কেনা বউ !! Part- 04
ইয়া লম্বা খাবার টেবিলে টাইটুম্বুর নানা রকম খাবার দিয়ে।দেশি বিদেশি নানান খাবার। অনেক খাবারে নামও অজানা।খাবর টেবিলে মাথা সটান করে বসে কাঁটা চামচ আর ছুড়ি দিয়ে কট কট করে খাবার কেঁটে মুখে দিচ্ছে আরিশ। শ্রেয়া বার বার আড় চোখব আরিশের এভাবে খাবার খাওয়া দেখছে। এত সুন্দর করে কেউ খাবার খায় জানা ছিল না শ্রেয়ার।শ্রেয়া বারিশের ডান পাশে বসে আছে, তার বাম পাশে বারিশের মা রেশমি। তিনিও একি ধাচে খাচ্ছেন। শ্রেয়ার মনে হচ্ছে এখন,খাবার খাওয়াও একটি আর্ট। সে চামুচ ধারা খেতে পারে না। তাই প্লেটে চামুচ নারাচ্ছে। যা বার কয়েক চোখে পরেছে আরিশের। তা দেখে ছোট শ্বাস নেয় সে। কি মেয়ে বাবা, মুখ ফুঁটে কিছু বলতেই চায় না। আর বলতেই কেন হয় এটা তো আমার বাড়ি আর আমার বাড়ি মানে তার বাড়ি।সো কি এতো কিসের ভাবনা।আরিশ বলল,
—এনি প্রবলেম?
শ্রেয়া মাথা নারায়..!যার অর্থ না..!
—-তাহলে খাচ্ছো না কেন?
শ্রেয়া চুপ..!
—-খাবার পছন্দ হয়নি নাকি?
আরিশের কথা ফোড়ন কেঁটে রেশমি বলে উঠে,
—-কি বলছিস বাবা? ওর পছন্দেরই তো সব..!
রেশমির কথা শেষ না হতেই খিচিয়ে তাকে বলল আরিশ,
—-আপনাকে জিগ্যেস করেছি? নাক গলান কেন সব কিছুতে?
আরিশের কথায় কষ্টে পেলেন রেশমি এই ছেলেটা প্রতিবার তাকে অপামন করে। তাই বলে বউয়ের সামনে করবে? যতই সে হোক সৎ মা..! মাতো নিজের ছেলের মতোই মানুষ করেছিলেন তিনি। হায় আফসোস ছেলেটি তাকে কখনো মায়ে দরজা দিলেন না..!
আরিশের মায়ের প্রতি আরিশের ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইল শ্রেয়া। লোকটা কত বদ মেজাজি নিজের মার সাথে এমন কেউ করে?
সে না হয় পরের ঘরের মেয়ে কিন্তু সে তো তার মা।শ্রেয়া বুঝে তার মা নেই বলে কেমন লাগে, আর আরিশ তো পাগল, তার কাছে মা থাকতেো তার কদর করে না।
শ্রেয়ার ভাবনায় ছেদ পরে আরিশের ধমকে। পুরো কেঁপে উঠে শ্রেয়া। হাতে থাকা চামুচ টা নিচে পরে টুঙ টাং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে দিল।
—কাঁটা চামচ দিয়ে খেতে না পারলে হাত দিয়ে খাও।এভাবে খাবার নিয়ে বসে থাকার মানে কি?
শ্রেয়া কম্পন জড়িত কন্ঠে বলল,
—খখাচ্ছি।
আরিশ বলল,
—-থাক তোমার হাত দিয়ে খেতে হবে না..!আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
শ্রেয়া অবাক হয়ে চেয়ে রইল, এ লোকে বুঝা বড় দায়। এক মুহুর্তেই ঝাড়ছে আবার আদর দেখাচ্ছে হুহ খাটাশ একটা..!
শ্রেয়া মুখের সামনে খাবার তুলে ধরলো আরিশ। শ্রেয়া চুপচাপ খেয়ে নিল। কথা বারালো না। আপাতত অনেক খুদা পেটে তার।
🍁
—-প্লীজ আরিশ, আমাকে মারিশ না।
—-তোকে তো মরতেই হবে, তিল তিল করে মারবো?
—-আমার ভুল হয়ে আরিশ, মাফ করে দে..!
—-আমার ডিকশনারিতে মাফ বলতে কিছু নেই। অন্যয় করলে তার শাস্তিতো পেতেই হবে..!আর তুই তো পাপ করেছিস..!গোড় পাপ..!তোর উচিত হয়নি আমার বউকে টাচ করার।
—-ভাই মাফ করে..!
আর বলতে পারলো না দিহান। তার আগেই কন্ঠ নালিতে গরম লোহা ঢুকিয়ে দিয়েছে..!
আরিশ হাতে গ্লাভস খুলে হাত ধুয়ে নিল হেন্ড ওয়াশ দিয়ে।সেখান থেকে বের দু জন গার্ডকে বলল,
—ক্লিন দা ডাস্ট..!!
বলে গাড়িতে উঠে বসলো সে..!
আর ভাবতে লাগলো তখনের কথা..!
আরিশ শ্রেয়াকে নিয়ে শপিংমলে আসে। তার জন্য কিছু শাড়ি কিনবে বলে। শ্রেয়া ভয়ে কাচুমাচু হয়ে হাটচ্ছে তার পাশে, আরিশ শ্রেয়ার কোমরে হাত চেপে তার কাছে নিয়ে আসচ্ছে বার বার। শ্রেয়ার কেমন অস্বস্তি লাগছে, কারন আশে পাশে সবাই তাদের দিক ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে।
আরিশ শ্রেয়াকে নিযে একটি শাড়ির দোকানে ঢুকে শাড়ি দেখতে থাকে। দোকানদারের উদ্দেশ্য আরিশ বলে,
—-কিছু আনকমন কালেকশন দেখান?
দোকানদার তো মহা খুশি আরিশের মত বিলোনিয়ার তার দোকানে কদম ফেলেছেন। তিনি খুশিতে গদ গদ হয়ে শাড়ি দেখিয়ে যাচ্ছে।সাথে দোকানের কর্মচারীকে চা কফি ঠান্ডা আনতে পাঠিয়ে দিলেন।
আরিশ শ্রেয়ার গায়ে একটি ব্ল্যাক কালার শাড়ি ধরলো। মনে মনে বলল, মাশাআল্লাহ তার পিচ্চি বউটাকে। এভাবে আরো কটা শাড়ি নিতে বাধা দেয় শ্রেয়া।তখনি চোখ রাঙ্গায় আরিশ।আরিশের চোখ রাঙ্গানিতেই আরো কাচুমাচু হয়ে যায় শ্রেয়া। মাথা নত করে বসে থাকে পুতুলের মতোই।
কেনাকাটা শেষে ফুড কোডে চলে আসে তারা।কুছি খাবার অর্ডার করে কোনার একটি টেবিলে গিয়ে বসে তারা।শ্রেয়া সেই আগের মতো কাচুমাচু করে বসে আছে। আর আরিশ এক ধেয়ানে তাকিয়ে আছে। বার কয়েক আড় চোখে তাকিয়ে চোখ চোক পরতে নিচে তাকিয়ে যায় শ্রেয়া। কিন্তু আরিশ তাকিয়েই আছে..!কোনো পুরুষালী কন্ঠে শ্রেয়ার দিক থেকে সেই কন্ঠের ব্যাক্তির দিক তাকায় সে..।
তখনি মুখে টান টান হাসি নিযে বলে উঠে দিহান,
—-ওহো আরিশ ব্রো হোয়াটসঅ্যাপ?
আরিশ মুচকি হেসে বলে,
—গুড। তোর?
—-আমি সব সময় কুল থাকি..!
শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে,
—-বাই দ্যা ওয়ে..!এই বিউটিফুল টাকেরে?
আরিশের রাগ লাগলো। তার বউকে কেউ সুন্দর বলুক তা তার মোটে পছন্দ না। আর দিহান কে তো আরো না..!এক নাম্বার প্লে বয় সে..!
আরিশ বলল,
—-আমার বউ..!
দিহান একটু টেনে বলল,,
—-ও এম জি… মামা তোমার ভাগ্যতো সেই..!ঝাক্কাস মাল পাইছো..!
আরিশ রেগে বলল,
—-দিহান ভাল ভাবে কথা বল..!সি ইজ মাই ওয়াইফ।।
দিহান দাঁত কেলিয়ে বলল,
—-রাগ করো কেন মামা..!ফান করছি তো? আর আমি তো ভাবির দেওর। এটুক হক তো আছে নাকি ভাবি?
শ্রেয়া চুপ মেরে রইল। লোকটিকে তার মোটেও পছন্দ হচ্ছেনা। পুরোই গায়ে পরা। আর তার ভাষা শুনে বমি আসচ্ছে শ্রেয়ার।
তখনি দিহান উঠে গিয়ে বসে পরলো শ্রেয়ার পাশে একদম গা ঘেসে।শ্রেয়া ভয়ে দূরে সরে গেল কিছুটা। হুট করে এমন কাজে আরিশ রাগ উঠে যায়। সে দাড়িয়ে চিল্লিয়ে বলে উঠে,
—-উঠ ওর পাশ থেকে উঠ বলছি।
—-আরে কুল কুল মামা, রেগে যাচ্ছিস কেন?আচ্ছা উঠে যাচ্ছি, বলে উঠে গেল। আর যাওয়ার আকস্মিক শ্রেয়ার হাত টান দিয়ে চুমু খেয়ে বলর দিহান,
—-আবার দেখা হবে ভাবী…!
দিহানের এমন কাজে আরিশ মাথা রক্ত চরে গেল। চোখ লাল হয়ে গেল তার। শ্রেয়া এখন বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আরিশের দিক।আরিশ রাগে এবার টেবিলের গ্লাসটি মাটিতে ফেলে দেয়। যা পরে খন্ড খন্ড হয়ে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে,। তা দেখে শ্রেয়ার আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে। সে শাড়ির আঁচল মুঠ করে ধরে বসে আছে।তখন আরিশ টানতে টানতে ওকে বাসায় নিয়ে যায়। শ্রেয়া এমনিতে ভয়ে ছিল এখন ব্যবহারে কেঁদে দিলো সে..!ঘরে ঢুকেই শ্রেয়াকে ঠাসস করে চর মেরে দেয় আরিশ। চরের বেগ এতটা ছিল যে, শ্রেয়া নিচে পরে যায়, আর ঠোঁট কেঁটে রক্ত বের হতে লাগে…।
শ্রেয়া কে এভাবেই রেখে বেরিয়ে আসে সে….!রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছিল তার..!
কিছু গার্ডকে বলে দিহানকে ধরে নিয়ে আসে আরিশ। আর তার খুন করে দেয়। ছোট শ্বাস ফেলে আরিশ..!তার জিনেসে কেউ হাত দিলে সে কাউকে ছাড়ে না..! আর দিহান তার কলিজায় হাত দিয়েছে তাকে কিভাবে ছেড়ে দিবে সে..!
চলবে,