প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 08

শান্ত চোখ কচলাতে কচলাতে উঠেই সোজা হাঁটা ধরলো
আহানা পিছন পিছন আসতেসে
আরে কি আজব আমাকে নিবেন না?
.
শান্ত হেঁটেই চলছে
অনেক দূর হেঁটে অবশেষে গাড়ীর দেখা পেলো তারা
বাসে উঠে শান্তির নিশ্বাস ফেললো দুজনে,উফ খুব বাঁচা বাঁচলাম
.
আহানা ঘুমাচ্ছে শান্তিতে
শান্ত আহানার হাতে ঠিক তেমন করে চিমটি কাটলো যেমন করে আহানা সকাল বেলা ওর পায়ে কেটেছিল
আহানা এক চিৎকার দিয়ে চোখ মেলে তার হাতের দিকে তাকালো
শান্ত না দেখার ভান করে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে
.
আপনি একটা অসভ্য লোক!
.
তুমি কম নাকি,আগে চিমটি কে দিসিলো?
আহানা আর কিছু বলতে পারলো না,চুপ করে থাকলো
.
আর কোনোদিন আমাকে চিমটি দিলে তোমার চামড়া উঠায় নিব আমি,সে চামড়া বিক্রি করে বিয়ার কিনবো

আহানা চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে,কিছু বলতেও পারছে না কারন বাসের পুরো ভাড়াটা শান্ত দিবে,এখন বাড়াবাড়ি করলে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে আমাকে রেখেই চলে যাবে
ঢাকায় ফিরতে ফিরতে বিকাল হয়ে গেলো
আহানা বাস থেকে নেমেই এক দৌড় মারলো
.
আজব তো,ভাড়া দিয়ে এতদূর থেকে আনলাম একটা ধন্যবাদ ও দিলো না,স্টুপিড গার্ল!
.
টিউশনি আজও মিস হয়ে গেলো,৩টা ৫০বাজে
টিয়াদের বাসার সামনে এসে হাঁপাচ্ছে আহানা
দরজায় নক করতেই টিয়ার মা এসে দরজা খুললেন
আহানার দিকে তাকিয়ে মুখটা ফুলিয়ে ভেতরে চলে গেলেন তারপর টাকা নিয়ে এসে বললেন নাও ১হাজার টাকা
আহানা টাকাটার দিকে তাকিয়ে তারপর টিয়ার মায়ের দিকে তাকালো
উনি বললেন আর টিয়াকে পড়াতে হবে না,এত মিস দিলে টিয়ার পড়ায় ডিস্টার্ব হয়
আহানা এই মাসের প্রথমদিন আসেনি ওর শরীর খারাপ ছিল বলে,কাল আর আজ ও আসেনি পিকনিকের কারনে
তাই উনি বললেন আর যেন না আসে,মাসের অর্ধেক দিনের বেতন আহানার হাতে ধরিয়ে দরজা লাগিয়ে চলে গেলেন উনি
আহানা টাকাগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে,তার মানে এখন তার প্রতিমাসে ৬হাজার টাকা হবে সংসার চালানোর জন্য?বাকি ২হাজার কাটা
আরেকটা টিউশনি খুঁজতে হবে আমাকে যে করেই হোক,ভাবতে ভাবতে আহানা হেঁটে বাকি ২টো টিউশনি করতে চলে গেলো
.
শান্ত বাসায় ঢুকতেই দেখলো রিয়াজ আর নওশাদ কোমড়ে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে
শান্ত জ্যাকেটটা খুলতে খুলতে চলে গেলো
নওশাদ আর রিয়াজ ও পেছন পেছন গেলো

হোয়াট?
.
তুই কাল কোথায় উধাও হয়ে গেসিলি?আর আহানা মেয়েটাও তো নাকি উধাও হয়ে গেসিলো
.
বাস নষ্ট হয়ে গেসিলো,আমি বাইরে বের হতেই ঐ মেয়েটার সাথে ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো,পরে তাকায় দেখলাম বাসই উধাও
.
রিয়াজ আর নওশাদ ব্রু কুঁচকে ২মিনিট শান্তর দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো,নির্ঘাত ভেবে নিসে আমার আর আহানার মধ্যে কিছু চলছে,এবার প্রতি পদে পদে খোঁচাবে
.
ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে হেলান দিয়ে বসলো শান্ত
বুয়া দরজায় টোকা দিয়ে বললো খাবার রেডি,আজ মুরগীর কোর্মা,পোলাও রান্না হয়েছে
শান্ত বললো খিধে নেই,রাত ১২টার দিকে খাবো
.
আজ আহানার মন খারাপ অনেক,আলু দুটো হাতে নিয়ে তাকিয়ে আছে সে,খরচ আরও কমিয়ে দিতে হবে,টিউশনি তো বললেই পাওয়া যায় না,কত কাঠ খড় পুড়িয়ে আরেকটা টিউশনির ব্যবস্থা করতে হবে
কিসব ভেবে আলুগুলো রেখে দিলো সে
একটা ছোট পেঁয়াজ কেটে ২টুকরো করে, মরিচ একটা নিয়ে ভাত রেঁধে সেটাই খেলো আহানা
কাল আলু ভর্তা করবো আর ভাত,তরকারি আগে ৪দিন পর পর কিনতাম কোনোদিন ঢেঁড়স কোনোদিন করলা,কোনোদিন বেগুন,এবার মনে হয় সপ্তাহে একবার কিনাও কঠিন হয়ে য়াবে
ভাতে পানি ঢেলে পেঁয়াজ কাঁচামরিচ দিয়ে তৃপ্তি করেই খেলো আহানা,এটা নতুন না এরকম আরও কত খেয়েছে,আশ্রম থেকে বের হওয়ার পর তো পানি ছাড়া কপালে কিছুই জোটেনি তার
তারপর জুটেছে পান্তা ভাত আর নুন,এসব ভেবে কাজ নেই,জীবন এমন করে চলে আসছে,বাস্তবতাকে মানতে আমি বাধ্য
বাকি ভাত ঢাকনা দিয়ে রেখে দিলো আহানা,বাসায় ফ্রিজ নেই,তাই পানি দিয়েই রেখেছে ভাত,কাল সকালে খেয়ে ভার্সিটিতে যাব
জামাটা ধুয়ে বাসার সামনের উঠানে দিয়ে এসে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো আহানা
সকাল সকাল উঠে পান্তা ভাত নিলো,পেঁয়াজের দিকে তাকিয়ে দেখলো আর ৩টা আছে,এখন আর খাওয়া যাবে না রাতে এসে আলুর ভর্তার সাথেও তো পেঁয়াজ দিতে হবে
কাঁচামরিচ নিয়ে নুন কচলিয়ে খালি সাদা ভাত খেয়েই বের হলো আহানা,পানি দিয়ে খেলো নাহলে গলায় বারবার আটকে যায় খালি ভাত
ভার্সিটিতে আসতেই রুপা চেপে ধরলো আহানাকে
.
তুই কোথাই ছিলি,কই গেছিলি,তোদের বাসের কি হয়েছিল ১০০টা প্রশ্ন করে বসেছে সে
আহানা সবটা খুলে বললো
.
ব্রেক টাইমে ক্যামপাসে বের হতেই আহানা মুখোমুখি হলো শান্তর সাথে
শান্ত চশমা ঠিক করে ওর দিকে তাকিয়ে ভেঁংচি দিয়ে চলে গেলো
.
শান্তর দিকে আহানার তাকানো দেখে রুপা বললো এমন করে তাকাস কেন,খেয়ে ফেলবি নাকি?

পারলে তো মরিচ ছিটিয়ে খেয়ে নিতাম বেয়াদবটারে,ওর জন্য কাল আমার লেট হয়েছে,থেকে যেতে হয়েছে রাঙামাটিতে,তার উপর টিয়ার মা আমার টিউশনিও অফ করে দিসে
.
আহানা তুই থাক আমি একটু আসতেসি আমার বাবা এসেছে ভার্সিটির ফিস দিতে,,আচ্ছা তুই ফিস দিবি না?
.
ফিস কত?
.
৩হাজার টাকা
.
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে বললো ওহ
.
হুম বাই.
রুপা চলে গেলো
.
আহানা!!!
আহানা পিছনে তাকিয়ে দেখলো এলিনা আর তার সাথে ৬/৭টা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
এলিনা হেসে বললো আজ না আমি সবাইকে ট্রিট দিচ্ছি ভাবলাম তোমাকেও দিই
.
ধন্যবাদ,তার দরকার নেই
.
আহা এমন করছো কেন,সেধে সেধে খাওয়াতে চাচ্ছি আমি! আর তুমি না করছো,তা হবে না,তোমাকে যেতেই হবে,এলিনা আহানার হাত ধরে জোর করে ভার্সিটির ক্যানটিনে নিয়ে আসলো
খাবার অনেকগুলো অর্ডার কলো,আহানা এক প্লেট ফুচকার দিকে তাকিয়ে আছে,জীবনে ফুচকা খায়নি সে,খেতে কেমন কে জানে,মুখে দিয়ে বেশ স্বাদ পেলো,খুশি হয়ে খেলো সে,আর ভাবলো এলিনা এতটাও খারাপ না
.
খাওয়া শেষে সবাই উঠে চলে যেতে থাকলো,ওয়েটার এসে আহানার হাতে বিল ধরিয়ে দিলো,১হাজার টাকা বরাবর
আহানা বললো বিল তো এলিনা আপু দিবে
.
কে বললো?
আহানা তুমি আমাদের ট্রিট দিসো বিল আমি কেন দিব?
.
কিন্তু মাত্রই তো আপনি বললেন ট্রিট দিতে আনছেন
.
এলিনা হেসে দিলো,সাথে বাকিরাও হাসলো
শুনছো মেয়েটার কথা?কানে কি কম শুনো?তুমি তো বললে আমাদের ট্রিট দিবে
সবাই একসাথে বললো হ্যাঁ আহানা বলেছে ট্রিট দিবে
.
আমাকে মিথ্যাবাদী বানাচ্ছেন কেন?
.
শশী ম্যাম পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন,গোলমাল দেখে ক্যানটিনে ঢুকে বললেন কি হয়েছে?
.
এলিনা বললো ম্যাম দেখুন না এই মেয়েটা আমাদের সবাইকে বললো ওর বার্থডে তে ট্রিট দিবে,আমরা খেয়ে উঠার পর এখন বলতেসে বিল নাকি আমি দিতাম
সবাই এলিনার কথার সাপোর্ট করলো
.
ম্যাম বিশ্বাস করুন আমাকে!আমি এটা বলিনি
.
আহানা?একা তুমি সত্যি বলতেসো আর বাকিরা মিথ্যা বলতেসে এটা তো আমি মানতে পারি না,টাকা পে করো যাও,আমি কোনো গোলমাল চাই না
.
ম্যাম আমার কাছে তো এখন টাকা নেই

ওয়েটার বললো বাসা থেকে নিয়ে আসতে
আহানা চুপ করে থেকে বেরিয়ে গেলো
বাসায় এসে আলমারি থেকে এক হাজার টাকার নোট নিয়ে চোখের পানি মুছে আবারও ভার্সিটিতে ফিরে আসলো,বিল পে করে দাঁড়িয়ে আছে সে,এলিনা হাসতে হাসতে চলে যাচ্ছে
আহানা আর কান্না থামাতে পারতেছে না কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো ভার্সিটি থেকে
.
শান্ত আহানাকে দেখলো কাঁদতে কাঁদতে চলে যাচ্ছে সে
.
এলিনা শান্তর পাশে বসে হাসতেসে অনবরত
.
কি হয়েছে?
.
জানো আজ ঐ আহানাকে টাইট দিসি
.
কি করছো?
.
ওকে বলসি আমি ট্রিট দিব তারপর আমি আর আমার কিছু ফ্রেন্ড খেয়ে দেয়ে বলে দিসি ও বলসিলো ট্রিট দিবে,সবাই আমার সাথে ওকে মিথ্যাবাদী বানায় দিসে,তারপর ও বাধ্য হয়ে বিলটা দিসে
.
এভাবে কারোর টাকা নিয়ে মজা করা ঠিক না
.
আরে বাদ দাও,মেয়েটা বেশি লাফায়,ভাব দেখায় আর জীবনে ভাব দেখাবে না,দেখিও
.
আহানা বাসায় ফিরে আসলো
মানুষ কেন আমাকেই ঠকায়,আমার সাথেই কেন সবসময় এমন হয়!
আলমারিতে আর ৪হাজার টাকা আছে,টিয়ার মায়ের দেওয়া এক হাজার নিয়ে বিল পে করেছে সে
আগের ঐ ৪হাজার টাকা থেকে কাল ৩হাজার টাকা ভার্সিটির ফিস দিতে হবে,কালই লাস্ট ডেট,আর থাকে এক হাজার,আমি এই টাকা দিয়ে কিভাবে পুরো মাস চালাবো
৪টা বাজে আহানা ফ্লোর থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ওড়নাটা হাতে নিয়ে টিউশনিতে চলে গেলো,সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেই দেখলো কনিকা আপু রান্নাঘরে,আহানাকে দেখে বললো ভালো হয়েছে তাড়াতাড়ি এসেছিস তোর সাথে আমার কথা আছে
.
কি আপু?

তোকে যে ১হাজার টাকা দিয়েছিলাম বই কিনার জন্য আমার immediately টাকা গুলো লাগবে,আমার বাবার অসুখ,২০হাজার পাঠাতে হবে বিকাশে,১৯হাজার জোগাড় করেছি আর ১হাজার লাগবে
আহানা চুপ করে থেকে ৪হাজার থেকে ১হাজার নিয়ে দিয়ে দিলো কনিকা আপুকে
বাকি ৩হাজার কাল ফিস দিয়ে দিবে,হাতে আর ১টা পয়সাও বাঁচবে না,না খেয়ে মরে যাবো,আর কিছু করার নেই,ভাগ্য তো আমার এমনই,আমি বারবার ভুলে যাই আর মানুষ ঠকিয়ে মনে করিয়ে দেয় আমি অনাথ,আমি অসহায়! আমি বোকা!
আজ আর রান্না করলো না আহানা
না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো,খিধা লেগেছিল কিন্তু ২বেলা এভাবে খেলে তো একটা দিন আসবে ১বেলাই জুটবে না,তাই এখন থেকে শুধু এক বেলাই খাবো
কোনোদিন দুপুরে আহানা খাবার খায় না,এক বেলার খাবার বাঁচায়,আর এখন ২বেলার খাবার বাঁচাবে,তাও চলবে কিনা জানি না,ঘরে চাল,পেঁয়াজ ৩টা,আলু ৪টা ছাড়া কিছুই নেই,হাতে এক টাকাও নেই,আমি মরে যাই না কেন আল্লাহ,আমাকে তুলে নাও না কেন?

পরেরদিন সকালে পানি ৩গ্লাস আর একটা বিসকুট খেয়ে বের হলো আহানা,ভার্সিটিতে এসে ফিস জমা দিয়ে চুপচাপ ক্লাসে বসে আছে সে,মাঝে মাঝে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তেসে,কেউ দেখার আগেই মুছে ফেলে
কাউকে দেখিয়ে লাভ নেই,আমার মত কপাল পোড়াকে মানুষ আর কিসের সহানুভূতি দেখাবে উল্টো ঠকায় বারবার
.
কিরে তোর চোখ মুখ এমন শুকিয়ে আছে কেন?সকালে কিছু খেয়ে আসিস নি?
.
আহানা হাত দিয়ে চোখ মুখ মুছে বললো হ্যাঁ রে রুপা! খেয়েছি তো,রুটি ভাজি,ডিম
.
ওহ,কেমন যেন তোর মুখটা শুকনো লাগতেসে,কিছু খাবি? চল!
.
না খিধে নেই
.
তাই বারবার পানি খাচ্ছিস?
.
গলা শুকায় তাই খাই আর কিছু না
.
একটা মেয়ে পাশের সিটে বসে বার্গার খাচ্ছে,আহানা একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো,মানুষ কত সুখে থাকে আর আমি সুখ কি তা জানি না,সুখের সন্ধান করলেই ঠকে যাই
.
ব্রেক টাইমে আহানা আর রুপা ঘাসের উপর এসে বসলো,রুপা আইস্ক্রিম খাচ্ছে আহানাকে ১০০বার বলসে তাও সে মানা করে দিসে
ক্যামপাসে থাকা সবাই কিছু না কিছু খাচ্ছে,আহানা ঘাসের দিকে তাকিয়ে বসে আছে,ওদের দিকে তাকালেই কষ্ট লাগবে তার টাকা নেই কেন এই ভেবে
পানির বোতলের পানি শেষ,আহানা বোতলটা নিয়ে ক্যানটিনের বাইরে ফিল্টারের সামনে এসে বোতলটা ভর্তি করে নিলো
পিছন ফিরতেই দেখলো শান্ত ও এসেছে বোতলে পানি নিতে
শান্ত আহানার চোখ মুখ দেখে অবাক হয়ে গেলো,মনে হয় অনেকদিন কিছু খায় না এমন তারপর চোখ নামিয়ে নিজের কাজে মন দিলো
আহানা ক্যামপাসের দিকে যাচ্ছে,মাথা ঘুরাচ্ছে,হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না,তাও গিয়ে রুপার পাশে এসে বসলো
সকাল থেকে পানি খেতে খেতে আর মন চাচ্ছে না,বিরক্তি এসে গেছে,,বোতলের দিকে তাকিয়ে বসে আছে সে,রুপা ওর পাশে বসে ফোনে কথা বলতেসে
আহানার চোখ থেকে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে বোতলের উপর গিয়ে পড়লো সাথে সাথে মুছে নিয়ে সে রুপার দিকে তাকালো,রুপা খেয়াল করেনি,ভালো হয়েছে,খেয়াল করলে তো মাথায় উঠাবে ব্যাপারটা
শান্ত আহানাকে কাঁদতে দেখে ফেললো,কি ব্যাপার আমি তো কিছু করিনি তাহলে কাঁদে কেন?
.
মনে হয় এলিনা যে ধোলায় দিসে সেই ১হাজার টাকার জন্য কাঁদে
.
না রিয়াজ!১হাজারের জন্য কেউ ক্যামপাসে বসে চোখের পানি ফেলে না
.
নয়ত বিএফের সাথে ঝগড়া করেছে এমন কিছু হবে,বাদ দে
.
আহানা আজ তাড়াতাড়ি ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো,ব্যাগে একটা টাকাও নেই,আস্তে আস্তে হেঁটে পিউদের বাসায় যাচ্ছে,তাকে আজ তাড়াতাড়ি পড়িয়ে বাসায় ফিরে আসবে,শরীর বেশি খারাপ লাগতেসে সেই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় আহানার মনে পড়লো শান্তের কথা,সবসময় এই পথে এসে ওর পথ আটকায় শান্ত
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে হাঁটতেসে আর সামনে গিয়ে কারোর সাথে ধাক্কা খেলো,শান্ত গম্ভীর হয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে আছে পকেটে হাত ঢুকিয়ে

আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে চলে যেতে নিতেই শান্ত বললো তখন কাঁদছিলে কেন?
.
আহানা থেমে গিয়ে বললো আপনার কি?
.
বিএফ ছ্যাঁকা দিয়েছে বুঝি?
.
আহানা কিছু না বলে হাঁটা ধরলো
শান্ত আহানার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের দিকে ফিরালো
.
বলো?
.
আপনাকে কোনো কথার জবাব দিতে বাধ্য না আমি,আমার হাত ছাড়ুন আহানা টানাটানি করতেসে
তার হাত শান্ত শক্ত করে ধরে তাকিয়ে আছে ওর উত্তর পাওয়ার জন্য
.
আপনি আমার হাত ছাড়ুনননন
আহানার চোখের সামনে সব ঝাপসা হয়ে আসলো,তারপর সব অন্ধকার!
নিমিষেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে পড়ে যেতে নিতেই শান্ত আহানার হাত টেনে ধরে ওকে ধরে ফেললো
শান্ত বুঝতেসে না কি হয়েছে আহানার
.
আহানা?
আহানা কথা বলছে না দেখে শান্ত ওকে হসপিটালে নিয়ে আসলো
হাতে ক্যানেলার লাগিয়ে ডাক্তার একটা সেলাইন দিয়ে দিসে,তারপর বললেন ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করে না নাকি?
.
শান্ত তো জানেও না আহানা খাওয়া দাওয়া করে না কেন
.
আহানা চোখ মেলে দেখলো সে হসপিটালের বেডে,আশেপাশে কেউ নেই
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে জিজ্ঞেস করলেন এখন কেমন লাগছে আহানা বললো ভালো,উনি আহানার হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন
আহানা ভয়ে শেষ,না জানি কত বিল আসছে,কি দরকার ছিল আমাকে হসপিটালে ভর্তি করানোর,আর কে করেছে ভর্তি?
.
আমার মনে হয় উনার নাম শাহরিয়ার শান্ত,কাগজে লিখা আছে দেখে নিন
আহানা কাঁপা কাঁপা হাতে কাগজটা ধরে তাকালো,বিল পে করা আগে থেকেই

ডাক্তার বললেন ঔষধ গুলো কিনতে
আহানা হসপিটাল থেকে বের হয়ে হেঁটে যাচ্ছে আর ভাবতেসে যার হাতে এক টাকাও নেই সে ঔষুধ কিনবে এটা তো বিলাসিতাকেও হার মানাবে,কাগজটা মুড়িয়ে রোডে ফেলে দিলো আহানা
.
এই মেয়ে!!
.
আহানা ভয় পেয়ে পিছনে তাকালো
শান্ত চোখ বড় করে বললো prescription ফেলে দিসো কেন?আমি ঔষুধ সব কিনছি এটা দেখে কখন কোনটা খাবা সেটা জেনে নিতা,ফেললে কেন?
.
আহানা কি বলবে বুঝতেসে না
চলবে♥