ্পি দিবেন,,
বড় হয়েগেছি দিলে চকলেট দিবেন। 😋😋

আরিয়ান :চকলেট তোমার মতো বুড়িরা খায় না।পিচ্ছি ছোট বাচ্চারা খায়।😎

অনু :আমি মোটেই বুড়ি না,,বুইড়া বেডা,,
চকলেট দিলে দেন, না দিলে নাই।

আরিয়ান :চকলেট পৃথিবীর সব মানুষ কে দিলেও তোমাকে দিবো না।

অনু :তাহলে এমন দোয়া করবো যাতে এই জীবনে আপনার কপালে বউ না জোটে।

অারিয়ান “শকুনের দোয়াতে গরু মরে না।
আর না তোমার দোয়াতে আমি চিরকুমার থাকবো।
দেখো শেষে তোমারি এ জীবনে বিয়ে না হয়”।

অনু :আরে বিয়ে হবে না,কে বলছে,,
আমার বর ঠিকি আমার অপেক্ষায় আছে,,
তা না হলে আমি তাহার অপেক্ষায় আছি।।
আমি আমার ক্রাশ বর কে খু্ব বেশী ভালবাসি 😍😍

আরিয়ান :তোমার আবার ক্রাশ বর টা কে?? তোমার মতো বুনো ওল কে, কে বিয়ে করবে।

অনু :আমি যাকে ভালবাসি সে ছাড়া আবার কে।

আরিয়ান :ওহ,আচ্ছা!! তোমার হবু বর আছে?

অনু :জ্বি আলহামদুলিল্লাহ্‌ আছে।

আরিয়ান :ওহ তাহলে তো ভাল।সে বুঝি তোমার মতো?

অনু :আরে নাহ,,,সে আমার মতো নয়,
কিন্তু আমার পুরা পৃথিবী জুড়ে সে আছে।।
আমার মনের সিন্দুকে তাকে বন্দী করে রাখছি।

আরিয়ান :তাহলে তো তোমার হবু বর সেই ভাগ্যবান ব্যক্তি।

অনু : তা আর বলতে 😇😇

আরিয়ান :যাক তোমার মতো মেয়ের জন্য যে কেউ আছে এটাই অনেক।

অনু :জ্বি!! তা আপনার জীবনে এমন কেউ আছে স্যার??

আরিয়ান :কেমন কেউ?

অনু :যে আপনার সবটা জুড়ে বিচরণ করবে।আপনার একলা দিনের সাথী হবে,,
সব কষ্টে ভাগীদার হবে।
আপনার খুশী তে সে সবথেকে বেশী খুশি হবে। আপনার কষ্ট যার হৃদয়ে সিডরের মতো ঝড় তুলবে।
যার সারাদিনের ভাবনা তে শুধু আপনি থাকবেন।

আরিয়ান :নাহ,,এমন কেউ নেই।
কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি আসবে সে।

অনু :ওহ তার মানে,,,আমাদের বজ্জাত স্যার রিলেশন করবেন।

অারিয়ান :আমার এসব ফালতু কাজ করার সময় নেই,ডাইরেক্ট বিয়ে করবো।

অনু :একেবারে নিরামিষ আপনি 😐,,

আরিয়ান :কিছু দিন পর আমার বিয়ে,,
সো তোমার আজারে পেঁচাল দিয়ে আমার কাজের মন নষ্ট করো না।

অনু :ওহ,,কে জানে,,কোন পোড়া কপালীর কপাল পুরছে যে আপনার কপালে আছে।

আরিয়ান :এই তুমি যাও তো,এখান থেকে, মেজাজ খারাপ করবে না আমার।

অনু :হুহ , আমার তো আর কাজ নাই,,
আপনার পেছনে লাগতে যাবো নে।

আরিয়ান : কোন দুঃখে যে তোমাকে পিএ করতে গেছিলাম, আল্লাহ জানে।

অনু :কেন আরো রাখেন,, এখুনি ধৈর্য শেষ,,একবছর তো সহ্য করবেন 😁

আরিয়ান ধমক দিয়ে বলে, “যাও তো এখন,,অফিস শেষ,,তুমি বাড়ি যাও”।

অনু : হুহ আজ যদি রাজ সাথে থাকতো আপনার এখানে কাজে কখনো আসতাম নাহ।😤

আরিয়ান রাজ নাম শুনে কেনো জানি খুব রেগে যায় বলে, “এই রাজ টা আবার কে”?

অনু কেবিন থেকে বাহিরে যাবার সময় বলে,,আমার হবু বর আবার কে।
তারপর চলে যায়।

আরিয়ান নিজের কেবিনের সব কিছু ফেলে দিয়ে বলে,,,
আমার জীবন থেকে কি এই রাজ নামের কালো ছায়া টা কি কোনোদিন যাবে না।
আমি কী এমন পাপ করছি??
যার জন্য আমার নিজের বলতে কোনো কিছু নেই।
আমি কি মানুষ না?
আমার কি কোনো হৃদয় নেই?
না কি হৃদয়টাও পাথরের জানিনা,,
যে আমার জীবনে আসতে চলেছে,
সে আমাকে কোনোদিন আমার মতো করে বুঝবে কি না তাও জানি না।
আমার উপর সবার অধিকার আছে,,
কিন্তু আমার কারো উপর অধিকার নেই,,
এটাই আমি।

(অনু রাজ কে নিয়ে যা বলছে তা কি সত্যি? 😒
নাকি ডাহামিথ্যে তা অনু জানে।
গল্পটা সবার কেমন লাগছে জানাতে ভুলবেন না।আপনাদের সুন্দর সুন্দর কমেন্ট দেখলে আমারো লিখতে ভাল হবে😇)



চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *