The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 81

বড় ভাবির সাথে আশফিনা অনেকটা মিলে গেছে।রামীন ঘরে না থাকলে দুজনে একসাথেই সময় কাঁটায়।রামীন ঘরে ফিরলে ও আশফিনা তেমন একটা রুমে যায়না।তবে রামীন ওকে নানান বাহানায় ডাকতে থাকে কখনো এটা পাচ্ছে না ওটা পাচ্ছেনা কখনো বা টাওয়েল এগিয়ে দিতে।আশফিনা চাইছে দূরে থাকতে কিন্তু সে দেয়না।সেদিন সকালে নাস্তায় হেল্প করছিলো ভাবিকে।রামীন ঘুমাচ্ছে।আশফিনা উঠলো সাতটায়।এসে দেখে ভাবি কাজ করছে।আশফিনা তখন থেকেই ওনার সাথে।আশফিনা কে এত সকালে দেখে ভাবি বলেন,
.
.
-”আশু এত সকালে উঠলে যে?”
-”ভাবি ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিলো।রাতে খুব আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।”
-”দেবর সাহেব বুঝি অতো জ্বালায় না?”
-”জি???”
.
.
ভাবি কথাটি দুষ্টুমির ছলে বলেন।কিন্তু আশফিনা খেয়াল করতে পারেনি ওনার কথা।ভাবি হাসছেন।আশফিনা আবার ও বলল,
.
.
-”ভাবি কি বলেছিলেন?”
-”বললাম আমার দেবরটা খুব ভদ্র।রাতে একদম দুষ্টুমি করেনা।”
-”করে করে খুব দুষ্টুমি করে(মিনমিন করে)।”
-”কিছু বললে আশু?”
-”না ভাবি কিছুনা।”
.
.
বড় ভাবি হাসতে লাগেন মুখ লুকিয়ে।আশফিনা বুঝতে পারেনা ওনার হাসির কারন।নয়টায় রামীনের ঘুম ভাঙ্গে।আশফিনাকে রুমে না পেয়ে উঠে দরজার কাছে আসে।আশফিনা কিচেনে কাজ করছে।রামীন একটু সরে এসে বলল,
.
.
-”আশু এই আশু!!!
.
.
রামীনের ডাক শুনে বড় ভাবি হেসে বলেন,
.
.
-”যাও ডাকছে তোমাকে।”
-”হুম।”
.
.
রামীন তখন ও ডেকেই চলছে।এবার আশফিনার যেন লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার যোগাড়।রামীন ওপর থেকে বলছে,
.
.
-”আমার মর্নিং কিসটা পাওয়া হলো না আশু।রুমে আসো এক্ষুনি।”
.
.
রামীনের কথা শুনে ভাবি হেসে ফেলেন।আশফিনা লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে চাইছে।কিছু না বলে কাজে মন দেয় আশফিনা।কিছুক্ষন পর রামীন আবার ও ডাকছে,
.
.
-”আশু গিজারের সুইচটা দাও তো।আর আমার কফিটা এনে দাও প্লিজ।”
.
.
আশফিনা গিজারের সুইচ অন করে কফি বানিয়ে রুমে আসে।রামীন কাপড় ছাড়া বসে আছে খাটে।আশফিনার ভীষন লজ্জা লাগে।তবে ওর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।কফিটা টেবিলে রেখে তেড়ে এলো রামীনের কাছে।
.
.
-”সমস্যা কি?”
-”কোন সমস্যা?”
-”কি ধরনের ফাজলামো এগুলো?”
-”কি ফাজলামো করলাম বলবে তো?”
-”ভাবির সামনে কি বলছিলেন?”
-”গিজারের সুইচ আর কফি।”
-”তার আগে।”
.
.
রামীন উঠে দাঁড়িয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।আশফিনা আবার পিছে ফিরলো।রেগে বলল,
.
.
-”দরজা কেন লাগালেন?”
.
.
রামীন এসে আশফিনার গায়ের উড়না সরিয়ে ওর কাঁধে ঠোঁট স্পর্শ করে।কিছুসময়ের জন্য থমকে যায় আশফিনা।এদিকে রোয়েন রুহীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছে।ডেইলি চেকআপের জন্য।চেকআপ করে বেরিয়ে এলো ওরা।দুজনে বাগানের চারপাশে হাঁটছে।হঠাৎ রুহী বলল,
.
.
-”এখানে কিছু ছবি তুলে দিবে আমার?”
-”শিওর।যাও দঁড়াও।”
-”শুনো!! প্রত্যেক মাসে ও যতোটুকু বড় হবে প্রত্যেকটা মুহূর্তের ছবি তুলবো আমরা।”
-”আচ্ছা বাবা।যাও দাঁড়াও।”
.
.
রুহী ফুলের কাছে এসে দাঁড়ায়।ফুল ধরে ছবি তুলতে থাকে।আবার কখনো পেটে হাত রেখে ছবি তুলে।রুহী বলল,
.
.
-”তুমি ও আসো।”
-”আমি তুলে দিচ্ছি তুমি দাঁড়াও।”
-”আসতে হবে।আসো প্লিজ।”
-”বাট কিভাবে।কে ছবি তুলবে তাহলে?”
-”মালি কে বলো।ওনি পানি দিচ্ছে ওখানকার গাছে।”
-”মালি!!!”
-”প্লিজ বলো না।”
.
.
রোয়েন জানে কিছু বলে লাভ নেই।তাই মালিকে ডেকে আনে।মালি এসে ওদের ছবি তুলে।রুহী রোয়েন কে অবাক করে দিয়ে ওকে একদম জড়িয়ে ধরে মালির সামনে।রোয়েন লজ্জা পড়ে যায়।মালি মিটমিটিয়ে হাসে।ছবি তুলা শেষ হলে রুহীকে নিয়ে ঘরে আসে রোয়েন।রাস্তায় রোয়েনের চেহারা দেখার মতো হয়েছিলো।রুহীকে ঘরে এনেই ওকে দরজার মাঝে চেঁপে ধরে রোয়েন।তারপর বলল,
.
.
-”এমন করলে কেন মালির সামনে?”
-”আমার বরকেই জড়িয়ে ধরেছি ওনার কি?”
-”লজ্জা দিয়েছো আমায়।এর প্রতিশোধ এক্ষুনি নিবো।”
-”লজ্জার প্রতিশোধ হয়নাকি?”
-”হুম হয়।দেখবে?”
-”নিশ্চয়ই মিষ্টি প্রতিশোধ।দেখতে চাই।”
.
.
রোয়েন রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে চুমু খেতে শুরু করে একদম শরীরের সব শক্তি দিয়ে।রুহীর নিশ্বাস আটকে আসছে।রোয়েন রুহীকে অনেকটা জোরে জড়িয়ে ধরে রুমে নিয়ে আসে।অনেকসময় পর রোয়েন সরে আসে।
রুহী জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।নাক ঠোঁট লাল হয়ে গেছে।রুহী দম নিয়ে বলল,
.
.
-”এখানে কোন প্রকার লজ্জা পাইনি আমি।এটা কোন প্রতিশোধ হয়নি।”
-”তুমি আমার ঘরের সম্মান।বৌকে লজ্জা দিয়ে গর্বের কিছু নেই।এর চেয়ে ভালো মিষ্টি প্রতিশোধই নেই।এর চেয়ে এমন মিষ্টি প্রতিনিয়ত খেতে ইচ্ছে হয়।তো প্রতিশোধের নাম করে খেয়েই নিলাম।”
-”আপনিও না??প্রতিশোধটা কিন্তু কড়া মিষ্টি ছিলো রোয়েন।”
-”কি?”
-”কিছুনা।”
.
.
লজ্জা পেয়ে রোয়েনের বুকে মুখ লুকায় রুহী।রুহীকে নিয়ে শপিং নিয়ে যায় রোয়েন।কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস শপিং করে বেরিয়ে আসে ওরা।হঠাৎ রুহী বায়না ধরলো মুভি দেখবে।রোয়েন কি যেন ভেবে ওকে নিয়ে এলো সিনেপ্লেক্সে। আধঘন্টার মাঝে পুরো সিনেপ্লেক্স ভাড়া করে নিয়েছে ও।মুভিটা ছিলে কমেডি রোম্যান্স একটু একশনিং।কিন্তু রুহী পুরো মুভিতে কেঁদেছে।এমন কি নায়ক নায়িকার বিয়েতে ও কাঁদছিলো।রোয়েন ভাবে কি কি দেখতে হবে ওকে আরো?কয়েকটাদিন পার হতে থাকে।রোয়েনের ভালবাসা বাড়ছে।লাস্ট এক্সাম দুটোয় রোয়েন সারাদিন কলেজে ছিলো।রুহীকে নিয়ে ঘরে ফিরে আসে ও।এদিকে আশফিনার সাথে রামীনের দুষ্টুমি মাখা রোম্যান্স ও বাড়ছে।ছোট ছেলের বৌয়ের জন্য অনেক উপহার পাঠিয়েছেন রামীনের বাবা মা।
তারা সরাসরি বৌ কে দেখতে চায়।এরই মাঝে আরমান হামিদের কোম্পানীটা ইন্টারন্যাশনাল।বাংলাদেশে ও এই কোম্পানীর ব্রাঞ্চ আছে গুলসানে।
নীরা হামিদ রুহীকে কল দেন।রুহী শুয়েছিলো।রোয়েন কাজে গেছে।মামীর কল পেয়ে ভীষন খুশি রুহী।লাফিয়ে ফোন রিসিভ করলো,
.
.
-”রুহী কেমন আছিস আম্মু?”
-”ভালো মামী।তুমি কেমন আছো?”
-”এই তো আম্মু।রোয়েন কেমন আছে?”
-”ভালো।”
-”তোর শরীর ভালো আছে?ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করিস তো?”
-”জি মামী।”
-”আচ্ছা শোন তোর মামার বদলি হয়েছে।”
-”কোথায়?”
-”বাংলাদেশে।গুলসানে ওদের কোম্পানীর ব্রাঞ্চ আছে শুনলাম।”
.
.
রুহী খুশিতে আটখানা।বাংলাদেশে আসবে তাও আবার গুলসানে ওদের এরিয়ায়।রুহী হেসে বলল,
.
.
-”মামী খুব ভালো লাগছে আপনারা আসবেন শুনে।তা কবে আসবেন?”
-”নেক্সট মান্থ।”
-”ওহ।সামায়রা ভালো আছে?”
-”হ্য।যখন শুনেছে ও খালা হচ্ছে কি যে খুশি।”
-”জলদি চলে আসেন মামী।আমি অপেক্ষা করতে পারছিনা। ”
-”আসবো মা।নিজের খেয়াল রাখিস।বেশি লাফালাফি করবিনা।”
-”আচ্ছা মামী।”
.
.
এরই মাঝে রুহী শুনতে পায় কলিংবেল।মামীকে বলে ফোন কেঁটে দরজা খুলে দিয়ে কাউকে পায় না রুহী।হঠাৎ কোথা থেকে যেন রোয়েন এসে জড়িয়ে ধরে ওকে।রুহী ভাবছে একটু আগেই না গেলো।আর এখনই???
.
.
-”রোয়েন ঠিক আছো?”
-”আই লাভ ইউ রুহী।খুব মিস করছিলাম।”
-”আই লাভ ইউ টু।এখনিই তো গেলে।”
-”আই নো।বাট আই মিসড ইউ।আই নিড ইউ রাইট নাউ রুহী।”
.
.
বলেই উন্মাদের মতো রুহীকে চুমু খেতে থাকে রোয়েন।এবং কিছুক্ষন পরই ওকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে আসে।রুহীকে বিছানায় শুইয়ে ওর গলায় মুখ ডোবায় রোয়েন।দুজন দুজনায় হারিয়ে যেতে থাকে।রোয়েন আজকাল বড্ড পাজি হয়ে গেছে।যখন তখন ঘরে এসে রোম্যান্স শুরু করে।কখনো ফুল চকলেট নিয়ে আসে।রুহী বলার আগেই সব ওর সামনে হাজির।
রুহীর নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হয়।এক পর্যায়ে ভয় হতে থাকে যদি হারিয়ে ফেলে?রোয়েনের এমন পাগলামো দেখে রামীন হেসে বলে,
.
.
-”নতুন বিয়ে করলাম আমি আর এমন পাগলামী করিস তুই?”
-”ওকে ছাড়া এক মুহূর্ত ও ভালো লাগেনা আমার।ওর একটা দর্শন অনেক আমার জন্য।”
-”দোস্ত তুই ঠিক আছিস তো?”
-”কেন? ভ্রু কুঁচকে বলে রোয়েন।”
-”এতো রোমান্টিক হলি কবে?তাও আবার আমার সামনে এসব বলছিস?”
-”ভাই শোন আমি রোমান্টিক হলে রুহীর সামনে হবো।তোর সামনে কেন হবো?আমার তো এমন কোন সমস্যা নেই।”
-”আরে যাহ বেটা ফাজলামো করছিলাম।”
.
.
রোয়েন কিছু না বলে কাজে মন দেয়।আরো কয়েকদিন পার হয়।সকাল থেকেই কেমন যেন লাগছে রুহীর।লোকটাকে কাজে যেতে ও দেয়নি।নিজের সাথেই রেখে।তিনমাস শুরু হলো সবে।শরীরটা ও খারাপ।রুহীকে এমন অস্থির হতে দেখে রোয়েন ভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাবার কথা।তাই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে নেয় ও।রুহীকে আজ যেতে হবে হাসপাতালে।কিন্তু রুহী যাবেনা।কোথাওনা রোয়েন কে ও বের হতে দেবেনা।বড্ড ভয় লাগছে ওর।রোয়েন ওকে ফ্রেশ করিয়ে রেডি করাচ্ছে।রুহী বারবার বলছে আজ না আরেকদিন।রোয়েন শুনেনি।জোর করে নিয়ে আসে হাসপাতালে। বাহিরের একটা হাসপাতালে যাবে ওরা।ওদের কলোনীর বাহিরের।রুহীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতেই ও বলল,
.
.
-”পানি খাবো রোয়েন।”
-”আনতেই ভুলে গেছি জান।তুমি দাঁড়াও নিয়ে আসি আমি।”
-”ওকে।বাট সাবধানে প্লিজ।”
-”এখানেই আছি।ভয় পাচ্ছো কেন?”
-”জানি না।বাট সাবধানে যাবে।”
-”ওকে ডিয়ার।”
.
.
রোয়েন নেমে আসে।রুহী হঠাৎ কিছু বলার জন্য পিছনে ফিরেই জোরে চিৎকার করে।
চলবে