ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 04

সকালে
তরী রেডি হয়ে কলেজে চলে গেল।।
কলেজে ঢুকেই শক।।কারন মেঘ একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।।সাথে আরো কয়েকটা ছেলে আছে বাট তাদের দিকে তরী মাথা ঘামালো নাহ। সোজা গিয়ে মেঘের সামনে দাড়ালো।
মেঘ দেখে অবাক হওয়ার ভান করলো যদিও সে জানে তরী এই কলেজেই ভর্তি হয়েছে।।ইনফেক্ট নীড়কে মেঘই সাহায্য করেছে তরীর ভর্তির জন্য।।বাট তা তরী জানে নাহ
মেঘঃ আরে তরী তুই এখানে??!!!!এই কলেজে ভর্তি হয়েছিস নাকি
তরীঃ হুম(হাসার চেষ্টা করে)
বর্ষাঃ এটা কে মেঘ
তরীঃ আমি…….

মেঘঃ আরে ও তো আমার ফুফাতো +মামাতো বোন(তরীকে থামিয়ে)
বর্ষাঃ ওহহ।।হাই আমি বর্ষা।।মেঘের ফ্রেন্ড😊
তরীঃ আসসালামু আলাইকুম।। আমি তরী।
বর্ষাঃ নাইস নেম।।
আদ্রঃ তা আমাদের সাথে কি পরিচয় করে দিবি নাহ নাকি মেঘ তোর বোনকে(মেঘকে চোখ টিপ মেরে)
মেঘ হেসে দিলো।।যদিও রাগে মাথায় আগুন জ্বলছে।
মেঘঃ হ্যা হ্যা কোন দিবো নাহ(দাঁতে দাঁত চেপে)
রিদঃ থাক তোর আর পরিচয় করিয়ে দিতে হবে নাহ।।আমরা পরিচিত হয়ে নিচ্ছি।
রিদঃ হেই তরী আমি রিদ।।মেঘের বন্ধু। এককথায় বেস্টফ্রেন্ড 😀।।
আদ্রঃ শালা আমার পরিচয় টা দিলি নাহ😒।।তরী আমি আদ্র।।আমিও মেঘের ফ্রেন্ড।।তোমার যদি কলেজে কোন সমস্যা হয় তাহলে আমাকে জানাবে।।কেমন

মেঘঃ হয়েছে তো পরিচয় পর্ব।।নাকি এখন বাড়ির ঠিকানা ও দিয়ে দিবি😠।।(তরীর দিকে তাকিয়ে)।।তরী তুই ক্লাসে যা।।
(তরী মন খারাপ করে চলে গেল)
রিদঃ আরে মামা তুই রাগ করছিস কেন।।
মেঘঃ ওর থেকে ডিসটেন্ট মেন্টেন করে থাকবি।।না হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে নাহ।।
মেঘ হন হন করে চলে গেল।।
আদ্রঃ ডিসটেন্ট মেন্টেন করলে আমাদের প্লেন সাকসেসফুল কিভাবে হবে মেঘ বাবু।।সবে তো খেলা শুরু(বাঁকা হেসে)

মেঘঃ দেখো বর্ষা আমি যাস্ট তোমাকে প্রিটেন্ট করতে বলেছি।।তুমি এর বেশি প্লিজ কিছু ভেবো নাহ।।আমি তরীকে ভালোবাসি তা তুমি জানো।।আমি যাস্ট ওকে একটু শাস্তি দিতে চাই।।তাই তোমার সাথে একটু কথা বলছি।আর কিছুই নাহ।

বর্ষাঃ আই নো মেঘ।😞

মেঘঃ then stay away from me।ইউ নো আমার এইসব ভালো লাগে নাহ।।যাস্ট তরী যখন থাকবে তখন প্রিটেন্ট করলেই চলবে।।ওকে

বর্ষা মাথা নাড়লো।।মেঘ নিজের ক্লাসে চলে গেল।

বর্ষাঃ তোমাকে তো সেই কলেজের প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসি মেঘ।।বাট তুমি পাত্তাই দিয়ে নাহ।।অথচ এখন তোমার সাথে প্রেম প্রেম খেলা খেলছি।।জানি এটা অভিনয়।। বাট আমি চেষ্টা করবো এই অভিনয় টা সত্যি করার।(মুচকি হেসে)


এইদিকে তরী ক্লাসে এসেছে।।চুপচাপ বসে আছে।।কিছুই ভালো লাগছে নাহ।।জীবনে এমন চুপচাপ কখনো থেকেছে কিনা তা তরীর মনে নেই।।।ইন্ডিয়া তে যখন কলেজে ছিলো তখন তার অনেক গুলো ফ্রেন্ড ছিলো।।আর তাদের মধ্যমনি ছিলো তরী।।কারন ও খুব দুষ্টু ছিলো।।বাট এখানে কাউকেই পাচ্ছে নাহ।।যা তরীর জন্য খুব বিরক্তিকর।।

তরীঃ নাহ এই ভাবে চুপচাপ থাকলে আমি তো দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো।।আর না হলে পেট ফেটে যাবে।।কার সাথে কথা বলি কাউকেই তো চিনি নাহ।।ধুর ভালো লাগে নাহ।।

(তরীর পাশে বসা মেয়েটি দেখলো তরী বিরবির করে কি জানি বলছে।মেয়েটির নাহ ত্রিধা.)

ত্রিধাঃ হেই তুমি কি অসুস্থ

তরীঃ নাহ।।মুড অফ

ত্রিধাঃ কেন??

তরীঃ আসলে আমি ইন্ডিয়া তে পড়তাম এতোদিন।এখন এই কলেজে টান্সফার হয়েছি।।বাট আমি কাউকে চিনি নাহ

ত্রিধাঃ ওহহ এই ব্যাপার।। তো আমার ফ্রেন্ড হবে?

তরীঃ তুমি আমার ফ্রেন্ড হবে😃

ত্রিধাঃ অবশ্যই কেন নাহ

তরীঃ তাহলে তো খুব ভালো হয়।তোমার নাম কি

ত্রিধাঃ ত্রিধা।। তোমার?

তরীঃ এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে নাহ

ত্রিধাঃ কি?? (অবাক হয়ে)

তরীঃ আমরা তো ফ্রেন্ড তাহলে তুমি করে কেন বলছি(ঠোঁট উল্টিয়ে)

ত্রিধাঃ ওহহ এই ব্যাপার।। আমি ভাবলাম কি নাহ কি(হেসে দিয়ে)

তরী ও ফিক করে হেসে দিলো। দুইজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক হয়ে গেল।।কারন তরী সবার সাথে খুব তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারে।।ত্রিধার সাথে কথা বলে তরী মেঘের কথাটা ভুলে গেল প্রায়।

ত্রিধাঃ বাহ তুই তো খুব মজার মানুষ

তরীঃ টেস্ট করেছিস নাকি যে মজা বুঝতে পারলি😉

ত্রিধাঃ ছি🙊🙈

তরীঃ, 😂

ত্রিধাঃ আচ্ছা চল।।আমার ফ্রেন্ডের সাথে তোকে পরিচয় করিয়ে দেই।

ত্রিধা তরীকে নিয়ে ক্যানটিনে নিয়ে গেল।

ত্রিধাঃ গাইস আমার নতুন ফ্রেন্ড।।আজ থেকে তোদেরও ফ্রেন্ড।।ওকে।।সবাই পরিচয় দে।

সবাই একসাথে হাই বললো

তরীঃ হেলো।

ত্রিধাঃ ওকে ওয়েট আমি পরিচয় দিচ্ছি।।এটা হলো রুহি।।আমাদের ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। ও হলো ফাবিহা।।বিউটিকুইন।।আর ইনি হলে রোদ।।আমাদের পিওন।।যা দরকার হবে একে বলবে ফুরুত করে নিয়ে আসবে।আর আমাকে তো চিনোই।।আর গাইস ও হলো তরী।।এতোদিন ইন্ডিয়া তে ছিলো।।এখন আমাদের কলেজে এসেছে।।

রুহিঃ আই থিংক আমি তোমাকে আজ সকালে দেখেছি।

তরীঃ আমাকে??

রুহিঃ ইয়েস।।মেঘ ভাইয়ার সাথে।।

ফাবিহাঃ সত্যি।। এই তুমি কি মেঘ কে চিনো(তরীর দিকে তাকিয়ে)

তরীঃ জি আমার ফুফাতো ভাই।

ফাবিহাঃ কি সত্যি (অবাক হয়ে)।।ওহহ গড।।প্লিজ আমার সাথে মেঘের কথা বলিয়ে দিবে।।আমি নাহ উনার উপর ক্রাশড।।বাট আমার সাথে উনি কথা বলে নাহ🙁

তরীঃ 🙄!!!!!!!!!

রুহিঃ কথা বলিয়ে আর কি হবে।।আর চান্স পাবি নাহ বেবি।।বর্ষা আপুকে দেখেছিস।।মেঘ ভাইয়া মনে হয় ওর সাথে রিলেশন এ আছে।।

তরীঃ এমন টা কেন??

সবাই অদ্ভুত ভাবে তরীর দিকে তাকালো।।যেন সে মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছে।

তরীঃ হোয়াট???

রুহিঃ তুই কি আসলেই মেঘের বোন😕

তরীঃ আসলে আমি যখন দুইবছরের তখনই আম্মু আব্বুর সাথে বিদেশ চলে গিয়েছিলাম।

রুহিঃ ওহহ এই ব্যাপার তাই তুমি উনার ব্যাপার এ কিছু জানো নাহ

তরীঃ নাহ😞

রোদঃ ওয়েট আমি বলছি।।আসলে তরী কি হয়েছে মেঘ ভাইয়া আর উনার একটা ফ্রেন্ড আছে নাম আদ্র।।ওরা দুইজন এই পুরো কলেজের মেয়েদের ক্রাশ।যদিও আদ্র ভাইয়া প্রায়ই একের পর এক রিলেশন করে।।বাট মেঘ ভাইয়া তার উল্টো।। মেয়েদের দিকে ঘুরেও তাকায় নাহ কথা তো দুরের কথা।।বাট কয়েদিন ধরে শুধু বর্ষার আপুর সাথেই কথা বলে।।তাই সবাই ভাবছে যে মেঘ ভাইয়া বর্ষা আপুর সাথে রিলেশন এ আছে।

ফাবিহাঃ ওই বর্ষা কি আমার থেকে সুন্দর ছিলো নাকি।।যে নাহ চুন্নির মতো দেখতে।।আর মেঘ কিনা ওর সাথেই রিলেশন এ গেল😪(ন্যাকা কান্না করে)

রুহিঃ বাট ও তোর থেকে বেশি ট্যালেন্টেড ওকে।।।।উফ যখন মেঘ ভাইয়ার সাথে ডিউট গায় নাহ 😍।।মনে হয় মেড ফর ইচ আদার।

তরীঃ মেঘ ভাইয়া গান ও গাইতে পারে

রুহিঃ তুই জানিস নাহ

তরীঃ উহুম

রুহিঃ ওতো আমাদের কলেজের রকস্টার।। উফফ যখন গিটার টা বাজায় নাহ😍

ফাবিহাঃ সিল্কি চুল গুলো বাতাসে উড়ে,আর উনার হাতে ব্লাক গিটার।।উফফ ভাবতেই আবার ক্রাশ খাচ্ছি।।কি যে করি

ত্রিধাঃ ক্রাশ তো আমরা ও খাইছি।।তাই বলে এতো সুনাম করার কি আছে হুম।।তুই সুনাম করলে আমাদের জেলাসি হয় তো😒

রোদঃ আমার দিকে ও তো একটু তাকাতে পারিস।।আমি কি হ্যান্ডসাম কম নাকি(ভাব নিয়ে)

রুহি-ত্রিধা-ফাবিহা একসাথেঃ আর ইউ মেড😠

রোদঃ হুহ😤

রুহিঃ তোর জন্য মিতা আপা ঠিক আছে(চোখ টিপ মেরে)

তরীঃ মিতা কে??

রুহিঃ আমাদের কলেজের দপ্তরি🙊😂

তরী ও হেসে দিলো।।যদিও তার একটু ভালো লাগছে নাহ এখানে।।মেঘ রিলেশন এ আছে এইটা ভেবেই তরীর মনটা বার বার খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

রুহিঃ তরী আর ইউ ওকে?

তরীঃ নাহ একটু মাথা ব্যাথা করছে।

রুহিঃ তাহলে তুই চাইলে চলে যেতে পারিস।।এখন তো আর কোন ক্লাস হবে নাহ হয়তো

তরীঃ ওহহ ওকে তাহলে আমি বরং চলে যাই।।তোদের সাথে কাল দেখা হবে।।টাটা।।

তরী তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেল।বাট ক্যানটিন থেকে বের হতেই ধাক্কা খেল আদ্রর সাথে।।পরে যেতে নিলে আদ্র তরীর কোমড় ধরে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো।।

ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে সবার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।। আদ্র তাল সামলাতে নাহ পেরে তরীকে নিয়েই নিচে পড়ে গেল।।তরী ভয়ে আদ্রকে আকড়ে ধরলো।

চোখ নাহ খুলেই
তরীঃ আল্লাহ গো আমি শেষ।। আমার কোমড় হয়তো ভেঙেই গেছে গো😭

আদ্রঃ এই মেয়ে কি বলছো এইসব তোমার কিছুই হয়নি।।তুমি তো আমার উপরে পরেছে।।কোমড় তো ভেঙেছে আমার।

তরী চোখ পিটপিট করে তাকালো আদ্রর দিকে।।আদ্র তো ক্রাশ খেল তরীর এই চোখে।।

চলবে