ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 07

রাত -১১.৩০
মেঘ অনেক খুঁজেও তরীকে পেল নাহ।।।
হঠাৎ তার মোবাইলে নীড় ফোন দেয়।

মেঘঃ মামা আমি এখনো বৃষ্টিকে…..

নীড়ঃ মেঘ তরী ফিরে এসেছে বাড়িতে।।তুই ফিরে আয়

মেঘঃ বৃষ্টিকে পেয়েছো খুঁজে পেয়েছো??কিভাবে

নীড়ঃ তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয়।

নীড় ফোন রেখে দিলো।।মেঘ একবার মোবাইলে দিকে তাকালো অবাক হয়ে।।তারপর গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করে তরীদের বাড়িতে পৌছাল।

বাড়িতে ঢুকেই মেঘ এর কপালের রগ ফুলে গেল।।ড্রয়িং রুমে নীড় আর ইশানের সাথে আদ্রকে বসতে দেখে কপাল কুচকালো

রেগেমেগে গিয়ে সবার সামনেই আদ্রর কলার ধরে তাকে টেনে দাড় করালো।

মেঘঃ তুই এখানে কি করছিস।।ও আই সি।।আমার মাথায় এটা আগে কেন আসেনি।।তুই আমার বৃষ্টি কে কিডনাপ করেছিস তাই নাহ।।তুই করেছিস সব

ইশান আর নীড় মিলে আদ্রকে মেঘের থেকে ছুটালো।

ইশানঃ কি করছিস তুই মেঘ।।

মেঘঃ লিভ মি ডেড।।ও সব করেছে।বৃষ্টি কে ওই কিডনাপ করেছে আমি সিউর

ইশানঃ কি বলছিস।।ওই তো তরীকে নিয়ে এসেছে বাড়িতে।।ও কেন তরীকে কিডনাপ করতে যাবে।

কথাটা শুনে মেঘ ভ্রু কুচকে একবার ইশান আর একবার নীড়ের দিকে তাকালো।
কিছু বুঝতে নাহ পেরে ভ্রু দুটো আরো কুচকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো

মেঘঃ মানে🤨

ইশানঃ ওই তো তরীকে খুঁজে নিয়ে এসেছে।তরীকে নাকি কলেজের বাইরের গার্ডেন থেকে কয়েকটা বকাটে ছেলে তুলে নিয়ে গেছিলো।তা নাকি আদ্র ছেলেটা দেখে।।আর নিজের জীবন বাজি রেখে তরীকে প্রোটেক্ট করে।

মেঘ এর কেন যেন কথাটা হজম হলো নাহ।।কলেজের প্রায় অনেকেই জানে মেঘ তরীর আত্মীয়।। সেহেতু তার দিকে চোখ তুকে তাকানোরই প্রশ্ন উঠে নাহ।।কিডনাপ তো অনেক দুরের কথা।

মেঘঃ ওহহ ওকে।।আচ্ছা তো আদ্র বৃষ্টি কে সেইভ করেছে তাই তো

নীড়ঃ হুম মেঘ।

মেঘ কিছুক্ষণ আড়চোখে আদ্রর দিকে তাকিয়ে রইলো।

মেঘঃ বৃষ্টি কোথায় মামা?

নীড়ঃ ও ওর রুমে।।।।হয়তো ঘুমাচ্ছে এখন।।

মেঘঃ আমি কি একটু

নীড়ঃ হ্যা যাও নাহ।। সমস্যা নেই।

মেঘ চুপচাপ তরীর রুমের দিকে এগিয়ে গেল।।

তরীর রুমে ঢুকে স্তব্ধ হয়ে তরীর দিকে তাকিয়ে রইলো।।ঘুমন্ত তরীকে দেখে বুকটা ধক করে উঠলো মেঘের।।অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছে তরীকে দেখে।।ড্রিম লাইটের আলোও তরীর মুখটা অতিরিক্তই মায়াবী লাগছে মেঘের কাছে।।ধীর পায়ে তরীর পাশে গিয়ে বসলো।।

তরীর মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিলো।গভীর ভাবে তরীর মুখকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।।এই তরীকে এতোটা গভীর করে দেখেনি মেঘ।।হ্যাঁ মেঘ তড়িকে ভালোবাসে ঠিকই।। সেই ছোট তরীকেই সে ভালোবাসে।।যার সব দুষ্টুমি ছিলো মেঘের সাথে।বিদেশ থেকে ফিরার পর তরীকে এতোটা পর্যবেক্ষণ করার কথা হয়তো মেঘ ভাবেই নি।।যেখানে ভালোবাসার অসীম সেখানে মুখে কি আসে যায়।।

হঠাৎ মেঘের আদ্রর বলা কথাগুলো মনে পড়লো।।মোবাইল এর লাইট জালিয়ে ভালো করে তরী কে চেক করলো।

মেঘঃ নাহ বৃষ্টির শরীর এ তো তেমন দাগ নেই।।যদি কেউ কিডনাপ করতো নিশ্চয়ই বৃষ্টি কে বেঁধে রেখেছিলো।।তাহলে অব্যশই দাগ থাকার কথা।।সকালে আমি হাত চেপে ধরেছি সে দাগ টাই এখন রয়ে গেছে তাহলে দড়ি দিয়ে বাধলে তো অব্যশই দাগ হয়ে যেত।তাহলে কি আদ্র মিথ্যা বললো🤔🤔নাহ এর সাথে ডিরেক্টলি কথা বলতে হবে।।

(মেঘ তরীর রুম থেমে বেরিয়ে ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখলো আদ্র এখনো নিচেই আছে।।নীড় আর ইশানের সাথে কথা বলছে।।মেঘ ও গিয়ে বসলো তাদের সাথে।)

মেঘঃ আচ্ছা আদ্র তুই বৃষ্টি কে কিভাবে পেয়েছিলি আর কোথায় পেয়েছিলি

আদ্রঃ আমমি আসসলে ওদের পপিছু পিছু গিয়েছিলাম।।ওরা তরীকে একটা গোডাউনে নিয়ে বন্দী করে রেখেছিলো।।আমি গিয়ে ওকে বাঁচাই

মেঘঃ ওহহ তার মানে ওকে ছেলেগুলো আটকে রেখেছিলো।।তাহলে বৃষ্টির হাতে তো তেমন হাত বাধার দাগ পেলাম নাহ

আদ্রঃ ননাহ আসসলে ওকে বেধে রাখা হয়নি তো।।ওরা বাধতে যাবে তার আগেই আমি গিয়ে ওকে বাচাই

মেঘঃ একটু আগে তো বললি ওকে আটকে রেখেছিলো🤔

আদ্রঃ ওওই এককই ততো।।আটকে রাখতে চেয়েছিলো।।আমি বাঁচাই

মেঘঃ ওহহ তো সেই ছেলেগুলো এখন কোথায়

আদ্রঃ ওওরা তো পপালিয়ে গগেছিলো আমমাকে দেখে

মেঘঃ বা…..

মেঘ আর কিছু বলতে যাবে ইশান থামিয়ে দেয়।

ইশানঃ এখন তোরা থাম।।আর এতো ঘাটাঘাটি করা লাগবে নাহ।।যা হয়ে গেছে তা ভুলে যা।।পরেরবার থেকে কেয়ার ফুল থাকলেই হবে।

মেঘঃ বাট ডেড….

নীড়ঃ ইশান তো ঠিক বলছে মেঘ।।এইসব বাদ দে

মেঘ রাগে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।

মেঘঃ ।ঠিক কথাগুলো বের করছিলাম মামা আর ডেড প্যাচ কাগিয়ে দিলো।।ধ্যাত(মনে মনে)

নীড়ঃ চলো আদ্র ডিনার করে নিবে

আদ্রঃ নাহ আঙ্কেল আমি এখন খাবো নাহ।অন্য একদিন আজ একটু তাড়া আছে।

নীড়ঃ কিন্তু….

আদ্রঃ প্লিজ আঙ্কেল আমি কথা দিচ্ছি আরেকদিন আসবো।

নীড়ঃ ওকে তুমি যা ভালো বুঝো।।চলো এগিয়ে দেই

মেঘঃ আমি এগিয়ে দিচ্ছি ওকে মামা।তোমাকে আর কষ্ট করে যেতে হবে নাহ।।(আদ্রর দিকে তাকিয়ে)চল আদ্র

আদ্র ও মেঘের পিছু পিছু গেল।।
দরজা দিয়ে বের হতেই মেঘ আদ্রর কলার ধরে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরলো।।

মেঘঃ সত্যি সত্যি বল কি হয়েছিলো।।আমি খুব ভালো করেই জানি গার্ডেন এ যে ছেলে গুলো সচারাচর থাকে এটা তাদের কাজ নয়।বরং এটা তোর কাজ।।বল কেন করলি এটা।।বল(জোরে চেপে ধরে)

আদ্রঃ কি বলছিস তুই আমি কেন এইসব করবো।।তোর কোথাও ভুল হচ্ছে(ইনোসেন্ট লুক নিয়ে)

পরক্ষণেই আবার বাঁকা হাসি দিয়ে মেঘকে চোখ টিপ মারলো

মেঘ এতে আরো রেগে গেল।

মেঘঃ ইউউউ🤬🤬।।আজ তো তোকে ম…..

আদ্র মেঘকে ধাক্কা দিয়ে সরে দাড়ালো।

আদ্রঃ কুল মেঘ বাবু কুল।।এতো হাইপার হলে জিতবে কিভাবে।।খেলা তো মাত্র শুরু।।এখনই যদি রেগে যাও তাহলে ফিউচার এ কি হবে।।কথায় আছে নাহ রেগে গেলে তো হেরে গেলে(বাঁকা হেসে)

মেঘঃ কেন করলি তুই এইটা😤

আদ্রঃ কি করবো বল তোর আজকের বিহেভে খুব রেগে গেছিলাম।।পুরো কলেজের সামনে আমার কলার চেপে ধরে মেরেছিস।।কিভাবে ছেড়ে দেই বল।।বাট তোর আর আমার মাঝে একটাই প্রবলেম।।না আমি তোকে কিছু করতে পারবো আর নাহ তুই আমাকে।।তাই ভাবলাম তোর বৃষ্টি কে একটু শাস্তি দেই।।তাহলেই তো তোর শাস্তি পাওয়া হয়ে যাবে।।বাট ওকে অজ্ঞান করে নিয়ে যাওয়ার পর ওর মুখটা দেখে খুব মায়া হলো।।ভাবলাম থাক কিছু করবো নাহ।।বাট তোকে তো শাস্তি দিতে হবে।।তাই তাকে রাত পর্যন্ত বন্দী করে রাখলাম।।আর আরেকটা কথা কি জানিস তরী এর কিছুই বলতে পারবে নাহ।।কারন তাকে ড্রাকস দেয়া হয়েছিলো।।আর তার সুযোগ নিয়ে সারাদিন আমি ওর কোথায় কোথায় তাকিয়ে………

বলার আগেই মেঘ কয়েকটা মাইর লাগিয়ে দিলো।।আদ্র কোন রিয়েক্ট করলো নাহ।।।তাই মেঘ বুঝতে পারলো কিছু একটা নিশ্চয়ই ব্যাপার আছে।।তাই আদ্র কে ছেড়ে দিলো।।

আদ্রঃ কি হলো মার😎ও হ্যা মারতে পারবি নাহ তো।।জানিস চারপাশে আমার লোক লাগানো আছে।তারা যদি তোর এই মারের সিন টা রেকর্ড করে টিভি তে ছেড়ে দেয় উফফ কি যে ভালো হবে নাহ।।তোর ক্যারিয়ার এর ডি এন্ড😂।

মেঘঃ এমন কিছু করিস নাহ যে আমি নিজের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি।।অব্যশই আমার ক্যারিয়ার ইম্পর্টেন্ট।বাট নট মোর দেন বৃষ্টি।। যদি বৃষ্টির কোন ক্ষতি হয় নাহ আমি আনার ক্যারিয়ার এর কথা ভাববো আর নাহ তোকে মেরে ফেলা থেকে নিজেকে আটকাবো।।কথাটা মাথায় রাখিস।

মেঘ রাগে ফুসতে ফুসতে বাড়িতে ঢুকে গেল।।
মেঘের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে

আদ্রঃসরি রে মেঘ তোর কথাটা মাথায় রাখতে পারলাম নাহ।।যদি আমি তরীর ক্ষতিই নাহ করি তাহলে আমার প্রতিশোধ নেয়া হবে কিভাবে বল।।তরীর ক্ষতি ও হবে আর তুই আমার কিছুই করতে পারবি নাহ।।যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ (বাঁকা হেসে)

আদ্র চলে গেল।।

মেঘ বাড়িতে ঢুকতেই নেশা এসে হাজির হলো

নেশাঃ মেঘ ছেলেটাকে চলে গেছে

মেঘঃ হু হোয়াই?

নেশাঃ আরে কিছু একটা তো খেয়ে যাবে।।আমি খাবার আনতে গেলাম।। এখন এসে দেখি ছেলেটা চলে গেল

মেঘঃ সো হোয়াট আরেকদিন আসলে খাইয়ে দিও

নেশাঃ তাতো দিবোই।।এতো বড় উপকার করলো আমাদের।।আজ যদি ছেলেটা নাহ থাকতো তরীটার কি হয়ে যেত।

মেঘ কিছু নাহ বলে বিরবির করে চলে গেল।

নেশাঃ যাহ এর আবার কি হলো

চলবে😑