The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 123

→বিয়ে পড়ানো শেষে কাজী চলে গেলো।সামায়রা আর ফাহমিনকে পাশাপাশি বসানো হলো।রুহী সামায়রা আর ফাহমিনের সামনে এসে দাঁড়িয়ে দুজনকে মিষ্টি খাইয়ে দিয়ে মজা করে বলল,
”এখন আপনার জেঠাস আমি।”
ফাহমিন মনে করার ভান করে বলল,
”ওহ হ্যা ঠিকই বললে।এখন তো আপা বলতে হবে তোমাকে।আপা নাকি ভাবি বলবো?”
”সব সময় আপনাদের ছোট বোন ছিলাম সেটাই থাকতে চাই।”
”অবশ্যই। ”
আরমান হামিদ রুহী আর রোয়েনকে বললেন,
”বড় বোন আর দুলাভাই এসে ছবি তুলো।”
রোয়েন মাথা নেড়ে রুহীকে নিয়ে ফাহমিন আর সামায়রার সাথে ছবি তুলল।ফাহমিনের ভালবাসা পূর্নতা পেলো সামায়রাকে জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে।সবার চোখকে আড়াল সামায়রার হাত ধরতেই সামায়রা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ভীত দৃষ্টিতে ফাহমিনের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে সামনে তাকায়।ফাহমিন বিরক্ত হয়ে সামনে তাকাতেই দেখলো রামীন,রাজীব,সাজিদ, জুয়েল হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।রোয়েন রুহীর পাশে দাঁড়িয়ে দুষ্টু হাসি দিচ্ছে ফাহমিনের দিকে।ফাহমিন খুব ধীরে বলল,
”দেখে নিবো।”
জুয়েল এসে ফাহমিনের পাশে বসে ওর কানে বলল,
”এখন নাবালিকা বৌটাকে দেখে নেয়।আমাদের না দেখলে ও চলবে।”
ফাহমিন হেসে জুয়েলের হাতে চিমটি কেঁটে দেয়।জুয়েল হাসতে হাসতে দাঁড়িয়ে যায়।সামায়রা শুনতে পেয়েছিলো জুয়েলের ফিসফিস আওয়াজ কিন্তু কথা বুঝেনি।তাই ফাহমিনের দিকে নস তাকিয়ে ধীরে বলল,
”জুয়েল ভাই কি বলছিলো?”
”নাবালিকা মেয়ে বিয়ে করেছি সেটা।”
সামায়রার মুখ চুপসে গেলো।কিছু বলতেই পারলোনা।এদিকে রোয়েন মেয়েকে কোলে নিয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে।রুহী আর আশফিনা সামায়রার সাথে বসে আছে।সামায়রা কে আশফিনা সব বুঝিয়ে দিচ্ছে কি কি করতে হবে,কি না করতে হবে।সামায়রা ও মাথা ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে কিন্তু রুহী উপর থেকে রোয়েনকে দেখছে।রোয়েন ও রুহীকে দেখছে।দ্রিধাকে দেখিয়ে বলছে,
”দেখো তোমার মা।”
রুহী ওপর থেকে ইশারা করে বলল,
”ভালবাসি।”
জবাবে উড়ন্ত চুম্বন পাঠিয়ে দেয়। ব্যাপারটা আশফিনা খেয়াল করে বলল,
”উপর নিচের প্রোম শেষ হলে আমরা একটু কথা বলতে পারি?”
আশফিনার কথায় লজ্জা পেয়ে রুহী সামনে তাকিয়ে বলল,
”দ্রিধা কে দেখছিলাম।ওর বাবাকে বিরক্ত করছে না তো?”
”হুম।দ্রিধাকে কতোটা দেখা হচ্ছে সেটা জানি। এর চেয়ে বরং আমাদের সময় দেন আপনি।”
রুহী লজ্জায় এতটুকু হয়ে গেলো।রোয়েন আবার উপরে তাকিয়ে রুহীকে পেলোনা। ফাহমিন হঠাৎ বলল,
”আমাকে নিয়ে মজা করছিস।আমাদের মাফিয়া ম্যানকে দেখ তোরা।”
রোয়েন বলল,
”লিসেন আই লাভ রুহী সেটা আমি বলতে পারি কোন সংকোচ বোধ ছাড়া।”
জুয়েল দ্রিধাকে আদর করে বলল,
”মামনি তোমার নির্লজ্জ বাবাকে দেখো।কেমন নিজের পার্সোনাল কথা আমাদের সামনে বলছে।”
রোয়েন বলল,
”নির্লজ্জ না সাহসী।ভালবাসা প্রকাশ করার সাহস সবার থাকেনা তাও আবার জনবহুল পরিবেশে।”
সাজিদ পিছন থেকে বলল,
”সেটা ঠিক।বিনীতাকে প্রপোজ করতে দুবছর টাইম লেগেছিলো।”
খাবার শেষে বিদায়ের সময় চলে আসে।সামায়রা মা বাবা আর রুহীকে ধরে খুব কাঁদছিলো।রুহী ও কেঁদেছে।দ্রিধা সবাইকে কাঁদতে দেখে সজোরে কেঁদে উঠে।সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ফাহমিন আর ওর পরিবার বেরিয়ে আসে সামায়রাকে নিয়ে।
রুহী রোয়েন বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসে।ঘরে ফিরেই গায়ের গয়না গুলো খুলে বিছানার ওপর ধপ করে শুয়ে পড়ে রুহী।যতক্ষন গয়না গুলো পড়েছিলো যেন নিজেকে স্বর্নকার মনে হচ্ছিলো।এখন যেন শান্তি লাগছে।মেয়েকে ramilar কাছে দিয়ে রুমে আসে রোয়েন।রুহীর কাছে এসে বসে বলল,
”টায়ার্ড?”
”খুব।এগুলো পরে কেমনে থাকতে পারে কেউ? উফ!!! ”
রুহীর পেটের কাপড়ের ভিতর নিজের হাত প্রবেশ করিয়ে রোয়েন বলল,
”বিয়ের দিন পরেছিলে।”
”তখন কার সময় আলাদা।আর কি করছো তুমি?”
নিজের পেট থেকে রোয়েনের হাত সরাতে সরাতে বলল রুহী।রোয়েন আরো জোরে চেঁপে ধরে বলল,
”আমার জিনিস আমি ধরবো।সেখানে তোমার ইচ্ছার দরকার পড়েনা।”
”এটা তো ঠিকনা।”
”শুনো সব কিছুতে ঠিক বেঠিক খুঁজতে হয়না।মাঝে মধ্যে অন্যায় ও করা যেতে পারে ভালবাসার সময়ে। ”
রুহীর পেটে হাত বুলাতে বুলাতে ওর ওপর শুয়ে পড়ার মুহূর্তে বলল রোয়েন।রুহী কম্পন ধরা কন্ঠে বলল,
”আমরা বাহির থেকে এসেছি্।গায়ে ময়লা। ”
”সমস্যা নেই।লোহা লোহাকে কাঁটে।সো ময়লা ও ময়লা কাঁটবে।ওটা নিয়ে ভেবো না।”
রুহীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয় রোয়েন।রুহীর গলা ভারি হয়ে আসে।আর কিছু বলতে পারেনা।চোখজোড়া বুজে আসতে চায়।দুনিয়ার আর কোন খবর এখন আসছেনা ওর মাথায়।শুধু এই বেস্ট মোমেন্টটার স্বাদ নিতে চায় ও।
গাড়িতে এক নাগাড়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে সামায়রা।ফাহমিনদের পিছনের গাড়িতে মা বাবা ফারিয়া আর ওর হাসবেন্ড।এ গাড়িতে ফাহমিনের ভাগনী আর ড্রাইভার।ওরা সামনে বসে আছে।ফাহমিন সামায়রার কাছে এগিয়ে এসে ওর কাঁধ ছুঁয়ে বলল,
”প্লিজ কেঁদোনা।সব ঠিক হয়ে যাবে।”
”আব্বু আম্মুর কাছে যাবো।”
”সামু আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।এভাবে বললে হবেনা।”
”থাকবো কেমনে আব্বু আম্মুকে ছাড়া?”
”আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।”
সামায়রাকে বুকে জড়িয়ে নেয় ফাহমিন।সামায়রা গুঁমড়ে কাঁদতে থাকতে ফাহমিনের বুকে।ফাহমিনের বাসায় পৌছে গেলে ফারিয়া এসে ফাহমিনের গাড়ির সামনে দাঁড়ায়।ফাহমিন দরজা খুলে দেয় বোনের সামনে।ফারিয়া সামায়রাকে বের করে আনে। এখন আর কাঁদছেনা তবে ওর শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে।সামায়রা কে নিয়ে আসে রুমে তারপর খাটে বসিয়ে একটা জামা বের করে আনে ফারিয়া।সামায়রাকে দিয়ে বলল,
”যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।অনেক্ষন ধরে বেশ অস্বস্তিতে আছো।”
জামা হাতে নিয়ে সামায়রা বলল,
”থ্যাংক ইউ আপু।”
”ওয়েলকাম।যাও এখন।”
”জি।”
সামায়রা ফ্রেশ হতে চলে যায়।ফারিয়া বেরিয়ে যায় রুম থেকে।সামায়রা বেরিয়ে এসে দেখলো ফাহমিন খাটে বসে আছে ওয়াশরুমের দিকে মুখ করে।সামায়রা ম্লান হেসে ড্রেসিংটেবিলের দিকে এগোয়।
ওর চুল গুলো খোলা হয়নি।এই চুল নিয়ে গোসল সেড়ে এসেছে।সামায়রা চুল থেকে ক্লিপ খুলতে থাকে।কেমন হয়ে আছে চুল গুলো।
ফাহমিন অনেকসময় পর্যন্ত সামায়রার চুল খোলার প্রচেষ্টা দেখতে দেখতে একসময় অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। তারপর হেঁটে সামায়রার পিছনে এসে দাঁড়িয়ে ওর চুল থেকে ক্লিপ খুলতে শুরু করে।সামায়রা বলল,
”খুলছি।আপনি বসুন।”
”দেখছিই তো কতো খুলছো।চুপ থাকো।আমি খুলে দেই।”
সামায়রা দাঁড়িয়ে রইলো।ফাহমিন অনেকটা সময় নিয়ে ক্লিপ খুলে বলল,
”এতো ক্লিপ ও লাগায় কেউ?”
”আপুরা করে দিয়েছে।”
”ওহ। আচ্ছা শুনো মা দুধ দিয়ে গেছেন।চলো খেয়ে নেই। ”
”আপনি আপনার টা খান আমার গ্লাসটা রাখুন। আমি আসছি।”
”একটাই গ্লাস।”
”ওহ। তাহলে আপনি খেয়ে নিন।আমি খাবোনা।”
”কেন?”
”এমনি।যান খেয়ে নিন।”
”দেখো পুরোটা একসাথেই খেতে হবে এক গ্লাসে এটাই নিয়ম।”
সামায়রার মুখ লজ্জায় লাল।তারপর ও সামলে বলল,
”ওকে।”
ফাহমিন সামায়রাকে এনে খাটে বসিয়ে নিজে একটু দুধ খেয়ে সামায়রাকে পুরোটা খাইয়ে দেয়।
”আপনি খাবেননা আর?”
”নাহ।সামায়রা!!”
”জি। ”
”জানো কি রাত আজ?”
”কি রাত?”
”আজ আমাদের বাসর রাত।”
সামায়রা লজ্জায় জড়োসড়ো।কিছু বলতে পারেনি।গলা আটকে এসেছে।ফাহমিন ওর সামনে বসে বলল,
”তুমি কিছু প্রমিজ করবে আমাকে।”
”কি প্রমিজ?”
”সবসময় থাকবে আমার পাশে।আমার বাবা মাকে নিজের বাবা মনে করবে?আমার দুঃসময়ে কখনো ছেড়ে যাবেনা তো আমাকে?”
”সব গুলোতে রাজি।কিন্তু কই যাবো আপনাকে ছাড়া?আপনি তো আজ কে আমার বর তাইনা?সারাজীবন আপনার সাথে থাকতেই এসেছি তাইনা?”
”হুম।”
”তাহলে বললেন আমি কই যাবো?”
”লিভ ইট।তোমার কোন কথা আছে আমাকে বলার বা জানার?”
”জি। ”
”কি সেটা?”
”আমার হ্যামস্টারদের নিয়ে আসতে পারবো তো?”
ফাহমিন কিছুক্ষনের জন্য চুপ হয়ে গেলো।মেয়েটা এমন একটা রাতে এমন কিছু চাইতে পারে ভাবতেই পারেনি।ফাহমিনকে চুপ থাকতে দেখে সামায়রা বলল,
”কি হলো বলুননা?”
”অবশ্যই কেন না?তবে আমরা যেদিন চলে যাবো।সেদিন নিয়ে যাবো আমাদের সাথে। এখন ঘরে লাগাতার মেহমান আসতেই থাকবে।ওদের খেয়াল রাখা কঠিন হবে তোমার জন্য। ”
”ঠিক আছে।থ্যাংক ইউ।”
”কেন?”
”আমার মিমিদের আনবেন তাই।”
ফাহমিন সামায়রাকে ধরে শুয়ে পড়লো।তারপর বলল,
”সামায়রা ভালবাসো আমাকে?”
”অবশ্যই ভালবাসি।নাহলে বিয়ে করতাম নাকি?”
”কতোটা ভালবাসো?”
”সেটা কিভাবে বলি?তবে অনেকটা ভালবাসি।অনেকটাই ভালবাসি।”
ফাহমিন হেসে সামায়রার কপালে চুমু দিয়ে সামায়রাকে কাছে টেনে এনে বলল,
”সেদিন গাড়িতে কিছু বলেছিলে।”
”কি বলেছিলাম।”
”সেদিন যা করতে চেয়েছিলাম সেটা আমায় করতে দেবে।”
”কোনটা?”
”ভুলার ভান ধরছো কেন?”
”সত্যি মনে নাই।বলুননা।”
ফাহমিন ধীরে ধীরে সামায়রার ওষ্ঠদ্বয় কে নিজের ওষ্ঠজোড়ার মাঝে নিয়ে নেয়।তারপর ধীরে ধীরে শুষে নিতে থাকে।এদিকে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়।দুমাসের মতোই হবে।আশফিনা আর রামীন জানতে পারলো বাবা মা হতে যাচ্ছে ওরা।দুজনের খুশি কে দেখে?পুরো কলোনিতে মিষ্টি বিতরন করলো ওরা।ফাহমিন সামায়রা ও জার্মান চলে গেছে।ওদের কল করে জানাতেই ভীষন খুশি হলো ওরা।অফিসে এসে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে. রামীন।রোয়েন বলল,
”কিরে এতো খুশি?”
”হবোনা কেন রে?বাবা হবো আমি।”
”কংগ্রাচুলেশনস। ভীষন ভালো লাগছে।”
এদিকে দ্রিধা আজকাল রোয়েনকে ছাড়া কিছু বুঝেনা।বাবা বের হতে পারবেনা ঘর থেকে। বের হলে চিৎকার করে কান্না জুড়ে দেয়।তখন রুহী ও সামলাতে পারেনা।রোয়েন তাই মেয়ে কে নিয়ে আসে।ও ঘুমিয়ে গেলে শামীম রুহীর কাছে দিয়ে আসে।এদিকে ফাহমিন আর সামায়রা নিজেদের ছোট্ট সংসারে বেশ খুশি।ফাহমিনের কেনা বাড়িটিকে ভীষন সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে।সামায়রা এখানকার কলেজে ভর্তি হয়ে গেছে।রোয়েন আর রুহীর ভালবাসা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে।আগের চেয়ে ও দুজনে একে অপরের কাছা কাছি চলে এসেছে।
পুরো কলোনিতে খুশি ভরপুর।কিন্তু বলেনা খুশি টেকেনা বেশি দিন।দুঃখ আসলেই সুখের গুরুত্ব বোঝা যায়।
চলবে